প্রথমেই জানিয়ে রাখি ব্যাংকের নাম এবি ব্যাংক কেন রাখা হয়েছে। মূলত AB এর full form হলো Arab Bangladesh এবং এই কারণে শর্ট ফর্ম এ ব্যাংকের নাম রাখা হয়েছে AB ব্যাংক। প্রাইভেট ব্যাংকের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সর্বোচ্চ সেবা প্রদানকারী এবি ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চায় অনেকে। জানতে চায় AB ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
তাই এবারের আর্টিকেলে কভার করব এবি ব্যাংক সংক্রান্ত সকল তথ্য। যেখানে থাকবে এবি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, একাউন্ট ধরন, একাউন্ট করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন। এবং সেই সাথে এবি ব্যাংক সংক্রান্ত যাবতীয় সকল তথ্য।
এবি ব্যাংক সম্পর্কে তথ্য
এবি ব্যাংকের প্রাইভেট কমার্শিয়াল ব্যাংক হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হাজার ১৯৮১ সালে। যা পরবর্তীতে হাজার ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো এটিএম সিস্টেম চালু করে। মার্চেন্ট ব্যাংকিং সিস্টেম চালু করতে বেশ সময় নেয় ব্যাংকটি এক্ষেত্রে ২০০২ সালে প্রথমবারের মতো মার্চেন্ট ব্যাংকিং সিস্টেম চালু করা হয় এবি ব্যাংকে।
প্রযুক্তির সমৃদ্ধ এবি ব্যাংক বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস ব্যাংকিং, প্রধান করে যাচ্ছে সর্বাধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও যুগোপযোগী নেটওয়ার্কিং সমস্যার সমাধান প্রদানের মাধ্যমে, রয়েছে ২৪/৭ এটিএম সেবা এবং অন্যান্য ই-সেবা গুলো।
বর্তমানে এই ব্যাংকের ঝুড়িতে রয়েছে ১০৫ টি শাখা যার মধ্যে একটি রয়েছে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মুম্বাই শহরে। এবং রয়েছে ২৭০ এটিএম বুথ সারা দেশ জুড়ে।
AB ব্যাংকে একাউন্ট ধরন ও একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে?
এই পর্যায়ে জানাবো এবি ব্যাংকে কত ধরনের একাউন্ট খোলা যায় সেই বিষয়ে। মূলত বিভিন্ন চাহিদার উপর কেন্দ্র করে এবি ব্যাংক বেশ কিছু ক্যাটাগরিতে ব্যাংকের একাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিয়েছে। যেখানে থাকছে ভিন্ন ভিন্ন সুবিধা। নিম্মে এবি ব্যাংকের একাউন্টের ধরন ও সেই একাউন্ট করতে কি কি প্রয়োজন হবে সেই বিষয়ে জানিয়ে দিচ্ছি
স্থানীয় মুদ্রা একাউন্ট
সেভিংস একাউন্ট
- যথাযথভাবে পূরণকৃত একাউন্ট খোলা্র ফর্ম (ব্যাংক কর্মকতার সম্মুখে আবেদনকারীর স্বাক্ষর করা)
- পরিচয়দানকারী কর্তৃক সত্যায়িত হিসাবধারীর সাম্প্রতিক ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গীন ছবি।
- ছবিযুক্ত পরিচয়পত্রের কপি (মূল কপি যাচাইয়ের জন্য উপস্থাপন করতে হবে)
- প্রত্যাশিত লেনদেনের বিবরণ
একক মালিকানা একাউন্ট
- যথাযথভাবে পূরণকৃত একাউন্ট খোলা্র ফর্ম (ব্যাংক কর্মকতার সম্মুখে আবেদনকারীর স্বাক্ষর করা)
- যথাযথভাবে পূরণকৃত ব্যক্তিগত তথ্য ফর্ম (পিআইএফ)
- পরিচয়দানকারী কর্তৃক সত্যায়িত হিসাবধারী সাম্প্রতিক ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গীন ছবি।
- স্থানীয় সরকার কর্তৃক বৈধ ট্রেড লাইসেন্সের কপি (সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ইত্যাদি)
- বায়িং হাউস এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনুমতি প্রাপ্ত বা অন্যান্য নির্দিষ্ট ব্যবসা যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি দরকার।
