বাংলাদেশে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক এখন মোট ১০ টি। চলুন জেনে নেয়া যাক কোন ১০ টি ব্যাংক পরিচালিত হচ্ছে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক এবং ব্যাংক গুলো সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু ধারনা।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক বলতে কি বুঝায়?
ব্যাংক বলতে কি বুজি? এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে টাকা জমা রাখা যায় আবার প্রয়োজনে সেখান থেকে ঋন গ্রহন করা যায়। সাধারণ বাণিজ্যিক যে ব্যাংক গুলো রয়েছে সেগুলোতে মূলত সুদ নামক টার্মটি বেশ জনপ্রিয়। এখানে সুদের মাধ্যমেই পুরো ব্যাপারটা ঘটে।
যখন কেউ টাকা জমা রাখে তখন তার গুচ্ছিত টাকার উপর নিদিষ্ট পরিমাণের সুদ ধার্য করা হয়ে থাকে যা নিদিষ্ট সময় পড়ে ভোগ করতে পারে। অন্যদিকে কেউ যদি ঋন গ্রহন করতে চায় তাকেও নিদিষ্ট পরিমাণের সুদ প্রদান করতে হয়। সুদ বলতে বোঝানো হচ্ছে সেই অতিরিক্ত অর্থকে যা মূল টাকার সাথে পরিশোধ করে বা মাসিক হারে পরিশোধ করা হয়ে থাকে।
এবার মূল বিষয়টি হচ্ছে ইসলাম ধর্মে সুদ গ্রহন ও প্রদান উভয় পক্ষকে হারাম করা হয়েছে। জেনে নিন সুদকে কেনো হারাম করা হয়েছে ইসলামে। যার কারনে যারা ইসলাম ধর্ম অনুসারী তারা প্রচলিত সুদ যুক্ত ব্যাংকিং সিস্টেমকে উপেক্ষা করে। এবং সেই সময় গড়ে উঠে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক, যেখানে সুদের কোনো কারকার নেই। সম্পূর্ণ সুদ বিহীন এই ব্যাংকিং ব্যবস্থাটি প্রতিটি মুসলিম পজিটিভ ভাবে গ্রহন করে থাকে।
এখানে একটি প্রশ্ন মনে জাগে যে, যদি সুদ গ্রহন বা প্রদান না করাই হয়ে থাকে তবে ব্যাংক কার্যক্রম চলে কিভাবে? এটা কি সেচ্ছাসেবা টাইপ কোনো ব্যাংকিং সেবা? মোটেও না, এটা বুজতে হলে আগে বুজতে হবে সুদের ব্যাপারটা হারাম কেনো আর কোন অংশটি হারাম।
ধরুন আপনি একটি ব্যবসা করলেন। সেখানে লাভ লস দুইটারই সম্ভাবনা রয়েছে। আপনার ব্যবসাতে কেউ যদি বিনিয়োগ করে তবে আপনার লাভের ভাগ সে যেমন পাবে তেমনই লস হলে সেই ভাগও পাবে। এটাই মূলত থিম।
একটা সুদ দ্বারা পরিচালিত ব্যাংকে যখন আপনি টাকা রাখবেন তখন ব্যাংকটি লাভ করুক বা লস, সেটির দিকে আপনার চিন্তা থাকবে না কারন আপনাকে সময় শেষে আসল টাকা সহ সুদ দিতে ব্যাংক বাধ্য। কিন্তু ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংক গুলোর ক্ষেত্রে এমন কোনো কন্ডিশন নেই। ব্যাংক যদি লাভ করে তবে আপনাকে লভ্যাংশ দেয়া হবে, ব্যাংক যদি লস করে আপনাকেও লসের ভাগিদার হতে হবে।
বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক সমূহ
এই পর্যায়ে জানাবো সেই সকল ব্যাংক সম্পর্কে যা বাংলাদেশে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালনা করা হয়। উক্ত ব্যাংক গুলোতে লেনদেনের মাধ্যমে আপনি সুদ গ্রহন ও প্রদানের হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন। মূলত ইসলাম যেহেতু সুদ দেয়া ও নেয়ার অনুমতি দেয়নি তাই সকল ইসলাম ধর্ম অবলম্বনকারীর কাছে বিষয়টি বেশ গ্রহনযোগ্য। তবে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংক গুলোর মধ্যে থেকে খুবই সাবধানতার সাথে আপনার জন্য ঠিক হবে এমন ব্যাংকটি বেছে নেয়া খুব জরুরি। তাই পুরো আর্টিকেলটি ভালো ভাবে পড়বেন যাতে করে কোনো টার্ম মিস না হয়। তবে জেনে নেয়া যাক বাংলাদেশে প্রচলিত এমন ১০ টি ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংক গুলো সম্পর্কে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
