আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু। আর এই ছয়টি ঋতুর নাম আমরা সেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। ঋতুগুলো হচ্ছে গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্তকাল। কিন্তু আপনি কি জানেন কিভাবে ঋতু পরিবর্তন হয়? বা ঋতু পরিবর্তন এর ধারা সম্পর্কে কি আপনার ধারণা আছে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনার উত্তর হবে না।
আমরা আমাদের দেশের ছয়টি ঋতুর নাম জানি এবং এটাও জানি যে এই ছয়টি ঋতু প্রত্যেকবার পরিবর্তন হয়ে ঘুরে ফিরে আসে প্রকৃতিতে। ছয়টি ঋতুতে আমাদের দেশের প্রকৃতি ছয় ভাবে সজ্জিত হয়। কিন্তু কিভাবে ঋতু পরিবর্তন হয় প্রশ্নটা কিন্তু থাকছে।
আর একজন বাঙালি হিসেবে আপনার অবশ্যই ঋতু কিভাবে পরিবর্তন হয় সে বিষয়ে জেনে রাখা জরুরি। আজকে আপনাদের এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বলবো। চলুন তবে শুরু করা যাক।
কিভাবে ঋতু পরিবর্তন হয় | ঋতু পরিবর্তন এর কারণ
মূলত বার্ষিক গতির ফলে ঋতু পরিবর্তন হয়ে থাকে। তবে বার্ষিক গতি ছাড়াও ঋতুর পরিবর্তন হওয়ার কয়েকটি কারণ আছে। নিচে ঋতুর যে পরিবর্তন হয় সেটির ৫ টি কারণ সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
১. পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দিবা রাত্রির হ্রাস বৃদ্ধির জন্য তাপমাত্রার তারতম্য
একটু খেয়াল করে দেখুন সূর্য যখন সোজাসুজি বা লম্বা হয়ে পৃথিবীর কোনো একটি স্থানে আলো দিচ্ছে সেখানে তাপমাত্রা কেমন হবে এবং একই স্থানে যখন সূর্য তির্যক ভাবে আলো দিচ্ছে তখন এইবা তাপমাত্রা কেমন হবে উক্ত স্থানে। নিশ্চয় যেখানে সোজাসুজি বা লম্বালম্বি ভাবে আলো দিচ্ছে সেখানে তাপমাত্রা বেশি হবে। কারণ সূর্য থেকে উক্ত স্থানে আলো আসতে খুব বেশি পথ অতিক্রম করার প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু তির্যক ভাবে আলো আসার ক্ষেত্রে বেশি পথ অতিক্রম করতে হয় বলে উক্ত স্থান উত্তপ্ত কম হয়ে থাকে।
ফলে যে সময় সূর্য সোজাসুজি আলো দেয় তখন উক্ত স্থানে গ্রীষ্মকাল এবং কখন তির্যক ভাবে আলো দেয় তখন সেই স্থানে শীত কাল। এইভাবে তাপমাত্রার তারতম্য ঘটার মাধ্যমে ঋতু পরিবর্তন হয়।
২. পৃথিবীর আকৃতি
পৃথিবী হচ্ছে একটি অভিগত গোলকের মত। অর্থাৎ পৃথিবীর পূর্ব, পশ্চিম দিকে দেখতে কিছুটা চাপা আকৃতির। আর পৃথিবী অভিগত গোলকের মত হওয়ার কারণে তাপমাত্রা সমান ভাবে আবর্তিত হয় না। আর তাপমাত্রা ভিন্নভাবে আবর্তিত হওয়ার ফলে ঋতু পরিবর্তন হয়।
৩. পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ
পৃথিবী উপবৃত্তাকার হওয়ার ফলে পৃথিবীর উপবৃত্তাকার গিতিটি সকল স্থানে সমাজ হয় না। উপবৃত্তাকার কক্ষপথ এর গতি সমান না হওয়ার ফলে সূর্যের তাপমাত্রা সকল জায়গায় সমান হয়না। এর ফলে ঋতুর পরিবর্তন দেখা দেয়।
৪. পৃথিবীর কক্ষপথে কৌণিক অবস্থান
আপনি নিশ্চই জানেন পৃথিবী সবসময় হেলে থাকে। আর এর ফলে তাপমাত্রা তারতম্য দেখা দেয়। অর্থাৎ কৌণিক অবস্থান এর ফলে সূর্য থেকে পৃথিবীতে সকল স্থানে সমান ভাবে তাপমাত্রা পৌঁছাতে পারে না। ফলে এক জায়গায় গ্রীষ্মকাল জলে অন্য জায়গাতে শীতকাল হয়ে থাকে।
৫. বার্ষিক গতি
আমরা সবাই এটা জানি যে সূর্যকে সম্পূর্ণ ভাবে ঘুরে আসতে পৃথিবীর মোট সময় লাগে ৩৬৫ দিন বা ১ বছর। আর পৃথিবীর এই ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের ঋতু বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। যেমন পৃথিবীতে এমনও অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে অর্ধেক বছর দিন থাকে বাকি অর্ধেক বছর রাত। এটি মূলত পৃথিবীর সূর্যের আসে পাশে ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার ফলে হয়ে থাকে।
–
তো আশা করছি আপনারা কিভাবে ঋতু পরিবর্তন হয় বা ঋতু পরিবর্তন এর ধারা সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা নিতে পেরেছেন। মূলত বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যবইতেও আপনি একই কারণ খুঁজে পাবেন। কারণ এই ৫ টি কারণ হচ্ছে নির্দিষ্ট করে উল্লেখিত কারণ যেগুলোর ফলে ঋতু বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন হয়।
আর্টিকেলটা এখানেই শেষ করছি। আপনাদের যেকোনো ধরনের মতামত কমেন্ট করে জানাবেন।