ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় জানুন 

0
72

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো – ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে। তো চলুন এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক।

সুস্থতা আল্লাহ তাআলার বড় নিয়ামত। তিনি যাকে যতটুকু হায়াত দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন, সে তার এক মুহূর্ত আগে বা পরে মারা যাবে না। ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাপন পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে যে তার ওজন কেমন হবে ও সে সুস্থ বা অসুস্থ হবে কি না।

যদি কেউ অতিরিক্ত ওজন থেকে বেঁচে থাকতে চায় বা ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে চায় এবং সুস্থ থাকতে চায়, তাহলে ইসলামিক পদ্ধতিতে জীবনযাপন করা অপরিহার্য।

তাই সুস্থ থাকার জন্য অনেক মানুষ অনেক কৌশল অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু ক্বুরআন ও সহীহ্ হাদীস মোতাবেক জীবন যাপন করলে সুস্থ থাকা একদম সহজ হয়ে যায়। ‌ আর মানুষের ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় 

ইসলাম হলো দ্বীন অর্থাৎ একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। মানুষের জন্ম থেকে নিয়ে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত এবং পরকালীন বিষয়সহ সমস্ত কিছু দ্বীন ইসলামের মধ্যে রয়েছে যা অন্য কোন ধর্মে নেই। 

ইসলামের মূল উৎস হলো আল কুরআন ও সহীহ্ হাদীস।‌ এই দুটি মূল উৎস অর্থাৎ আল কুরআন ও সহীহ্ হাদীস এ ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় আর তা হলো রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহভিত্তিক লাইফস্টাইলে।

আপনি যদি খাবারদাবার গ্রহন এবং জীবন যাপনের ক্ষেত্রে ক্বুরআন ও সহীহ্ হাদীসের দিকনির্দেশনা মেনে চলেন, তাহলে আপনি বাড়তি ওজন কমিয়ে সঠিক ওজনে থাকতে পারবেন এবং আপনার জীবনে সুস্থতা বিরাজ করবে ইনশাআল্লাহ। আপনি কিভাবে ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো ও সুস্থ থাকার উপায় অবলম্বন করবেন তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো। 

খুব ভোরে অর্থাৎ ফজরের সময় ঘুম থেকে উঠুন 

ফজরের সময় ঘুম থেকে জাগলে এবং ফরজের পরে না ঘুমালে যেমন সুস্থ থাকা যায়, তেমনি নামাজের মাধ্যমে দিনটি শুরুও করা যায়। ফজরের পরের সময়টি বরকতময়। এ সময় মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম ঘুমাতেন না। ফজরের পরে সময়টি মূলত রিজিক বন্টনের সময়। 

আর ফজরের পরে সময়টি বরকতময় হওয়ার কারণে সে সময় কাজে ভালো সুফল পাওয়া যায় এবং অল্প সময় অধিক কাজ করা যায়। ‌ তাই আমাদেরকে অবশ্যই ফজরের সময় উঠার এবং তারপর নিজেদের সন্ধানে বের হওয়ার অভ্যাস করতে হবে যেমনটি করতেন রসূল সাঃ এবং সাহাবায়ে কেরামগণ। 

এছাড়া‌ ফজরের সময় ঘুম থেকে ওঠার অনেক মেডিকেল উপকারিতা রয়েছে। যারা রাত জেগে থাকে এবং সকালে ঘুমিয়ে থাকে; তারা সাধারণত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয় বেশি।

তাই আপনি যদি ফ্যাটি লিভার বা শরীরে বিভিন্ন রোগের কারণে ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় করেন এবং ওজন কমাতে চান আর সুস্থ থাকতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ফজরের সময় ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। বর্তমানে মানুষ এই অভ্যাসটিকে গুরুত্ব দেয় না। ফলে মানুষের ওজন বেড়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই তাদের শরীরে আক্রমণ করছে।

মেসওয়াক করুন নিয়মিত

মুখের দুর্গন্ধ দূর করার প্রধান মাধ্যম হলো মেসওয়াক করা। যদি কেউ সঠিকভাবে মেসওয়াক করে, তবে তার পাশের লোকজন মুখের গন্ধের কারণে কষ্ট পান না। মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি সালাতে অজুর আগে মেসওয়াক করতেন। তিনি বলেন, ‘মেসওয়াক করলে মুখ পরিষ্কার ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।’ (হাদীসের সনদ গ্রহনযোগ্য)