দক্ষিন এশিয়ায় প্রথম ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে খ্যাতি সম্পন্ন ইসলামী ব্যাংক প্রথম বারের মত শুরু হয়েছিলো ১৯৮৩ সালে। বাংকটি বর্তমানে ৩৬.৯১% স্থানীয় এবং ৬৩.০৯% দেশের বাইরে বিনিয়োগ রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের বর্তমানে মোট ৪৫০ টি শাখা স্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশে ২য় বৃহত্তম ব্যাংক হিসেবেও পরিচিত। উভয়পক্ষের দিক থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মূলধনী কোম্পানি, এবং বেসরকারি খাতে তা রয়েছে প্রথম পজিশনে।
ইসলামী ব্যাংকের ঝুড়িতে বর্তমানে আছে
- ২৮৪ টি শাখা
- ২২৫ টি উপশাখা
- সর্বোমোট ১৮৫১ টি এটিএম বুথ
- ৫৩১ টি সিআরএম মেশিন
- ২৩৭৪ টি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা
ব্যাংকের প্রদানকৃত সেবার গুলো মধ্যে হাইলাইটেড
- আই ব্যাংকিং
- সেলফিন (অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ)
- এস এম এস ব্যাংকিং
- হোয়াট’স অ্যাপ ব্যাংকিং
- এম ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং
- এটিএম বুথ সার্ভিস
- সিআরএম বা সিডিএম সেবা
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট সমূহ
বাংলাদেশে প্রচলিত যত ধরনের ব্যাংক একাউন্ট আছে সেগুলোর মধ্যে প্রায় সব গুলোই ইসলামী ব্যাংকে এভেইলেবল। বাংলাদেশে সাধারণত জনপ্রিয় ব্যাংক একাউন্ট গুলো হচ্ছে : ১) চলতি অ্যাকাউন্ট (Current Account) ২) সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট (Savings Account) ৩) পুনর্নবীকরণ ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট (Recurring Deposit Account) ৪) ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট (Fixed deposit Account) বাংলাদেশের পেক্ষাপটে আপনি যদি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক নিয়মে ব্যাংকিং কার্যক্রম করতে চান তবে ইসলামী ব্যাংকে আপনার লিস্টের প্রথমে রাখতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইট : https://www.islamibankbd.com
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠান যা বর্তমানে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির পজিশনে রয়েছে। এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
ব্যাংক এর ইতিহাস
১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক তাদের কার্যক্রম শুরু করে, তৎকালীন সময়ে ব্যাংকটির নাম ছিলো আল-বারাকা ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড পরবর্তীতে ২০০৪ সালে ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের কারনে নাম হয়ে যায় ওরিয়েন্টাল ব্যাংক। সেই সময় ব্যাংকের অবস্থা প্রচুর অবনতি হয়।
ঋন খেলাপির কারনে ব্যাংকটির লাভ তো নেই বরং লসে চলে আসছে এতোদিনে সেই সময় ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ব্যাংকটি পুনগঠিত হয় ২০০৬ সালে এবং নামকরন করা হয় আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক হিসেবে এবং এখন অব্দি এই নামেই পরিচালিত হচ্ছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯ সালে ব্যাংকটির লাভ নেই বরং লোকসানের পরিমাণই ৪২ কোটি টাকা।
