টিন সার্টিফিকেট কি? টিন সার্টিফিকেট আবেদন, রেজিস্ট্রেশন ও বের করার নিয়ম 

0
128
টিন সার্টিফিকেট কি?

বাংলাদেশের মানুষের কাছে টিন সার্টিফিকেট নামটি ইতিমধ্যে বেশ পরিচিত, কারন বর্তমানে অনেক স্থানেই টিন সার্টিফিকেট এবং টিন নাম্বার প্রয়োজন হয়। সেসকল প্রয়োজন মিটানোর জন্য টিন সার্টিফিকেট কিভাবে কববেন, এটি করার ক্ষেত্রে কি প্রয়োজন, সম্মুখীন হওয়া সমস্যার সমাধান ও সম্পূর্ণ ভাবে টিন সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার জন্য যা যা করতে হবে তা ধাপে ধাপে উল্লেখ্য করা হবে আর্টিকেলটিতে। এক্ষেত্রে প্রথমেই যেইটা জানার বিষয় সেটি হচ্ছে টিন সার্টিফিকেট মূলত কি? এবার জেনে নেয়া যাক সেই সম্পর্কে। 

টিন সার্টিফিকেট কি এবং কি কাজে লাগে? 

TIN Certificate এর পূর্ণ রূপ হলো Taxpayer Identification Number. এটি এমন এক ধরনের নাম্বার যার মাধ্যমে দেশের করদাতাদের শনাক্ত করা হয়। বাংলাদেশের প্রতিটা করদাতাকে এই নাম্বারটি দেয়া হয়। ১২ ডিজিটের এই নাম্বারটিকেই বাংলাদেশের করদাতাদের পরিচয়পত্র হিসেবে ধরা হয়। যেখানে প্রথম ৩ অক্ষর থাকে করদাতার অঞ্চের কোড, মাঝের তিন সংখ্যা করদাতার পদমর্যাদা এবং শেষের চার সংখ্যা করদাতার পরিচিতি চিহ্নিত করে। 

তবে আপনার কাছে টিন সার্টিফিকেট আছে বলেই যে আপনাকে কর দিতে হবে এমন কোনো ব্যাপার নেই, আপনার আয় যখনই করসীমার মধ্যে আসবে তখনই কেবল আপনাকে কর প্রদান করতে হবে। এক সময় টিন সার্টিফিকেট করতে হলে আয়কর অফিসে গিয়ে করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে কিছু ডকুমেন্টস এর মাধ্যমেই তা করা যাবে। কিভাবে করতে হয় সেটি নিম্মের ধাপ গুলোতে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে প্রথমেই যেই বিষয়টি জানা দরকার তা হলো এই সার্টিফিকেটটি কোন কোন কাজে লাগে। এবার সেই বিষয়ে জানাবো। 

অনেকের ধারনা যে, কেমন চাকরি বা ব্যবসা যারা করে তাদেরই টিন সার্টিফিকেট করতে হয়। কিন্তু বিষয়টি মোটেও না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন মানুষের এই সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। মূলক যেই যেই বিষয়ে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন তা উল্লেখ্য করা হলো : 

  • প্রথমেই ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ট্রেডলাইসেন্স করা জন্য প্রয়োজন
  • গাড়ির মালিক হওয়ার ক্ষেত্রে 
  • আপনি যদি সিটি কর্পোরেশনের আন্ডারে থাকেন এবং কোনো স্থানে জমি ক্রয় করতে চাচ্ছেন এক্ষেত্রে এটা প্রয়োজন হবে। 
  • ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড নেয়ার সময় টিন আইডি চাওয়া হয়
  • আপনি যখন কোনো প্রকার সঞ্চয় পত্র কিনবেন তখন টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন 
  • তাছাড়া কোনো কোম্পানির শেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত কাজে প্রয়োজন
  • নিজের যদি কোনো কোম্পানি বিল্ডআপ করেন সেক্ষেত্রে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন 
  • স্কিল সম্পন্ন প্রোফেশন যেমন আইনজীবী, চিকিৎসক সহ এরুপ স্পেসিফিক প্রোফেশনে কাজ করার ক্ষেত্রে টিন সার্টিফিকেট থাকা বাঞ্চনীয়
  • আপনি যদি নির্বাচন করতে চান তবে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে এটা থাকা অবশ্যক
  • ব্যবসায়ীক কোনো ধরনের সংগঠনে যুক্ত হওয়ার জন্য এই সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়
  • রাইড শেয়ার সংক্রান্ত কোনো কোম্পানিতে নিজের গাড়ি দিতে তা প্রয়োজন হয়
  • ফ্রিল্যান্সিং করার ক্ষেত্রে প্রায় সময়ই প্রয়োজন হয়।

