আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম

0
36

এবারের আর্টিকেলে কভার করবো আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। কারন যথাযথ নিয়ম জানা থাকলে একাউন্ট খোলার সময় কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না, তাছাড়া ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি হওয়ার কারনে অন্যান্য ব্যাংকের থেকে এটির নিয়ম কিছুটা ভিন্ন। এখানে উপস্থাপিত হবে সে সকল তথ্য যা একাউন্ট খোলার সময় আপনার অবশ্যই জানা উচিৎ। 

বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক সেই ১৯৯৫ সাল থেকে। বর্তমানে ব্যাংকটির ঝুড়িতে রয়েছে ২০১ টি শাখা এবং ২০০+ এটিএম ব্যাংক সারা দেশ জুড়ে। ইসলামী ব্যাংকিং এর পাশাপাশি ব্যাংকটি দিচ্ছে বিনিয়োগ ব্যাংকিং ও বৈদেশিক বাণিজ্য সেবাও। 

নিম্মে ধাপে ধাপে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে প্রতিটি বিষয় উপস্থাপন করছি। প্রথমেই জেনে নেয়া যাক আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য কত ধরনের একাউন্ট খোলার সুবিধা রেখেছে। 

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক কত ধরনের একাউন্ট খোলা যায়?

মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব 

  • মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে সর্বনিম্ন 500 টাকা জমা দিতে হয়
  •  জমাকৃত অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সপ্তাহে 2 বার এবং মাসে চারবার নির্ধারিত রয়েছে।  এক্ষেত্রে প্রতিবার জমাকৃত অর্থের কেবল 25% উত্তোলন করা যাবে।  এবং কোনভাবেই 50 হাজার টাকার বেশি রাগ বাজারে উত্তোলন করা যাবে না। 
  •  উক্ত একাউন্টে যদি দুই বছর যাবত কোন প্রকার নিন্দে না ঘটে থাকে তবে সেটি বন্ধ করে দেয়া হবে। 

মুদারাবা শর্ট নোটিস সঞ্চয়ী হিসাব 

  • এই একাউন্ট করতে আপনাকে সর্বোনিম্ম ৫০০০ টাকা বা তার অধিক অর্থ জমা দিয়ে একাউন্ট খুলতে হবে। একাউন্ট খোলার পর কোনো ভাবেই ৫০০০ টাকার নিচে অর্থ নামানো যাবে না তাহলে মুনাফার তালিকা হতে আপনার একাউন্টটি বাদ পড়ে যাবে। তাছাড়া একাউন্টে ৫০০০ টাকা ব্যতীত সরকারি কর সমমূল্যের অর্থ ও থাকতে হবে। 
  • আপনার অর্থের দৈনিক স্থিতির উপর নির্ভর করে মুনাফা ধরা হয়ে থাকে। 
  • এই একাউন্টে অর্থ উত্তোলনের ৭ দিন আগে থেকে নোটিশ জানাতে হয়। যদি নোটিশ বিহীন অর্থ উত্তোলন করা হয়ে থাকে তবে উক্ত মাসের মুনাফা ওই একাউন্ট হোল্ডার পাবে না। 
  • দীর্ঘ এক বছর ধরে কোনো প্রকার ব্যাংকিং কার্যক্রম না হলে ব্যাংক একাউন্টটি বন্ধ হয়ে যাবে। 

আল-ওয়াদীয়াহ চলতি হিসাব 

  • আল ওয়াদিয়াহ  চলতি একাউন্ট খোলার জন্য নূন্যতম 2 হাজার টাকা জমা প্রদান করতে হয় প্রথমে। 
  •  যেহেতু উক্ত একাউন্টটি  ব্যবসায়ীদের জন্য  বিশেষভাবে তৈরির ক্ষেত্রে দিনে একাধিকবার ট্রানজেকশন টাকা জমা উত্তোলন করা যেতে পারে। 
  •  এক বছরের বেশি সময় ধরে কোন প্রকার লেনদেন না ঘটলে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে পারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। 