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শাখা সমূহ
বর্তমানে ব্যাংকটি ৬ টি বিভাগে তাদের শাখা তৈরি করেছে যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শাখা রয়েছে ঢাকাতে। কোন বিভাগে কয়টি শাখা রয়েছে তার একটি সারাংশ দিচ্ছি।
- ঢাকাতে মোট শাখার পরিমাণ ১৬ টি
- চট্রগ্রামে ব্যাংকটির ৫ টি শাখা রয়েছে
- সিলেট বিভাগে মোট শাখার পরিমাণ ৫ টি
- রাজশাহীতে শাখার পরিমাণ দাড়ায় মোট ২ টি
- খুলনা বিভাগে এর পরিমাণ ৪ টি
- এবং সবচেয়ে কম শাখা রয়েছে বরিশালে যার পরিমাণ মাত্র একটি
তাছাড়া দেখের আর কোনো বিভাগে বা অঞ্চলে আইসিবি ব্যাংক এর কোনো শাখা উপশাখা নেই। যে সকল বিভাগ উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে কোন বিভাগে ব্যাংকের অবস্থান কোথায় তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ওয়েবসাইট : https://www.icbislamic-bd.com
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকটি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক যা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে। ব্যাংকটির বর্তমান ধরন পাবলিক প্রতিষ্ঠান যা ঢাকা স্টোক এক্সচেঞ্জ এবং চট্রগ্রাম এক্সচেঞ্জের অন্তর্ভূক্ত।
ব্যাংকটি তার গ্রহকদের তিন ধরনের সেবা বর্তমানে দিয়ে থাকে। যথাঃ
- ইসলামী ব্যাংকিং
- বিনিয়োগ ব্যাংকিং
- বৈদেশিক বাণিজ্য
উল্লেখ্য যে, ব্যাংকটিতে অন্য সব ব্যাংকের মতই সকল ধরনের একাউন্ট রয়েছে। আপনি যদি জানতে চান আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট সম্পর্কে এবং কিভাবে একাউন্ট খোলা যায় তবে উক্ত লিংকে ক্লিক করুন।
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক বর্তমানে মোট ৭ টি বিভাগে মোট ২০১ টি ব্যাংকিং শাখা স্থাপন করেছে। যেখানে রয়েছে মোট ২০১ টি এটিএম বুথ। বিভাগ গুলো নাম হচ্ছে : ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খলনা, রংপুর এবং বরিশাল। বিভাগ ভেদে Branch এর শাখার সংখ্যা সমূহ
- ঢাকা বিভাগে ৫৯ টি
- চট্রগ্রাম বিভাগে ৩০ টি
- সিলেট বিভাগে ৭ টি
- রংপুর বিভাগে ৪ টি
- খুলনা বিভাগে ৯ টি
- রাজশাহী বিভাগে ৫ টি
- বরিশাল বিভাগে ৬ টি
সকল বিভাগের ব্রাঞ্চের এড্রেস সহ ডিটেইলস ইনফরমেশনের জন্য এখানে ক্লিক করুন। আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যেমন একাউন্ট খোলার নিয়ম, কার্ড সমুহ, সুবিধা অসুবিধা তবে উক্ত লিংকে ক্লিক করুন।
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক এর ওয়েবসাইট : https://www.aibl.com.bd
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
১৯৯১ সালে অনুমোদন প্রাপ্ত এবং ২০০১ সালে কার্যক্রম শুরু করা শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক সম্পূর্ণ ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক পরিচালিত যার মানে এই যে এখানে বিনিয়োগকারীরা তখনই মুনাফা গ্রহন করবে যখন ব্যাংক উক্ত অর্থের মাধ্যমে বিনিয়োগ করে বা অনান্য কার্জক্রমের মাধ্যমে।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক এর ব্রাঞ্চসমূহ
ব্যাংকটিতে মোট শাখা উপশাখা সহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মোট – স্থানে। মোট সাতটি বিভাগের মধ্যে কোনটিতে কত পরিমাণের শাখা রয়েছে তা সম্পর্কে জানা যাক।