টিন সার্টিফিকেট কাদের জন্য প্রয়োজনীয় 

টিন সার্টিফিকেটটি মূলত যারা ট্যাক্স প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ের সাথে জরিত তাদের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের মত প্রায় প্রতিটি দেশেই সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়। স্থান ভেদে ট্যাক্সের পরিমাণ কন্ডিশন পরিবর্তনীয়। বাংলাদেশের পেক্ষাপটে একটা ব্যক্তি ট্যাক্স প্রদানের জন্য উপযুক্ত বলে গণ্য করা হবে তখনই, যখন – 

  •  কোনো ব্যক্তির বাৎসরিক আয় ৩,০০,০০০ (তিন লক্ষ) টাকা হবে তখন তাকে আয়কর দিতে হবে। 
  • কোনো মহিলা যদি ৬৫ বয়সের উপরে হয়ে থাকে এবং তার বাৎসরিক আয় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বেশি হয়ে থাকে তবে তাকে ট্যাক্স বা আয়কর দিতে হবে। 
  • এগুলো ছাড়াও উপরের ধাপে উল্লেখিত “ টিন সার্টিফিকেট যে যে কাজে প্রয়োজন হয় “ সেই সকল কাজের মধ্যে যেকোনো কাজ করতে চাইলে আপনার অবশ্যই টিন সার্টিফিকেট করার প্রয়োজন হবে। 

এবার যদি ক্লিয়ার হয়ে যান যে, টিন সার্টিফিকেট কি এবং কাদের জন্য ও কি কি কাজের জন্য প্রয়োজন তবে এবার জেনে নিন টিন সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে।  

টিন সার্টিফিকেট আবেদন করার নিয়ম 

এই পর্যায়ে জানাবো সেই নিয়ম সম্পর্কে যার মাধ্যমে খুব সহজেই টিন সার্টিফিকেট নিজের নামে করে নিতে পারবেন। বলে রাখা ভালো যে, একসময় ছিলো যখন এই সকল কার্যক্রম হাতে কলমে করতে হতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সকল কিছু আপডেট হওয়ার পাশাপাশি এটিও আপডেট হয়েছে। যার কারনে এখন অনলাইনে ঘরে বসেই টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করা যায় এবং তা অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা যায়। যাকে বর্তমানে e-TIN নামে পরিচিত। এমনকি যাদের আগের টিন সার্টিফিকেট গুলো ছিলো তাদের ও নতুন করে অনলাইনকরন করতে হচ্ছে। তো জেনে নেয়া যাক কিভাবে অনলাইনে ঘরে বসেই টিন সার্টিফিকেট করতে পারবেন। তার আগে এক নজরে দেখে নেয়া যাক কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে যদি আপনি টিন সার্টিফিকেট করতে চান। 

টিন সার্টিফিকেট করতে কি কি লাগে 

  • যার নামে টিন সার্টিফিকেট করা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID কার্ডের নাম্বার। 
  • আবেদনকারীর সঠিক নাম যা জাতীয় পরিচিয় পত্রে ছিলো 
  • আবেদনকারীর পিতা – মাতার নাম 
  • ঐচ্ছুক অবস্থায় থাকবে আবেদনকারীর স্বামী – স্ত্রীর নাম (অবশ্যই যদি থেকে থাকে তবেই) 
  • আবেদনকারীর বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা

টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন ও বের করার নিয়ম 

এবার জানাবো সেটার সম্পর্কে যা জানার জন্য আপনি অবশ্যই ইচ্ছুক যদি এই অব্দি পড়তে পড়তে এসেছেন। খুব সহজে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ব্যাপার গুলো এবং অবশ্যই প্রতিটা বিষয় ধাপে ধাপে দেখানো হবে যাতে করে যেকেউ নিজেকেই উক্ত কাজ গুলো করতে পারে। 

