সহজে থানায় জিডি করার নিয়ম । সরাসরি ও অনলাইনে জিডি 

0
20

থানায় জিডি করার নিয়ম

একটি দেশের নাগরিক হিসেবে সেই দেশের প্রশাসনের সাহায্য গ্রহন করতেই হতে পারে। বিশেষ করে পুলিশের সাহায্য পেতে হলে প্রথম যে ধাপটি সম্পন্ন করতে হয় সেটিকেই জিডি বলা হয়ে থাকে। যার কারনে দেশের প্রতিটা নাগরিকের থানায় জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে জানাটা জরুরি। আমাদের চলার পথে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে থাকে যার ফলে পুলিশের সরাপন্ন এবং জিডি করতে হতে পারে। তাই এবারের আর্টিকেলে কভার করবো থানায় জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, যেখানে থাকবে সরাসরি থানায় গিয়ে জিডি করা এবং অনলাইনে জিডি করার নিয়মও। তবে প্রথমেই জেনে নেয়া যাক জিডি বলতে কি বুঝানো হচ্ছে। 

জিডি কি?

(GD) জিডি শব্দটি পরিচিত ইংরেজি শব্দ জেনারেল ডায়েরি (Genaral Dairy)  শর্ট ফর্ম হিসেবে যার বাংলা অর্থ হচ্ছে সাধারণ ডায়েরি। প্রাত্যহিক জীবনে ঘটে ঘটনাগুলোর মধ্যে যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে যার জন্য আইনি সহযোগিতা নেওয়া হয় এবং সেই ঘটনার বিস্তারিত জানান দেওয়ার মাধ্যমে যে দরখাস্ত করা হয় বা লিখিত বিবৃতি প্রদান করা হয় সেটিকে জিডি নামে আখ্যায়িত করা হয়।

আইনি সহযোগিতা প্রাপ্তির জন্য এটি হচ্ছে প্রথম ধাপ এবং জিডির উপর ভিত্তি করে প্রশাসন যে কোন ঘটনার উপর তদারকি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। জি ডি যে কেবল বর্তমানে ঘটে ঘটনার জন্য করা হয় তা নয় ভবিষ্যতে  ঘটতে পারে এমন ঘটনার প্রেক্ষিতে যদি আইনের সহযোগিতার প্রয়োজন হয় তাহলেও জিডি করা জরুরী। 

কেনো ও কখন জিডি করবেন?

অনেকগুলো কারণে জিডি করার প্রয়োজন হতে পারে তবে প্রধানত দুইটি কারণকে সামনে রেখেই জিডি সংক্রান্ত কার্যক্রম করা হয়। প্রথমত কোন কিছু হারিয়ে গেলে ছুটির জন্য জিডি করা হয়।  দ্বিতীয়তঃ অপরাধমূলক কিছু ঘটার সম্ভাবনা থাকলে সে ঘটনার প্রেক্ষিতে জিডি করা হয়। 

কোন কিছু হারিয়ে যাওয়া বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস অথবা যে কোন  ব্যক্তি, বস্তুকে  বোঝানো হয়েছে।  উদাহরণস্বরূপ ডকুমেন্টস এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সনদ জন্ম নিবন্ধন সনদ জাতীয় পরিচয় পত্র সহ গুরুত্বপূর্ণ সার্টিফিকেট বা  কাগজপত্র। 

তাছাড়া ২৪ ঘন্টার বেশি সময় যদি কোন ব্যক্তি নিরুদ্দেশ থাকে তবে তার জন্য জিডি করা হয়ে থাকে । তাছাড়া অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বলতে বোঝানো হয়েছে যদি কেউ বা কারা আপনাকে হুমকি দিয়ে থাকে বা আপনি নিরাপত্তার ব্যাপারে শঙ্কা প্রকাশ করেন তবে উক্ত ব্যাপারেও জিডি করতে পারবেন। 