- ঢাকায় মোট ব্রাঞ্চের পরিমাণ ৭২ টি
- চট্রগ্রামে বিভিন্ন স্থানে ব্রাঞ্চ সংখ্যা ২৯ টি
- সিলেটে এর পরিমাণ দাড়ায় ৭টি তে
- খুলনায় ব্যাংকটির শাখা হয়েছে ৮ টি
- রাজশাহীতে মোট ব্রাঞ্চ এর সংখ্যা ১২ টি
- বরিশালে ব্যাংকের শাখা রয়েছে ৪ টি
ব্যাংকের বিভাগ ভিত্তিক ব্রাঞ্চের বিস্তারিত লোকেশন এবং অন্যান্য তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন। তাছাড়াও ব্যাংকটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণের এটিএম বুথ। আপনার এড়িয়ার আশেপাশে কয়টি ও কোথায় কোঠায় এটিএম বুথ রয়েছে তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের প্রদানকৃত সেবা সমূহ
তাদের প্রদানকৃত সেবা গুলো মধ্যে যে সকল প্রকল্প গুলো রয়েছে তা হলো : টাকা দ্বিগুণ/তিনগুণ বৃদ্ধি প্রকল্প, মাসিক উপার্জন প্রকল্প, মাসিক আমানত প্রকল্প, হজ্ব ডিপোজিট প্রকল্প, মিলিয়নিয়ার প্রকল্প, হাউজিং ডিপোজিট প্রকল্প, ক্যাশ ওয়াক্ফ ডিপোজিট প্রকল্প, লাখপতি ডিপোজিট প্রকল্প, মোহর ডিপোজিট প্রকল্প, শিক্ষা ডিপোজিট প্রকল্প, বিবাহ ডিপোজিট প্রকল্প, কিস্তিতে গৃহসামগ্রী ক্রয় প্রকল্প, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিনিয়োগ কর্মসূচি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কর্মসূচি, মাঝারি উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কর্মসূচি, হাউজিং বিনিয়োগ প্রকল্প, গ্রামীণ বিনিয়োগ কর্মসূচি, গাড়ি ক্রয় বিনিয়োগ প্রকল্প এবং মহিলা উদ্যোক্তা বিনিয়োগ প্রকল্প, সিএনজি কনভারশন প্রকল্প, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিনিয়োগ প্রকল্প, বিবাহ বিনিয়োগ প্রকল্প, শিক্ষা বিনিয়োগ প্রকল্প এবং এক্সিকিউটিভ বিনিয়োগ প্রকল্প। তাছাড়া শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানুন এখান থেকে।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট : https://sjiblbd.com/ATM_Locator.php
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
বেস্ট ইনোভেশন- ফাইন্যান্স ইনোভেশন ইন ব্যাংকস বিভাগে এওয়ার্ড প্রাপ্ত ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৯৫ সালে। প্রথম দিকে ব্যাংকটির নাম ছিলো সোস্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড যা পরবর্তীতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক নামে রুপান্তরিত হয়। বর্তমানে ব্যাংকটির ঝুড়িতে আছে ১৭২ টি শাখা, ১০৭ টি উপশাখা এবং ২২৪ টির মত এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট। সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সেবা সমূহ
বিনিয়োগ স্কপস : উক্ত ব্যাংকে আপনি নিম্ম বর্নিত উৎস গুলোতে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
- বাই-মুয়াজ্জল
- এইচপিএসএম
- এইচপিএসএম ইজারা
- মুরাবাহা
- মুশারাকা
- বাই-সালাম
- কোয়ার্ড এবং অন্যান্য
আমানত গ্রহন : নিম্মে উল্লেখিত বিষয় বস্তুর আলোকে আপনি আপনার সম্পদ সমূহ আমানত রাখতে পারবেন।
- মুদারবা স্কিম আমানত
- আল ওয়াদিয়াহ চলতি হিসাব
- মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব
- মুদারাবা সঞ্চয়ী আমানত
- মুদারাবা মেয়াদী আমানত
- নগদ ওয়াকফ আমানত