সাধারণভাবে যেকোনো সময় মেসওয়াক করা হলো মুস্তাহাব। তবে কখনো কখনো বিশেষ সময় তা অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেমনঃ ওযু করার সময়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওজু করার সময় মেসওয়াক করতেন।

হাদীসে এসেছে, “যদি আমার উম্মতের উপর কঠিন মনে না করতাম, তাহলে তাদেরকে প্রত্যেক সালাতের জন্য মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।” (হাদীসের সনদ গ্রহনযোগ্য)।

এছাড়া রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের জন্য মেসওয়াক ছাড়া কখনো বের হতেন না। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর জীবনের সর্বশেষ আমল ছিল মেসওয়াক করা।

মেসওয়াক করা হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। এছাড়াও মেডিকেল সাইন্সে এর বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে। যেমনঃ মেসওয়াক স্মৃতিশক্তি প্রখর করে, দাঁতের লাল ও হলুদ রঙ দূর করে মুখ পবিত্র করে, দাঁতের রোগব্যাধি দূর হয় ইত্যাদি।

এছাড়া একদল আলেম বলেছেন যে, মেসওয়াক করলে মৃত্যু সহজ হয়ে যায়। এছাড়াও আরো অনেক অনেক উপকারিতা থাকে তাই আমাদেরকে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামন এর এই সুন্নাহটি গুরুত্ব সহকারে পালন করতে হবে। তাহলে সুস্থতা অর্জিত হবে ইনশাআল্লাহ।

খাবার গ্রহণ করুন সুন্নাহ অনুযায়ী 

পরিমিত উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহন সুস্থ দেহের জন্য অপরিহার্য। একেবারেই স্বল্প অথবা অতিভোজন উভয়ই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিমিত পানাহার করতেন।

হাদীসে বর্ণিত আছে, মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেটকে তিন ভাগ করে এক ভাগ খাদ্য, এক ভাগ পানীয় এবং এক ভাগ শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য ফাঁকা রাখতেন। (তিরমিজি – সনদ গ্রহনযোগ্য)। অন্য হাদীসে মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মুমিন খায় এক পেটে আর কাফির খায় সাত পেটে।’ (সহীহ্ বুখারি)।

নিয়মিত এক্সারসাইজ ও ব্যায়াম করুন 

শারীরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহনের পাশাপাশি শরীরচর্চা করাও আবশ্যক। এ জন্য প্রাচীনকাল থেকেই শারীরিক ব্যায়াম, সাঁতার ও কুস্তির প্রচলন ছিল। সাহাবিদের যুগেও এর প্রচলন ছিল। মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘দুর্বল মুমিন অপেক্ষা শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে বেশি পছন্দনীয়।’ (সহীহ্ মুসলিম)। এ ছাড়া হাঁটাহাঁটি করাও একটি শরীরচর্চা।

পাক-পবিত্র থাকুন সব সময়

সবসময় পাক-পবিত্রতা অবলম্বনকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ ভালোবাসেন। অপরিচ্ছন্নতার কারণে নানাবিধ রোগ ছড়ায়। তাই দেহ-মন পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা আবশ্যক।

মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পাঁচটি বিষয় মানুষের স্বভাবজাত প্রকৃতি। তা হলোঃ খতনা করা, নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করা, গোঁফ ছোট করা, নখ কাটা এবং বগলের লোম উপড়ে ফেলা।’ (সহীহ্ বুখারি)।

হাদীসে বর্ণিত বিশেষ ঔষধি খাবার গ্রহণ করুন

সুস্থ থাকার জন্য মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে বেশ কিছু ঔষধি খাবার গ্রহণ করার পাশাপাশি সাহাবিদেরও সে ব্যাপারে নির্দেশ দিতেন। তা হলো খেজুর, জমজমের পানি, জয়তুন তেল, মধু এবং কালোজিরা।

খেজুরের ব্যাপারে মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা খেজুর দিয়ে ইফতার করো। কারণ তা বরকতময় খাবার।’ (তিরমিজি)। তিনি আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই জমজমের পানি বরকতপূর্ণ। এটি তৃপ্তিকর খাদ্য এবং রোগের নিরাময়কারী।’ (সহীহ্ মুসলিম)।

