ক্রোয়েশিয়া ভিসা | ধরন, খরচ, মেয়াদ, আবেদন নিয়ম | বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া ভিসা

0
54

ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার ইচ্ছা? বাংলাদেশ থেকে ক্রোয়েশিয়া ভিসা পেতে হলে কি করতে হবে, কত টাকা খরচ, কোথায় আবেদন করবেন, কি কি লাগবে সব বিষয়ে জানুন এই আর্টিকেল থেকে।

 

ইউরোপ মহাদেশের একটি অপরুপ রাষ্ট্র হলো ক্রোয়েশিয়া। এই রাষ্ট্রে ভ্রমণ করার স্বপ্ন অনেক বাংলাদেশী নাগরিক এর মনেই লালিত থাকে। বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্য নিয়ে কিংবা উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেকই প্রতি বছর গমন করেন এই স্বপ্নের দেশে।

 

ক্রোয়েশিয়া তে ভ্রমন করা যায় বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে। তাদের মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ভিসা রয়েছে, যেমনঃ ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা, কাজের ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, বিজনেস ভিসা, মেডিকেল ভিসা ইত্যাদি।

 

আজকের আর্টিকেল এ আমরা ক্রোয়েশিয়া ভ্রমণ করার জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয়, আলাদা কিছু ভিসার ধরন সম্পর্কে আলোচনা করবো। এছাড়াও বিভিন্ন ভিসার ধরন, খরচ, মেয়াদ, আবেদন এর নিয়ম এই সকল বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানাবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক…

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসার ধরন, সময়, মেয়াদ

 

ক. ক্রোয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিজিট ভিসাঃ

 

ক্রোয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লাগে প্রায় ২২ কার্যদিবস পর্যন্ত (ক্রোয়েশিয়া দূতা বাসে ১৫ কার্যদিবস + পাসপোর্ট ট্রানজিটের জন্য ৭ কার্য দিবস)। এই ভিসার মেয়াদ থাকে দুই থেকে তিন মাস সময় পর্যন্ত, এই সময় সকল পরিবার এর সদস্য রা বৈধ ভাবে ক্রোয়েশিয়া তে অবস্থান করতে পারেন।

 

খ. ক্রোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

ক্রোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসা তৈরী হতে সময় লাগে প্রায় ২০ থেকে ৩০ কার্যদিবস পর্যন্ত। ৩ থেকে ৪ বছর এই ভিসার মেয়াদ থাকে। এই সময়ে শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষা শেষ করতে পারে এবং তার সাথে সাথে অন্য চাকুরী করতে পারেন।

 

গ. ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্কিং ভিসাঃ

 

ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্কিং ভিসা তৈরী হতে সময় লাগে প্রায় ৩০ দিন এর মতো। এই ভিসার মেয়াদ থাকবে ১২ মাস অর্থাৎ ১ বছর সময়। ১২ মাস পর পর রিনিউ করতে হবে এই ভিসা।

 

ঘ. ক্রোয়েশিয়া বিজনেস ভিসাঃ

 

বিজনেস ভিসা তৈরী হতে সময় লাগে ১ মাস এর মতো। তাছাড়া ৩০ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত এই ভিসার মেয়াদ থাকে, এই সময়ে বিজনেস পারসন রা ক্রোয়েশিয়া তে বিজনেস সংক্রান্ত কাজ করতে পারে।

 

ঙ. ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসাঃ

 

ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিজিট ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লাগে প্রায় ২২ কার্যদিবস পর্যন্ত (ক্রোয়েশিয়া দূতা বাসে ১৫ কার্যদিবস + পাসপোর্ট ট্রানজিটের জন্য ৭ কার্য দিবস)। এই ভিসার মেয়াদ থাকে দুই থেকে তিন মাস সময় পর্যন্ত, এই সময় টুরিস্ট রা বৈধ ভাবে ক্রোয়েশিয়া তে অবস্থান করতে পারেন এবং সকল দর্শনীয় স্থানে ভিজিটি করতে পারবে।

 

আরো জানুন : বাংলাদেশ থেকে মালোয়েশিয়া ভিসা পাওয়ার উপায় সম্পর্কে 

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসা করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন

 

ক. ক্রোয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিজিট ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. বিয়ের আসল কাবিন নামার কপি।

৪. বাংলাদেশী নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৫. পরিবার এর যেই সদস্য স্পনসর করছে তার আকামার কপি।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৮. বিয়ের ছবি।

৯. বিয়েতে উপস্তিত সাক্ষি দের প্রমান স্বরূপ সিগনেচার। 

১০. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

১১. লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস।

 