- ই-টিন সার্টিফিকেট, যদি থাকে।
অংশীদারি ব্যবসা একাউন্ট
- যথাযথভাবে পূরণকৃত একাউন্ট খোলা্র ফর্ম(ব্যাংক কর্মকতার সম্মুখে আবেদনকারীর স্বাক্ষর করা)
- ব্যক্তিগত তথ্য ফর্ম (পিআইএফ) যথাযথভাবে সকল পার্টনার্স / শেয়ারহোল্ডার কর্তৃক যথাযথভাবে পূরণকৃত।
- সকল স্বাক্ষরকারী/ অংশীদারদের পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি রঙ্গীন ছবি পরিচয়দানকারী কর্তৃক সত্যায়িত।
- এবি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত সম্বলিত অংশীদারদের সকলের স্বাক্ষরিত রেজুলেশনের কপি ।
- বৈধ ট্রেড লাইসেন্সের কপি।
- ব্যবসা বা অংশীদারীত্বের ট্রেড লাইসেন্স ও ঠিকানার প্রমাণ।
- আর্থিক বিবরণের কপি ।
লিমিটেড কোম্পানি একাউন্ট
- যথাযথভাবে পূরণকৃত একাউন্ট খোলা্র ফর্ম (ব্যাংক কর্মকতার সম্মুখে আবেদনকারীর স্বাক্ষর করা)
- আর যে এস সি (RJSC) কর্তৃক সার্টিফাইড স্মারকলিপি ও কোম্পানীর অ্যাসোসিয়েশনের কপি।
- আর যে এস সি (RJSC) কর্তৃক সার্টিফাইড সার্টিফিকেট অফ ইনকর্পোরেশন এবং / সার্টিফিকেট অফ কমেন্সমেন্ট এর কপি।
- এবি ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে একাউন্ট খোলার উদ্দেশ্যে এবং যারা একাউন্ট অপারেট করবে তাদের স্বাক্ষরের মাধ্যমে ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে বোর্ডের সিদ্ধান্তের রেজ্যুলেশন এর কপি ।
- আর যে এস সি (RJSC) দ্বারা সত্যায়িত ডিরেক্টরদের তালিকা (Form-XII)।
- ট্রেড বডি যেমনঃ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সদস্যপদ সার্টিফিকেট।
- প্রত্যেক অপারেটরের পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি রঙ্গীন ছবি চেয়ারম্যান বা কোম্পানী সেক্রেটারী কর্তৃক সত্যায়িত।
- ন্যূনতম ৫ জন ডিরেক্টর / শেয়ারহোল্ডার যারা সর্বোচ্চ শেয়ারের অধিকারী অথবা যদি ডিরেক্টরদের সংখ্যা ৫ জনের কম হয় অথবা , বেনিফিসিয়াল ওনার এর পূরণকৃত ব্যক্তিগত তথ্য ফর্ম (PIF) এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী একাউন্টের পরিচিতি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে।
- বৈধ ট্রেড লাইসেন্সের কপি।
- আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জড়িত কোম্পানীর ক্ষেত্রে রপ্তানী / আমদানী লাইসেন্সের কপি ।
- কোম্পানীর সকল পরিচালকের ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণী (নেটওয়ার্থ )।
- কোম্পানীর, পরিচালক এবং একাউন্টের অপারেটরদের আপডেটড e-TIN সার্টিফিকেট ।
- গত তিন বছরের অডিট করা ফিনান্সিয়াল রিপোর্টস অথবা নতুন কোম্পানীর ক্ষেত্রে এর প্রজেক্টেড ফিনান্সিয়াল রিপোর্টস।
- আর যে এস সি (RJSC) জমা দেওয়া কোম্পানীর সর্বশেষ বার্ষিক রিটার্নের কপি।
- কোম্পানীর রেজিস্টার্ড অফিস ভাড়া করা কোন জায়গায় থাকলে কোম্পানীর টেনেন্সি এগ্রিমেন্ট চেয়ারম্যান বা কোম্পানী সেক্রেটারি দ্বারা সত্যায়িত করা কপি
বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্ট
তাছাড়া বিশেষ এক ধরনের একাউন্ট রয়েছে যেটার কার্যক্রম হবে বৈদেশিক মুদ্রায়। এখানে লেনদেন হবে ডলার কেন্দ্রিক। এরুপ একাউন্টকে নামককরন করা হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্ট। নিম্মে উক্ত একাউন্টের বৈশিষ্ট্য সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ব্যক্তিগত বৈদেশিক মুদ্রা একাউন্ট