মুদারাবা স্টুডেন্ট সঞ্চয়ী হিসাব 

  • বাংলাদেশী নাগরিক এবং 18 বছর বয়সের কম এমন শিক্ষার্থীদের জন্য মুদারাবা স্টুডেন্ট সঞ্চয়ী হিসাবে বরাদ্দ করা হয়েছে। 
  •  প্রাথমিকভাবে মাত্র 100 টাকা জমা রাখার মাধ্যমে এইরূপ একাউন্ট খোলা যাবে।
  •  ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক দায়িত্ব পালন করবে।
  • এ ধরনের একাউন্টে সরকারি কার্ড ছাড়া অন্যান্য কোন চার্জ ব্যাংক কর্তৃক ধার্য করা হয় না।
  •  প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা অব্দি উত্তোলন করতে পারবে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে।  তবে যদি অভিভাবকের বিশেষ আদেশ অথবা অনুরোধ থেকে থাকে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 5 হাজার টাকা উত্তোলন করা যাবে। 
  •  এ ধরনের একাউন্টে দৈনিক জমাকৃত অর্থের উপর ভিত্তি করে মুনাফা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  •  শিক্ষার্থী যতদিন 18 বছরের কম থাকবে ততদিন উক্ত একাউন্টে অভিভাবক পরিচালনা করবে।  এভাবে যখনই শিক্ষার্থীর বয়স 18 বেশি হয়ে যাবে তখন একাউন্ট সংক্রান্ত বিষয় অভিভাবকের দায়িত্ব অবসান ঘটবে এবং একাউন্ট মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাবে ট্রান্সফার করা হবে। 

মুদারাবা কৃষক সঞ্চয়ী হিসাব 

  • বাংলাদেশে বসবাসরত নাগরিক এবং পেশায় কৃষক ব্যক্তিবর্গ এই একাউন্টটি খুলতে পারবে
  • যেকোন শাখা থেকে উক্ত একাউন্টে খুলতে পারবে তবে এক্ষেত্রে সাবধান কর্তৃপক্ষ এই বাসায় তাকে কি সঠিকভাবে চিহ্নিত করার পরেই আপনি উক্ত একাউন্ট খুলতে তুলতে পারবেন।
  •  নিয়মমাফিক মাত্র 10 টাকা  জমা রাখার মাধ্যমে উক্ত একাউন্ট খোলা যায় তবে বিশেষ সুবিধা প্রয়োজনের খাতিরে বর্তমানে বিনামূল্যেই মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। 
  •  এ ধরনের একাউন্টে সরকারি কর বাদে অন্য কোন ধরনের ব্যাংক চার্জ যুক্ত হয় না।
  • বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে এই একাউন্টের মাধ্যমে উত্তোলন করা যাবে। 
  • কৃষকের হিসাব সমূহ যেমন থাকার তেমনই থাকবে এটাকে Dormanat করা হবে না। 

মুদারাবা বৈদেশিক মুদ্রা জমা হিসাব 

  • এ ধরনের অ্যাকাউন্ট করার ক্ষেত্রে প্রথমেই এক হাজার মার্কিন ডলার একাউন্টে জমা রাখতে হবে।  উক্ত অর্থে মেয়াদকাল একমাস বা তার উর্ধ্বে হলে সে অর্থের জন্য মুনাফা হওয়া যাবে অন্যথায় উক্ত টাকার জন্য মূলত প্রদান করা হবে না। 
  • এ ধরনের অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে দুইবার টাকা উত্তোলন করা যাবে এবং প্রতিবার মোট জমাকৃত অর্থের থেকে ২৫% অর্থই উত্তোলন করার জন্য নির্ধারিত থাকবে। 
  • উক্ত অর্থ বিভিন্ন স্থানে বিনিয়োগের মাধ্যমে যে মুনাফা প্রাপ্য হবে তার ৭০% উপযুক্ত আমানতকারীদের নিকট বন্টন করা হবে। 

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন?

মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব করতে যা যা লাগবে 

১) জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম নিবন্ধন কপি/ পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স – এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি ডকুমেন্টস আইডেন্টি ভেরিফাই করার জন্য 

২) আবেদনকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি 

৩) নমিনি যাকে রাখা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র ও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি 

৪) রেফারেন্স হিসেবে উক্ত ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে এমন এক ব্যক্তি (বাধ্যতামূলক নয়, যদি আপনার পরিচিত এমন কেউ না থাকে তবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানালে তারা ব্যবস্থা গ্রহন করবে। 

৫) টিন সার্টিফিকেট বা টিন আইডি নাম্বার ( এটি থাকলে কর কর্তনের ক্ষেত্রে ১৫% না কেটে ১০% কাটা হবে) 