খ. ক্রোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. আপনার পছন্দ অনুযায়ী ক্রোয়েশিয়া তে অবস্থান করা যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এর অফার লেটার।

৪. আগের শ্রেণি গুলোর স্কুল এবং কলেজ এর সকল মেইন সার্টিফিকেট, তার সাথে আরও লাগবে সেই সকল পরীক্ষার মার্কশিট।

৫. IELTS স্কোর এর সার্টিফিকেট।

৬. ক্রোয়েশিয়া তে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় এর এপ্লিকেশন ফর্ম। 

৭. নিজস্ব কিংবা পারিবারিক অভিভাবক এর ব্যাংক সলভেন্সির কাগজ পত্র। 

৮. স্টুডেন্ট ভিসার এপ্লিকেশন ফর্ম।

৯. শিক্ষার্থীদের সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো অবশ্যই ইন্টান্যাশনাল অরগানাইজেশান ফর মাইগ্রেশান থেকে সঠিক ভাবে ভেরিফিকাশন করে নিতে হবে।

১০. স্টুডেন্ট এর লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

১১. রিকমেন্ডেশন লেটার অথবা মোটিভেশনাল লেটার।

১২. স্টুডেন্ট এর সিভি।

১৩. কোভিড- ১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোস এর ফর্ম।

১৪. আগের স্কুল কলেজ এর সকল সার্টিফিকেট এর মেইন কপি এবং ফটোকপি। অবশ্যই সকল সার্টিফিকেট গুলো শিক্ষাবোর্ড এবং অ্যাম্বাসি কর্তৃক সত্যায়িত করে নিতে হবে। 

১৫. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

 

গ. ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্কিং ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. দেশী নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. যে স্পনসর করছে তার আকামার কপি।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

৮. মেডিকেল ফিটনেস এর সকল সত্যায়িত কাগজ পত্র। 

৯. লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

 

ঘ. ক্রোয়েশিয়া বিজনেস ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. বাংলাদেশ এর নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. স্পনসর এর আকামার কপি।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

৮. বিজনেস সংক্রান্ত সকল কাগজ পত্র।

৯. লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

 

ঙ. ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. বাংলাদেশ এর নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসা করতে কত টাকা লাগে

 

ক. ক্রোয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিজিট ভিসাঃ

 

ক্রোয়েশিয়া ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা প্রসেসিং হতে খরচ হয় প্রায় ৩৫৫০০ টাকা। এই প্রাইজ পরিবর্তন হতে পারে।

 

খ. ক্রোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

স্টুডেন্ট রা ফ্রি তেই স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়া তে অবস্থান করতে পারবে।

 

গ. ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্কিং ভিসাঃ

 

ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্কিং ভিসা করতে খরচ হয় প্রায় ৮৭০ Kuna.

 

ঘ. ক্রোয়েশিয়া বিজনেস ভিসাঃ

বিজনেস সংক্রান্ত কাজে গমন করতে হলে ভিসা করতে খরচ হতে পারে আনুমানিক ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।

 

ঙ. ক্রোয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসাঃ 

 

বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণের জন্য ক্রোয়েশিয়া তে টুরিস্ট ভিসায় খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো।

 

ভিসার প্রাইজ বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হতে পারে। আলাদা আলাদা কোম্পানির মাধ্যমে ভ্রমণ করলে খরচ এর পরিমান বাড়াতে বা কমতে পারে। ভ্রমন এর আগে অবশ্যই ভালো ভাবে খোজ খবর নিয়ে নিবেন।

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসা কিভাবে করতে হয় বা নিয়ম

 

ক্রোয়েশিয়ার ভিসা প্রসেসিং এর বেশ কয়েকটি নিয়ম থাকলেও তাদের মধ্যে সবচেয়ে সহজ হলো অনলাইন ভিসা আবেদন প্রসেস টি। তাই আমরা অনলাইন ভিসা অর্থাৎ ই-ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছি। এখন আপনাদের জানাবো কিভাবে স্টেপ বাই স্টেপ আপনার ক্রোয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত…. 

