বাংলাদেশ বস্তশিল্পের জন্য পৃথিবীতে সেরা। এদেশে গার্মেন্টস ব্যবসা এর ভালো দিন গতসময় ও ছিলো এবং ভবিষ্যতেও থাকবে এই ব্যবসার প্রভাব।
পোশাক আমাদের মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম। শুধু এমনিতেই পরার জন্যই নয়; বরং সৌন্দর্যের জন্যও বর্তমানে পোশাকের বহুল ব্যবহার লক্ষ্যণীয়। পোশাকের রং এবং ডিজাইনে দেখা যায় সুন্দর কাজ।
এই পোশাকের রয়েছে বিশাল বাজার। বাংলাদেশ যত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে, তার মধ্যে প্রায় ৭০% ই আসে পোশাক এবং গার্মেন্টস খাত থেকে।
বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মান ভাল হওয়ায় সারা বিশ্বের অনেক দেশই পোশাক ক্রয় করে থাকে।
এই পোশাক কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিশাল এই ব্যবসা ও শিল্প। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হলো – গার্মেন্টস ব্যবসা আইডিয়া এবং গার্মেন্টস ব্যবসার শুরু থেকে বিস্তারিত গাইডলাইন নিয়ে।
তো চলুন জেনে নিই সেগুলোঃ-
গার্মেন্টস ব্যবসা বলতে আসলে কি বুঝায়?
আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে যে, গার্মেন্টস ব্যবসা আসলে কি? মূলত, যেখানে পোশাক উৎপাদন করা হয়, সে স্থানই হলো গার্মেন্টস।
আর গার্মেন্টস এ পোশাক উৎপাদন করার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করার প্রক্রিয়া কে গার্মেন্টস ব্যবসা বলে।
সাধারণত, কাপড় কে বিভিন্ন শেপ এবং সাইজ করা হয় মেশিনের সাহায্যে৷ এ কাজে যারা নিয়োজিত থাকে, তাদেরকে বলা গার্মেন্টস শ্রমিক। বাংলাদেশে অসংখ্য মানুষ গার্মেন্টস এ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
গার্মেন্টস ব্যবসা এর জন্য দরকার দক্ষ শ্রমিক। আর আমাদের দেশে রয়েছে প্রচুর দক্ষ শ্রমিক। তাই গার্মেন্টস ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে বিবেচিত। তাই আপনিও এ ব্যবসা টি করতে পারেন।
গার্মেন্টস ব্যবসা কেন করবেন?
আগেই আপনাদের বলেছি যে, তৈরি পোশাক থেকে প্রায় ৭০% বৈদেশিক মুদ্রা আসে বাংলাদেশে। আমাদের দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি বড় লাভজনক ব্যবসা।
আপনার যদি ভাল পরিমাণ অর্থ আয়ের সদিচ্ছা থাকে, তাহলে কেন করবেন না?