আল-ওয়াদীয়াহ চলতি হিসাব করতে যা যা লাগবে 

১) জাতীয় পরিচয়পত্র/ জন্ম নিবন্ধন কপি/ পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স – এগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি ডকুমেন্টস আইডেন্টি ভেরিফাই করার জন্য 

২) আবেদনকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি 

৩) নমিনি যাকে রাখা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র ও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি 

৪) রেফারেন্স হিসেবে উক্ত ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে এমন এক ব্যক্তি (বাধ্যতামূলক নয়, যদি আপনার পরিচিত এমন কেউ না থাকে তবে ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানালে তারা ব্যবস্থা গ্রহন করবে। 

৫) টিন সার্টিফিকেট বা টিন আইডি নাম্বার (এটি থাকলে কর কর্তনের ক্ষেত্রে ১৫% না কেটে ১০% কাটা হবে) 

৬) ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে।

মুদারাবা স্টুডেন্ট সঞ্চয়ী হিসাব করতে যা যা লাগবে 

১) শিক্ষার্থীর স্কুল আইডি কার্ড অথবা বেতন রসিদের কপি জমা দিতে হবে 

২) একাউন্ট খোলার সময় মিনিমাম ১০০ টাকা নগদ ক্যাশ যা একাউন্টেই যুক্ত হবে 

৩) শিক্ষার্থীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 

৪) অবিভাবকের পরিচয় প্রদানকৃত ডকুমেন্টস, ও এক কপি ছবি। 

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম 

যেহেতু একাউন্ট খোলার জন্য একাউন্ট খোলার ফরমের প্রয়োজন রয়েছে সেই সুবাদে এটি খুবই গুরুরত্বপুর্ণ একটি উপকরণ একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে। যদিও সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে সরাসরি এবং বিনামূল্যেই এটি প্রদান করা হয়। তবে অনেকেই রয়েছে যারা পুরো ফরমটি ভালো ভাবে পড়ার জন্য অথবা বাসা থেকে ফরম পূরণ করার জন্য অনলাইন কপি বা সফট কপি খুজে থাকে। 

এক্ষেত্রে তাদের জন্য আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম’টি দিয়ে দেয়া হলো। 

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম 

সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট খোলার নিয়ম 

অন্যান্য ব্যাংকের ন্যায় এই ব্যাংকেও সরাসরি একাউন্ট খোলার নিয়ম একই। প্রথমে আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন যে আপনি কোন ধরনের একাউন্ট খুলতে চান, এক্ষেত্রে উক্ত একাউন্ট খুলতে যে ডকুমেন্টস প্রয়োজন হয় সেটি সঙ্গে করে নিয়ে পৌছাবেন ব্যাংকে। এখানে কর্মীদের জানালে আপনাকে ফরম দিবে, যা ভালো ভাবে পড়ে সাইন করবেন আর সাথে করে আনা ডকুমেন্টস গুলো হস্তান্তর করবেন। তারপর আপনার কাজ অপেক্ষা করা, কিছু সময়ের মধ্যে আপনার একাউন্ট হয়ে যাবে। 

অনলাইনে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার সুবিধাটি প্রদান করছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। এই পর্যায়ে জানাবো কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে উক্ত কাজটি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে উক্ত ব্যাংকের একক মোবাইল অ্যাপ ইন্সটল করে নিতে হবে যার নাম হলো “AIBL i-Banking” এই লিংকে ক্লিক করে অথবা সরাসরি গুগল প্লে স্ট্রোর থেকে ইন্সটল করে নিতে পারেন অ্যাপটি। এর পরে যা করতে হবে তা ধারাবাহিক ভাবে উপস্থাপন করছি। 

প্রথম ধাপ

অ্যাপ এর মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট খোলার প্রসেসটি খুবই সহজ। এক্ষেত্রে অ্যাপটি ওপেন করে সেখানে থাকা অনেক গুলা অপশন থেকে e-account নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে। এই পর্যায়ে আপনাকে একটি নাম্বার প্রদান করতে বলা হবে, যেখানে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। সেটি আবার সাবমিট করতে হবে। এবং এভাবেই প্রথম ধাপের কাজ গুলো শেষ। এবার ২য় ধাপে অগ্রসর হই। 

