জমি সংক্রান্ত যেকোনো ঝামেলা এড়াতে প্রয়োজন সেই জমির দলিল। যদি আপনার কাছে জমির দলিল এখন অব্দি নাহ থাকে তাহলে দেখে নিন কিভাবে তা বের করবেন।
আমাদের চারপাশে নজর দিলে যা প্রায়শই নজরে পরে সেটি হচ্ছে জমি নিয়ে বিরোধ৷ সেই সৃষ্টির শুরুর সময় থেকে চলমান নিজ জমি দখলে রাখা বা সীমানা নির্ধারণ নিয়ে গন্ডগোল৷ আর সমস্যা আরও বেশি বৃদ্ধি পায় তখনই যখন জমির দলিল না পাওয়া যায় বা কিভাবে জমির দলিল পেতে হয় সেটি না জানলে৷
বর্তমান সময়ে জমি সম্পর্কই মামলা, ভূমি অফিস সম্পর্কিত নানাবিধ অভিযোগ ও দেশকে ডিজিটালাইজ করার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে জমির দলিল প্রাপ্তির পুরাতন পদ্ধতির পাশাপাশি ডিজিটাল পদ্ধতিতেও জমির দলিল পাবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে৷ আজকের এ আর্টিকেলে অতি প্রয়োজনীয় বিষয় হিসেবে জমির দলিল বের করার নিয়ম বা যেকোন প্রকার জমির দলিল খুজে পাবার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে৷
জমির দলিল হচ্ছে নির্দিষ্ট জায়গা সম্পর্কিত তথ্যের সমষ্টি৷ প্রতিটি জমির দাগ নম্বর থাকে৷ নির্দিষ্ট দাগ নম্বরে, মৌজায় একটি ভুখন্ডের বিষয়ে কর, খাজনা, ক্রয়-বিক্রয়, ওয়ারিশ হিসেবে হস্তান্তর ইত্যাদি বিষয় যে একটি কাগজে সরকারি স্ট্যাম্প সমেত ও সরকারি রেকর্ডে স্থান পাওয়া দলিলটি হচ্ছে জমির দলিল৷
তাই কেবলমাত্র জমি ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজটি দলিল নয় বরং জমি সম্পর্কিত অন্যান্য যে কোন কাগজপত্র দলিল হিসবে গণ্য৷
জমির দলিলের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য! দলিলের মাধ্যমেই ব্যক্তির জমি সম্পর্কিত মালিকানা নির্ধারণ হয়৷ প্রকৃত মালিকের কাছে জমির দলিল থাকা আবশ্যকীয়৷ অন্যথায় প্রকৃত মালিক হওয়া স্বত্ত্বেও জমি বেদখল হয়ে যেতে পারে৷ কেননা, জমির দলিলে যার নাম থাকে, জমি তার বলেই গণ্য হয়৷
এজন্য পারিবারিক বন্টননামা করার পর তা রেজিষ্ট্রি করে যার যার জমির দলিল তার নিকট হস্তান্তর করতে হয়৷ এছাড়াও জমি ক্রয় করলে আসল জমির দলিল দেখে তা ক্রয় করতে হয়৷ কোন কারনে ক্রয়-বিক্রয়ের দলিল না পাওয়া গেলে সর্বশেষ খাজনা পরিশোধ ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করে নিতে হবে৷ নাহলে ভুয়া জমি ক্রয়ের শিকার হবার সম্ভাবনা থাকে ও জেল, জরিমানার মুখোমুখি হতে হয়৷
পূর্বেই যেমনটা বলেছি, জমির দলিল কেবল ক্রয়-বিক্রয়ের কাগজটি কেবল নয়৷ দলিল হিসেবে গণ্য হয় অন্যান্য ডকুমেন্টস ও৷ জমির দলিল হিসেবে বিবেচনা করা হয় এগুলোকেও:
খতিয়ান: আমরা অনেকেই হয়তো খতিয়ান শব্দটি শুনে থাকবো৷ খতিয়ান হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রস্তুতকৃত জমির মালিকানা/দাগের বর্ণনাসহ প্রস্তুতকৃত নথিচিত্র৷ মূলত খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় জমির প্রকৃত মালিকদের নিকট থেকে সরকারি খাজনা আদায় করা নিমিত্তে৷ এই খতিয়ানকে আবার কয়েকভাগে ভাগ করা হয়৷ যার মাঝে রয়েছে,
(ক) সিএস খতিয়ান
(খ) এসএ খতিয়ান
(গ) আরএস খতিয়ান
(ঘ) বিএস খতিয়ান/সিটি জরিপ
(ঙ) পেটি খতিয়ান
মাঠ পর্চা: মাঠ পর্চা হচ্ছে সরকার প্রদত্ত জমির মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ান৷ জমি জরিপ করার সময় জমি মালিকদের তাদের জমি সম্পর্কিত তথ্য এতে দেওয়া থাকে৷ খতিয়ান প্রকাশের আগে একে খতিয়ানের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়৷ যদি মাঠ পর্চায় কোন ভুল থাকে তবে খতিয়ান প্রকাশের পূর্বেই তা সংশোধন করে নিতে হবে৷
