ভিসা - Visa

ইতালি ভিসা | ধরন, খরচ, মেয়াদ, আবেদন নিয়ম | বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভিসা

ইতালি যাওয়ার ইচ্ছা? বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভিসা পেতে হলে কি করতে হবে, কত টাকা খরচ, কোথায় আবেদন করবেন, কি কি লাগবে সব বিষয়ে জানুন এই আর্টিকেল থেকে।

 

বাংলাদেশী নাগরিকরা ইতালির ভিসা পাওয়ার জন্য সব সময়ই উৎসুক হয়ে থাকে। অনেকের কাছেই ইতালি গমন করা যেনো স্বপ্নের মতো। আবার আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা নিজের শেষ সম্বল ভিটে মাটি বিক্রি করেও ইতালি গমন করে, নিজের পরিবার কে সাচ্ছন্দ্য ময় জীবন যাপন উপহার দেওয়ার জন্য। 

 

এছাড়াও অনেকে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে, ভ্রমণীয় স্থান গুলো দর্শন এর উদ্দেশ্যে, চাকুরী কিংবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ও ইতালির ভিসা নিয়ে থাকে। তবে ইতালির ভিসা প্রসেসিং করতে গিয়ে অনেকেই নানান ধরনের জটিলতায় পড়েন। 

 

তাই যখনই আপনি ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ভিসা প্রসেসিং করা শুরু করবেন তার আগে অবশ্যই  কিছু বিষয় সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিয়ে নিবেন। যেমনঃ ইতালির ভিসা ধরন, কোন ভিসা প্রসেসিং করতে কেমন খরচ হয়, ভিসার মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়াদি, ভিসার জন্য আবেদন করতে কি কি নিয়ম মানতে হবে ইত্যাদি। 

 

এই সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য জানা থাকলে আপনার বাংলাদেশ থেকে ইতালি গমনের ভিসা খুব সহজেই তৈরী করে ফেলতে পারবেন, তা না হলে আপনাকে নানা ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে। 

 

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের ইতালি ভিসা সংক্রান্ত সকল প্রয়োজনীয় তথ্য জানবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক…

 

ইতালি ভিসার ধরন, সময়, মেয়াদ

 

ইতালিতে প্রবেশের জন্য বেশ কয়েক ধরনের ভিসা রয়েছে। বিভিন্ন নাগরিক গন বিভিন্ন আলাদা  ধরনের ভিসার মাধ্যমে ইতালি গমন করে থাকেন। সাধারণত একেক ভিসার ধরন একেক রকম। এর পাশাপাশি আরও রয়েছে ভিসার সময় এবং মেয়াদ কাল এর মধ্যে অনেক পার্থক্য। চলুন এই পর্যায়ে জেনে নেই ইতালি ভিসার ধরন, সময়, মেয়াদ সম্পর্কিত সকল বিস্তারিত বিষয়- 

 

১) ফ্যামিলী ভিজিট ভিসাঃ

 

প্রতি বছর ইতালি তে থাকা প্রবাসী  গন বাংলাদেশ এ  থাকা তাদের পরিবার এর সদস্য দের ফ্যামিলী ভিজিট ভিসার মাধ্যমে আবেদন করে ইতালিতে নিয়ে থাকেন। যদি সকল কাগজ পত্র ঠিকঠাক থাকে তাহলে, এই ভিসা তৈরি করতে খুব বেশি সময় লাগে না।

 

অর্থাৎ ভিসা অফিসে জমা দেওয়ার জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য, বিভিন্ন সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিস পত্র  দরকার হয়, সেগুলো যদি সঠিক থাকে তাহলে পনেরো থেকে ত্রিশ কার্য দিবস এর মধ্যে ভিসা কনফার্ম হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

 

ফ্যামিলি ভিজিট ভিসা এর মেয়াদ এক মাস থেকে তিন মাস হয়ে থাকে। অর্থাৎ এই ভিসা টির মাধ্যমে আপনি ইতালিতে আপনার ফ্যামিলি কে ত্রিশ দিন থেকে নব্বই দিন পর্যন্ত বৈধ ভাবে রাখতে পারবেন।  

 