দ্বিতীয় ধাপ

এই ধাপে আপনাকে মোট ৪ টি কাজ করতে হবে। যেগুলো হলো: 

  • Upload a photo 
  • Take Selfie 
  • Upload your Signetur 
  • Review informations 

বুজতেই পারছেন প্রথমেই আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের সামন এবং পিছন – উভয় সাইডের দুইটি সফট কপি বা ছবি আপলোড করতে হবে। এক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক তুলে দেন অথবা আগে থেকে তোলা গুলো দেন। সমস্যা নেই। 

এবার ফেস ভেরিফিকেশনের জন্য তাৎক্ষণিক একটি সেলফি তুলতে হবে আবেদনকারীকে। সেটা আপডেট হয়ে গেলে একটি সিংগেচার আপলোড করতে হবে। সিংগেচার আপলোডের ক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো সচ্ছ পৃষ্ঠায় সাইন করে সেটার ছবি তুলে স্ক্যানের মাধ্যমে আপলোড করবেন। এতে বেশ ক্লিয়ার ও খুব ভালো ভাবে ফুটে থাকবে সাইনটি। 

এই গুলো শেষ হলে আপনাকে ওভারল তথ্য গুলো দেখানো হবে যা জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে প্রাপ্য হয়েছিলো। সেগুলোর মধ্যে যদি কোনো বিষয় মিসিং থাকে তবে নিজে থেকে ফুলফিল করে দিতে হবে। এখানে মূলত আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গুলোই থাকবে। 

তৃতীয় ধাপ

এই ধাপে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা লিপিবন্ধ করার পর, আপনার পেশা কি, মাসে কত টাকা আয়, কত টাকা ডিপোজিট করবেন এবং কত টাকা উইথড্রো করা হতে পারে সেসব তথ্য দিয়ে সাবমিট করে দিন। 

এই ধাপের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ব্র্যাঞ্চের নাম সেট করা। মূলত উক্ত ব্যাংকের কোন ব্র্যাঞ্চে একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন সেই ব্র্যাঞ্চের তথ্য প্রদান করতে হবে। এবং পাশাপাশি কোন ধরনের একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন সেটির অপশন দেখানো হবে। যদিও বর্তমানে কেবল মুদারাবা সেভিংস একাউন্ট খোলাই যায় অনলাইনে তাই এটি সিলেক্ট করে দিতে হবে। এটি শেষ হলে পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হতে পারেন। 

চতুর্থ ধাপ 

এই পর্যায়ে আবেদনকারী নমিনি হিসেবে যাতে রাখতে চাচ্ছেন তার তথ্য গুলো দিয়ে দিবেন। নমিনির নাম, তার সাথে আপনার সম্পর্ক কি, জন্ম তারিখ, এবং তার জন্মনিবন্ধন নাম্বার অথবা জাতীয় পরিচয় পত্রের সফট কপি এবং ছবি সাথে রাখবেন কারন এগুলো আপলোড করতে হবে। এবং আরেকটি বিশেষ সুবিধা আছে যে, আপনি চাইলে নমিনির পার্সেন্টিজ সেট করে দিতে পারবেন। তাই একাধিক নমিনি এড করার সুবিধা থাকছে এখানে। 

পঞ্চম ধাপ 

সকল তথ্য সাবমিট হয়ে গেলে আপনি যখন ফাইনাল সাবমিশনে ক্লিক করবেন তখন সেটি আল-আরাফাহ ব্যাংক কতৃপক্ষের কাছে চলে যাবে। সাধারণত সর্বোচ্চ ৭ কর্মদিবদের মধ্যেই আপনার একাউন্ট সংক্রান্ত আপডেট জানানো হবে। আপনার একাউন্টটি যদি এপ্রুভ হয় তবে আপনার কাছে একটি ম্যাসেজ আসবে যে আপনার একাউণ্ট তৈরি হয়ে গেছে। 

তাছাড়া আপনি একাউন্টের সাথে যুক্ত উপকরণাদি গ্রহন করার জন্য, যে ব্র্যাঞ্চের নাম সিলেক্ট করেছিলেন সেই ব্র্যাঞ্চে উপস্থিত হতে হবে। 

