অনেকেই হয়তো ডিলারশিপ ব্যবসা বিষয়ে জানতে চান। হয়তো অনেকেই জানেন না যে, ডিলারশিপ ব্যবসা কি ও কিভাবে শুরু করবেন। বর্তমানে লাভজনক ব্যবসা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এটি একটি আর আজকের জানার বিষয় এটিকে ঘিরেই।
অন্যান্য বিভিন্ন ব্যবসা ব্যক্তিগত পর্যায়ে শুরু করার সময় সাধারণত বেশি ঝুঁকি গ্রহন করতে হয়। কেননা, এক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ এবং ব্যবসায়ীক পণ্যের প্রচারণা ও বিপণনের সব দায়িত্ব নিজেকেই সামলাতে হয়।
কিন্তু ডিলারশিপ ব্যবসা এর ক্ষেত্রে মূলধন বিনিয়োগ করলেও তা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং প্রচারণার কাজও করা লাগে না। এক্ষেত্রে যিনি ডিলারশীপ এর কাজ করেন; তিনি একটি নির্দিষ্ট এরিয়ায় ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
একটি কোম্পানির পণ্য শর্তসাপেক্ষে এলাকাভিত্তিক বিক্রয়ের মাধ্যমে ব্যবসা করা কে ডিলারশিপ ব্যবসা বলে। যারা এ ব্যবসা করেন, তাদেরকে ডিলার বলে।
আরো জানুন : সেরা ১০ টি পাইকারি ব্যবসা সম্পর্কে
এ ব্যবসা শুরু করার জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক বাজার যাচাই। প্রথমে আপনাকে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আপনি একটি পণ্য নিয়েও ডিলারশীপ ব্যবসা তে নামতে পারেন।
তবে অনেকগুলো কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা তে নামাটা বেশি লাভজনক। তাই আপনাকে এই পরিমাণ আগে নির্ধারণ করতে হবে আপনার মূলধন বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী।
তবে মূলধন নির্ধারণ করতে হবে অফিস ভাড়া, অ্যাডভানস, কর্মীদের খরচ, ইলেক্ট্রিসিটি, ওয়াসা, ব্যবসার জন্য পণ্য, ট্রেড লাইসেন্স প্রভৃতি বিবেচনা করে। ধারণা করে মূলধন নির্ধারণ করবেন না। কেননা, এতে হিসাব গড়বড় হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
কোন কোম্পানির ডিলারশীপ নেয়ার পূর্বে আপনার নিজস্ব ফার্ম থাকতে হবে এবং ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। এর পাশাপাশি নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং যে কোম্পানি থেকে ডিলারশীপ নিবেন; সে কোম্পানির সাথে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
এছাড়াও আপনার অফিসের বিভিন্ন তথ্য যেমনঃ- আপনার অফিসের আয়তন, অবস্থান, কর্মচারীর সংখ্যা – এসব তথ্যের ভিত্তিতে অফিস প্রোফাইল তৈরি করে কোম্পানির কাছে পাঠাতে হবে।
এর পাশাপাশি কোম্পানির সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন যে, চুক্তিপত্র যেন সঠিক হয়। কোম্পানি যেন তাদের ইচ্ছামতো যখনতখন চুক্তি বাতিল করতে না পারে; সে বিষয় খেয়াল রাখবেন। এর পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলোও সতর্কতার সাথে দেখেশুনে স্বাক্ষর করবেন।
বর্তমানে অনেক ধরনের পণ্য নিয়ে ডিলারশীপ ব্যবসা করা যায়। এর মধ্যে লাভজনক ১০টি ডিলারশীপ ব্যবসার আইডিয়া নীচে তুলে ধরা হলোঃ
শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয় বরং সারা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় হলো চা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চা ব্যাপক জনপ্রিয়। চায়ের দোকান, রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে বাসা-বাড়িতেও মানুষ চা পাতা ব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণে।
