ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমাতে কে না চায়? তবে সবার দ্বারাই কি তা সম্ভব হয়? কাদের ও কেনো হয় না? টাকা জমানোর উপায় কি? কিভাবে ধনীরা তাদের টাকা জমিয়ে পাহাড় তৈরি করে? টাকা কি চাইলেই জমানো যায় নাকি এর মাঝেও আছে বিশেষ কোনো কৌশল?
করতে থাকলে এমন হাজারো প্রশ্ন করা যাবে তবে এগুলোর উত্তর কোথায়! টাকার খেলায় মেতে উঠা হোক বা টাকার টেনশনে চুল পড়া মানুষ হোক, অর্থ সংক্রান্ত জ্ঞান প্রয়োজন সকলের।
এখানে বেশ কিছু কৌশল, বেশ কিছু উপায়, এবং বেশ কিছু সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জানাবো যা আপনার অর্থ সংক্রান্ত জ্ঞানকে প্রসারিত করতে সাহায্য করবে।
Personal Finance বিষয়ক সকল সমস্যার সমাধানে বাংলা ভাষাতে সুস্পষ্ট ভাবে উপস্থাপনায় আজকের বিষয় ” টাকা জমানোর উপায় ” শুরু করা যাক টাকার খেলার আজকের আলোচনা।
নিম্মে উল্লেখিত ১০ টি টাকা জমানোর উপায় গুলো ধাপ অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে। ব্যাপারটি এমন যে প্রথমে যেই উপায় আছে সেটি ঠিক করেই পরবর্তী ধাপগুলোতে অগ্রসর হতে হবে। একটা সুষ্ঠু নিয়ম গড়তে বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন এক এক করে টাকা জমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
টাকা জমানোর জন্য সবার প্রথম যা প্রয়োজন তা হচ্ছে একটা সৎ ও একনিষ্ঠ মানসিকতা টাকা জামানোর জন্য। আপনার যদি মন মানসিকতাই না থেকে টাকা জমানোর তাহলে কখনই তা করা সম্ভব হবে না।
আপনি আজ বললেন টাকা জমাবেন অথচ আগামীকাল মন ভোলানো কোনো পন্য বা বিলাসিতা মূলক কার্যক্রমে বেশ খরচ করে ফেললেন তাহলে কখনই আপনি সফল ভাবে টাকা জমাতে পারবেন না।
টাকার পরিমান যতই হোক, সেটা জমানোর জন্য আপনার ইচ্ছাশক্তি প্রবল হতে হবে। ছোটখাটো বিষয়ে নিজের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটনো যাবে না। এর জন্য যখন আপনার মনে হবে আপনি যথাযথ ভাবে টাকা জমানোর জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে সক্ষম হবেন, তখনই পরের ধাপ গুলো অনুসরণ করবেন।
দেখুন, ব্যাপারটা হচ্ছে যে আপনি টাকা জমাতে চাচ্ছেন। বিষয়টা তাহলে কি দাড়ালো আপনার কাছে যতটাই আছে তার থেকে কিছু পরিমানের অর্থ ভবিষ্যতের জন্য আলাদা করে রাখবেন।
এখন ভাবুন তো, যদি আলাদা করার মত অর্থইনা থাকে তখন কিভাবে এটি করা সম্ভব হবে? ব্যাপারটা মোটেও এমন না যে আপনি আয় করছেন না, যথাযথই করছেন তবে আপনার যে সকল ঋন গুলো আছে তা আপনাকে টাকা জমানোর পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
জমানোকে যদি (+) ধরি এবং ঋন পরিশোধকে যদি (-) ধরি তাহলে (+,-) মিলে দিন শেষে (-) টাই জিতে যাবে। তার মানে আপনি জমাতে তো পারবেনই না বরং ঋনের বোঝা আরো ভারী হবে। তাই টাকা জমানোর উপায় এর মধ্যে ২য় স্টেপ হবে আপনার ঋন গুলো আগে পরিশোধ করে ফেলুন।