তবে হুটহাট করে এ ব্যবসা তে নামতে যাবেন না। কারণ, এই ব্যবসাতে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়।
আর হঠাৎ করে বিনা অভিজ্ঞতা নিয়ে এ ব্যবসা তে নামলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এজন্য, যারা এতে সফল হয়েছে, তাদের সাথে কথা বলুন। কাজ দেখুন এবং বুঝুন। গার্মেন্ট ব্যবসা এর জন্য কোথা হতে মাল সংগ্রহ করা হয় এবং ক্রেতা কোথায় পাওয়া যায় – এ তথ্যগুলো সংগ্রহ করুন।
সাধারণত, প্রচুর লাভ হয়ে থাকে এই ব্যবসাতে। কিন্তু এজন্য ঝুঁকিও নিতে হবে আপনাকে। যদি ভালমতো অভিজ্ঞতা নিতে পারেন ও কাজ বুঝতে পারেন – তাহলে এ ব্যবসার দ্বারা আপনি ধনী হয়ে যেতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্।
এই ব্যবসাটি দেয়ার জন্য মনস্থির করে থাকলে আপনাকে ব্যবসা দেয়ার আগেই ক্রেতা সংগ্রহ করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কেননা, ক্রেতা প্রাপ্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার গার্মেন্টস ব্যবসা এর জন্য।
গার্মেন্টস ব্যবসার লাভ এবং ক্ষতি
সাধারণত, অল্প বা একদম সামান্য বিনিয়োগে গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করা যায় না। আপনি যদি নিজে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দেয়ার মাধ্যমে গার্মেন্টস ব্যবসা করতে চান, তাহলে বড় অংকের বিনিয়োগের অ্যাবিলিটি বা সামর্থ্য থাকতে হবে।
এই ব্যবসাতে দুটি ভাগ রয়েছে। তা হলো – গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মাধ্যমে ব্যবসা ও রেডিমেড গার্মেন্টস পণ্যের ব্যবসা।
এ দুটির মধ্যে আপনি কোনটা করবেন সেটা আপনার সাধ্যানুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মাধ্যমে ব্যবসা
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মাধ্যমে যদি গার্মেন্টস ব্যবসা করতে চান, তাহলে আপনি বড় লাভের আশা করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়াও অসম্ভব নয়।
এজন্য আপনাকে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ব্যবসায়ে সফল মানুষদের কাছ থেকে আইডিয়া নিতে হবে। এর পাশাপাশি ইন্টারনেট রিসার্চও করতে হবে এবং বেশি বেশি জানতে হবে।
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কোথায় পাবেন, বাজার যাচাই, অগ্রীম ক্রেতা সংগ্রহ এবং এজাতীয় আরও কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে বড় অংকের লাভ সম্ভব।
নিয়মিত পোশাকের চাহিদা বিদ্যমান থাকার দরুন এ ব্যবসা তে লস এর আশঙ্কা কম। তবে অনভিজ্ঞভাবে নামরে ক্ষতির মুখে পড়ার সম্ভাবনা বেশি।
রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে স্বল্পমূল্যে কাপড় কিনে ব্যবসা করার প্রক্রিয়া কে রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসা বলে।
বিভিন্ন ক্যাটাগরির পোশাক নিয়ে রেডিমেড গার্মেন্টস কাপড়ের ব্যবসা করা যায়।
যেমনঃ বাচ্চাদের পোশাক, ছেলেদের পোশাক ইত্যাদি। বয়সভেদে পোশাকের এবং চয়েসের ভিন্নতা রয়েছে। চাহিদাসম্পন্ন পোশাক বেছে নিয়ে রেডিমেড ব্যবসা করতে পারেন।
আপনি সরাসরি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করতে চাইলে কিছু বিষয় দেখে নিতে হবে। যেমনঃ কাঁচামালের সহজলভ্যতা।
পোশাক উৎপাদনের জন্য সহায়ক কাঁচামাল যেন সস্তায় এবং সহজে মেলে সে বিষয় বিবেচ্য।
শুধু সস্তা হলেই হবে না বরং মানসম্মত কাঁচামাল লাগবে। কত টাকা মূল্যের বিনিয়োগে পোশাক উৎপাদন করা হবে – সে হিসেবটাও জরুরি। সেগুলোতে কত প্রফিট চান তার হিসাবও করে রাখতে হবে।