তাই আপনি চা পাতার ডিলারশীপ নিতে পারেন। ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা হলেও চা পাতার ডিলারশীপ পাওয়া সম্ভব। যেমনঃ শাই স্পেশাল টি সারা দেশে ডিলার নিয়োগ দিচ্ছে। আপনিও তাদের কাছ থেকে ডিলারশীপ নিয়ে কাজ করতে পারেন।
এখন বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে। ব্যক্তিগত ভাবে অনেকে বাড়ি নির্মাণ এর পাশাপাশি বিল্ডার্স কোম্পানি দ্বারাও অনেক বাড়ি তৈরি হচ্ছে বর্তমানে। তাই প্রয়োজন পড়ছে রড, সিমেন্ট এবং বালির মতো দ্রব্যের।
বিভিন্ন রড সিমেন্টের কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আপনিও ডিলারশিপ ব্যবসা করতে পারেন। এটির মাধ্যমে বেশ ভাল পরিমাণে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, রড সিমেন্টের চাহিদা এবং দাম একটু বেশি হওয়ার কারণে লাভের রেটটাও একটু বেশি।
শৌখিন এবং সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষেরা নানারকম কাঠের ও প্লাইউড এর তৈরি জিনিস দিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ডেকোরেশন করতে পছন্দ করেন। চেয়ার, বেড, সোফা প্রভৃতি তে ডিজাইন দ্বারা সৌন্দর্য প্রকাশের একটা চাহিদা তাদের মধ্যে লক্ষণীয়।
বর্তমানে Hatil বা Otobi এর বিভিন্ন রকম ফার্নিচার পাওয়া যায়। এসব কোম্পানির সাথে ডিলারশীপ চুক্তি করে আপনি ব্যবসা করতে পারেন।
প্রতিদিন রান্নার কাজে প্রচুর ভোজ্যতেলের প্রয়োজন হয়। সেটা হতে পারে হোটেল, রেস্তোরাঁ অথবা বাসাবাড়িতে। ভোজ্যতেল হিসেবে সয়াবিন, সরিষা এবং অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয়।
তাই আপনি ভাল ব্র্যান্ডের তেলের ডিলারশীপ নিতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন খাঁটি এবং অর্গানিক তেলের ডিলার হতে। কেননা বর্তমানে ভেজালের দৌরাত্ম্য বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মানুষ বর্তমানে বেশ সচেতন। তারা যেখানসেখান থেকে পানি পান থেকে বেশ সতর্ক থাকে। নিরাপদ পানি পানের জন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনারেল ওয়াটার কিনতে প্রায়ই দেখা যায়।
সাধারণত, মাটির নীচে থাকা ভূ-গর্ভস্থ পানিকে খাবার উপযোগী করার মাধ্যমে মিনারেল ওয়াটার প্রস্তুত করা হয়। বিভিন্ন কোম্পানি মিনারেল ওয়াটার প্রস্তুত করে। আপনি তাদের থেকে ডিলারশীপ নিয়ে এ ব্যবসাটি করতে পারেন। এটি লাভজনক ব্যবসার একটি।
আমরা হয়তো অনেকেই এ ব্যবসা সম্পর্কে তেমন অবগত নই। অথচ গাড়ি যন্ত্রাংশ বা পার্টস এর ব্যবসা দারুণ লাভজনক ব্যবসা একটি। প্রতিদিন শহরে অসংখ্য গাড়ি চলে।
বিভিন্ন সময়ে পার্টস এর দরকার পড়ে যায়। তখন তাদের ছুটতে হয় যন্ত্রাংশের খোঁজে। প্রতিটি জনবহুল সড়ক হলো গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা করার উপযুক্ত প্লেস।
আপনি এই পণ্যের ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। এক্ষেত্রে শহরের ব্যস্ত জনপদ বেশি উপযুক্ত। পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা নিয়ে এ কাজ করতে পারলে অল্প সময়েই লাভবান হওয়া সম্ভব।
খাতা-কলম এর মতো পণ্যের চাহিদা সবসময়ই ধরেই চলে আসছে। বিশেষতঃ স্কুল-কলেজ সংলগ্ন এলাকায় দারুণ লাভজনক এই ব্যবসাটি। তাই এরকম একটি প্লেসে স্টেশনারি এসব পণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসা সহজেই করতে পারেন।