২) স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

আমরা সবাই জানি ইতালিতে রয়েছে নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতি বছরই লেখা পড়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীরা ইতালিতে গমন করেছেন। 

 

শিক্ষার্থী দের সকল সার্টিফিকেট এবং ভিসা অফিসে জমা দেওয়া স্কলারশিপের কাগজ পত্র সব ঠিক থাকলে ৯০ থেকে ১২০ কার্য দিবসের মধ্যে পছন্দের  বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন এবং ভিসার প্রসেসিং সকল কিছুই কমপ্লিট হয়ে যায়। 

 

শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চ শিক্ষা সম্পূর্ণ রূপে শেষ করা পর্যন্ত ইতালিতে বসবাস করতে পারেন। পড়া শোনার পাশাপাশি তারা চাইলে পার্ট টাইম জব ও করতে পারেন। 

 

৩) ওয়ার্ক ভিসাঃ

 

এই ভিসা টির মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশী নাগরিক গন ইতালিতে গিয়ে থাকেন। ইতালি তে গিয়ে যে কোন প্রকার এর বৈধ কাজ করার জন্য ওয়ার্ক ভিসা করা হয়। এই ভিসা সাধারণত দুই থেকে তিন বছর পর পর রিনিউ করতে হয় তা না হলে আপনি ইতালি তে বৈধ ভাবে বসবাস করতে পারবেন না। অর্থাৎ সর্বোচ্চ তিন বছর ওয়ার্ক ভিসার মেয়াদ থাকে। 

 

এই ভিসার মাধ্যমে আপনি ইতালিতে যেতে চাইলে অবশ্যই প্রথমত ভিসা অফিসে সকল প্রকার সঠিক কাগজপত্র এবং প্রয়োজনীয় সকল ফি জমা দিবেন।  তাহলে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই মাসের মধ্যে আপনার ভিসা প্রসেসিং কমপ্লিট হয়ে যাবে। 

 

ইতালি ভিসা করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন

 

প্রত্যেকটি দেশের ভিসা করতে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর দরকার হয়। সাধারণত ভিসার ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা ডকুমেন্টস লেগে থাকে। আজকের আর্টিকেল এর এই পর্যায়ে আমরা আপনাদের জানাবো ভিন্ন ভিন্ন কিছু ইতালি ভিসা প্রসেসিং এর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সম্পর্কে –

 

ক. ফ্যামিলী ভিজিট ভিসাঃ

 

১. ডিজিটাল পাসপোর্ট। বি.দ্রঃ যদি আপনার ডিজিটাল পাসপোর্ট এ আগে থেকে কোনো প্রকার সংশোধন করা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ, স্কুল কিংবা কলেজ এর সার্টিফিকেট, ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে ভিন্ন ভাবে এপ্লিকেশন করতে হবে।

২. ভিসা আবেদন এর ফর্ম এ নিজের স্বাক্ষর এবং ছোট বাচ্চা দের জন্য তাদের অভিভাবক দের স্বাক্ষর দিতে হবে।

৩. বিয়ের আসল লিগেল ম্যারেজ সার্টিফিকেট এবং বিয়ের ছবি।

৪. সকল কাগজ পত্র সমূহ সত্যায়িত হওয়া বাঞ্চনীয়।

৫. ভিসা আবেদন এর ফর্ম এ থাকা নিজের নাম, বাবা – মা এর নাম এবং ঠিকানার সাথে জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধন, সার্টিফিকেট এর মিল থাকতে হবে।

৬. ফুল ফ্যামিলি সার্টিফিকেট। 

৭. যদি টেলিফোনে বিয়ে হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে টেলিফোন ম্যারেজ সার্টিফিকেট থাকতে হবে।

৮. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৯. বিয়ের সাক্ষি দের সাইন এবং এলাকার চেয়ারম্যান এর বিয়ে সংক্রান্ত জবানবন্দি। 

১০. ডিক্লারেশন।

 

খ. স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

১. ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২. চার কপি পাসপোর্ট সাইজ এর  রঙিন ছবি।