প্রথম ধাপ : একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন 

TIN Certificate তৈরি করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে বাংলাদেশের জাতীয় আয়কর বা রাজস্বের ওয়েবসাইট থেকে। উক্ত লিংকে ক্লিক করার পর, রেজিস্ট্রেশন নামক অপশনে ক্লিক করে ফর্ম পূরন করতে হবে। উক্ত ফর্মে যে সকল বিষয় থাকবে তা হচ্ছে :

  • User ID : এখানে ইউজার নেম দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো স্পেস ব্যবহার করা যাবে নাহ
  • একটি ৮ অক্ষরের স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। 
  • একটি প্রশ্ন ও সিলেক্ট করে তার উত্তর প্রদান করুন যা কেবল আপনিই জানবেন। 
  • পরবর্তীতে আপনার দেশ, একটি সচল মোবাইল নাম্বার ও একটি ইমেইল এড্রেস দেয়ার পর একটি word capcha পূরন করতে হবে। এরপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লিট করতে পারেন। 

দ্বিতীয় ধাপ : টিন সার্টিফিকেটের ফর্ম পূরন 

রেজিস্ট্রেশন করার পর আপনার মূল কাজ শুরু হবে এবং সেটি হচ্ছে সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করা ফর্ম পূরন করা। এর জন্য আপনাক কিছু ক্ষন আগে ক্রিয়েট করা একাউন্টে লগিন করতে হবে। একাউন্টে লগিন করা হয়ে গেলে মেনু অপশনের প্রথমটিতেই থাকবে TIN Applicatipon সেটায় ক্লিক করে মূল ইন্টারফেসে চলে যেতে হবে। 

এই পর্যায়ে Taxpayer’s Status বা করপ্রদানকারীর বিস্তারিত ডিটেইলস প্রদান করতে হবে যেখান প্রথমেই ন্যাশনালিটি সিলেক্ট করতে হবে এবং সেই তার কি কোনো এন আই ডি কার্ড আছে নাকি সেটা জানান দিতে হবে। ১৮ বছরের উপরে যেই আবেদন করবে তাকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার প্রদান করতে হবে। 

পরবর্তীতে আপনার আয়ের প্রধান উৎস সম্পর্কে জানাতে হবে। যেখানে তিনটি অপশন থাকবে –

  • সার্ভিস – যদি আপনি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তবে এটি সিলেক্ট করুন
  • প্রোফেশন – ডাক্তার, প্রকৌশলী, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট এরুপ গুলো 
  • বিজনেস – যেকোনো ধরনের ব্যবসায় সংক্রান্ত হলে

এরপর আপনার আয়ের উৎসের লোকেশন সিলেক্ট করে পরের ধাপে চলে যাক যেখানে রতেছে ব্যক্তিগত ইনফরমেশনের ফর্ম। এই ফর্মের সকল তথ্য আপনাকে ইংরেজিতে পূরন করতে হবে। আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে থাকা তথ্য গুলো একই রকম দিতে হবে। এক্ষেত্রে ফর্মে যেই বিষয় গুলোর তথ্য দিতে হবে তা হলো – 

  • আবেদনকারীর নাম 
  • আবেদনকারীর লিঙ্গ 
  • স্মার্ট আইডি কার্ডের নাম্বার 
  • আবেদনকারীর জন্ম তারিখ 
  • আবেদনকারীর মাতা – পিতার নাম 
  • স্বামী / স্ত্রীর নাম ( যদি থাকে ) 
  • মোবাইল নাম্বার 
  • ইমেইল এড্রেস 
  • বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে নেক্সট বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

তৃতীয় ধাপ : টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড 

এটিই হলো পুরো প্রসেসের ফাইনাল প্রসেস যেখানে আপনাকে পূরনকৃত পুরো ফর্মটির প্রিভিউ দেখানো হবে এবং সেভ সার্টিফিকেট বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে একটি পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করার অপশন আসবে। এটাই মূলত e-TIN Certificate এবার আপনি এটি আপনার সুবিধা মোতাবেক যেকোনো স্থানে ব্যবহার করতে পারবেন। 

