ঈশ্বরদী এয়ারপোর্ট আবার চালু হোক
ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিজলি বেজ এলাকা নামে পরিচিত ছিল।
১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি ৮-২৪ তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমান বাহিনীর বিশতম বোমারু বাহিনী এই বিমান বন্দরটি ব্যবহার করেছিল ।
এখান থেকে মারিয়ানা দ্বীপ উদ্দেশ্যে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে রওনা করে তারা।
চুয়ান্ন বছর আগে পাকিস্তান আমলে নির্মিত ঈশ্বরদী বিমান বন্দরটিতে প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট চলাচল করতো।
স্বাধীনতার পরও বেশ কিছুদিন এটি চালু ছিল এবং যাত্রী সংখ্যাও ছিল বেশী। পার্শ্ববর্তী পাবনা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও নাটোরের যাত্রীরা ঢাকাতে যাতায়াত করতো ঈশ্বরদী বিমানবন্দর থেকে।
সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে এরশাদ সরকার আমলে হঠাৎ করে রাজশাহীতে নতুন একটি বিমান বন্দর চালু করার পর থেকে যাত্রী সংকটের অজুহাত দেখানো শুরু হয়।
নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় কর্মকর্তারা এ ষড়যন্ত্র শুরু করেন। এরই অংশ হিসাবে ১৯৮৭ সালে এই রুটে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানেও শুধুমাত্র রানওয়ে প্রশস্ত না থাকার অজুহাত দেখিয়ে বেসরকারী বিমান সংস্থাগুলোও এ বিমান বন্দরটি ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
সূত্রমতে, ঈশ্বরদীসহ নিকটস্থ এলাকার যাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৪ সালের ১৭ই জুলাই থেকে বিমান চলাচল শুরু হয়। তিন বছর পর ১৯৯৬ সালের ৩ নবেম্বর লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে পুনরায় বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়।
এরপর ঈশ্বরদী অঞ্চলের মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালের ১০ মে বেসরকারি এয়ারলাইন্স এয়ার পারাবতের ফ্লাইট চালু করা হয়।
মাত্র ৩৮ দিন চলার পর ২৮ জুন এই সার্ভিস বন্ধ করা হয়।
দীর্ঘ ১৭ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালের ১৮ই নবেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আবারও ফ্লাইট উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু ৬ মাস ১১ দিন পর আবার বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নানা প্রয়োজন ও কারণেই বর্তমানে ঈশ্বরদীর এই বিমানবন্দরটি আবারও চালু হওয়া বিশেষ প্রয়োজন।
এখানে রয়েছে দেশের গুরত্বপূর্ণ বাংলাদেশ সুগারক্রপস গবেষণা ইন্সটিটিউট, ঈশ্বরদী ইপিজেড, ডাল গবেষণা কেন্দ্র, রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় অফিস, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, পাবনা চিনিকল, আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিল, পাকশী নর্থবেঙ্গল পেপার মিল(বর্তমানে বন্ধ) ,রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বেনারসী পল্লীসহ সাত শতাধিক চাউল কল, অটো রাইচ মিল, অয়েল মিলসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান।
আমরা গ্রেটার কুষ্টিয়াবাসী ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করার জোর দাবি জানাচ্ছি।