এছাড়াও গার্মেন্টস ব্যবসা এর জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রাথমিকভাবে, পুরনো মেশিন কিনেও কাজ শুরু করতে পারেন।
যদি খরচ কমিয়ে কম ঝুঁকি নিয়ে প্রথমে কাজ করতে পারেন এবং ক্রেতাদের ভাল পণ্য দিতে পারেন; তাহলে উপযুক্ত লাভ পেয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ্।
নতুন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি শুরু করার সময় কম লাভে পোশাক বিক্রয় করবেন। এটা নতুন ক্রেতা ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আর রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা এর জন্য প্রথমে এক লক্ষ্য টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন।
ধরুন, এই টাকায় তরুন যুবকদের জন্য ১,০০০ পিস শার্ট কিনলেন। এরপর মার্কেটে ক্রেতা সংগ্রহ করলেন আর তারপর তাদের কাছে স্বল্প লাভে বিক্রয় করলেন। প্রতি পিসে ৫ থেকে ৮ টাকা লাভে ছেড়ে দিলেন।
তাহলে এক লক্ষ টাকা বিনিয়োগে এক হাজার পিস পোশাক থেকে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা লাভের সুযোগ রয়েছে, যা নতুন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর জন্য মোটেও খারাপ মুনাফা নয়।
সবকিছু বিচার করলে এটাই বুঝা যাচ্ছে যে, গার্মেন্টস ব্যবসা তে পর্যাপ্ত লাভের বেশ ভাল একটি সুযোগ আছে। আর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের সাথে কাজ করতে পারলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম।
গার্মেন্টস ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে
পরিকল্পনা করার পর আপনাকে মূলধন নির্ধারণ করতে হবে। শুধুমাত্র ধারণা করে মূলধন হিসাব করে বিনিয়োগ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। আপনাকে মূলধন নির্ধারণ করতে হবে খুটিনাটি হিসেব করে।
যেমনঃ গার্মেন্টস ব্যবসা যেখানে দিতে চান সেই প্লেসের জন্য অ্যাডভানস ও মাসিক ভাড়া হিসাব করতে হবে।
এরপর মেশিনের হিসাব করতে হবে। গার্মেন্টস এর জন্য সাধারণত এক লাইন মেশিন লাগে। এক লাইনে ২০টি মেশিন থাকে।
তবে প্রাথমিকভাবে পুরনো কয়েকটা মেশিন নিজের নামে কিনে কাজ শুরু করতে পারেন। যেভাবেই শুরু করেন না কেন, যে পরিমানে মেশিন কিনবেন সে অনুযায়ী খরচ ধরবেন।
এরপর ইলেক্ট্রিসিটি, ওয়াসা সহ যা যা সংযোগ দরকার সেগুলোর জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী একটা খরচ ধরবেন।
কতজন শ্রমিক নিয়োগ দিবেন এবং কত টাকা মূল্যের কাঁচামাল সংগ্রহ করতে চাচ্ছেন, সেটার একটা হিসাব ধরবেন।
সমস্ত কিছু বিবেচনা করে ক্যালকুলেটরে হিসাব করে মূলধন নির্ধারণ করবেন। মূলধন নির্ধারণের পূর্বে সবকিছুর খরচ যাচাই করে সঠিক এমাউন্ট জেনে নিবেন। মূলধন ভেঙে ভেঙে বিনিয়োগ করবেন। এতে সমস্ত টাকা লসের ঝুঁকি থাকে না।
গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা
গার্মেন্টস ব্যবসা সম্বন্ধে বেশ কিছু বিষয় ইতিমধ্যে আলোচিত হয়েছে। এখন কিভাবে গার্মেন্টস ব্যবসা সুশৃঙ্খলভাবে ও সঠিক নিয়মে শুরু করতে পারেন, তার ব্যাপারে আপনাদের বিস্তারিত আইডিয়া দিবো ইনশা আল্লাহ্।
প্রথম ধাপ
প্রথম ধাপে আপনাকে গার্মেন্টস ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন তার ছক তৈরি করুন। কত বড় পরিসরে করবেন, কেমন মূলধন সক্ষমতা আছে তা বিচার করণ, শ্রমিক এবং কাঁচামাল যোগান, বাজার যাচাই সহ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সুন্দর গোছানো পরিকল্পনা করুন।