৩. আপনার পছন্দ মতো ইতালিয়ান যে কোনো ইউনিভার্সিটি এর অফার লেটার।

৪. স্কুল এবং কলেজ এর সকল মেইন সার্টিফিকেট, তার পাশাপাশি সকল পরীক্ষার মার্কশিট।

৫. IELTS স্কোর এর সার্টিফিকেট।

৬. এপ্লিকেশন ফর্ম। 

৭. ব্যাংক সলভেন্সির কাগজ পত্র। 

৮. ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম।

৯. শিক্ষার্থীদের সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো ইন্টান্যাশনাল অরগানাইজেশান ফর মাইগ্রেশান থেকে ভেরিফিকাশন করে নিতে হবে।

১০. লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

১১. রিকমেন্ডেশন লেটার অথবা মোটিভেশনাল লেটার।

১২. সিভি এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

১৩. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

১৪. আগের স্কুল কলেজ এর সকল সার্টিফিকেট এর মেইন কপি এবং ফটোকপি। অবশ্যই সকল সার্টিফিকেট গুলো শিক্ষাবোর্ড এবং ইতালি অ্যাম্বাসি কর্তৃক সত্যায়িত করে নিতে হবে। 

 

গ. ওয়ার্ক ভিসাঃ

 

১. ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২. জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং বাংলাদেশী ভোটার আইডি কার্ড।

৩. লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

৪. ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম।

৫. পাসপোর্ট সাইজ এর  রঙিন ছবি।

৬. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৭. সকল কাগজ পত্র সমূহ সত্যায়িত হওয়া বাঞ্চনীয়।

৮. সরকার থেকে স্বীকৃত দেওয়া মেডিকেল ফিটনেস এর সনদ পত্র। 

৯. স্পনসর এর আকামার কপি।

১০. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

 

ইতালি ভিসা করতে কত টাকা লাগে

 

আলাদা আলাদা দেশের প্রত্যেকটি আলাদা ভিসার জন্য ভিন্ন ভিন্ন চার্জ রয়েছে অর্থাৎ ভিসা তৈরী করতে ভিন্ন পরিমাণ এর টাকা খরচ হতে পারে। তাই এই ব্যাপারে অবশ্যই আপনার আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো, তা না হলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

 

১) ফ্যামিলী ভিজিট ভিসাঃ

 

ইতালির ফ্যামিলী ভিজিট ভিসা করতে খরচ লাগে, ভিসা এপ্লিকেশন বাবদ খরচ হবে প্রায় ১২১৮০ টাকার মতো। বি. এফ. এস গ্লোবাল সার্ভিস চার্জ এর জন্য ১৬০০ টাকা। ব্যাংক ড্রাফট করতে লাগবে ২৩০ টাকা। এই সকল ব্যায় বহন করতে পারলে আপনি খুব সহজেই আপনার পরিবার পরিজন দের ইতালি ভ্রমণ করাতে পারেন। 

 

২) স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

ইতালিতে প্রধানত তিন প্রকারের স্টুডেন্ট ভিসা দিয়ে থাকে, এদের একেক ধরনের ফি হয়। যেমনঃ

১. স্টুডেন্ট ভিসা সাব ক্লাস। 

২. স্টুডেন্ট গার্ডিয়ান ভিসা। এই ভিসার প্রসেসিং এর ক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে ত্রিশ হাজার থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকা।

৩. স্পেশাল ক্যাটেগরী স্টুডেন্ট ভিসা। এই ভিসার প্রসেসিং করতে তেমন কোনো আলাদা খরচ হয় না বললেই চলে। 

 

৩) ওয়ার্ক ভিসাঃ

 

কাজের ভিসা নিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক বাংলাদেশী নাগরিকরা ইতালি তে গমন করছে। কাজের ক্ষেত্র বিশেষ বিভিন্ন সময়ে এই প্রাইজ পরিবর্তন হয়ে থাকে। সাধারণত ভিসা বাবদ আপনার ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে।

 

আপনি যাদের মাধ্যমে যাচ্ছেন, যারা আপনাকে ওর্য়াক ভিসা স্পন্সর করেছে তাদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে আপনার পেমেন্ট টা কেমন পে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আপনাকে বেশি টাকাও দিতে হতে পারে। 

 

ইতালি ভিসা কিভাবে করতে হয় বা নিয়ম

 

