গৃহ বীমা । হোম ইন্সুরেন্স পলিসি । যে সব বিষয় জানা দরকার 

0
9

গৃহ বীমা বা হোম ইন্সুরেন্স পলিসি আপনার বাড়ি এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্রকে আগুন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অন্যান্য অপ্রত্যাশিত ঘটনা থেকে সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। বাংলাদেশে হোম ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে কত ধরনের পলিসি রয়েছে, কিভাবে সর্বোত্তম পলিসি বাছাই করবেন এবং বীমা পূরণের পর তা দাবির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানুন এই আর্টিকেলে।  

গৃহ বীমা কি? 

হোম ইন্সুরেন্স যা বাড়ির মালিকের বীমা নামেও পরিচিত – এক ধরনের বীমা পলিসি যা ক্ষতি বা ক্ষতির ক্ষেত্রে আপনার বাড়ি এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের জন্য আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করে। বাংলাদেশে, গৃহ বীমা বাড়ির মালিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কারণ দেশটি বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে রয়েছে।

একটি হোম ইন্স্যুরেন্স পলিসি থাকা আপনাকে মানসিক শান্তি দিতে পারে, যেখানে আপনি বিপর্যয়ের ঘটনায় কবলিত হলেও থাকবেন আর্থিকভাবে সুরক্ষিত। এটি ক্ষতি বা ধ্বংসের ক্ষেত্রে আপনার বাড়ির মেরামত বা পুনর্নির্মাণের খরচ কভার করতেও সাহায্য করবে। অতিরিক্তভাবে, আপনার সম্পত্তিতে কেউ আহত হলে, পরবর্তীতে আপনাকে দায়ী করা হলে বাড়ির বীমা দায় কভারেজও প্রদান করা হবে।

কেনো গৃহ বীমা প্রয়োজন? 

আমাদের দেশে একটি বাড়ি মেরামত বা পুনর্নির্মাণের খরচ অনেক বেশি হয়ে থাকে। বীমা ছাড়াই বাড়ির মালিকদের ক্ষতির সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে হবে যদি কোনো প্রকার হোম ইন্সুরেন্স আপনি না করিয়ে থাকেন। উপরন্তু, সরকার ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতির জন্য কোনো সহায়তা প্রদান করে না, তাই হোম ইন্সুরেন্স পলিসি একজন ব্যক্তির সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সামগ্রিকভাবে, হোম ইন্সুরেন্স পলিসি বাংলাদেশের বাড়ির মালিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ কারণ এটি ক্ষতির ক্ষেত্রে আর্থিক সুরক্ষা এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে। আপনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদগুলির একটিকে রক্ষা করার জন্য একটি হোম ইন্সুরেন্স পলিসি কেনার কথা বিবেচনা করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশে কত ধরনের গৃহ বীমা পলিসি রয়েছে? 

বাড়ির মালিকদের বিভিন্ন চাহিদা ও সুবিধা মোতাবেক পলিসি বেছে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের হোম ইন্সুরেন্স পলিসি পাওয়া যায়। নিম্মে এই সংক্রান্ত কিছু পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হলো। 

১) ফায়ার ইন্স্যুরেন্স বা অগ্নিবীমা: এই ধরনের পলিসি আগুন, বজ্রপাত, বিস্ফোরণ এবং অন্যান্য অগ্নি-সম্পর্কিত ঘটনার কারণে ক্ষতির জন্য কভারেজ প্রদান করে। এতে ধোঁয়ার ক্ষতি এবং সম্পত্তি ভাড়া দেওয়া হলে ভাড়ার আয়ের ক্ষতির কভারেজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। অগ্নিবীমা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আরেকটি ডিটেইলস তথ্য সহিত আর্টিকেল “ অগ্নিবীমা কি ও তার প্রকারভেদ “ থেকে। 

২) বাড়ির জিনিসপত্রের বীমা: ক্ষতির ক্ষেত্রে এই ধরনের পলিসি বাড়ির অভ্যন্তরে ব্যক্তিগত সম্পত্তি যেমন আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স এবং পোশাকের জন্য কভারেজ প্রদান করা হয় এই পলিসির আন্ডারে। 