জাপানের আবিষ্কৃত একটি পদ্ধতি রয়েছে যার নাম Japanese Kakeibo Method এখানে টাকা জমানোর উপায় সম্পর্কে সচ্ছ ধারনার পাশাপাশি এই পদ্ধতি ব্যবহার এর মাধ্যমে কিভাবে টাকা জমাতে সফল হবেন সে-সম্পর্কেও বলা আছে। জাপানের সেই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত এই ব্লগেই রয়েছে। প্রয়োজনে দেখে নিবেন।
যাই হোক, জাপানের এই পদ্ধতির কথাটি বললাম কারন সেই পদ্ধতিতে ৪ টি নিয়মের একটি নিয়ম হচ্ছে কোথায় কোথায় আপনার টাকা খরচ হচ্ছে তা চিহ্নিত করা (সহজে কিভাবে খরচ চিহ্নিত করবেন সেটা কাকিবো পদ্ধতিতে উল্লেখ্য রয়েছে)
এবার প্রশ্ন হলো কেনো এটি খুজে বের করবেন? কারন এর মাধ্যমে আপনার অতীব প্রয়োজনীয় খরচ এবং কম গুরুত্বপূর্ণ খরচের সম্পর্কে ধারনা পাবেন। এবং অপ্রয়োজনীয় খরচ গুলো কম করে জমানোর কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
এমন একটা কাজ যেটা আপনাকে প্রতি মাসেই করা উচিৎ তা হচ্ছে “জরুরি খরচের টাকা প্রথমেই আলাদা করা রাখা” কেন বললাম? দেখুন টাকা এমন একটা বস্তু যা হাত বদল করতেই থাকবে এটাই টাকার নীতি আর এটাই সাভাবিক বিষয়। আপনি যত টাকাই ইনকাম করেন না কেনো, মাস শেষে সঠিক Money menegment না করলে সেটা আপনার হাতে রয়ে যাবে নাহ।
এক্ষেত্রে সকল ধরনের ঝামেলা এড়াতে এবং আপনার উপার্জন করা অর্থের মধ্যেই সারা মাস ঠিক ভাবে চালিয়ে নিতে আপনার উচিৎ হবে পুরো মাসের অন্ত্যন্ত জরুরি যা ছাড়া আপনার চলবেই না এমন বিষয়ে ব্যয় হবে এমন অর্থ আলাদা করে রেখে দিন।
জিনিস যেটা ভালো, দাম তার একটু বেশি – কথা হচ্ছে আপনি জানতে চাচ্ছেন টাকা সেভ করবেন কিভাবে আর আমি আপনাকে বলছি ভালো মানের জিনিস পত্র কিনতে বেশি খরচ করে, প্রাথমিকভাবে ব্যাপারটা কেমন জানি দেখাচ্ছে না?
হ্যা ঠিক তবে ব্যাপারটা বিশ্লেষন করে দেখালে আপনিও আমার এক মত হবেন আশা করছি। দেখুন, যেকোনো জিনিসের ক্ষেত্রেই – হোক সেটা বস্ত অথবা বস্তু; আপনি যখন একটা নরমাল কোয়ালিটি বা সস্তা মানের দ্রব্য ক্রয় করেন অথবা প্রিমিয়াম বা ভালো কোয়ালিটির দ্রব্য ক্রয় করেন সেটা ব্যবহারের দিক থেকে ঠিক ওই অর্থের ভ্যালুই আপনাকে প্রোভাইড করবে।
তার মানে এই যে আপনি ফুটপাত থেকে একটা জুতো নিলে সেটা যতদিন পড়তে পারবেন অক্ষত অবস্থায় তার চেয়ে কয়েক গুন বেশি সময়ের পড়তে পারবেন যদি আপনি কোনো ভালো মানের ব্রান্ডের জুতো ক্রয় করেন।
এবার আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে দামের ব্যাপারটাতেও তো বেশ পার্থক্য আছে। জী আছে এই বিষয়ে বলছি। আপনি যেখানে ফুতপাত হতে ৫০০ টাকায় একজোড়া জুরো নিয়েছেন একই ধরনের জুতো দেখা যাচ্ছে কোনো ব্রান্ডের শো-রুমে ৭০০ টাকা। আপনি তো দিব্যি খুশি হয়ে বাসায় ফিরছেন আর ভাবছেন খুব সঞ্চয় করে ফেলেছেন, আসলেই কি তাই?