যোগ্যতা
- বাংলাদেশী কিন্তু বিদেশে কাজ করছে / বিদেশে বসবাসকারী (দ্বৈত নাগরিকত্ব সহ)
- বিদেশী নাগরিকরা বিদেশে বা বাংলাদেশে বসবাসকারী
- বিদেশী সংস্থাগুলো বিদেশে নিবন্ধিত এবং বাংলাদেশ বা বিদেশে কর্মরত
- বৈদেশিক মিশন এবং তাদের প্রবাসী কর্মীদের
- কুটনৈতিক ওয়্যারহাউস (ডিউটি ফ্রি দোকান) কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দ্বারা লাইসেন্সকৃত
- স্থানীয় ও জয়েন্ট ভেনচার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, যারা চুক্তির শর্তাবলী অনুযায়ী বিদেশী / আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা দ্বারা প্রকল্প কার্যকর করার জন্য নিয়োগকৃত।
- বৈদেশিক / আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন প্রাপ্ত বাংলাদেশী নাগরিক
- বাংলাদেশে অবস্থিত শিপিং লাইন, বায়িং হাউস , মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান।
- অনুমোদিত মুদ্রা: মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরো, জাপানি ইয়েন
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- যথাযথভাবে পূরণকৃত একাউন্ট খোলা্র ফর্ম (ব্যাংক কর্মকতার সম্মুখে আবেদনকারীর স্বাক্ষর করা)
- পরিচয়দানকারী কর্তৃক সত্যায়িত হিসাবধারীর সাম্প্রতিক ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গীন ছবি।
- হিসাবধারী কর্তৃক সত্যায়িত নমিনি / অভিভাবকের (নমিনি নাবালক হওয়ার ক্ষেত্রে) সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের এক কপি রঙ্গীন ছবি
- বাংলাদেশী নাগরিকের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওয়ার্ক পারমিট / কর্মসংস্থান সার্টিফিকেট / আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য অনুমোদন পত্র
- ভিসা বিবরণী সঙ্গে পাসপোর্টের কপি
- পররাষ্ট্র দাতাদের / আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা এবং স্থানীয় / জয়েন্ট ভেনচারের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অনুমোদিত চুক্তির একটি প্রতিলিপি
- ডিপ্লোম্যাটিক ওয়্যার হাউসের জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত বন্ড লাইসেন্সের কপি
প্রাথমিক আমানত সম্পর্কে
কোন প্রাথমিক আমানত জমা দেয়া ছাড়াই যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক কর্মসংস্থানের / অভিবাসন / আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে গমণেচ্ছু ব্যাক্তি এই একাউন্ট খুলতে পারেন । বিদেশে বসবাসরত যোগ্য বাংলাদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম আমানত ১,০০০ USD বা ৫০০ GBP বা সমমানের হতে হবে।
এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট
এবি ব্যাংক রাখছে স্টুডেন্টদের জন্য বিশেষ সুবিধা, যা অন্য কোন ব্যাংক এতটা দিচ্ছে না। স্টুডেন্ট অ্যাকাউন্ট পরিচালনা কোন ধরনের ফ্রি নেই। যেকোনো স্টুডেন্ট একাউন্ট করার সাথে সাথে পেয়ে যাচ্ছে ডেবিট কার্ড যার চার্জ সম্পূর্ণ ফ্রি। তা ছাড়া থাকছে এসএমএস, ইন্টারনেট ব্যাংকি, চেক বই ও মোবাইল টপ আপ এর মত সুবিধা। দেখে নেয়া যাক এর স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে এবি ব্যাংক কোন কোন ডকুমেন্টস গুলো গ্রহণ করে থাকে।
এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন?