৩) দায় ভার বীমা: আপনার সম্পত্তিতে কেউ আহত হলে এবং আপনাকে দায়ী করা হলে এই ধরনের পলিসি আইনি দায়বদ্ধতার জন্য কভারেজ প্রদান করে। এর মধ্যে চিকিৎসা খরচ এবং আইনি ফি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

৪) ব্যাপক আকারে গৃহ বীমা: এই ধরনের পলিসি বাড়ির কাঠামো, ব্যক্তিগত সম্পত্তি এবং দায়বদ্ধতার ক্ষতির জন্য কভারেজের সমন্বয় একত্রে প্রদান করে। এই ধরনের পলিসি হোম ইন্স্যুরেন্সের জন্য সবচেয়ে ব্যাপক আকারে কভারেজ হিসাবে গণ্য করা হয়। হোম ইন্সুরেন্স পলিসির প্রায় সকল ক্ষয় ক্ষতির বিষয় এই পলিসিতে ইনক্লুডেট। 

৫) প্রাকৃতিক দুর্যোগ বীমা: এই ধরনের পলিসি বিশেষভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং ভূমিধসের কারণে ক্ষতির জন্য কভারেজ প্রদান করে থাকে।

Note: এই পলিসিগুলির প্রাপ্যতা এবং কভারেজ বীমা কোম্পানির দ্বারা পরিবর্তিত হতে পারে। একটি পলিসি কেনার আগে কভারেজ এবং বর্জন সমূহ বোঝার জন্য বিভিন্ন পলিসির তুলনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলা আলো ওয়েবসাইটের ইন্সুরেন্স নামক ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন কোম্পানির বীমা পলিসি সম্পর্কে কেস স্ট্যাডি প্রদান করা রয়েছে। সেগুলো দেখে বিচার বিশ্লেষনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহনই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

হোম ইন্সুরেন্স পলিসির প্রিমিয়াম গণনা

 আপনি যখন নিজের বাড়ির বীমা করাতে যাবেন তখন আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল প্রিমিয়ামের পরিমাণ। আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে আপনি কত অর্থের প্রিমিয়াম প্রদান করছেন প্রতি মাসে। কেননা এর ওপর নির্ভর করবে আপনাকে কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ভবিষ্যতে। এক্ষেত্রে এক একটি কোম্পানির এক এক ধরনের প্রিমিয়াম পলিসি রয়েছে, আপনি যে কোম্পানির পলিসি গ্রহণ করুন না কেন প্রথমে উক্ত পলিসির প্রিমিয়াম গণনা করে নিবেন হোম ইন্সুরেন্স ক্যালকুলেটর এর মাধ্যমে। 

Home insurance policy বীমা প্রিমিয়াম এর জন্য বিবরণী তৈরীর ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস এবং তথ্যগুলো প্রয়োজন হবে। 

  • ভবনটির বয়স
  •  বাড়ি নির্মাণকালীন খরচ
  •  বাড়িটি কোন এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে
  •  মালিকের বিবরণ যেমন ইমেল আইডি, মোবাইল নাম্বার, নাম, জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • উক্ত বাড়িতে থাকা মালামাল বা সামগ্রী সমূহ
  •  বাড়িটিতে যদি ভাড়া প্রদান করা হয় বা ভাড়াটিয়া থাকে তবে তাদের বিবরণ
  •  বাড়িতে থাকা অন্যান্য সামগ্রী – যেমন: গাড়ি, বাইক, গহনা ইত্যাদি এর তথ্য সমূহ। 

আপনার বাড়ি বীমা প্রিমিয়াম কত হবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না কেননা আপনার বাড়ির আয়তন নির্মাণ খরচ সে বাড়িতে থাকা সামগ্রী সমূহ এবং অতিরিক্ত বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে একেক জন বাড়ির মালিকের বীমা প্রিমিয়ামের সংখ্যা এক এক রকম হয়ে থাকে। তার উপর আপনি কত সময়ের জন্য বীমা প্রিমিয়ামটি চালিয়ে যেতে চাচ্ছেন সেটিও প্রিমিয়াম এর পরিমাণকে প্রভাবিত করে।