ইতালি ভিসা তৈরীর নিয়ম গুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক রকমই হয়ে থাকে কিন্তু তার পরও কিছু ভিন্ন ব্যাপার থেকে যায়। যেহেতু বেশ কিছু আলাদা আলাদা ধরনের ভিসা নিয়ে আমরা আজকে আলোচনা করছি তাই এদের আবেদন এর নিয়ম গুলোতেও কিছুটা পার্থক্য হওয়াটা এক দমই অস্বাভাবিক নয়। এখনকার আধুনিক প্রযুক্তি এর যুগে ভিসার জন্য অনালাইনে আবেদন করার কিছু খুব সহজ পন্থা রয়েছে।

 

১. আপনার ঠিক যেই ভিসা দরকার অর্থাৎ আপনার পছন্দ অনুযায়ী সঠিক ইতালির ভিসা বাছাই করে নিনঃ

 

আপনার আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সকল ডকুমেন্টস গুলি জমা দিবেন সেগুলো বাছাই করে নিয়ে নিন। তার পাশাপাশি অ্যাপ্লিকেশন টি কত সময় ধরে নিতে পারবে এবং ভিসার ফি বাবদ আপনাকে কত টাকা জমা দিতে হবে সে সকল বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন।

 

যে কোনো ভিসার জন্যই আবেদন করেন না কেনো  অবশ্যই আপনাকে ভিসা বিভাগের সকল প্রযোজ্য নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। আপনার নাগরিকত্ব, পরিদর্শন অভিবাসন, শিক্ষা অনুমতি, কাজের অনুমতি ইত্যাদির জন্য স্বাক্ষরকৃত ভাবে জমা দেওয়া সম্মতি ফর্ম টি আপনার আবেদন সহ দিতে হবে। তার সাথে করোনার ভেক্সিন নিয়েছেন, সেই সংক্রান্ত পত্রটি ও জমা দিবেন।

 

২. এখন আপনার ইতালি ভিসার জন্য করা আবেদন টি শুরু করুনঃ

 

ভিসার জন্য প্রযোজ্য আবেদন এর ফর্মটি সঠিক ভাবে ডাউনলোড করে নিতে হবে। এখন ডাউনলোড করা ফর্মটি  পূরণ করে নিন তারপর মুদ্রণ করে নিন। তারপর মুদ্রণ কৃত ফর্ম টি ভিসার আবেদন কেন্দ্রে নিয়ে সঠিক ভাবে জমা দিতে হবে।

 

এখন বৈদ্যুতিন আবেদন পত্রটি সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে। পুরোটা ফর্ম এবং বারকোডের সাথে সংযুক্ত শিট গুলো একটি উন্নত মানের, সাদা এবং চকচকে ধরনের একটি কাগজের সাহায্যে কপি করে বের করে নিতে হবে।

 

অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যেনো ২ ডি এর বারকোড টি একটি স্বচ্ছ, সাদা, উন্নত মানের কাগজে কপি হয়ে বের হয় কারন হাতে লিখিত কিংবা অনুন্নত ফর্ম ভিসা অফিস থেকে গ্রহণ যোগ্য হবে না।

 

আপনাকে ভিসা সম্পর্কিত সকল গোপনীয়তা নীতি এবং তার পাশাপাশি সম্মতি মূলক ফর্মটি পূরণ করে আসলে আবেদন ফর্ম টির সাথে সঠিক ভাবে যুক্ত করতে হবে। তবে আপনি যদি আপনার ফর্মটি সঠিক ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার কাজটি না করতে পারেন অর্থাৎ ব্যর্থ হন তাহলে আপনার আবেদনটি গ্রহনযোগ্য হবে না এবং এটি আপনাকে পুনরায় ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।

 

৩. আপনার ভিসা কেন্দ্রের সাক্ষাৎকারটি সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ করে নিনঃ

 

আপনার ভিসা আবেদন এর কাজটি সম্পন্ন হয়ে গেলে এখন আপনার সাক্ষাৎকার সঠিক ভাবে, সঠিক সময়ে লিপিবদ্ধ করার পালা। সাক্ষাৎকার কনফার্ম করতে হলে অবশ্যই আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে।

 