গ্রামাঞ্চলে প্রচুর কৃষিকাজ হয়ে থাকে। আর সেজন্য ছোট আকারের যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে বড় আকারের ট্রাক্টরের চাহিদাও রয়েছে। তবে আপনার যদি মূলধন তেমন বৃহৎ আকারের নাও হয়ে থাকে, তবে ছোট ছোট কৃষি যন্ত্রাংশ নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
যেসব এলাকায় চাষাবাদ বেশি হয় এবং কৃষিযন্ত্রের চাহিদা বেশি, সে অঞ্চলকে টার্গেট করে আপনি ডিলারশিপ ব্যবসা করতে পারেন। এক্ষেত্রে মানসম্মত কৃষিযন্ত্রাংশ সংগ্রহ করা জরুরি।
জেনারেল স্টোরের বিভিন্ন খাবার পণ্য থেকে শুরু করে শরীরের কেয়ার বিষয়ক পণ্যের খুব চাহিদা রয়েছে। বাজার যাচাই করে এমন কিছু চাহিদাসম্পন্ন জেনারেল স্টোরের পণ্য নিয়ে যদি ডিলারশীপ ব্যবসা করেন, তাহলে লসের সম্ভাবনার চেয়ে লাভের সম্ভাবনা বেশি।
ডিলারশিপ ব্যবসা এর একটি বড় সুবিধা হলো একাধিক আইটেম নিয়ে ব্যবসা করার সুবিধা রয়েছে। ফলে বেশি লাভ প্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। তাই আপনি কয়েকটা পণ্যের ডিলারশীপ নিয়ে কাজ করতে পারেন।
আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলধন থাকে এবং গ্রামাঞ্চলের সাইডে আপনি কাজ করার মনমানসিকতা রাখেন, তাহলে আপনার জন্য লাভজনক একটি ব্যবসা আইডিয়া হলো কৃষিপণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসা করা।
সার, কীটনাশক এবং উন্নত জাতের বীজের ডিলার হয়ে দারুণ ব্যবসা করার সুযোগ নিতে পারেন। শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে সাধারণত সহজে ঝামেলামুক্ত ভাবে ব্যবসা করার পজিশন থাকে। ফলে সেখানে স্থায়ীভাবে সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।
অনেক মানুষ চটকদার বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে ডিলারশীপ ব্যবসা সম্পর্কে আগ্রহী হন। অনেকে লোভে পড়ে অর্থ বিনিয়োগ করে ফেলেন এবং প্রতারনার শিকার হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
তাই এক্ষেত্রে কোম্পানি সরকারিভাবে নিবন্ধিত কি না তা দেখে ডিলার হবেন। এছাড়াও চুক্তিপত্রে আপনার স্বার্থবিরোধী কোন শর্ত আছে কি না তা যাচাই করে নিবেন। কোন ট্রান্সপোর্ট বা পরিবহন দিয়ে মাল আনানেয়া করবেন তাও ঠিক করে নিবেন চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের পূর্বেই।
এর পাশাপাশি আপনি যে পণ্য নিয়েই ডিলারশিপ ব্যবসা করেন না কেন, সবসময় চেষ্টা করবেন যাতে আপনার ব্যবসায়ীক পণ্য দ্বারা মানুষ উপকার পায়। কেননা, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে যেকোনো ধরনের ব্যবসাই ধ্বসে যেতে পারে। তাই মানসম্পন্ন পণ্য সংগ্রহ করা জরুরি।
অনেক ধরনের ডিলারশিপ ব্যবসা আইডিয়া থাকলেও আপনাকে আপনার অবস্থান অনুযায়ী আইডিয়া বাছাই করতে হবে। কেননা, স্থান নির্বাচন যেকোন ব্যবসার ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
স্থান, মূলধন, আগ্রহ ইত্যাদি বিবেচনা করে সঠিক পণ্য নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করলে মাসিক লক্ষ টাকা উপার্জন অসম্ভব নয়। এজন্য সততা, ধৈর্য্য এবং পরিশ্রমের সাথে কাজ করে যাওয়াটা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.