গৃহ বীমার সুবিধা ও কভারেজ সমূহ 

ইন্সুরেন্স কোম্পানি তাদের গ্রাহক সেবা প্রদানের সর্বদা তৎপর। তবে কিছু কিছু বিষয় রয়েছে যা ঘটলে অনেক কোম্পানিই ইন্সুরেন্স দাবী পূরণ করতে চায় না। তাই একটি নিদিষ্ট ক্যাটাগরিতে বীমা সুবিধা ও কভারেজ সম্পর্কে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই পর্যায়ে একটি হোম ইন্সুরেন্স পলিসি এর ক্ষেত্রে সাধারণত কোন কোন ঘটনায় কভারেজ বা ক্ষতিপূরণ প্রদান করে সে সম্পর্কে জানাবো। 

১) বাড়ির কাঠামোর ক্ষতি: বাড়িতে আগুন, বজ্রপাত, বিস্ফোরণ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো ঘটনাগুলির কারণে ক্ষতির ক্ষেত্রে বাড়ির মেরামত বা পুনর্নির্মাণের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করে থাকে।

২) ব্যক্তিগত সম্পত্তি: বাড়ির ভিতরে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, যেমন: আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স এবং পোশাকের ক্ষয় ক্ষতির ক্ষেত্রে কভারেজ সুবিধা প্রদান করে থাকে।

৩) দায়বদ্ধতা কভারেজ: এতে আইনী দায়বদ্ধতার কভারেজ অন্তর্ভুক্ত থাকে যদি কেউ আপনার সম্পত্তিতে আহত হয় এবং আপনাকে দায়ী করা হয়। এর মধ্যে চিকিৎসা খরচ এবং আইনি ফি প্রদানের লক্ষে বীমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। 

৪) অতিরিক্ত জীবনযাত্রার ব্যয়: এতে হোটেল এবং রেস্তোরাঁর বিলের মতো অতিরিক্ত জীবনযাত্রার ব্যয়ের কভারেজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। যদি আপনি পলিসি দ্বারা অবস্থানগত ক্ষতির কারণে আপনার বাড়িতে থাকতে না পারেন এবং আপনাকে বাড়ির বাইরে অবস্থানগত কারনে যে অতিরিক্ত খরচ হয়ে থাকে সেগুলো বীমা কোম্পানি বহন করবে। 

৫) ভাড়ার ক্ষতি: এখানে ভাড়ার আয়ের ক্ষতির কভারেজ অন্তর্ভুক্ত থাকে। যদি বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় এবং ভাড়াটেরা পলিসি দ্বারা আচ্ছাদিত ক্ষতির কারণে সম্পত্তিটি দখল করতে অক্ষম হয় বা ভাড়া না পাওয়া যায় তবে বীমা কোম্পানি সেটির ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। 

বিঃদ্রঃ হোম ইন্সুরেন্স পলিসির কভারেজের জন্য নির্দিষ্ট সময় সীমা এবং বর্জনীয় কিছু কাজ অবশ্যই উল্লেখ্য থাকবে। এই সীমা এবং বর্জনগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যাতে আপনার পলিসির অধীনে কী কভার করা হয় এবং কী নয় সে সম্পর্কে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকে।

কিভাবে সেরা গৃহ বীমা বেছে নেয়া যায়?

বাংলাদেশে বিধ্যমান বীমা কোম্পানির মধ্যে সেরা হোম ইন্সুরেন্স পলিসি বেছে নেয়া কঠিন কাজ। কিন্তু এবারে যে টিপসগুলি উপস্থাপন করা হবে তা অনুসরণ করে, আপনার চাহিদা এবং বাজেটের জন্য সর্বোত্তম বীমাটি বেছে নিতে পারবেন।

১) পলিসির তুলনা করুন: আপনার প্রয়োজনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত একটি খুঁজে পেতে বিভিন্ন বীমা কোম্পানির দেওয়া বিভিন্ন পলিসির তুলনা করুন। শুধু দামই নয় বরং কভারেজ এবং বর্জনীয় কাজের সাথে তুলনা করতে ভুলবেন না।

২) ক্ষয় ক্ষতি বা কভারেজ বুঝুন: পলিসির অধীনে কী কভার করা হয়েছে এবং কী বাদ দেওয়া হয়েছে তা আপনি ঠিক বুঝতে পেরেছেন কি-না তা নিশ্চিত করুন। তাছাড়া কোনো বিষয়ে আপনার যদি কোনো সন্দেহ থাকে তাহলে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে উক্ত বিষয়ে ক্লিয়ার থাকুন।