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে প্রচলিত কার্ড সমূহ
- এসআইবিএল ক্রেডিট কার্ড
- এসআইবিএল জামিল ডেবিট কার্ড
- এসআইবিএল হজ কার্ড
সোশ্যাল ইসলামী বাংক এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট : https://www.siblbd.com
এক্সিম ব্যাংক (বাংলাদেশ)
Export Import Bank of Bangladesh কেই মূলত এক্সিম ব্যাংক নামে পরিচিতি লাভ করেছে। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকটি ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে। প্রথম দিকে ব্যাংকটির নাম ছিলো বেক্সিম ব্যাংক কিন্তু আইনগত বেশ কিছু ঝামেলার কারনে সেটিকে এক্সিম ব্যাংক নামেই আখ্যায়িত করা হয়।
ব্যাংকটি ২০০৪ সালে বাংলাদেশের দুই পুজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ পরিসংখ্যান ২০১৩ অনুযায়ী, ব্যাংকির আয় ২০,৪৭৬,৩১৮,১০০ টাকা। এবং মোৎ সম্পদ রয়েছে ১৯৫,৫৪২,২৪৭,৫৪৫ টাকা।
২০০৪ সাল থেকে ব্যাংকটি ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালন করে। তবে এখানে কেবল মুসলিমরাই নয় অমুসলিমদেরও ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে যার যার ধর্মীয় ব্যাপার গুলো সঠিক ভাবে পরিচালনা করা হয়। ব্যাংকটির এখন প্রদান সেবা গুলো হচ্ছে :
- রেটেইল ব্যাংকিং
- কর্পোরেট ব্যাংকিং
- এসএমই ব্যাংকিং
- কৃষি ব্যাংকিং
- বৈদেশিক বাণিজ্য
ব্যাংকটি সারাদেশে ১৩০ টি শাখা নিয়ে গঠিত। এবং এটিএম বুথের পরিমাণ ৪৫ টি। আপনার এড়িয়া ভিত্তিক ব্রাঞ্চ সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন ও এটিএম বুথ সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
তাছাড়া সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংকের সাথে যুক্ত আছে এক্সিম এক্সচেঞ্জ কোম্পানি Uk ; এক্সিম এক্সচেঞ্জ কোম্পানি Canada ; এক্সিম ইসলামী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংক একটি পাবলিক লিমিটেড ব্যাংক যা প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৯৯ সালে। এবং ২০০৮ সালে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের সাথে যুক্ত হয়। বর্তমানে ব্যাংকটির ঝুড়িতে হয়েছে 197 টির মত শাখা সারাদেশ জুরে।
ব্যাংকটি যখন শুরু করা হয় তখন এর মূলধনের পরিমাণ ছিলো প্রায় ১ বিলিয়ন। এখন যার পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলছে। এর পেক্ষিতেই বর্তমানে ব্যাংকটির রয়েছে : ৯ টি জোন, ১৯৭ টি ব্রাঞ্চ, ২০৯ টি এটিএম বুথ, ১৪৪ টি সাব ব্রাঞ্চ, ৭৮ টি এজেন্ট ব্যাংকিং এবং ২৭ টি কালেকশন বুথ।
মোট ১০ টি বিভাগ ভিত্তিক এড়িয়া থেকে আপনার লোকেশনের আশেপাশে ব্রাঞ্চ কোথায় আছে তা জানতে এখানে ক্লিক করুন। তাছাড়া এটিএম বুথ গুলোর লোকেশন জানতে এখানে ক্লিক করুন। এবং আপনি যদি জানতে চান কিভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে হয় এবং সেই সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় তবে উক্ত লিংক থেকে দেখে নিন।
ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড
ইউনিয়ন ব্যাংক মূলত এমন একটি বাণিজ্যিক ব্যাংক যা সরাসরি ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত। উক্ত ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে বেশি সময় হয়নি, ২০১৩ সাল থেকে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এতোদিন ধরে। ব্যাংকটির গ্রাহক সেবার মধ্যে যেগুলো রয়েছে তা হলো :