টিন সার্টিফিকেটের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ 

সব কিছু কি জানা শেষ হয়ে গেছে? অবশ্যই নয়, জানার কখনই শেষ নেই। এবার জানবো কিছু সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে য আমাদের টিন সার্টিফিকেট সম্পর্কে বুজতে আরেকটু সচ্ছ ধারনা দিবে। 

সুবিধা 

১) প্রথমেই যেই বিষয়টি বলতে হয় তা হলো একটি আদর্শ নাগরিক হিসেবে দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহনে আমাদের সবাইকেই সময় মত কর প্রদান করা উচিৎ যদি আপনার জন্য আয়কর ধার্য করা হয়ে থাকে। তাছাড়া আরো সুবিধা আছে আয়কর প্রদানের।

২) আপনি যখন কোনো ব্যাংকে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করবেন বা কোনো সঞ্চয় সংক্রান্ত হিসেব খুলতে যাবেন তখন যদি টিন নাম্বার প্রদান করেন তাহলে যেখানে ১৫% কর প্রদান করতে হতো সাভাবিক ভাবে সেখানে ১০% কর প্রদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতি কর প্রদানে ৫% এর মত আপনার সেভ হলো। 

৩) প্রায় সকল ধরনের ব্যাংকেই ঋন গ্রহন বা ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে টিন সার্টিফিকেট থাকতে হয়। আপনার যদি টিন সার্টিফিকেট না থাকে তবে আপনি এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। 

৪) প্রায় সময় দেখা যায় সরকার থেকে বিভিন্ন সময় দেখা যায় সরকার পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে থাকে। মূলত পেশাজীবী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কেন্দ্র করে এসব প্রণদনা গুলো দেয়া হয়। যদি এই সকল সুযোগ গুলো ভোগ করতে চান তবে আপনার অবশ্যই একটি টিন নাম্বার থাকতে হবে। 

অসুবিধা 

সকল সুবিধা ভুক্ত জিনিসের  কোনো না কোনো অসুবিধা অবশ্যই আছে। এটার ক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম নয়। আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট করে থাকেন তবে আপনাকে অবশ্যই ট্যাক্স রিটার্ণ দাখিল [ জান্যন ট্যাক্স রিটার্ণ দাখিলা সম্পর্কে ] করতে হবে, এতে আপনার বাৎসরিক আয় করযোগ্য সীমায় থাকুক বা না থাকুক। 

এবার প্রশ্ন করতে পারেন, যদি আপনি ট্যাক্স রিটার্ণ দাখিল না করেন তবে কি হবে? এক্ষেত্রে আপনার আয়কৃত অর্থকে বা টাকাকে কালো টাকা হিসেবে গণ্য করা যাবে। তবে এখানে একটা ভালো ব্যাপারও অবশ্য আছে, তা হলো – পর পর তিন বছর যদি আপনার করযোগ্য আয় সীমার মধ্যে না আসে অথবা আপনার বাৎসরিক আয় করসীমার মধ্যে না থাকে তবে পরের বছর মানে ৪র্থ বছর থেকে ট্যাক্স রিটার্ণ না করলেও সমস্যা নেই। 

তাছাড়া আপনি যেকোনো সময় চাইলেই আয়কর নিবন্ধন বাতিল করতে পারবেন। এক্ষেত্রে জেনে নিন কিভাবে আয়কর নিবন্ধনটি বাতিল করবেন সেই সম্পর্কে। 

টিন সার্টিফিকেট চেক বা যাচাই করার নিয়ম 

মনে রাখতে হবে টিন সার্টিফিকেটের নাম্বার সংখ্যা ১২ টি। তবে কারনবসত আয়কর সার্টিফিকেট হারিয়ে যেতেই পারে বা যেকোনো কারনেই হোক টিন সার্টিফিকেট চেক করার প্রয়োজন পড়তে পারে। তাছাড়া প্রথমবারের মত একাউন্ট করার পর টিন সার্টিফিকেটটি সঠিক ভাবে হয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য যাচাই করার প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে সঠিক উপায়ে টিন সার্টিফিকেট চেক বা নাম্বার বের করার উপায় সম্পর্কে জানাচ্ছি : 

