চাকরির পাশাপাশি করা যায় এমন ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া | ইউনিক ব্যবসার আইডিয়া

0
62

চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করা সম্ভব? এমন কি ব্যবসা আছে? এ বিষয়েই আজকের এই আর্টিকেল। এমনই ১০টি ইউনিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক।

 

আমরা অনেকেই এমন আছি যারা চাকরিজীবী। অনেকের ডিউটি টাইম ৮ ঘন্টা; আবার কারও তারও বেশি। সারাদিন কাজ করার পর বাড়তি আয়ের জন্য চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করা মন্দ কোন চিন্তা নয়!

 

বর্তমানে এমন কিছু ব্যবসা রয়েছে; যেগুলো কি না আপনি চাকরির পাশাপাশি সহজেই করতে পারেন। দিনে যদি ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় ঠিকমতো ব্যবসা গুলোতে ব্যয় করতে পারেন, তাহলে ভাল পরিমাণে অর্থ আয় করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্।

 

এমনই চাকরির পাশাপাশি করা যায় এমন ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া | ইউনিক ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে চলুন জেনে নেইঃ

 

চাকরির পাশাপাশি করা যায় এমন ১০টি ব্যবসার আইডিয়া

 

আপনি যদি চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে চান; তাহলে সেরা মাধ্যম হলো ইন্টারনেট এবং ছোট দোকানের মাধ্যমে ব্যবসা করা। এমনই ১০টি ব্যবসা আইডিয়া নীচে উল্লেখ করা হলোঃ

 

১। চা পাতার ব্যবসা

 

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চা নিঃসন্দেহে একটি জনপ্রিয় পানীয়। ছোট বগ প্রায় সবার কাছেই এটি পছন্দের। ঘর থেকে শুরু করে চায়ের দোকান বা হোটেল; প্রায় সর্বত্রই এটির চাহিদা বিদ্যমান রয়েছে।

 

আপনি যদি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে চা পাতার ব্যবসার মাধ্যমে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করে সফলতা প্রাপ্তি অসম্ভব কিছু নয়।

 

এজন্য ডোমেইন হোস্টিং কিনে একটি নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও ব্যবসা করতে পারেন। প্রথমে ২০ কেজি চা পাতা নিয়ে অনলাইন এ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। প্রাথমিকভাবে, নূন্যতম ১২ হাজার টাকা মূলধন হিসেবে যথেষ্ট 

 

২। অনলাইন শিক্ষকতার ব্যবসা

 

আমরা এমন অনেকেই আছি যারা কি না বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ। কেউ হতে পারে আরবি ভাষায় অথবা কেউ ইংরেজি বা অন্য কোন ভাষায়। তাছাড়া অনেকে গণিত এবং বাংলা বিষয়েও ভাল বুঝেন।

 

এছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইন অথবা ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর মতো কাজেও অনেকেই পটু আছেন। আপনি যদি এমনই কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন, তাহলে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে পারেন অনলাইন শিক্ষকতার মাধ্যমে। এই ব্যবসা করার জন্য তেমন বড় মূলধনের প্রয়োজন নেই।

 

ডোমেইন হোস্টিং কিনে একটি ওয়েবসাইট খুলে সেখানে লাইভ ক্লাস নিতে পারেন নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে। এছাড়া আপনি অনলাইন শিক্ষকতার অংশ হিসেবে ভিডিও টিউটোরিয়াল বিক্রী করেও ব্যবসা করতে পারেন।

 

৩। আর্টিকেল লেখার ব্যবসা

 

শখের বশে অনেক ব্যক্তিই আগে আর্টিকেল লিখতেন। কিন্তু বর্তমানে এই আর্টিকেল লেখার মাধ্যমে ব্যবসা করা সম্ভব। আপনি যদি লেখালিখি করতে ভালবাসেন, তাহলে নিজের পার্সোনাল ব্লগ তৈরি করে সেখানে লিখতে পারেন।

 

আপনি চাকরির পর অবসর সময় থেকে যদি নূন্যতম ২ ঘন্টা করে নিয়মিত ব্লগে আর্টিকেল লেখায় সময় দিতে পারেন; তাহলে কয়েক মাসের মধ্যে ভাল অবস্থান প্রাপ্তি অসম্ভব নয়।

 

আপনার আর্টিকেল এর মান ভাল হলে এবং পর্যাপ্ত পাবলিক রিচ থাকলে বিভিন্ন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তাদের বিজ্ঞাপন আপনার ব্লগে শো করার মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন।

 

৪। পুরনো ফোনের ব্যবসা

 