ব্যাংক রিটেন স্টুডেন্ট একাউন্ট রয়েছে দুইটি সাজে। প্রথমটি হচ্ছে এবি মাইনর এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে এবি মেজর। যে সকল স্টুডেন্টদের বয়স 18 বছরের নিচে তাদের জন্য এ বি মাইনর এবং যে সকল স্টুডেন্টদের বয়স 18 বছরের উর্ধ্বে তাদের জন্য এই মেজর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। নিম্নে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে দুই ধরনের অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন।
এবি মাইনর
- এক্ষেত্রে প্রয়োজন বৈধ স্টুডেন্ট ফটোকপি অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাজ থেকে ছবি সহ প্রমান পত্র অথবা বৈধ পাসপোর্ট।
- তাছাড়া জন্ম সনদপত্র এবং স্টুডেন্ট আইডি কার্ড জন্ম সনদ এই দুটোর মধ্যে যেকোন একটা হলেই হবে।
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- নমিনির পরিচয় এবং নমিনীর 1 কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
এবি মেজর
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র/ স্টুডেন্ট আইডি কার্ড এর ফটোকপি/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছ থেকে ছবি সহ প্রমান পত্র – এই তিনটির মধ্যে যেকোনো একটি ডকুমেন্টস হলেই হবে।
- তাছাড়া প্রয়োজন জন্ম সনদপত্র
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্র এবং তার এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
এবি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সেভিংস ও অন্যান্য একাউন্ট খোলার নিয়ম
আমরা ইতিমধ্যে জানিয়েছি এবি ব্যাংকে কত ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা রয়েছে। এই পর্যায়ে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি অ্যাকাউন্ট বেছে নিতে হবে যদি আপনি আপনার জন্য খুলতে যাচ্ছেন। আমরা সেইসাথে জানিয়েছি উক্ত একাউন্টে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে তাই ব্যাংকে যাওয়ার পূর্বেই সকল ডকুমেন্ট গুলো গুছিয়ে নিন এবং ব্যাংকের উপস্থিত থাকাকালীন আপনার কাছে যেন সকল ডকুমেন্ট থাকে সেই বিষয় নিশ্চয়ন করুন।
ব্যাংকে উপস্থিত হয় সেখানে থাকা ব্যাংকারদের কাছে জানাতে হবে আপনি এবি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে যাচ্ছেন আপনার প্রয়োজন এবং একাউন্টের সম্পর্কে জানিয়ে উক্ত ডকুমেন্টগুলো তাদের হাতে হস্তান্তর করুন। সকল বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে আপনাকে একটি ফর্ম দিবে যেটাকে আপনার বিভিন্ন স্থানে সাইন করতে হবে।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কিছু সময় অবশ্যই প্রয়োজন হবে উক্ত সময় দিয়ে তাদের সাথে co-operate করবেন। অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ সম্পন্ন হলে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি এমাউন্টের অর্থ জমা করতে হবে এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী উক্ত ব্যাংকের একাউন্টে টাকা রাখতে পারেন। তবে ব্যাংক একাউন্ট করতে কোন ধরনের চার্জ কয়জন হয়না আপনি যে অর্থটি প্রদান করবেন সেটি আপনার একাউন্টে থেকে যাবে।
স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি যদি এবি ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে চান তবে দুইটি উপায় উক্ত কাজটা করতে পারেন। প্রথমত আপনি সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হবেন এক্ষেত্রে আপনার ঠিকানার নিকটবর্তী যেকোনো একটি ব্রাঞ্চে গেলেই হবে। সেখানে পৌঁছে সেখানে থাকা কর্মরত লোকদের জানাতে হবে আপনি স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন। এই পর্যায়ে আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে ঠিকভাবে পড়ে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে সাইন করতে হবে। আপনার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হবে আপনি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো এনেছেন কি-না। আমরা ইতিমধ্যে জানিয়েছে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন রয়েছে সেগুলো তাদের হাতে হস্তান্তর করবেন। কিছুটা সময় নিবে একাউন্ট প্রসেসিংয়ের জন্য অ্যাকাউন্ট করা হয়ে গেলে তার আপনাকে নিজে থেকে জানাবে এবং একাউন্টের সাথে জড়িত সকল উপাদান গুলো আপনার হাতে হস্তান্তর করা হবে।
এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট আপনি অনলাইনের মাধ্যমে এপ্লাই করতে পারেন এক্ষেত্রে এই লিঙ্কে ক্লিক করে সরাসরি তাদের ওয়েবসাইটে চলে যান। সেখানে আপনার পুরো নাম, email-id, ফোন নাম্বার, বয়স, বাৎসরিক আয় লিপিবদ্ধ করার মাধ্যমে একটি ফর্ম সাবমিট করতে হবে। এরপর তারাই আপনার সাথে যোগাযোগ করবে এবং জানিয়ে দেবে একাউন্ট করার জন্য আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে।
AB ব্যাংক একাউন্ট দেখা ও ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম
তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ এবি ব্যাংক রয়েছে একাধিক মাধ্যম আপনার অ্যাকাউন্ট দেখা এবং একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করার জন্য। আপনি নিম্নে উল্লেখিত চারটি উপায়ে সহজে আপনার একাউন্টে কত টাকা রয়েছে সে ব্যালেন্স চেক করতে পারবেন।
এসএমএস এর মাধ্যমে ব্যালেন্স চেক
এবি ব্যাংক দিচ্ছে ফ্রিতে এসএমএস ব্যাংকিং এর সুবিধা। এক্ষেত্রে প্রথমে আপনার মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। ফ্রিতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য চলে যান নিকটস্থ যেকোনো এবি ব্যাংকের শাখায়। কিভাবে এসএমএসের মাধ্যমে এবি ব্যাংকের একাউন্টে ব্যালেন্স জানবে সে বিষয়ে জানাচ্ছি।
অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স জানতে চলে যান আপনার মেসেজ অপশনে এবং টাইপ করুন BAL <space> PIN এবং পাঠিয়ে দিন ১৬২০৭ নাম্বারে।
আপনি যদি এই ব্যাংকে এমন কারো অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স জানতে চান যেটা কিনা আপনার নয় তবে নিম্নে উল্লেখিত প্রসেসটি অনুসরণ করুন:
ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করুন BAL <space> PIN <space> Account serial এবং পাঠিয়ে দিন 16207 নাম্বারে। এবং ফিরতি মেসেজে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে উক্ত একাউন্টে কত ব্যালেন্স বর্তমানে রয়েছে।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ব্যালেন্স চেক
প্রতিটি ব্যাংকের ন্যায় এবি ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর সুবিধা এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে যে কলেজে উপস্থিত হয়ে আপনার একাউন্টে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। একবার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে আপনাকে প্রদান করা হবে একটি ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোন ডিভাইস এবং যেকোনো স্থান থেকে উক্ত ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার একাউন্টে অ্যাক্সেস পেয়ে যাবেন সেখানে আপনার একাউন্ট ডিটেলস রয়েছে এবং খুব সহজেই সেখান থেকে জানতে পারবেন আপনার বর্তমান একাউন্টের ব্যালেন্স কত।
এটিএম বুথের মাধ্যমে ব্যালেন্স চেক
এবি ব্যাংকে যে কোন একাউন্ট খোলার পর এই উক্ত একাউন্টে জন্য একটি ডেবিট কার্ড প্রদান করা হয় যার মাধ্যমে এবি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন ও জমা করা যায়। তবে টাকা উত্তোলন ও জমা করা বিষয়ক কথা বলছি না বলছি অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স চেক করা নিয়ে এক্ষেত্রে আপনি যখন এটিএম বুথে যাবেন সেখানে টাকা জমা ও উত্তোলন বৃত্ত একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করার অপশন থাকবে। আপনার কাছে যদি এবি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড থেকে থাকে তবে খুব সহজেই নিকটস্থ এটিএম বুথ থেকে আপনার ব্যালেন্স জানতে পারবেন।
সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে ব্যালেন্স চেক
একাউন্ট ব্যালেন্স জানার সবচেয়ে পুরাতন ও সহজ মাধ্যম হল সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয় সেখানে থাকা কর্মরত ব্যাংকারদের কাছে আপনার অ্যাকাউন্ট নাম্বার টি জানানোর মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে উক্ত একাউন্টে থাকা অবশিষ্ট ব্যালেন্সের পরিমাণ জেনে নেওয়া। আপনার ঠিকানা থেকে যদি এবি ব্যাংকের যেকোন শাখা ব্রাঞ্চ নিকটবর্তী হয় তবে সরাসরি ব্যাংকে যাওয়ার মাধ্যমেও আপনি একাউন্ট ব্যালেন্স জানতে পারবেন।