থানায় জিডি করার নিয়ম 

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে জিডি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ এবং সরল রাখা হয়েছে যার কারণে প্রতিটি মানুষ প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে আইনি সহযোগিতা প্রাপ্তির জন্য স্বল্প সময়ের মধ্যেই জিডি করতে সক্ষম হয়।  তবে এখানেও বেশকিছু বিষয় রয়েছে যেগুলোতে গুরুত্ব আরোপের প্রয়োজন হয়।  যেমন যখন কোন অপরাধ সংঘটিত হয়,  তখন অপরাধ সংঘটিত স্থানের আশেপাশে নিকটতম যে থানা রয়েছে সেই থানাতেই কেবল জিডি করতে পারবেন।  এক্ষেত্রে অপরাধ  সংঘটিত হয়েছে এমন স্থানের আশেপাশে কোন থানা রয়েছে সেটি প্রথমেই খুঁজে বের করতে হবে।  পরবর্তীতে উক্ত থানায় গিয়ে জিডি করা সংক্রান্ত যত ব্যাপার রয়েছে সেগুলো সম্পাদন করতে হবে। 

তাছাড়া থানায় জিডি করার নিয়ম হিসেবে আরো একটি নির্ধারিত বিধান রয়েছে যে, উক্ত দেশের যেকোনো নাগরিক ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। মূলত জিডি করার জন্য নির্ধারিত কোনো সময়সীমা নেই সপ্তাহে ৭ দিন, দিনে ২৪ ঘন্টা যেকোন সময় আপনার প্রয়োজনের সুবাধে জিডি করার জন্য থানায় যেতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় অপরাধ সংঘটিত হওয়ার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থানায় গিয়ে জিডি করা এতে করে অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দ্রুততম কার সাথে কাজ করা সক্ষম হয়। 

থানায় যাওয়া এবং জিডি করা সংক্রান্ত যে সকল কার্য সম্পাদন করতে হয় তা নিম্নে উল্লেখিত হলো: 

  •  থানায় প্রবেশ এবং সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে জিডি করার ইচ্ছা পোষণ করা
  •  ঘটনা যেটা ঘটেছে সেটা মৌখিক বিবরণ প্রদান করা
  •  উক্ত ঘটনা সংক্রান্ত প্রশ্ন এর উত্তর প্রদান করা
  •  সবশেষে একটি মৌখিক বিবরণী প্রস্তুত করা যাকে দরখাস্ত নামেও আখ্যায়িত করা হয়

উল্লেখ্য যে উক্ত দরখাস্তটি আপনার নিজের করে দিতে হবে তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কর্মরত ব্যক্তি যদি ব্যস্ত না হয়ে থাকে তবে তিনি নিজেই উক্ত কাজটি করে থাকেন।  এবং যদি কর্মব্যস্ততার কারণে করে না দেয় তবে আপনাকে নিজে থেকে জিডি করার দরখাস্ত প্রস্তুত করতে হবে। এক্ষেত্রে জিডি করার সুবিধার্থে দরখাস্ত লেখার নিয়ম নিন্মে উপস্থাপন করা হল। 

জিডির দরখাস্ত লেখার নিয়ম 

নিম্মে জিডি করার যে নিয়ম রয়েছে তা উপস্থাপন করা হলো। এটা অনেকটা স্বাভাবিক দরখাস্ত লিখার মতই, তবে বেশ কিছু স্থানে হাইলাইট করার মতো বিষয় রয়েছে যা নিম্নে প্রকাশ করা হলো: 

১)  দরখাস্তের শুরুতেই তারিখ দিতে হবে।  তার বরাবর নিচেই সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট বরাবর  প্রদান করে,  থানার নাম ও জেলা অথবা মেট্রোপলিটন এর নাম দিতে হবে। 

উদাহরণস্বরূপঃ 

০১/০১/২০২২

বরাবর, 

অফিসার ইনচার্জ,

…  থানা, …  (জেলা/ মেট্রোপলিটন এর নাম)

২) এই পর্যায়ে বিষয়ে লিখতে হবে বিষয় হিসাবে লিখবেন জিডি করার কারণ অথবা জিডি  করার আবেদন। 

 উদাহরণস্বরূপঃ 

বিষয়ঃ সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে

৩) অন্যান্য সকল ধরনের দরখাস্তের মতো এখানেও “জনাব” দ্বারা সম্মোধন করে প্রথমেই আপনার নাম, বয়স, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর,  পিতার নাম,  থানা ও জেলার নাম লিখবেন।  একুশে যেই কারনের  জন্য জিডি করতে চাচ্ছেন সেই কারণ বিষয়ক বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করবেন এখানেই দরখাস্তের মূল অংশে সম্পর্কে জানান দিতে হয়। 