দ্বিতীয় ধাপ
পরবর্তীতে আপনার কাজ হলো মূলধন একত্র করে হাতে রাখা এবং প্রয়োজন অনুসারে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করা।
আপনি কখনোই আপনার সমস্ত মূলধন একবারে বিনিয়োগ করে ফেলবেন না। বরং আপনার মূলধন যদি থাকে ১৫ লক্ষ টাকা; তাহলে আপনি ২ থেকে সর্বোচ্চ ৩ লক্ষ টাকা প্রথমে বিনিয়োগ করে কাজ শুরু করবেন। তারপর বাকি মূলধন বুঝেশুনে বিনিয়োগ করবেন।
তৃতীয় ধাপ
উপযুক্ত ও ভাল জায়গায় গার্মেন্টস ব্যবসা দিবেন। কেননা, স্থান নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন ক্রেতার সাথে সহজে যোগাযোগ করা যায় ও সুযোগ সুবিধা ভাল – এমন স্থান নির্বাচন করবেন।
চতুর্থ ধাপ
গার্মেন্টস এর জন্য প্রয়োজনীয় মেশিন সংগ্রহ করুন। আর তার সাথে মানসম্পন্ন শ্রমিকও সংগ্রহ করতে হবে।
পঞ্চম ধাপ
ট্রেড লাইসেন্স করে ফেলতে হবে। এটাকে অনেক মানুষই অবহেলা করে; যা মোটেও উচিত নয়। যে কোন ব্যবসা জন্যই লাইসেন্স করা জরুরি। এতে বাড়তি সুবিধা মেলে।
ষষ্ঠ ধাপ
প্রথমে কম পরিমাণে পোশাক উৎপাদন করে সেগুলো বাজারজাত করার চেষ্টা করুন। ক্রেতাদের সাথে যুক্ত থাকুন। প্রাথমিক পর্যায়ে কম লাভেই পোশাক বিক্রয় করুন।
অবশ্যই মানসম্মত চাহিদা আছে এমন পোশাক সাপ্লাই করতে হবে। যে ক্রেতাদের কাছে আপনার নিজস্ব গার্মেন্টস থেকে পোশাক সেল করবেন, তাদের ফিডব্যাক নিবেন।
তারা কোনো সমস্যার কথা জানালে সেগুলো গুরুত্ব দিন ও সমস্যা সারানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।
যদি প্রাথমিক ভাবে আপনার উৎপাদিত গার্মেন্টস এর পোশাক সব বিক্রয় হয়ে ডায়, তাহলে সেটা আপনার জন্য বড় পজিটিভ একটি দিক।
সপ্তম ধাপ
ধরুন আপনার মূলধন ১৫ লক্ষ টাকা। আর আপনি ৩ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ভাল রেসপন্স পেয়েছেন। আর যাদের কাছে আপনার গার্মেন্টস এর উৎপাদিত পোশাক গুলো বিক্রয় করেছিলেন, তাদের কাছ থেকে ভাল রেসপন্স পেয়েছেন।
তারা আরও পণ্য অর্ডার দিতে চাচ্ছে; এমতাবস্থায় আপনি আরও মূলধন বিনিয়োগ করতে পারেন।
কারন, এই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম। এভাবেই কন্টিনিউ করতে পারেন আপনার গার্মেন্টস ব্যবসা।
গার্মেন্টস ব্যবসা এর ক্ষেত্রেই শুধু নয়; বরং প্রায় প্রতিটা ব্যবসাই অনেকটা বীজের মতো। বীজ যেরকমভাবে আস্তে আস্তে চারায় রূপান্তর হয়; অতঃপর ধীরে ধীরে ছোট গাছে রুপান্তর হয়ে ক্রমান্বয়ে বেড়ে ওঠে এবং বড় গাছে পরিণত হয়, ব্যবসাও এরকমই।
পোশাক আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদার একটি। এটির চাহিদা অনেক বেশি। এজন্য দরকার সঠিকভাবে মানুষের চাহিদা পূরণ করা।
আর গার্মেন্টস নিঃসন্দেহে মানুষের পোশাকের চাহিদা মেটানোর বড় এক প্ল্যাটফর্ম।
এই ব্যবসার ক্ষেত্রে লাভবান হতে অনেক সময লেগে যেতে পারে আপনার। এমনকি প্রথম ধাপের বিনিয়োগে লসও হতে পারে।
তবে লস কি কি কারণে হয়েছে সেটা নির্ণয় করে ব্যবস্থা নিলে ভবিষ্যতে লাভবান হতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্।
লাভবান হতে হলে প্রথমে বছরখানেকও লেগে যেতে পারে। তবে আশা হারাবেন না। সততা, ধৈর্য্য এবং কঠোর পরিশ্রমের সাথে মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করে যেতে পারলে কোটিপতি হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়!