পুরনো ফোনের চাহিদা বর্তমানে অনেক। বাটন ফোনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি চাহিদা হলো স্মার্টফোন গুলোর। আপনি যদি কোথাও থেকে ভাল মানের পুরনো ভাল ফোন সংগ্রহ করতে পারেন, তাহলে এগুলো বিক্রয়ের মাধ্যমে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে পারেন।

 

ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এবং বিক্রয় ডট কমে পুরনো ফোন বিক্রয় করতে পারেন। এছাড়া কিছু টাকা খরচ করে যদি নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন রকমের ফোন বিক্রয়ের মাধ্যমে ডিসপ্লে করতে পারেন, তাহলে ভাল পরিমাণে ব্যবসায়ীক লাভ প্রাপ্তি সম্ভব।

 

৫। মিক্সড ড্রাই ফ্রুটস এর ব্যবসা

 

যারা স্বাস্থ্য সচেতন এবং খাবারের ভালোমন্দ বুঝেন; তাদের কাছে ড্রাই ফ্রুটস একটি চাহিদাসম্পন্ন খাদ্য। পেস্তা বাদাম, চেরি, কাঠ বাদাম, জাম্বু কাজু বাদাম, ব্ল্যাক খুরমা, এপ্রিকট  সহ বিভিন্ন কিছুর সমন্বয়ে ড্রাই ফ্রুটস তৈরি করা হয়, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি।

 

এটি বানানোর নিয়ম ইউটিউব এবং গুগল সার্চ করে পেয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ্। এটি তৈরি করা কঠিন কিছু নয়। আপনি অনলাইনে এটি বিক্রয়ের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন। চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার জন্য ড্রাই ফ্রুটস হলো সহজ কিন্তু লাভজনক একটি ব্যবসা।

 

৬। হোম মেড খাবারের ব্যবসা

 

ভোজনরসিক বাঙালির ঘরে তৈরি বা হোম মেড খাবারে বেশ আগ্রহ দেখা যায়। অনেকে ফেসবুকে ঘরোয়া খাবারের বিজ্ঞাপন দিলে তাতে বেশ ভাল রেসপন্স পেতে প্রায়ই দেখা যায়।

 

আপনি যদি বিভিন্ন খাবার আইটেম রান্না করতে পারেন, তাহলে অনলাইনে হোম মেড খাবার সেল করার মাধ্যমে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে পারেন। এজন্য তেমন আহামরি মূলধনের প্রয়োজন নেই।

 

তবে আপনার তৈরি করা খাবার কাস্টমারের কাছে ঠিকমতো পৌছানোর জন্য ভাল ডেলিভারি সার্ভিস এর প্রয়োজন। তাই এটি ম্যানেজ হয়ে গেলে এ ব্যবসা সহজেই করা সম্ভব।

 

বিরিয়ানি, তেহারি, লাবান অথবা মিষ্টিজাত দ্রব্যের মতো মুখরোচক খাবারের বেশ চাহিদা রয়েছে। আপনার খাবারের মান যদি ভাল হয়, তাহলে অল্প সময়েই সফলতা পাবেন ইনশা আল্লাহ্।

 

৭। পাঞ্জাবির ব্যবসা

 

ছেলেদের অন্যতম পছন্দের পোশাক হলো পাঞ্জাবি। বিশেষ করে ঈদের সময় প্রচুর পাঞ্জাবি বিক্রী হয় সারা দেশ জুড়ে। এছাড়া সারা বছরই পাঞ্জাবি কম বেশি বিক্রী হয়ে থাকে।

 

আপনি ছোট একটি দোকান নিয়ে পাঞ্জাবির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা আইডিয়া হিসেবে এটিও আপনি পছন্দ করতে পারেন। কেননা, এই ব্যবসা বেশ লাভজনক।

 

ভাল একটি স্থানে ছোট একটি দোকান নিয়ে প্রথমে অল্প কিছু রুচিসম্মত পাঞ্জাবি নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। এছাড়াও অনলাইনে পাঞ্জাবি বিক্রয় করতে পারেন। সেক্ষেত্রে দোকানের খরচ না থাকায় হাজার দশেক টাকা মূলধন বিনিয়োগ করে এ ব্যবসা আরম্ভ করতে পারেন।

 

৮। জুতার ব্যবসা

 

পোশাকের মতো জুতারও রয়েছে অনেক চাহিদা। জুতার মার্কেটে প্রতিদিনই হাজার হাজার টাকার জুতা বিক্রী হয়ে থাকে। মাসে লক্ষ টাকা আয় সম্ভব জুতার ব্যবসা এর মাধ্যমে।

 