লো কোয়ালিটি জুতো টা এক্ষেত্রে যতদিন ব্যবহার করতে পারবেন তার চেয়ে দ্বিগুণ বেশি ব্যবহার করতে পারবেন যেটা একটু খানি বেশি দাম দিয়ে নিয়েছিলেন। সস্তার ক্ষেত্রে যেখানে আপনার আবার নতুন জুতো ক্রয় করতে হচ্ছে সেখানে ভালো মানেরটা নেয়ার ফলে আপনার আগেরটাই ব্যবহার করতে পাচ্ছেন।
তো, লং টাইমের দিক থেকে দেখলে প্রথমে একটু খরচ করে ভালো মানের পন্য কেনাটাই বেশি গ্রহনযোগ্য। এটা কেবল জুতোর দিক থেকে নয় কিন্তু, প্রতিটা জিনিসের ক্ষেত্রেই একই হবে এর নীতি।
বর্তমান জেনারেশনে রেস্টুরেন্টে রেগুলার খাওয়া দাওয়া করাটাও এক ধরনের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোসাল মিডিয়ায় নিজেকে তথাকথিত হাই ক্লাসি ভাব আনার জন্য দামী দামী রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া ফটোগ্রাফি করার মধ্য দিয়ে বেশ বড় এমান্টের অর্থ ব্যয় করে থাকে অনেকেই। দিন শেষে যা অনর্থক। এটা বলছি যা যে রেস্টুরেন্টে খাওয়া খারাপ কিছু তবে সেটা অবশ্যই নিজের অবস্থান ঠিক রেখে করা উচিৎ।
তাছাড়াও বাইরে কোথাও যাই খাবেন সেটা যেমন আন-হাইজেনিক তেমনই বেশ ব্যয় বহুল। তাই অতীব প্রয়োজন ব্যাতিত বাইরে খাওয়া থেকে বিরত থাকলে টাকা জমানো টা আপনার কাছে বেশ সহজ হয়ে উঠবে।
নিত্যনতুন ফ্যাশনের ট্রেন্ডে ডুবে যাচ্ছে মানুষ দিন দিন, আজকে একটা ট্রেন্ড হলে কাল অন্যটা। এগুলোর মাঝে হাত বদল হচ্ছে ভারী রকমের অর্থ। যুগ ও ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ হারাচ্ছে ফ্যাশনের জগতে।
আর এসবের মধ্যেই অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা ও ফ্যাশন চর্চার মধ্য দিয়ে মাসিক বাজেটের ভারী একটা এমাউন্ট হারিয়ে যায়। টাকা জমানোর ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই এই বিষয় গুলো এরিয়ে চলতে হবে। অন্যথায় কখনই নিজের উদ্দেশ্য পুরন করে উঠা সহজ কাজ হবে না।
বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ, আমরা এমন এক বিজ্ঞানময় জেনারেশনে পৌছে গেছি যেখানে দাত মাজার ব্রাশ অব্দিও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে পরিনত হয়েছে। মানুষের লাক্সারি লাইফ লিড করার জন্য যা যা প্রয়োজন প্রযুক্তির প্রভাবে সেসব কিছুই এখন হাতের মুঠোয়।
মন মুগ্ধকর সব ডিভাইস দেখলে সেগুলোর ব্যবহার করতে ইচ্ছা জাগতেই পারে তবে এসব মোহে বেশি আসা যাবে নাহ। ডিভাইসের প্রয়োহন আছে তবে এমন ডিভাইসে খরচ করা যাবে নাহ যেটা না হলেও আপনার দিব্যি চলে যাচ্ছে।