 

প্রথম ধাপঃ আপনার জন্য নির্ধারিত হওয়া ভিসা বাছাই করে নিন

 

আমরা সবাই জানি প্রত্যেকটি দেশের গমন করতে হলে ভিসার প্রয়োজন হয় এবং তার পাশাপাশি এটাও জানি যে ভিসার বিভিন্ন ধরন হয়ে থাকে। তাই আপনার প্রথম কাজ হবে আপনার জন্য নির্ধারিত ভিসা টি সিলেক্ট করে নেওয়া অর্থাৎ যেই ভিসার মাধ্যমে আপনি ক্রোয়েশিয়া গমন করতে চাচ্ছেন সেটি বেছে নিন।

 

তারপর সরাসরি ভিসা অফিস থেকে জেনে নেওয়া কিংবা তাদের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নেওয়া সকল নির্দেশনা অনুযায়ী কাগজ পত্র তৈরি করুন। এই সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো আপনাকে ভিসা আবেদনের সময় সাথে দিতে হবে। আপনি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন কোন ধরনের ভুল ডকুমেন্ট আপনার ভিসা আবেদন পত্রে না যায়।

 

কারণ যদি ভুলক্রমেও কোন ধরনের বেঠিক অথবা অপ্রয়োজনীয়’ ইনফর্মেশন যায় তাহলে আপনার ভিসা আবেদন বাতিল হবার সম্ভাবনা থাকবে। জেনে নিবেন আপনার ভিসা আবেদনের প্রসেসিং শেষ হতে কত সময় লাগতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন কিনা তা ছাড়াও আপনার ভিসা ফি বাবদ কত টাকা জমা দিতে হবে সেটাও জেনে নেবেন।

 

আরো কিছু ব্যাপার খেয়াল রাখা জরুরী যেমনঃ

আপনার নাগরিকত্ব, পরিদর্শন অভিবাসন, শিক্ষা অনুমতি, কাজের অনুমতি, ইত্যাদি বিষয়গুলো। এই সকল বিষয় সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রমাণ হিসেবে আপনাকে সম্মতি ফর্ম জমা দেওয়া লাগবে এবং সেখানে অবশ্যই আপনার, আপনার অভিভাবক এর স্বাক্ষর এবং এলাকার চেয়ারম্যান এর স্বাক্ষর থাকা লাগবে। কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকতে পারে। এছাড়াও আবেদন ফর্ম টির সাথে করোনা ভাইরাস এর ভ্যাকসিন নেয়া হলো কিনা তার সঠিক তথ্যাবলী জমা দিতে হবে। 

 

২য় ধাপঃ ক্রোয়েশিয়ার ভিসার জন্য অনলাইন আবেদন টি শুরু করার পালা

 

এখন শুরু করবেন ক্রোয়েশিয়া ভিসার অনলাইন আবেদন। যেই ফর্ম টির সাহায্যে আপনি ক্রোয়েশিয়া ভিসা প্রসেসিং শুরু করবেন সেটা সঠিক ভাবে সিলেক্ট করে নিবেন এবং তারপর ডাউনলোড করে নিন। এরপর ডাউনলোড করা মেইন ফর্মটি পূরণ করে তার কপি করে রাখুন নিজের কাছে। এখন সেই ভিসা আবেদন ফর্মটি নিয়ে ভিসা অফিসে দিয়ে জমা দিন।

 

এখন আপনার জন্য একটি বৈদ্যুতিন আবেদন পত্র রাখা হবে সেটা সঠিক ভাবে পূরণ করে নিন। সম্পূর্ন ফর্মটি একটি বারকোড এর সাথে যুক্ত করা শিট এর সাথে একটি মানউন্নত, সাদা এবং চকচকে ধরনের কাগজ এর সাথে কপি করে নিয়ে নিবেন। আপনি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার ২ ডি এর বারকোড টি একটি সাদা, উন্নত মানের কাগজে কপি করা হয়, এর কারন হলো হাতে লিখিত কোনো ফর্ম ভিসা অফিস থেকে একদমই গ্রহণ করবে  না।

 

আপনার পার্সোনাল ভিসা সম্পর্কিত সকল প্রকার গোপন তথ্য মেনে চলতে হবে এবং এর সাথেই একটি সম্মতি মূলক ফর্ম ফিল আপ করবেন। ভিসা আবেদন ফর্ম টির সাথে সকল প্রকার গোপনীয়তা বজায় রাখবেন পত্রটি যুক্ত করার সময়। আপনাকে অবশ্যই ভিসা এর ফর্ম সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে  কারন এটি ব্যতীত আপনার ভিসা আবেদন টি গ্রহন যোগ্য হবে না এবং এটি ফিরিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে।

 

৩য় ধাপঃ আপনার জন্য প্রযোজ্য ভিসা অফিস এর সাক্ষাৎকার টি সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ করে নিন

 