তবে এ জন্য আপনার জুতা সম্বন্ধে ভাল জ্ঞান থাকা জরুরি। জুতার কোয়ালিটি এবং সাইজ অনুযায়ী রয়েছে ভিন্নতা। তাছাড়া ভাল জুতার বিভিন্ন দিক রয়েছে, যেগুলো একজন ব্যবসায়ীর জন্য জানা জরুরি।

 

আপনি যদি জুতা সম্বন্ধে ভাল জ্ঞান রাখেন, তাহলে এই ব্যবসা তে নামতে পারেন। এমনিতে সাধারণত, ৫ লক্ষ টাকা মূলধন প্রয়োজন জুতার ব্যবসা এর জন্য।

 

কিন্তু আপনি যেহেতু চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করবেন, তাই ছোট দোকান এবং অল্প পরিমানে জুতা স্টক করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এতে কম মূলধনেই কাজ হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ্।

 

এছাড়াও অনলাইনে জুতা বিক্রয় করতে পারেন। ফেসবুকের বিজনেস রিলেটেড গ্রুপে মেম্বারশিপ নিয়ে, নিজস্ব ওয়েবসাইটে অথবা ফেসবুক পেজ খুলেও ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

 

৯। অনুবাদের ব্যবসা

 

বইয়ের ক্ষেত্রে এবং ফ্রীল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে অনুবাদক অথবা ট্রান্সলেটরের চাহিদা রয়েছে। অনুবাদ সাধারণত ২ ধরনের হয়ে থাকে। ভাবানুবাদ এবং আক্ষরিক অনুবাদ।

 

আপনি যদি কমপক্ষে এক ধরনের অনুবাদও জানেন, তাহলে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে পারেন অনুবাদ করার মাধ্যমে। দুই ধরনের অনুবাদ জানলে সেক্ষেত্রে সেটা আপনার জন্য উত্তম বিষয়।

 

প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা সময় দিয়ে ভাল পরিমাণে অনুবাদের কাজ করা সম্ভব, যেটা চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করার অনূকূল একটি বিষয়।

 

১০। বইয়ের ব্যবসা

 

বইয়ের রয়েছে বিশাল চাহিদা। করোনায় স্কুল-কলেজ দীর্ঘসময় বন্ধ থাকার কারণে যদিও বইয়ের ব্যবসা অনেকটাই কমে গেছে, কিন্তু তারপরো এর চাহিদা এখনো বিদ্যমান রয়েছে।

 

বুদ্ধিমান মানুষেরা বিভিন্ন উপকারি বই সংগ্রহ করেন। তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন দরকারে বইয়ের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে আপনি একটি উপযুক্ত স্থানে বইয়ের ছোট দোকান দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন।

 

এমন অনেক মানুষই আছেন, যারা অনলাইনে নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বই বিক্রীর মাধ্যমে ভাল পরিমাণে অর্থ আয় করছেন। ক্রেতাদের জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবসার বড় একটি সুবিধা হলো, বাসায় বসে তারা তাদের কাঙ্খিত বই পেয়ে যায়।

 

তাই আপনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এবং দরকারি বই বিক্রয়ের মাধ্যমে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে পারেন। চাকরি করার পর ব্যবসাতে যত বেশি সময় দিবেন, ততই ভাল।

 

প্রতিদিন যদি ৩/৪ ঘন্টা করে সময় দিয়ে মনোযোগ সহকারে কাজ করতে পারেন, তাহলে বইয়ের ব্যবসা করে সফলতা পাবেন ইনশা আল্লাহ্।

 

ঢাকার নীলক্ষেত হলো বিশাল বইয়ের বাজার। সেখান থেকে কম মূল্যে নতুন-পুরাতন বিভিন্ন দরকারি বই সংগ্রহ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

 

আপনি যদি বুদ্ধি খাটিয়ে একটু কৌশলি হয়ে কাজ করার ইচ্ছা এবং আর্থিক সামর্থ্য রাখেন, তাহলে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অনেকভাবেই ব্যবসা করা যায়।

 

আরো জানুন : ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সফলতা অর্জনের জন্য কি করতে হবে!!

 

আপনি কোন ব্যবসা করার জন্য কেমন সময় দিতে পারবেন, কতটুকু পরিশ্রম দিতে পারবেন এবং কোন কাজটি আপনার নিজের জন্য উপযুক্ত মনে হয় – তা বিবেচনার মাধ্যমে পর্যাপ্ত মূলধন নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।

 

এছাড়াও ধৈর্য্য এবং বিশ্বস্ততার সাথে যদি চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন; তাহলে একটা সময় অবশ্যই সফলতা পাবেন ইনশা আল্লাহ্।

 

Visited 95 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here