উদাহরণস্বরূপঃ 

 জনাব, 

বিনীত নিবেদন এই যে,  আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, নাম ___, বয়স ___, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ___,  পিতার নাম ___,  থানা ও জেলার নাম ___ এই মর্মে জানাচ্ছি যে নিম্নে উল্লেখিত জিনিস আজ ___  তারিখ, ___  ঘটিকায়, ___  স্থান থেকে হারিয়ে গেছে। 

 অতঃপর উক্ত বিষয়ে প্রতিটি খুঁটিনাটি ঘটনার বর্ণনা সরূপ আপনার বিবরণ পেশ করবেন। 

৪) দরখাস্তে প্রত্যেকটি বিষয় উপস্থাপন শেষে সমাপ্তি ঘটানোর পর নিম্নে বিনীত লিখে নিজের নাম লিখবেন এরপর পিতা মাতার নাম,  বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা লিখে সবশেষে নিজের মোবাইল নাম্বারটি লিখে জমা দেবেন। 

উদাহরণস্বরূপঃ 

বিনীত,

আপনার নাম : ———-

পিতার নাম : ———-

মাতার নাম : ———-

বর্তমান ঠিকানা : ———-

স্থায়ী ঠিকানা : ———-

 মোবাইল নাম্বার : ———-

জিডির নমুনা দরখাস্ত 

আপনার করা জিডিটি যদি কিছু হারিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত জিডি হয় তবে উক্ত বিষয়টির নিখুঁত বিবরণ পেশ করতে হবে। তাছাড়া এমন কোন তথ্য যা বস্তুটি সনাক্ত করার কাজে সাহায্য করবে তা উপস্থাপন করতে হবে। যে যত তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে পারবেন পণ্যটি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি থাকবে। 

যদি হুমকি সংক্রান্ত বিষয় হয়ে থাকে তাহলে হুমকি প্রদান করেন নাম, ঠিকানা সহ সকল বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। কখনো কোথায় হুমকি দিয়েছে এবং কোন বিষয়ে হুমকি দিয়েছে সে সকল তথ্য দরখাস্তে উল্লেখ থাকা জরুরি। হুগলি সংক্রান্ত জিডি করতে একজন সাক্ষী প্রয়োজন এক্ষেত্রে তার নাম ও ঠিকানা সাথে লিখে দিতে হবে। 

এই পর্যায়ে জিডির  একটি নমুনা দরখাস্ত উপস্থাপন করছি

০১/০১/২০২২

বরাবর, 

অফিসার ইনচার্জ,

___ থানা, ___ (জেলা/ মেট্রোপলিটন এর নাম)

বিষয়: সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে

জনাব

বিনীত নিবেদন এই যে,  আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, নাম ___, বয়স ___, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ___,  পিতার নাম ___, থানা ও জেলার নাম ___ এই মর্মে জানাচ্ছি যে নিম্নে উল্লেখিত জিনিস আজ ___  তারিখ, ___ সময়, ___  স্থান থেকে হারিয়ে গেছে। 

এরপর উক্ত বিষয়ে প্রতিটি খুঁটিনাটি ঘটনার বর্ণনা সরূপ আপনার বিবরণ পেশ করবেন। 

অতএব মহোদয়ের  কাছে আকুল আবেদন, বিষয়টি সাধারণ ডাইরি ভক্ত করে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি

বিনীত,

আপনার নাম : ———-

পিতার নাম : ———-

মাতার নাম : ———-

বর্তমান ঠিকানা : ———-

স্থায়ী ঠিকানা : ———-

মোবাইল নাম্বার : ———-

দরখাস্ত লেখার পরবর্তী কাজ 

সঠিকভাবে দরখাস্ত লেখা হয়ে গেল সেটি  দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাতে হস্তান্তর করবেন।  দরখাস্তটি ঠিকভাবে রাখা হলে সেদিকে থানার নথিতে তালিকাভুক্ত করবেন এবং তালিকাভুক্ত করে জিডির একটি কপি সিল,  স্বাক্ষর, তারিখ, জিডির নাম্বার সহ আবেদনকারীকে হস্তান্তর করবেন। 