অর্থাৎ সঠিক ভাবে আপনাকে আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে এবং এর সাথে সাথে পাস্পোর্ট সাইজের রঙিন ছবি দিতে হবে। এই ছবিটি আপনি চাইলে যেকোনো ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারেই তুলতে পারেন, সেটাই আপনার জন্য ভালো।

 

ব্যাস এখন আপনার ভিসার জন্য করা অ্যাপয়েন্টমেন্ট টি বুক হয়ে গেলো। এখন আপনার ইমেইল এ আপনি একটি কনফার্মেশন মেইল পাবেন। যদি আপনি আপনার পরিবারের জন্য অর্থাৎ একাধিক সদস্য এর জন্য ভিসা চান তাহলে প্রত্যেকের জন্য আলাদা সাক্ষাৎকার লাগবে।

 

অর্থাৎ আপনি যদি আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যের জন্য ভিসা নিতে চান সেক্ষেত্রে তাদের সবার জন্যই আলাদা ভাবে আবেদন করতে হবে  এবং সবার জন্য আলাদা কনফার্মেশন মেসেজ আসবে।

 

৪. আপনার ইতালি ভিসা বাবদ প্রযোজ্য ফি প্রদান করুনঃ

 

ভিসা বাবদ যে পরিমাণ টাকা আপনাকে জমা দিতে হবে তা আবেদন শেষ হবার পর পরই জমা দিতে পারবেন। ফি প্রদান করে আপনার রিসিট নিয়ে নিতে ভুলবেন না। বিভিন্ন ভিসার জন্য আলাদা আলাদা ফি রয়েছে অবশ্যই আপনার ভিসার জন্য কত পরিমাণ ফি প্রযোজ্য তা দেখে নিবেন।

 

যখন আপনি অনলাইনে আবেদন করতে নিবেন তখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার জন্য প্রযোজ্য ফি দেখে নিতে পারবেন এবং সেই পরিমাণ টাকা প্রদান করবেন। কখনোই এর কম বা বেশি ফি প্রদান করবেন না এবং কোন ভাবে প্রতারিত হবেন না। 

 

৫. আপনার জন্য নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট টি তে যোগদান করুনঃ

 

আপনার ইতালি ভিসার জন্য করা আবেদন টি অনলাইন এ সম্পন্ন হয়ে গেলে সেই কপি ভিসা অফিসে জমা দিয়ে দিন। আর যদি অনলাইন আবেদন না করে থাকেন তাহলে আপনার প্র‍য়োজনীয় তথ্য সমূহ জমা দিন।

 

যদি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে তথ্য দেওয়া হয় কিংবা অন্য সাধারণ পদ্ধতিতে, তাহলে আপনাকে একটি রসিদ দেওয়া হবে সেটা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। কারন সেই রসিদে আপনার ভিসার ট্র্যাকিং নম্বর দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে আপনার ভিসা টি কতো পরিমানে অগ্রগতি হচ্ছে।

 

৬. আপনার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন টি ট্র্যাক করুনঃ

 

এখন আপনি একটি ইমেইল পাবেন এবং ইমেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনার ভিসার কাজ ঠিক কতটুকু সম্পন্ন হলো এবং এখানে একটি লিংক থাকবে যার মাধ্যমে আপনি ট্র্যাক করতে পারবেন আপনার ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হচ্ছে কিনা কিংবা স্থগিত আছে কিনা। 

 

এছাড়াও আপনি একটি সঠিক মোবাইল নাম্বার প্রেরণ করবেন যেখানে আপনার ভিসা সংক্রান্ত সকল আপডেট এর মেসেজ গুলো আসতে পারে। এভাবেও আপনি আপনার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন টি ট্র্যাক করতে পারেন।

 

৭. আপনার ইতালির পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিনঃ

 

এখন আপনার প্রধান কাজ হবে ভিসা আবেদন এর অফিস থেকে আপনার বহুল কাঙ্খিত ইতালির পাসপোর্ট টি গ্রহণ করে নেওয়া। তার পাশাপাশি প্র‍য়োজনীয় সকল নথি চেক করে নিতে একদম ভুলবেন না৷ আপনি চাইলে আপনার পাসপোর্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র গুলো অতিরিক্ত চার্জের সাহায্যে কুরিয়ারে নিয়ে নিতে পারেন।