যখনই আপনার ভিসা আবেদন এর প্রসেস সম্পন্ন হয়ে যাবে ঠিক তখনই ভিসা অফিসের জন্য আপনার সাক্ষাৎকার টি সঠিক ভাবে, সঠিক সময়ে লিপিবদ্ধ করে ফেলতে হবে। সাক্ষাৎকার টি কনফার্ম করার জন্য আবশ্যই আপনাকে সকল প্রকার বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে। তার মানে হলো আপনাকে সঠিক উপায়ে আপনার আঙ্গুল এর ছাপ দিয়ে দিতে হবে।

 

তার সাথে আপনার রঙিন ছবি দিতে হবে। আপনি চাইলে ছবিটি যে কোনো একটি ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার থেকেই তুলে নিতে পারেন। সকল তথ্য সঠিক ভাবে দেবার পর দেখবেন আপনার ক্রোয়েশিয়া ভিসার জন্য করা অ্যাপয়েন্টমেন্ট টি  বুক হয়ে যাবে অল্প সময় এর মধ্যেই।

 

তারপর আপনার দেওয়া ইমেইল এড্রেস এ একটি কনফার্মেশন মেইল পাঠানো হবে ভিসা অফিস থেকে। আরেকটি বিষয় তা হলো, আপনি যখন আপনার পরিবারের অন্য সদস্য বৃন্দ দের জন্য ভিসা এপ্লিকেশন করবেন, তাহলে তাদের সকলের জন্যই আলাদা আলাদা অ্যাপয়েনমেন্টের দরকার পরবে।

 

৪র্থ ধাপঃ আপনার ক্রোয়েশিয়া অনলাইন ভিসার জন্য প্রযোজ্য ফি প্রদান করুন

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসা করতে আপনার যেই পরিমাণ ফি দিতে হবে সেটা সঠিক ভাবে সঠিক কাউন্টার এ প্রদান করুন। আবেদন শেষ হলেই সাথে  সাথে তা দিয়ে দিতে হবে এবং অবিশ্যই মানি রিসিট নিয়ে নিতে হবে।

 

৫ম ধাপঃ ক্রোয়েশিয়া ভিসা অফিস এর সাক্ষাৎকারে যোগ দান করুন

 

আপনার ক্রোয়েশিয়া গমন এর জন্য করা ভিসার আবেদন কমপ্লিট হয়ে যাবার পর ভিসা অফিস সে সকল মেইন কপি এবং ফটোকপি জমা দিতে হবে। সাক্ষাৎকারে যোগদান করার আগে যদি আপনি মনে করেন আপনার  অনলাইন এ সম্পন্ন হয়ে গেলে সেই কপি ভিসা অফিসে জমা দিয়ে দিন।

 

আর যদি আপনি মনে করেন, অনলাইন আবেদন সম্পন্ন হয়নি, তাহলে সরাসরি ভিসা অফিসে একটি ফর্ম এর মাধ্যমে আপনার প্র‍য়োজনীয় সকল তথ্য সমূহ জমা দিয়ে দিন। যদি আপনি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে আপনার তথ্য জমা দেন অথবা অন্য যেকোনো সাধারণ পদ্ধতির মাধ্যমে, তাহলে সাথে সাথেই আপনাকে একটি কনফার্ম রসিদ দেওয়া হবে সেটা অবশ্যই সংগ্রহ করবেন।

 

তার কারন, সেই রসিদ এর মাধ্যমেই আপনার ক্রোয়েশিয়া ভিসার জন্য ট্র্যাকিং নাম্বার দেওয়া হবে। যা দেখে পরবর্তী সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি বুঝবেন যে, আপনার ক্রোয়েশিয়া ভিসা টির কি পরিমানে অগ্রগতি হয়েছে।

 

৬ষ্ট ধাপঃ অনলাইন ভিসার অ্যাপ্লিকেশন টি ট্র্যাক করুন

 

আপনাকে যেই কনফার্মেশন মেইল পাঠানো হবে সেই ই-মেইলের মাধ্যমে আপনি ট্র্যাক করতে পারবেন আপনার ক্রোয়েশিয়া ভিসা আবেদনের কাজ কতটুকু সম্পাদক হচ্ছে। ইমেইলে একটি লিঙ্ক দেওয়া থাকবে যে লিংকে ঢুকলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ভিসা আবেদনের কাজ কতটুকু সম্পন্ন হচ্ছে।

 

নাকি স্থগিত আছে, নাকি আপনাকে আবার কোন ধরনের কাজের ভিসা অফিসে যেতে হবে। আপনি চাইলে একটি সঠিক মোবাইল নাম্বার ও তাদের দিতে পারেন যার মাধ্যমে ভিসার সকল আপডেট সংক্রান্ত তথ্য গুলো মেসেজ হিসেবে আপনার মোবাইল এ আসতে পারে। এভাবেও আপনি চাইলে আপনার ভিসার অ্যাপ্লিকেশনটি ট্র্যাক করে নিতে পারেন।