এক্ষেত্রে থানায় নথিভূক্ত করার মানে এই যে আপনার জেলেদের সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।  এবং আপনাকে যে কপি জিডি দেয়া হয়েছে সেটা তন্ত গুরুত্বের সাথে সংরক্ষণ করবেন।  বিশেষ করে যে নাম্বারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।  যখন উক্ত জিডি সংক্রান্ত কোন বিষয়ে ফলাফল প্রাপ্য হবে তখন উক্ত জিডির নাম্বারটি প্রয়োজন হবে। 

অতঃপর এভাবেই সহজে সরাসরি থানায় গিয়ে জিডি করা  যায়।  এই পর্যায়ে জানবো  বর্তমানে অনলাইনে কিভাবে জিডি করা যায় সেই নিয়ম সম্পর্কে। 

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম 

সরাসরি থানায় না গিয়ে ডিজিটাল ডিভাইস এর মাধ্যমে যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে জিডি করার যে প্রক্রিয়া সেটিকে অনলাইন জিডি প্রসেস বলা হয়ে থাকে। আইনি সহযোগিতা সেবা আধুনিকায়ন করার উদ্দেশ্যে উক্ত উদ্ধৃত হয়েছে বেশ কিছু বছর আগে থেকেই।  

যদিও বর্তমানে প্রত্যেকটি জেলা-উপজেলায় উক্ত সেবাটি প্রদান করা যাচ্ছে না তবে প্রতিনিয়ত সার্ভার আপডেট করার মাধ্যমে প্রতিটি এলাকাকে অনলাইন জিডি আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।  অনলাইনে জিডি করার নিয়ম  গুলো জানিয়ে দেয়া হলো।

 অনলাইনে জিডি করার ক্ষেত্রে আপনার যা প্রয়োজন হবে: 

  • আবেদনকারী জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার
  • একটি সচল মোবাইল নাম্বার  যার মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করা যাবে
  • আবেদনকারীর জন্ম তারিখ
  • আবেদনকারীর লাইভ ছবি ভেরিফিকেশন

 জিডি করার জন্য অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করার পদ্ধতি

  • প্রথমেই অনলাইন জিডি ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করুন।
  • সেখানে থাকা মেনু অপশন গুলো থেকে রেজিস্ট্রেশন ক্লিক করতে হবে
  • অনলাইন জিডি নতুন নিবন্ধন করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই পেজটি ওপেন হবে। 
  • সঠিক জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার এন্ট্রি ও জন্ম তারিখ সিলেক্ট 
  • পরিচয়পত্র যাচাই-এ ক্লিক করতে হবে 
  • এই পর্যায়ে প্রদত্ত এনআইডির তথ্য সমূহ দেখা যাবে
  • এনআইডির ছবির সাথে নিবন্ধনকারী ব্যক্তির লাইভ ছবির ম্যাচিং করার জন্য “তথ্য সঠিক হলে এখানে ক্লিক করুন” বাটনে ক্লিক করতে হবে 
  • ক্যামেরা হতে লাইভ ছবি সংগ্রহের জন্য ” Allow Online GD to take Pictures and Record Video?” এ্যাকসেস এর জন্য Allow ক্লিক ক্যামেরা ওপেন হবে।
  • যথাযথভাবে ক্যামেরার সামনে মুখমন্ডল রাখা হলে মুখের চারপাশে সবুজ আইকন আসবে এবং স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফটো এনআইডিতে প্রদত্ত ফটোর সাথে ম্যাচিং হবে।
  • ফটো ম্যাচিং হওয়ার পর মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড প্রদান করার জন্য নতুন পেজ আসবে।
  • ইংরেজিতে ১১ সংখ্যার মোবাইল নাম্বার এন্ট্রি পাসওয়ার্ড ও নিশ্চিত পাসওয়ার্ড প্রদান (পাসওয়ার্ডে কমপক্ষে ৮ সংখ্যার হবে,সংখ্যাসূচক অক্ষর, বড় হাতের অক্ষর এবং বিশেষ অক্ষর থাকতে হবে (!@#$%^&()_+,উদাহরণ: Abcd@1234 ) 
  • প্রি- রেজিষ্টেশন সফল হয়েছে ম্যাসেজ আসবে এবং ok ক্লিক করতে হবে।
  • পূর্বে প্রদত্ত ইউজার নেম (মোবাইল নাম্বার) ও পাসওয়ার্ড এন্ট্রি করে লগইন ক্লিক করতে হবে।
  • লগইন করার পর পূর্বে প্রি-রেজিষ্টেশনের সময় প্রদান করা হয়নি এমন প্রয়োজনীয় তথ্য আপডেট করার জন্য পেজ আসবে।
  • NID তে প্রদত্ত বর্তমান ঠিকানা প্রদর্শিত হবে, প্রদর্শিত বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তনযোগ্য, আপনি চাইলে তা পরিবর্তন করে দিতে পারবেন। 
  • বর্তমান ঠিকানা এন্ট্রি করে পরবর্তী ক্লিক করতে হবে।
  • পূর্বে প্রদত্ত ছবি ও এনআইডির তথ্য দেখে পরবর্তী ক্লিক করুন।
  • ডিজিটাল স্বাক্ষর প্রদান করে সংরক্ষণ-এ ক্লিক করুন, প্রয়োজন হলে মুছে ফেলুন-এ ক্লিক করে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন। 
  • মোবাইল অপারেটর ও ইমেইল এন্ট্রি করে পরবর্তী ক্লিক করুন। 
  • মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন করার জন্য প্রদত্ত মোবাইলে ০৬ অংকের একটি One- Time Password (OTP) যাবে।
  • মোবাইলে প্রেরণকৃত One Time Password (OTP) এন্ট্রি করে Submit ক্লিক করলে সফল হয়েছে সংক্রান্তে ম্যাসেজ আসবে। 
  • অতঃপর, লগইন করার জন্য “Login” ক্লিক করুন।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম (বিস্তারিত) 