AB ব্যাংক একাউন্টের সুদের হার
আপনি যেকোন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুললে কেন সেখানে কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণের ইন্টারেস্ট প্রদান করা হবে। আপনি যদি কোন প্রকার সুদ গ্রহণ না করতে চান তবে এবি ব্যাংকের ইসলামী একাউন্ট খুলতে পারে। তবে হাতে যদি সুদ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক হোন তবে নিম্মের তালিকাটি আপনার জন্য।
Savings Deposit | 2.50% |
অর্থের পরিমাণ এর ভিত্তিতে সুদের হারে পরিবর্তন তালিকা | |
Less than 50,000 | 0.00% |
Tk. 50,000 to less than Tk. 5,00,000 | 1.25% |
Tk. 5,00,000 to less than Tk. 15,00,000 | 1.75% |
Tk. 15,00,000 to less than Tk. 30,00,000 | 2.25% |
Tk. 30,00,000 to less than Tk. 50,00,000 | 2.75% |
Tk. 50,00,000.00 & above | 3.25% |
তাছাড়া যে কোন স্টুডেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে হোক সেটা মাইনর অথবা মেজর জমাকৃত অর্থের উপরে ৩.২৫% হারে ইন্টারনেট গ্রহণ করে থাকবেন বাৎসরিক ভাবে।
এবি ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
যদি কোনো কারণবশত আপনার এবি ব্যাংকে থাকা যেকোনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার প্রয়োজন হয় তবে নিম্নের প্রসেস অনুসরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেই উক্ত ব্যাংকে থাকা যেকোনো অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে সেগুলো হলো:
আপনি যে শাখায় একাউন্ট খুলেছেন সেই শাখায় উপস্থিত থাকতে হবে এবং একটি লিখিত নোটিশ অথবা আবেদনপত্র প্রদানের মাধ্যমে একাউন্ট বন্ধ করার প্রসেসিংয়ে অগ্রসর হতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে প্রদানকৃত একটি একাউন্ট বন্ধ করার ফরম পূরণ করতে হবে।
একাউন্ট বন্ধ করার সময় আপনার বকেয়া সুদ গুলো প্রদান করতে হবে এবং আপনার একাউন্টে যদি কোন প্রকার সুদ প্রাপ্য হোন তবে সেটা যোগ করা হবে। ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত সকল প্রকার চার্জ এবং সরকার কর্তৃক আরোপিত কর কেটে নেওয়া হবে আপনার উক্ত ব্যাংক একাউন্টের ব্যালেন্স থেকে।
ব্যবহৃত হয়নি এমন চেক বই অথবা চেকের পাতা, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড সহ অন্যান্য যেসকল উপাদান যা ব্যাংক একাউন্ট খোলার সময় আপনাকে প্রদান করা হয়েছিল সেগুলো কে পুনরায় ফেরত প্রদান করতে হবে। যদি কোন কারনে উক্ত উপাদানগুলো প্রদান করতে না পারেন না সেগুলো যদি হারিয়ে যায় তবে এটির জন্য পুলিশে জিডি করে জিডির কপি প্রদান করতে হবে। আপনি যদি না জানেন কিভাবে জিডি করতে হয় তাহলে এখানে ক্লিক করুন।
পরিশেষে কিছু কথা
বর্তমানে সবচেয়ে দারুন সেবা প্রদানকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে এবি ব্যাংক অন্যতম যার এর কার্যক্রম বর্তমানে রয়েছে পুরো দেশ জুড়ে। হাইলাইটেড সুবিধা এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় একাউন্টের স্টুডেন্ট একাউন্ট। একমাত্র এভাবেই সে সকল সুবিধা দিচ্ছে স্টুডেন্ট একাউন্ট এর জন্য কোন ব্যাংক দিতে পারছে না। সম্পূর্ন ফ্রীতে সকল ধরনের সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে এবি ব্যাংক স্টুডেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে। তবে অন্যান্য একাউন্ট এর ক্ষেত্রেও এই বিভাগে রয়েছে কড়া নজরদারি রয়েছে গ্রাহকসেবার সম্পূর্ণটা দেওয়ার প্রচেষ্টা। তবে সর্বদা একটি কথাই বলবো যে কোন ব্যাংকে একাউন্ট তৈরী করার আগে অথবা কোন ব্যাংকে টাকা রাখার আগে অবশ্যই ব্যাংকে সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিন। এবি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম আপনি যদি অন্যান্য ব্যাংকের একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তবে বাংলা আলো ওয়েবসাইট এর ব্যাংক নামক ক্যাটেগরি টি অনুসরণ করুন। ধন্যবাদ।