 

৭ম ধাপঃ ক্রোয়েশিয়া -র পাসপোর্ট টি সংগ্রহ করে নিন

 

এখন আপনার আসল কাজ হবে ভিসা প্রসেসিং অফিস থেকে আপনার বহুল কাঙ্খিত পাসপোর্ট টি গ্রহণ করে নেওয়া। তার পাশাপাশি আপনার প্র‍য়োজনীয় সকল নথি চেক করে নিবেন, যাতে কোনো ভুল হলে সংশোধন করে নিতে পারেন তা না হয়ে আপনার সমস্যা হয়ে পারে৷

 

এছাড়া ও আপনি চাইলে আপনার পাসপোর্ট টি অতিরিক্ত চার্জের দিয়ে কুরিয়ার মাধ্যমে নিয়ে নিতে পারেন। আপনার জন্য প্রস্তাবিত এয়ারপোর্ট এ প্রবেশ এর সঠিক তারিখ, প্রবেশ পথের বিশেষ সংখ্যা, প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ভ্রমণ এর জন্য ১০০% বৈধ কিনা এবং এই ভিসার সকল বিবরণ বিবেচনা করে  পরীক্ষা করে নিতে হবে, এটি আপনার একান্ত দায়িত্ব। 

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসার আবেদন কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য

 

বাংলাদেশ এ ক্রোয়েশিয়া -র ভিসা প্রসেসিং এর কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য গুলো নিন্মরূপঃ

 

ঠিকানাঃ

বাড়ি- ৪৪, রোড- ১৬, (পুরাতন ২৭), ধানমন্ডি-

ঢাকা – ১২০৯, বাংলাদেশ।

 

ফোনঃ

+৮৮ -০২ -৯১৩ ৮২৪ ৬৫২

 

ইমেইলঃ Croatian.consulate@gemcongroup.com

 

ক্রোয়েশিয়া ভিসা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা

 

আমি কিভাবে ক্রোয়েশিয়াতে PR পেতে পারি?

 

ক্রোয়েশিয়াতে স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই পাঁচ বছর ধরে দেশে বসবাস করতে হবে। অনুমোদন পাওয়ার জন্য আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট, স্থায়ী আয়ের প্রমাণ, স্বাস্থ্য বীমা এবং সামাজিক নিরাপত্তা এবং ক্রোয়েশিয়ান ভাষার একটি প্রাথমিক জ্ঞান থাকার প্রয়োজন হবে।

 

ক্রোয়েশিয়াতে কাজ পাওয়ার সহজ উপায় কি?

 

কখনও কখনও চাকরি খোঁজার সবচেয়ে সহজ উপায় হল আপনার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন এবং পরিচিত দের কাছ থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া। তাদের সাথে কথা বলুন এবং তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে কিনা তা খুঁজে বের করুন। রেফারেল গুলি হল একটি খুব সাধারণ উপায় যা লোকেরা চাকরি খুঁজে পায়, বিশেষ করে ক্রোয়েশিয়া তে, তাই এটি হতে পারে একটি সর্বোত্তম উপায়।

 

ক্রোয়েশিয়ায় ওয়ার্ক পারমিট পেতে কতক্ষণ লাগে?

 

ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার প্রক্রিয়াটি ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ  এর মধ্যেই হয়ে যায়। ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করার পরে, আমরা এটি আপনাকে কুরিয়ার এর মাধ্যমে পাঠানো হবে। এবং তার সাথে আপনি আপনার দেশে ক্রোয়েশিয়া দূতাবাস বা ভিএফএস গ্লোবাল এ ভিসার জন্য আবেদন জমা দেবেন।

 

শেষ কথা!

 

আমাদের আজকের আর্টিকেলটিতে থাকা সকল ইনফরমেশন অনুসরণ করলে আপনি ক্রোয়েশিয়া ভিসা সংক্রান্ত সকল প্রকার জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে পারেন খুব সহজেই। আমরা আশা করবো আপনার ক্রোয়েশিয়া তে যাত্রা শুভ হবে। তবে আরো একটি ব্যাপার খেয়াল রাখবেন, যখন ভিসা প্রসেসিং করবেন তখন আরও ভালো ভাবে যাচাই – বাছাই করে নিবেন। কারন তা না হলে আপনার প্রতারিত হবার বিভিন্ন সম্ভাবনা থাকতে পারে।

 

Visited 81 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here