১। যেকোন ইন্টারনেট ব্রাউজার সফটওয়্যার ওপেন। ব্রাউজার সফটওয়্যারের এ্যাড্রেসবারে অনলাইন জিডির ওয়েবসাইট gd.police.gov.bd এন্ট্রি করে কী-বোর্ড থেকে এন্টার চাপুন। অনলাইন জিডির ওয়েবসাইট ওপেন হবে। প্রবেশ করুন (লগইন) ক্লিক > ইউজারের ঘরে মোবাইল নম্বর এবং পূর্বে প্রদানকৃত পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইনে ক্লিক। ইউজার ড্যাসবোর্ড ওপেন হবে।

২। সাধারণ জনগন ইউজার ড্যাসবোর্ড থেকে পূর্বে জিডির জন্য আবেদন করা আবেদনগুলো সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন এবং নিচের তথ্য এন্ট্রি অংশ হতে হারানো ও পাওয়া বিষয়ে নতুন জিডির আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও ডানপাশের ছবির উপর ক্লিক করে ব্যবহারকারী পাসওয়ার্ড পরিবর্তনসহ ব্যবহারকারী তথ্য আপডেট ও সফটওয়্যার বিষয়ে ফিডব্যাক প্রদান করতে পারবেন (চিত্র-১৯)

পিক ১৯ 

৩) পাসপোর্ট হারানো বিষয়ে জিডি আবেদন করার জন্য “ তথ্য এন্ট্রি “ হতে হারানো  এরমধ্যে ডকুমেন্ট নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে সেখান থেকে অনুসন্ধান এ ক্লিক করতে হবে।

পিক ২০, ২১ 

পাসপোর্ট সম্পর্কিত তথ্য অংশ হতে পাসপোর্টের বিভিন্ন তথ্য যেমন, ইস্যুকারী দেশ, শ্রেণী, প্রদানের তারিখ, মেয়াদোত্তীণের তারিখ, জরুরী যোগাযোগ সংক্রান্তে ইত্যাদি এন্ট্রি (চিত্র-২২)। শনাক্তকরণ তথ্য যেমন, সনাক্তকারী চিহ্ন, ছবি (যদি থাকে) এন্ট্রি। হারানোর স্থান, সময় ও ঘটনার বিবরণ (বিভাগ, জেলা, থানা, গ্রাম, স্থানের বিবরণ, তারিখ, সময়) এন্ট্রি (চিত্র-২৩)। ঘটনার বিবরণ-এ স্থানের নাম, স্থানের প্রকৃতি, স্থানের অবস্থান ও হারানোর অবস্থা এন্ট্রি, এখানে চলন্ত অবস্থায় হারানো গেলে হতোত্র অন্যের জন্য এন্ট্রি কিনা? 