তিনি আরও বলেন, ‘কালোজিরা মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ওষুধ।’ আরও এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা জয়তুন তেল খাও এবং তা মালিশ করো। কারণ তা বরকতময় বৃক্ষ থেকে উৎপন্ন।’ (তিরমিজি – সনদ গ্রহনযোগ্য)

অসুস্থতা অনুভব করলে রুক্বইয়াহ্ করুন

সুস্থ অবস্থায় সাধারণত শুধু শারীরিক সুস্থতাকে বোঝানো হয় না বরং মানসিক সুস্থতাকেও বোঝানো হয়। মানসিক হোক বা শারীরিক বা বদজ্বীনকেন্দ্রিক – সর্বপ্রকার সুস্থতার জন্য শুধুমাত্র আল্লাহর প্রতি ভরসা করে সুস্থ থাকার জন্য কাজ করতে হবে। 

যেমনঃ আপনি যদি চিকিৎসা করেন, তাহলে সে চিকিৎসা ক্বুরআন এবং সহীহ্ হাদীস দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। যেমনঃ অভিজ্ঞ মুসলিম ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন, কেননা রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চিকিৎসা গ্রহন করার জন্য তার উম্মাতকে উৎসাহিত করেছেন।

মেডিক্যালি উপকার প্রমাণিত এমন হালাল পদ্ধতিতে (ঔষধ এবং অপারেশন) দ্বারা চিকিৎসা গ্রহন করা জায়েয রয়েছে। এছাড়া কেউ যদি মানসিক কোন সমস্যায় ভোগে অথবা বদনজর, কালো জাদু বা বদজ্বীন দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে জ্যোতিষ/যাদুকর/ফকির/তান্ত্রিক/কবিরাজ – এদের কাছে না গিয়ে শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ধরনা দিতে হবে আর সে পদ্ধতিটি হলো রুক্বইয়াহ্ করা।

রুক্বইয়াহ্ করার মাধ্যমে শুধু বদজ্বীন/কালোযাদু/বদনজর – এগুলো থেকেই সুস্থতা লাভ করা যায় না; বরং সব ধরনের রোগ সেটা হোক মানসিক সেটা হোক শারীরিক সেটা হোক বদজ্বীনগত সব ধরনের রোগ থেকে আপনি একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায় সুস্থতা লাভ করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ।

আর আপনি যদি তান্ত্রিক/কবিরাজ/ফকির/যাদুকর এদের কাছে যান, তাহলে তারা শির্ক এবং কুফরি করার মাধ্যমে সুস্থ করার চেষ্টা করে যা মারত্মক ভুল ও বড় ধরণের ক্ষতির কারণ। এর ফলে আপনি ঈমান হারিয়ে কাফির হয়ে যেতে পারেন এবং সুস্থ হতে গিয়ে আপনার আরো পাঁচ দশটা রোগ ও বড় সমস্যা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। 

তাই নিজের ঈমান বাঁচাতে এবং পরিপূর্ণ সুস্থতা লাভ করার জন্য রুক্বইয়াহ্ করবেন। ‌ ক্বুরআন এবং সহীহ্ হাদীস দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করার একমাত্র পদ্ধতি হলো রুক্বইয়াহ্। আল কুরআন এবং সহীহ্ হাদীসে আয়াত এবং বিভিন্ন দোআ আছে সেগুলো দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।

অনুমোদন 

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রুকাইয়া করার অনুমোদন রয়েছে। একজন সাহাবী রোকেয়া করেছেন পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তা জেনেছেন এবং প্রশংসা করেছেন। বিস্তারিত জানতে তাফসীর ইবনে কাসীরের প্রথম খন্ড সূরা ফাতিহার এর তাফসীর দেখতে পারেন।

সবচেয়ে উত্তম হলো নিজে নিজে রুক্বইয়াহ্ করার মাধ্যমে চিকিৎসা করা। এছাড়া আপনি কোন তাওহীদ ও সুন্নাহপন্থী বিজ্ঞ রাক্বীর কাছ থেকে রুক্বইয়াহ্ করতে পারেন। 