 

আপনার জন্য প্রস্তাবিত ইতালি তে প্রবেশ এর সঠিক তারিখ, প্রবেশ পথের বিশেষ সংখ্যা, প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ইতালি ভ্রমণ এর জন্য বৈধ কিনা এবং ভিসার সকল বিবরণ বিবেচনা করে পরীক্ষা করে নেওয়া আপনার একান্ত দায়িত্ব। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেনো কোনো ধরনের ভুল না হয়।

 

ইতালি ভিসার আবেদন কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য

 

বাংলাদেশে ইতালি ভিসার আবেদন কেন্দ্র গুলোর ঠিকানা

 

১. জেড এন টাওয়ার, দ্বিতীয় তলা, প্লট নং: ২, সড়ক নং: ৮, ব্লক নং: এস ডাব্লিউ ১, গুলশান এভিনিউ, গুলশান ১, ঢাকা- ১২১২।

 

হেল্পলাইন নাম্বার: +88-02 9895742

ই-মেইল এড্রেস: info.itbd@vfshelpline.com

ওয়েবসাইট এড্রেস: http://www.vfsglobal-it-bd.com

 

২. এ জে হাইটস (নীচ তলা), চ-৭২/১/ ডি, প্রগতি সরণি, উত্তর বাড্ডা ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ।

 

হেল্পলাইন নাম্বার: +৮৮-০৯৬০৬ ৭৭৭৬৬৬, 

+৮৮ ০৯৬৬৬ ৯১১৩৮৪

ই-মেইল এড্রেস: info.itbd@vfshelpline.com

ওয়েবসাইট এড্রেস: http://www.vfsglobal-it-bd.com.it

 

ইতালি ভিসা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা

 

ইতালি ভিসার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর স্বাক্ষাতকার কোন জায়গায় অনুষ্ঠিত হবে?

 

যদি আপনার স্বাক্ষাতকার হয় সেক্ষেত্রে ইতালির এম্বাসিতেই আপনার স্বাক্ষাতকার হবে।

ঠিকানাঃ প্লট নং-২/৩, রোড নং ৭৪/৭৯, গুলশান ২, ঢাকা-১২১২,

ফোন নং: +৮৮-০২ ৯৮৪২৭৮১/২/৩,

ফ্যাক্স নং: +৮৮-০২-৮৮২২৫৭৮, 

ওয়েবসাইট এড্রেস: www.ambdhaka.esteri.it

 

আজকের আর্টিকেলে আমরা ইতালির ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর অবশ্যই আপনি বিভিন্ন ধরনের অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। তারপরও আপনি যখন ইতালি যাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হবেন তখন ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে নিবেন।

 

Bangla Alo

Recent Posts

মন ভালো রাখার উপায় || মন সুস্থ রাখার ১০ টি টিপস

মানুষের মন যেহেতু আছে এটা ভালো কিংবা খারাপ থাকবে এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়।  একটা…

3 weeks ago

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মেডিকেল কলেজ

বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে সাথে, ভালো মানের মেডিকেল কলেজের তালিকা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।…

2 months ago

সেরা ১০ টি গল্পের বই || বাছাইকৃত লেখকের সেরা ১০ টি বই

গল্পের বই পছন্দ করেন? পড়ার জন্য সেরা গল্পের খোজে আছেন? সে সুবাদে অনলাইনে সার্চ করে…

2 months ago

ভিসা ও পাসপোর্ট কি? একটি ভিসা এবং পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্য সমূহ

যারা সঠিক তথ্যটি জানেনা তাদের অনেকের ধারণা - ভিসা এবং পাসপোর্ট মূলত একই কাজ করে…

2 months ago

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত (২০২৪)

আপনার কি Loan বা ঋণ প্রয়োজন? আচ্ছা আপনি কি একজন প্রবাসী কিংবা আপনার পরিবারের কেউ…

2 months ago

ইসলামে নিষিদ্ধ ব্যবসা || যে সকল ব্যবসা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম

একজন মুমিন ব্যক্তি হিসেবে আপনার অবশ্যই জেনে রাখা উচিত আপনি যে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তাকে…

2 months ago