রেডিও বাটনে ক্লিক বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করার জন্য এডিট আইকনে ক্লিক এবং বর্তমান ঠিকানা এন্ট্রি। পরবর্তীতে ক্লিক। এন্ট্রিকৃত তথ্য সমূহ দেখাবে। প্রয়োজনে পুনরায় তথ্য এডিট করার জন্য “Edit” ক্লিক।

“Edit” প্রয়োজন না হলে “I have agree to accept Terms & Condition and Policy” চেক বক্সে ক্লিক(চিত্র-২৪)। সাবমিট করার জন্য Final Submit বাটনে ক্লিক। > আবেদনকারীর মোবাইলে প্রেরণকৃত One-Time Password (OTP) এন্ট্রি করে Submit ক্লিক(চিত্র-২৫) একই নিয়মে অন্যান্য লস্ট এন্ড ফাউন্ড বিষয়ক জিডির জন্য আবেদন করা যাবে।

পিক ২২ – ২৫ 

8। One-Time Password (OTP) প্রদান করার পর আবেদনকারীর মোবাইল ফোনে Your Application Successfully Submitted ম্যাসেজ আসবে এবং তথ্য প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে এই সংক্রান্তে সিস্টেম জেনারেটেড ম্যাসেজ দেখা যাবে(চিত্র-২৬)। জিডির আবেদন প্রিন্ট করার জন্য “আবেদন প্রিন্ট” ক্লিক (চিত্র-২৭) অথবা বিস্তারিত রিপোর্ট দেখার জন্য “বিস্তারিত রিপোর্ট-এ ক্লিক (চিত্র-২৮)

পিক ২৬ – ২৮ 

অনলাইনে জিডির অবস্থা যাচাই করার নিয়ম 

আপনার ঘরের জিডির বর্তমান অবস্থা জানতে সেটাকে যাচাই করতে হবে এক্ষেত্রে আপনার যা করণীয় তাহলে এখানে ক্লিক করে কালকে তো বই পেয়েছে গিয়ে সেখানে জিডি ট্রাকিং নাম্বার (আপনি যে জিডিটি করেছেন সেখানে থাকা জিডির নাম্বারটিকেই জিডি ট্রাকিং নাম্বার বলা হয়ে থাকে) প্রদান করে সার্চ অপশনে ক্লিক করলে, আপনার করা জিডির বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানিয়ে দেয়া হবে। 

জিডি করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও খরচ 

স্বাভাবিকভাবে জিডি করতে কোন ধরনের ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না তবে ভেরিফিকেশনের সুবিধার্থে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে সাথে থাকলে ভালো হয়।  তাছাড়া অন্য রকমের প্রয়োজন তা অনেকটাই নির্ভর করবে আপনি কোন বিষয়ে জিডি করতে যাচ্ছে সেটার উপরে।  এক্ষেত্রে আপনি যদি কোন মোবাইল ফোন হারানো সংক্রান্ত জিডি করতে চান তবে উক্ত মোবাইল কেনার সময় যে  রশিদ রয়েছে সেটিকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন।  পাশাপাশি এমন কোন তথ্য সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্টস যা প্রমাণ করে উক্ত মোবাইলটি আপনার পারলে সেটিকেও নিয়ে যাবেন।

অন্যদিকে আপনার যদি কোন সার্টিফিকেট বা ডকুমেন্টস হারিয়ে যায় তাহলে সেটি যদি ফটোকপি করার থাকে সেই কপিগুলো নিয়ে যাবেন।  তাছাড়া আপনাকে যদি  ডিজিটাল মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকি প্রদান করে থাকে তবে উক্ত হুমকির প্রিন্ট আউট বের কোরে তা জমা দিতে পারেন এতে আপনার মন্তব্যের যথার্থতা ব্যাপকভাবে  প্রভাবিত হবে। 