৩) আপনার বাড়ির অবস্থান বিবেচনায় রাখা জরুরি: যদি আপনার বাড়ি এমন একটি এলাকায় অবস্থিত হয় যেখানে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় বা ভূমিধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা হারহামেসা বিধ্যমান তাহলে এই ঘটনা গুলো কভারেজে অন্তর্ভুক্ত এমন একটি পলিসি গ্রহন বুদ্ধিমানের কাজ।

৪) দাবির প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করুন: আপনি দাবি করার প্রক্রিয়াটি বুঝতে পেরেছেন তা নিশ্চিত করুন, যার মধ্যে একটি দাবি কীভাবে ফাইল করতে হয় এবং দাবি প্রক্রিয়া চলাকালীন কী আশা করা যায়।

৫) কোম্পানির খ্যাতি যাচাই করুন: একটি পলিসি কেনার আগে বীমা কোম্পানির খ্যাতি যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি খবর নিন যে তাদের দাবি পরিশোধের একটি ভালো রেকর্ড আছে। কোনো দুর্নিতির সাথে কোম্পানিটি যুক্ত কি-না সেটির রেকর্ড চেক করুন। 

৬) যেকোনো নীতি বুঝতে সময় নিন: পলিসি কেনার জন্য কখনই তাড়াহুড়ো করবেন না। বীমা কোম্পানির বিভিন্ন বিক্রয় কর্মীরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাবে যত তারাতারি সম্ভব আপনাকে একটি পলিসি ধরিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু কোনো ভাবে তাদের কথার ফাদে পা না দিয়ে নিচে বিবেচনা করুন। পলিসি বোঝার জন্য সময় নিন এবং যদি আপনার কোন সন্দেহ থাকে, তাহলে একজন বীমা এজেন্ট বা বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।

টিপসগুলি অনুসরণ করে নিশ্চিত হোন যে, কোন কোম্পানির কোন পলিসি গ্রহন করা প্রয়োজন। এরই মাধ্যমে বাজেটের মধ্যে বিধ্যমান বাংলাদেশের সেরা হোম ইন্সুরেন্স পলিসি পেয়ে যাবেন।

গৃহ বীমার জন্য দাবী (Claim) করার নিয়ম 

হোম ইন্সুরেন্স পলিসির দাবির প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল হতে পারে, তবে এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে  আপনি প্রক্রিয়াটিকে যতটা সম্ভব সহজে করতে পারবেন বলে আশাবাদী হচ্ছি। তাই আর কথা না বাড়িয়ে হোম ইন্সুরেন্স কিভাবে ক্লেইম করবেন সেই নিয়ম সম্পর্কে জানুন।

ঘটনাটি রিপোর্ট তৈরি করুন

যেকোনো ঘটনা যা ইন্সুরেন্স ক্লেইম করার জন্য দাবীদার হলে সেটির ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সাথে সাথে ঘটনাটি জানাতে বীমা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করুন। এক্ষেত্রে ফোন বা অনলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যেতে পারে। আপনাকে ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করতে হবে, তারিখ এবং সময় সহ সেখানে কি ঘটেছে এবং কি কি ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য বিবৃতি প্রদান করা জরুরি।

ডকুমেন্টেশন সংগ্রহ করুন

আপনার দাবিকে সমর্থন করবে বা গ্রহনযোগ্যতা বাড়বে বা প্রয়োজন হতে পারে – এমন যেকোনো ডকুমেন্টেশন সংগ্রহ করুন। এটি হতে পারে কোনো ছবি, ভিডিও, ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ব্যক্তিগত, সম্পত্তির রসিদ অথবা অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য হতে পারে। এগুলো যতটা ডিটেইলস হবে ততটাই বেশি নির্ভরযোগ্য হবে বিষয় গুলো বীমা কোম্পানির কাছে। 

দাবি জমা দিন 

বীমা কোম্পানির কাছে আপনার দাবি জমা দিন। তারই সাথে প্রদান করুন সংগৃহীত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন। বীমা কোম্পানি আপনার দাবি পর্যালোচনা করবে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত তথ্য বা ব্যাখ্যা চাইতে পারে। সব ঠিক ঠাক বলে গণ্য হলে আপনার দাবীর আলোকে অফিসের পক্ষ থেকে আপনার স্থান পরিদর্শনের জন্য যাবে। 