রুক্বইয়াহ্ করার ক্ষেত্রে সবসময় একথা মনে রাখবেন যে, রুক্বইয়াহকৃত পানি বা কালোজিরা হোক তেল হোক বা অন্য কিছু হোক সেটা কখনো নিজে নিজে কাজ করতে পারে না বরং তা একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায় কাজ করে এবং সুস্থতা দান করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।

তাই আপনি আপনার নিয়তটা পরিশুদ্ধ করে নিবেন অবশ্যই। ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো ও সুস্থ্য থাকার উপায় অবলম্বন এর পদ্ধতির মধ্যে রুক্বইয়াহ্ গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি।

রাগ করবেন না এবং রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না 

রাগ ব্যক্তিজীবনে একটি খারাপ গুণ। এর মাধ্যমে মানুষ তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে ফেলে। রাগে ফেটে পড়ে কেউ কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সুস্থ থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে কুস্তিতে জয়লাভ করে, সে শক্তিশালী নয়; বরং যে ক্রোধকে দমন করে, সে-ই অধিক শক্তিশালী।’ (সহীহ্ বুখারি)।

তাই রাগ না জমিয়ে ক্ষমা করাই শ্রেয়। মুমিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘যারা কাবিরা গুনাহ থেকে মুক্ত থাকেন এবং রাগান্বিত হলে ক্ষমা করেন।’ (সূরা আশ-শুরা: ৩৭)

সদালাপী ও হাসিখুশি থাকা এবং সুস্থতার জন্য হাসিখুশি থাকার বিকল্প নেই। মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে অত্যন্ত সদালাপী ও হাস্যোজ্জ্বল চেহারার অধিকারী ছিলেন। যদি কেউ মনমরা হয়ে চিন্তিত অবস্থায় থাকে, তাতে সে অসুস্থ হতে পারে। 

এশার পর ঘুমিয়ে পড়ুন 

রাত জেগে কাজ করা অথবা লেখাপড়া করা কোনোটিই ইসলামসম্মত নয়। ইসলামের সুন্নত পদ্ধতি হলো, এশার নামাজের পর ঘুমাতে হবে এবং ফজরের পর না ঘুমিয়ে কাজ করতে হবে। সাহাবিরা বলেন, ‘মহানবী সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামাজ শেষে রাতের খাবার খেতেন এবং এশার নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়তেন।’

মন্তব্য 

ইসলামে রয়েছে চূড়ান্ত কল্যাণ এবং চূড়ান্ত মুক্তি। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ১৪০০ বছর আগে আমাদের যে দিন দিয়ে গেছেন তা কেয়ামত পর্যন্ত একমাত্র সত্য ও চির কল্যাণকর দিন।

প্রতিটি মানুষের রাজনীতি অর্থনীতি ধর্ম সাংসারিক নীতি সমাজনীতি চিকিৎসা পদ্ধতি সহ বিভিন্ন কিছু অর্থাৎ সবকিছুর বিষয় ইসলাম আমাদের জানিয়েছে। ঠিক তেমনি ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো ও সুস্থ থাকার উপায় ও ইসলামে রয়েছে। আর এটা পেতে হলে আপনাকে সেভাবেই পথ চলতে হবে যেভাবে চলেছেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবায়ে কেরাম। 

আপনাকে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক সাবধান হতে হবে, অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে, যে খাবার রসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করতেন না তা এড়িয়ে চলতে হবে আর তিনি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমাতেন আপনাকে সে সময় ঘুমাতে হবে। 

যেভাবে প্রিয়নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটা দিন জীবনযাপন করতেন সেভাবে আপনাকে প্রতিদিন জীবনযাপন করতে হবে। রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহর বৈজ্ঞানিক উপকারিতা আজ বিশ্বে প্রমাণিত। অথচ আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে আমাদের নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সেই সমস্ত সুন্নাত আমাদের দেখিয়েছেন ও জানিয়েছেন।

সুতরাং দ্বীন ইসলাম মেনে জীবনযাপন করলে আপনার ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রিত, অতিরিক্ত মেদভূড়ি থেকে আপনি বেঁচে থাকতে পারবেন এবং আপনি সুস্থ সবল জীবন উপভোগ করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। 

আমাদের আজকের আলোচনায় এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে হাজির হব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ্ তাআলা আমাদেরকে পবিত্র কুরআন এবং সহীহ্ হাদীস অনুযায়ী জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন‌, আমিন।

Visited 1 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here