 তবে এই সকল ডকুমেন্ট গুলো ঔচ্ছুক,  মানে এই যে উক্ত ডকুমেন্টগুলো আপনার কাছে না থাকলে একান্তই প্রয়োজন নেই বাধ্যতামূলক নয় তবে জাতীয় পরিচয় পত্র অবশ্যই দরকার হবে। 

 তাছাড়া বাংলাদেশে একজন নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশের যে কোন থানায় জিডি করতে আপনাকে কোন ধরনের অর্থ প্রদান করতে হবে না জিদি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যায় তার সরকারের পক্ষ থেকে একটি  জনকল্যাণমূলক সেবা। 

জিডি (GD) ও এফআরআই (FRI) এর মধ্যে পার্থক্য 

অনেকেই জিবি এবং এফ আই আর এর মধ্যে গুলিয়ে ফেলে যার কারণে এখানে দুইটা বিষয় পার্থক্য উপস্থাপন করছি যাতে করে এই বিষয়ে আর কোনো সংশয় না থাকে। 

প্রথমেই বলেছি যে দিয়েছি সাধারণ বিবরণী।  অন্যদিকে এফআইআর হল একটি মামলা  করার প্রথম  পদক্ষেপ।  থানায় জিডি করা মানেই মামলা করা নয়,  তবে অনেক ক্ষেত্রে জিডি করার পরে মামলা করার প্রয়োজনীয়তা লক্ষণীয় হয়। 

একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি সহজভাবে উপস্থাপন করা হয়  তাহলে বলব,  আপনার কাছ থেকে যদি আপনার মোবাইলটি হাতছাড়া হয়ে যায় এবং আপনি নিকটবর্তী থানায় গিয়ে মোবাইলটি হারানো গিয়েছে বলে উল্লেখ করে বিবৃতি প্রদান করে যে দরখাস্ত উপস্থাপন করবেন সেটিকে বলা হবে জিডি। 

অন্যদিকে একই ঘটনার জন্য যদি থানায় গিয়ে বিষয়টিকে চুরি হিসেবে উপস্থাপন করে বিবৃতি প্রদান করে থাকেন এবং উক্ত ঘটনার জন্য সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম  সম্পাদন করেন তাহলে এটি হবে একটি এফআইআর,  কারণ এখানে অপরাধ ইতিমধ্যেই সংঘটিত হয়েছে। 

জিডি সংক্রান্ত সচারচর করা প্রশ্ন ও উত্তর 

১) জিডি করতে কত সময় লাগে?

 এটা নির্ভর করবে উক্ত থানায় ভিড় কেমন তার উপরে সাধারণত সকাল থেকে ভিড় কম থাকে এবং এ লা কার্তে পারতে ভিড়ের মাত্রা বেড়ে যায়।  যদি আপনি একান্ত নিজে থেকে দরখাস্ত লিখেন তাহলে আপনার দরখাস্ত লেখা ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদন করতে ১০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগতে পারে। 

২) ১৮ বছর বয়সের নিচে কেউ জিডি করতে পারবে?

জিডি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে অন্যথায় কোন উপায় নেই।

৩) জিডি করার ক্ষেত্রে কোন ভুল হলে করনীয়?

জিডি জন্য যে দরখাস্ত লিখবেন সেখানে কোনো রকমের কাটাকাটি করা যাবে না তবে যদি ভুলবশত কিছু হয়ে যায় তাহলে সেখানে কর্মরত কর্মীদের সরাপন্ন হোন এবং তাদের মতামত অনুযায়ী কাজ করুন। 

পরিশেষে কিছু কথা 

অতঃপর শেষ হলো থানায় জিডি করার নিয়ম সংক্রান্ত আর্টিকেল সেখানে আলোচনা করা হয়েছে সরাসরি এবং অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ও তার সাথে জরিত সকল বিষয় সম্পর্কে। একই আর্টিকেলের মধ্যে সেসব বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে যা একজন ব্যক্তি জিডি করার সময় সম্মুখীন হতে পারে। আশা করছি উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনার মধ্য়ে থাকা জিডি করা সংক্রান্ত সকল সংশয়ের অবসান ঘটেছে। এমনই উপকারি আর্টিকেলের জন্য অনুসরণ করুন বাংলা আলো ওয়েবসাইটি। ধন্যবাদ। 

Visited 9 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here