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম 

ভালো ব্যাপার এই যে আপনি মোট ৩ টি উপায় অবলম্বন করে আপনার একাউন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পেতে পারেন যার মধ্যে অন্যতম কাজ ব্যাংক একাউন্টের ব্যালেন্স চেক করা। উপায় তিনটি নিয়ে আলোচনা করা হলো। 

এস এম এস এর মাধ্যমে 

একাউন্ট ব্যালেন্স জানার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এস এম এস এর মাধ্যমে ব্যালেন্স চেক করা। যার জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হলো। 

ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে AIBL BAL [এরপর এখানে একাউন্ট নাম্বার দিয়েন] 

সবশেষে পাঠিয়ে দিন ২৬৯৬৯ নামারে। ফিরতি ম্যাসেজে জানিয়ে দেয়া হবে আপনার একাউন্টে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স। 

মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমে 

আপরা ইতিমধ্যেই উক্ত ব্যাংকের একক মোবাইল অ্যাপ এর সাথে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি, জী যে অ্যাপ এর মাধ্যমে একাউন্ট খুলবেন ঠিক একই অ্যাপ ওয়ালেট হিসেবেই ব্যবহার করবেন। এক্ষেত্রে যেহেতু আপনার ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রেশন করা তাই নতুন করে কিছু করতে হবে না, স্রেফ লগিন করবেন এবং সেখানে থাকা অপশন বা ড্যাশবোর্ড থেকেই খুব সহজে ব্যালেন্স চেক করে নিতে পারবেন।

ব্যাংকে গিয়ে ব্যালেন্স জানা 

সবচেয়ে পুরাতন ও আরেকটি সহজ মাধ্যম হলো  ব্যাংকে উপস্থিত হতে ব্যালেন্স জেনে আসা। এক্ষেত্রে আপনি যদি উপরের দুইটি উপায়ের একটি উপায়ও করতে সক্ষম না হোন, বা সেরুপ অবস্থানে না থেকে থাকেন তবে সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করতেই পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে একাউন্ট নাম্বারটি স্মরণ রাখতে হবে। 

এটিএম বুথের মাধ্যমে ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম 

তাছাড়া আরেকটি জনপ্রিয় উপায় রয়েছে ব্যালেন্স চেক করার জন্য। আপনাকে কাছে যদি উক্ত একাউন্টের ডেবিট কার্ড থেকে থাকে তবে একাউন্টের ব্যালেন্স কত আছে তা জানতে পারবেন নিকটতম যেকোনো এটিএম বুথের মেশিন থেকেই। কার্ড সাবমিট করে সেখানে থাকা অপশন থেকে খুব ভালো ভাবেই তা জানতে পারবেন। 

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা সমূহ 

এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো উক্ত ব্যাংকের কারবারে কোনো সুদ সংক্রান্ত কার্যক্রম করা হয় না। সম্পূর্ণ সুদ মুক্ত উপায়ে নিরাপদে এখানে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। আপনি যদি ধর্মীয় মাইন্ডের ব্যক্তি হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার উচিৎ হবে সুদ থেকে দূরে থাকা। 

যেহেতু উক্ত ব্যাংকের মাধ্যমে যে মুনাফা প্রদান করা হয় সেটা বিনিয়োগ কেন্দ্রিক তাই এখানে হারামের বিষয়টি আসবে না। যখন আপনি চলতি একাউন্ট খুলে থাকবেন তখন উক্ত অর্থের বিনিয়োগ থেকে যদি লোকসান হয়ে যায় তবে উক্ত লোকসানের ভাগ আপনাকেও বহন কর‍তে হবে। 

পরিশেষে কিছু কথা 

অতঃপর এই ছিলো আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সংক্রান্ত আর্টিকেল যেখানে উক্ত ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য যে যে বিষয় গুলো একান্ত জানা জরুরি সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তার পাশাপাশি একাউন্টের ধরন সম্পর্কেও ধারনা দেয় হয়েছে। বিভিন্ন প্রকারভেদে একাউন্ট থাকার কারনে খুব সহজ ও সাবলিল ভাষায় সকল তথ্য গুলো উপস্থাপন করা হয়েছে। আপনি যদি উক্ত ব্যাংক ছাড়াও আরো অন্যান্য ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংক সমূহে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তবে বাংলা আলো ওয়েবসাইটের ব্যাংক নামক ক্যাটাগরিটি অনুসরণ করুন। 

Visited 29 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here