পরিদর্শন করার ক্ষেত্রে 

দাবি জমা দেওয়ার পরে, বীমা কোম্পানি ক্ষতির পরিদর্শন করার জন্য একটি টিম পাঠাবে। উক্ত টিম ক্ষতির মূল্যায়ন করবে এবং দাবির পরিমাণ নির্ধারণ করবে। উল্লেখ্য যে, বীমা কোম্পানির লোকদের পরিদর্শনের পূর্বে কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের কোনো কাস্টমাইজেশন বা মেরামত করা যাবে না। এতে করে প্রমাণ সমূহের যথাযথ মূল্যায়ন হবে না এবং দাবী কার্যকরে সমস্যা সৃষ্টি হবে। 

অনুমোদন এবং অর্থপ্রদান

এটি পুরো প্রসেসের সবশেষ ধাপ। আপনার দাবি অনুমোদিত হলে, বীমা কোম্পানি দাবীর পরিমাণ প্রদান করবে, যা আপনার বাড়ি মেরামত বা পুনর্নির্মাণ করতে সহায়ক বা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া ব্যক্তিগত সম্পত্তি প্রতিস্থাপন করতে ব্যবহৃত হবে। 

বিঃদ্রঃ দাবী প্রক্রিয়া কিছু সময় নিতে পারে, যা সম্পূর্ণ হতে কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এছাড়াও, এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে বিভিন্ন বীমা কোম্পানির বিভিন্ন দাবির ভিন্ন প্রক্রিয়া থাকতে পারে। সুতরাং, আপনার বীমা কোম্পানির বাছাইয়ের সময়েই উক্ত বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করে চুক্তি সম্পন্ন করার পরামর্শ রইলো। 

গুরুত্বপূর্ন মন্তব্য 

বাংলাদেশের বাড়ির মালিকরা একটি বাড়ি নির্মাণ করতে নিজেদের সকল অর্থ ব্যয় করে ফেলে। তাই এটা খুব সাভাবিক যে, নিজের বাড়ির সাথে হওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাথে লড়াইয়ের জন্য গৃহ বীমা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হোম ইন্সুরেন্স একটি বাড়ি কিংবা উক্ত বাড়িতে থাকা ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতির ক্ষেত্রে আর্থিক সুরক্ষা এবং মানসিক শান্তি প্রদান করে। 

বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের হোম বীমা পলিসি পাওয়া যায়, যার প্রত্যেকটির নিজস্ব কভারেজ সুবিধা ও নিয়ম রীতি রয়েছে। পলিসি কেনার আগে পলিসির তুলনা করা এবং কভারেজ বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। দাবি প্রক্রিয়াটি কিছুটা জটিল হতে পারে, তবে এই আর্টিকেলে বর্ণিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে, প্রক্রিয়াটিকে যতটা সম্ভব সহজ করা যেতে পারে।

উক্ত আর্টিকেলে আমরা হোম ইন্স্যুরেন্সের গুরুত্ব, পলিসির ধরন, কভারেজ এবং সুবিধাসহ দাবির প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছি। উপরোক্ত তথ্যের আলোকে, আমরা অত্যন্ত সুপারিশ করছি যে বাংলাদেশের সকল বাড়ির মালিক তাদের বাড়ি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য একটি বাড়ির বীমা পলিসি কেনার কথা বিবেচনা করুন। আপনার প্রয়োজন এবং বাজেটের জন্য সর্বোত্তম কভারেজ খুঁজে পেতে যা করা উচিৎ তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। 

তাই খুব দেরি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না, একটি হোম ইন্সুরেন্স পলিসি দিয়ে আজই আপনার বাড়ি এবং আপনার প্রিয়জনের সাথে হওয়া ক্ষতির রক্ষা করুন। বাংলা আলো ওয়েবসাইটে কেবল হোম ইন্সুরেন্স পলিসি ই নয়, বরং সকল ধরনের ইন্সুরেন্স পলিসি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। যেকোনো বীমা সংক্রান্ত বিষয় জানতে ইন্সুরেন্স নামক ক্যাটাগরিটি অনুসরণ করুন, পাশাপাশি রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ইন্সুরেন্স কোম্পানির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য যা আপনার বীমা কোম্পানি বাছাই করার কাজে সহায়ক হবে। 

Visited 3 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here