আপনি কি এটা মানেন খুচরা দামে পন্য কেনার চেয়ে পাইকারি বা একসাথে অনেক গুলো কেনাতে বেশি লাভ হয়? আপনি হয়তো ভাবতে পারেন অল্প অল্প করে টাকা খরচ করে অল্প অল্প করে জিনিস ক্রয়ের মাধ্যমে আপনি মূলতে টাকা জমিয়ে রাখছেন তবে প্রকৃত ভাবে আপনি আপনার অর্থের সঠিক ব্যবহারটি করতে সক্ষম হচ্ছেন না।
কাচা বাজার বাদে আপনার প্রয়োজনীয় নিত্য প্রয়োজনী জিনিস গুলো যা একেবারেই দরকার সেগুলোর লিস্ট করুন এবং এক বারেই কিনে রাখুন এবং এটা অবশ্যই মাসের প্রথম দিকে করে রাখবেনে। এতে দেখবেন মাস শেষে আপনার অর্থ সংক্রান্ত ঝামেলা মোটামোটি পূর্বের ন্যায় খুবই কম হচ্ছে।
লোকে বলে টাকা থেকে টাকা আসে এই ট্রামটা কি আসলেই সত্যি বলে মনে করেন? যদি উত্তর না হয় তাহলে আপনার অর্থ সংক্রান্ত ধারনা আহামরি নেই বলে আমার ধারনা। আর যদি হ্যা উত্তরে সম্মতি জানান তাহলে বলবো আপনি অনেকটা সঠিক পথেই হাটছেন।
তাহলে একটু খুলেই বলা যাক মূলত টাকা থেকে কিভাবে তা হয়। এটার এক কথার উত্তর হলো বিনিয়োগের মাধ্যমে। একমাত্র এর মাধ্যমেই আপনার অর্থ আপনার জন্য কাজ করবে। Rich Dad, Poor Dad নামক বইটি যারা পড়েছেন তারা অবশ্যই ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন কারন সেখানে স্পষ্ট করে বুজিয়ে বলা আছে কিভাবে টাকা আপনার হয়ে তা বৃদ্ধি করার কাজটা করে থাকে।
অর্থ সব সময় তার সঠিক ব্যবহারকারীর কাছে থাকতে ও তার হয়ে কাজ করতে পছন্দ করে। বিনিয়োগ ঠিক তেমনই এক মাধ্যম এখানে অর্থ আপনার হয়ে কাজ করবে এবং আপনার অর্থকে আরো বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অবশ্যই এই সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা অবশ্যক কারন সঠিক ধারনা ও জ্ঞান ব্যতিত আপনার বিনিয়োগ লাভজনক থেকে লসজনক হয়ে যেতে পারে। তবে যাদের বিনিয়োগ সম্পর্কে তেমন একটা ধারনা নেই কিন্তু বিনিয়োগ করতে চায় তাদের জন্য মিউচুয়াল ফান্ড হলো সবচেয়ে ভালো মাধ্যম অলস অর্থকে কাজে লাগানোর জন্য।
এই ছিলো বেশ কিছু টাকা জমানোর উপায় যার মধ্যে থেকে আপনার প্রয়োজনীয় স্টেপ গুলো গ্রহন করতে পারেন। এছাড়াও আরো অনেক অনেক সহজ উপায় আছে যা আমাদের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত আলোচনা পেয়ে যাবেন। অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে অনুসরন করুন আমাদের ফেসবুক পেজ, গ্রুপ এবং ওয়েবসাইট। আপনার জন্য শুভকামনা।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.