বিক্রয় দলিল হচ্ছে জমি ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত দলিল৷ অর্থাত এতে খতিয়ানে উল্লেখিত দাগ নাম্বারের কোন জমি কার নিকট হতে ও কার কাছে বিক্রয় করা হল তা উল্লেখ করা থাকে৷ মূলত একেই সাধারণভাবে আমরা জমির মূল দলিল হিসেবে বিবেচনা করে থাকি৷
অনলাইনে খতিয়ান বের করতে চাইলে সর্বপ্রথমে https://www.eporcha.gov.bd/khatian-search-panel ব্রাউজারে লিখে গো দিতে হবে বা সার্চ করতে হবে৷
২. এখানে সর্বপ্রথম বিভাগ সিলেক্ট করতে হবে এরপর জেলা, অতপর উপজেলা এবং সর্বশেষে মৌজা বাছাই করে নিতে হবে। (তবে তার আগে আপনার জমির জরিপ ধরণ অনুযায়ী বিএস, সিএস, বিআরএস, আরএস, এসএ, পেটি, দিয়ারা; ইগুলোর ভিতর যেইটি হবে সেইটি সিলেক্ট করে নিন)
৩. এরপর আপনার জমির খতিয়ান যাচাই করার জন্য ৪টি অপশন পাবেন৷ যেগুলো হচ্ছেঃ
(ক) খতিয়ান নং অনুযায়ী
(খ) দাগ নং অনুযায়ী
(গ) মালিকানা নাম অনুযায়ী
(ঘ) পিতা/স্বামীর নাম অনুযায়ী
এই ৪টি অপশনের মধ্যে যে অপশনের তথ্য আপনার নিকট রয়েছে সেই অপশনের বাম পাশের গোল ঘরে মাউস দিয়ে ক্লিক করে ফেলুন।
গোল ঘরে সিলেক্ট করলে তার নিচেই আরেকটি বক্স দেখা যাবে। তার ঠিক নিচে একটি ছোট বক্স আসবে, বক্সটি অবশ্যই পূরণ করুন।
অর্থাৎ খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখুন, দাগ নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে দাগ নম্বরটি বক্সে লিখুন, মালিকের নাম সিলেক্ট করে থাকলে মালিকের নাম বক্সে লিখুন, মালিকের পিতা/স্বামীর নাম সিলেক্ট করে থাকলে পিতা/স্বামীর নাম বক্সে লিখুন।
৪. এরপর নিচে দুটি সংখ্যা যোগ করতে বলা হবে। সংখ্যা দুটি যোগ করে যোগফল নিচের বক্সে লিখুন।
৫. সর্বশেষ ‘খুজুন’ অপশনে ক্লিক করুন। আপনার অনুসন্ধানকৃত খতিয়ানটি মনিটরে দেখা যাবে।
আর এভাবেই আপনি আপনার অনুসন্ধানকৃত আর এস খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন।
ডাকযোগে জমির খতিয়ান দলিল উত্তোলন করতে চাইলে সর্বপ্রথম গুগল প্লেস্টোর থেকে SoftBD Ltd এর eKhatian এ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে৷ অনলাইনে খতিয়ান দেখার পদ্ধতি অনুসরণ করে তথ্য পূরণ ও বক্স পূরণ করে নিতে হবে৷ সবকিছু ঠিকভাবে দেওয়া হলে জমির মালিক বা দখলদার দেখানো হবে৷ তার নিচে “আবেদন করুন” অপশনে ক্লিক করুন ডাকযোগে খতিয়ান পেতে চাইলে৷
আবেদনকরুন এ চাপ দিলে আবেদন ফর্মের পাতাটি আসবে৷ সেখানে “ডাকযোগে” অপশনটি সিলেক্ট করে নিন৷ ডাকযোগে সাধারণত ৭ দিন সময় লাগে খতিয়ান আসতে৷ জরূরী প্রয়োজন হলে জরুরী অপশন বেছে নিন৷ এতে ৩ দিনে খতিয়ান পেয়ে যাবেন৷
খতিয়ান সিলেক্ট করার পর পরবর্তীতে অনলাইনে বিকাশের মাধ্যমে ৩৫ টাকা প্রদান করে খতিয়ান প্রাপ্তির আবেদন পূর্ণ করুন৷ ব্যস, নির্দিষ্ট সময় পর আপনি খতিয়ান পেয়ে যাবেন৷
জমির দলিলের নকল তুলতে হলে যেতে হবে রেজিষ্ট্রি অফিসে৷ রেজিষ্ট্রি অফিসে যেয়ে আসল দলিলের সহায়তায় জমিটি কত সালে, কত নম্বর কলাম বইয়ের কত পৃষ্ঠায় নকল করা হয়েছে, সে সকল তথ্য প্রদান করে জমির নকল লাভের জন্য আবেদন করতে হবে৷ আবেদন গ্রহণযোগ্য হলে পরবর্তীতে আপনি জমির নকল দলিল উত্তোলন করতে পারবেন৷
অনলাইনে জমির দলিল বের করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ ও সাশ্রয়ী৷ ঝামেলাহীন এ পদ্ধতিতে জমির দলিল বের করা যায় যাতে একজনের শক্তি, সময় উভয়ই সাশ্রয় হয়৷ তথাপি জমির মালিকানা নিয়ে যে কোন ঝামেলা, আপত্তি দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভবপর হয়ে থাকে৷
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.