- ইসলামী ব্যাংকিং
- ফাইন্যান্স এন্ড বীমা
- কনসুমার ব্যাংকিং
- যৌথ্য ব্যাংকিং
- ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং
- বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি
ব্যাংকটিতে বর্তমানে মোট ১০৪ টি ব্রাঞ্চ রয়েছে সারাদেশে। আপনার এড়িয়ার আশেপাশের ব্রাঞ্চ গুলোর লোকেশন জানতে এখানে ক্লিক করুন। তাছাড়া এটিএম বুথের সংখ্যা মোট ৮২ টি এবং এটির লোকেশন ডিটেইলস জানুন এখান থেকে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এন আর বি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডই ২০২১ সালে তাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম ও ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক রেখেছে। গ্লোবাল ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক কার্যক্রমে একেবাইরেই নতুন। ২০২১ সালের জানুযারি মাসের ১ তারিখে সকল কার্যক্রম শরিয়াহ মোতাবেক শুরু করেছে।
বর্তমানে ব্যাংকটি তার গ্রাহকদের যে সকল সেবা গুলো প্রদান করছে তা হলো –
- কনসুমার ব্যাংকিং
- এস এম ই ব্যাংকিং [ জানুন SME ব্যাংকিং কি সেই সম্পর্কে ]
- এন আর বি ব্যাংকিং [ জানুন NEB ব্যাংকিং কি সেই সম্পর্কে ]
- ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং (ডুয়েল কারেন্সি)
- গো ফাস্ট ইন্টারনেট ব্যাংকিং
- এজেন্ট ব্যাংকিং
মোট ৮ টি জেলায় ব্যাংকের সকল ব্রাঞ্চের নাম ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার গুলো জানতে এখানে ক্লিক করুন। তবে জেলা গুলোর নাম উল্লেখ করে দিচ্ছি, জেলা গুলো হলো – ঢাকা, চট্রগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহ, এবং রংপুর।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ জনপ্রিয় লাভ করে। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া ব্যাংকটি সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসলেও ২০২০ সালে পূর্নাঙ্গ ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক এ পরিণত হয় এবং সরকার এর অনুমোদন প্রদান করে। ব্যাংকটির রয়েছে ব্যাপক পরিমাণের এটিএম নেটওয়ার্ক সিস্টেম।
এছাড়া ব্যাংকটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক লকার সিস্টেম। আপনার লোকেশন অনুযায়ী কোথায় কোথায় ব্যাংকের লকার সার্ভিসটি আছে তা দেখতে এখানে ক্লিক করুন। সারাদেশে মোট ৫ টি বিভাগ জুরে মোট ১৩৮ টি শাখা রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের যার স্থান গুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন। তাছাড়া ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এটিএম সার্ভিস সহ সব ধরনের কার্ড ব্যবহারের সুযোগ তো থাকছেই।
বিস্তারিত তথ্য জানুন ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে : www.standardbankbd.com/
–
পরিশেষে, এই ছিলো ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক গুলোর তালিকা এবং সেই ব্যাংক গুলো সম্পর্কে ব্যাসিক কিছু তথ্য। ব্যাংক সংক্রান্ত আরো তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটি ভিজিট করুন। ব্যাংকিং সেবা আরো ভাবে ভাবে বুজতে এবং এবং প্রচলিত নিয়ম সম্পর্কে ধারনা দিতে বাংলা আলো প্রতিনিয়ত আপডেট দিয়েই যাচ্ছে। ধন্যবাদ।