১) প্রথমেই আপনাকে রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের একাউন্টে লগিন করতে হবে।

২) ড্যাশবোর্ড থেকে হাতের বাম পাশে থাকা মেনু অপশন গুলোর দিকে তাকান, এবং সেখানে থাকা View TIN Certificate নামক অপশনে ক্লিক করুন।  

৩) এই পর্যায়ে আপনার যে টিন সার্টিফিকেওটি ছিলো তা পুনরায় দেখাবে। আপনি এবার সেখান থেকে নাম্বার দেখা বা পিডিএফ আকারে তা ডাউনলোড করেও রাখতে পারেন। 

TIN Certificate সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর 

১) কত বয়স হলে টিন সার্টিফিকেট গ্রহন করা যাবে?

=> আপনার বয়স যদি ১৮ হয়ে থাকে এবং আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকে ও আপনি আয় করেন। এই তিনটি কন্ডিশন যদি আপনার দ্বারা পূরন হয় তবেই আপনি টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

২) আয়কর রিটার্ন দাখিল করা কি?

=> টিন সার্টিফিকেট থাকা প্রতিজনকে প্রতিবছর নভেম্বরের শেষ তারিখের মধ্যে আয়কর রিটার্ন করতে হয়। বর্তমানে কোনো ঝামেলা ছাড়াই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা যায়। 

৩) টিন সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে করনীয় কি?

=> আপনি যেকোনো সময়ে নিদিষ্ট কিছু প্রসেস যেমন একাউন্টে লগিন করে ইজিলি পুনরায় সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন। 

৪) টিন সার্টিফিকেটে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে এবার কি করা যায়?

=> এটা বড় কোনো সমস্যা না, প্রায় সময়ই ব্যাসিক কিছু ভুল হতেই পারে। এক্ষেত্রে ঘাবরানোর কিছুই নেই, টিন সার্টিফিকেট সংশোধন করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে সহজেই ভুল শুধরে নিন। 

৫) আমি টিন সার্টিফিকেট বা নাম্বার ব্যবহার করতে চাচ্ছি না, এটা কি বাতিল করা যাবে?

=> অবশ্যই আপনার যদি মনে হয় এটা আপনার প্রয়োজনীয় কিছু না, তবে আপনি সহজেই তা বাতিল করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে জেনে নিন টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে। 

৬) টিন সার্টিফিকেট করলেই কি কর প্রদান করতে হবে? 

=> প্রাথমিক উত্তর হ্যা, তবে আপনার যদি করযোগ্য আয় না থাকে তবে আপনার ক্ষেত্রে কর প্রদান করতে হবে না তবে কর রিটার্ন দাখিল করতেই হবে, যদি সেই ঝামেলা করতে না চান তবে সার্টিফিকেটটি বাতিল করে দিতে পারন। 

৭) একটি NID কার্ড থেকে কয়টি টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা যাবে?

=> কেবল মাত্র একটিই।

৮) টিন সার্টিফিকেট করতে কত টাকা লাগে? 

=> উক্ত সার্টিফিকেটটি করতে কোনো প্রকার অর্থ চার্জ করা হয় না, ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ই-টিন সার্টিফিকেট তৈরি করা যায়। কিভাবে সেটা ইতিমধ্যে আর্টিকেলে বলা হয়েছে। 

ইতিকথা 

পরিশেষে, এই ছিলো টিন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত আর্টিকেল যেখান TIN Certificate কি সেই সম্পর্কে ধারনা দেয়ার পাশাপাশি ধাপে ধাপে তার সুবিধা, অসুবিধা, কাদের জন্য, পেতে করনীয়, প্রয়োজনীত ডকুমেন্টস ও অনলাইনে আবেদন করার উপায় সম্পর্কে জানিতেছি যা পুরো প্রসেসটি আপনার আয়ত্তে আনতে সহজ ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আপনার টিন সার্টিফিকেট তৈরি করার ক্ষেত্রে পূর্ব প্রস্তুতিতে সাহায্য করেছে বাংলা আলো। আমরা এমনি প্রতিটি অনলাইন সার্ভিস সম্পর্কে সকলকে অবগত করে থাকি। 

Visited 31 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here