নিজেকে পরিবর্তন করার উপায় | নিজেকে কিভাবে পরিবর্তন করা যায় । ৫ টি সেরা কৌশল

0
109
নিজেকে-পরিবর্তন-করার-উপায়

নিজেকে পরিবর্তন করার মনভাবটি আপনার গৃহিত এখন অব্দি সেরা উদ্যোগ। সময় বদলায় পাশাপাশি মানুষও। নিজেকে আরেকটু উন্নত করে তোলার চিন্তাভাবনা খুবই পজিটিভ আর আপনাকে স্বাগতম আপনার নতুন চিন্তাধারায়। আসুন জানি কিভাবে কিভাবে পরিবর্তন করা যায়। 

 

দেখুন এমন কোনো ধরা বাধা কোনো নিয়ম বা পদ্ধতি নেই যেটা অনুসরণ করলে যে কেউ বলবে আপনি নিজেকে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। এটা সম্পুর্ন আপনার চাহিদায় উপর নির্ভর করবে আপনি মূলত কি কি পরিবর্তন আপনার মাঝে আনতে চাচ্ছেন। 

 

মূলত একেক জনের জন্য এক এক রকম ধারা রয়েছে, রয়েছে দিক গত পরিবর্তন যেখানে থাকে শারিরিক ও মানসিক নামক দুইটা ভাগ। কেউ নিজেকে শারীরিক ভাবে পরিবর্তন করতে চাচ্ছে আবার কেউ মানসিক অবসাদ থেকে নিজেকে পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। আপনার প্রয়োজন বোঝার ক্ষমতা আপনার মধ্যেই রয়েছে।

 

নিম্মে কিছু জনপ্রিয় পথ, পদ্ধতি, কৌশন যাই নাম দেয়া যাক না কেনো – সম্পর্কে আলোচনা করছি যা থেকে আপনার কাঙ্খিত পথটি খুজে পাবেন এবং তা নিজের মধ্যে প্রতিস্থাপন করার পর বলবেন “Life is Beautifull” শুরু করা যাক… 

নিয়মিত খেলাধুলা করুন

 

যদি প্রশ্ন করা হয় এমন কি কোনো উপায় আছে যার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক দুই ভাবেই শান্তি পাওয়া যায়? এক কথায় তার উত্তর আসবে – “হ্যা আছে, আর সেটি হচ্ছে খেলাধুলা”

 

ফিজিক্যাল খেলা গুলো যেমন (ফুটবল, ক্রিকেট, কাবাদি) এর মত খেলা গুলোতে শারীরের কসরত হয় এবং তার পাশাপাশি বুদ্ধিভিত্তিক কর্মকান্ড ও সংগঠিত হয়ে থাকে। 

 

এতে করে রক্ত চলাচল ভালো হয় এবং শারীরিক প্রক্রিয়া গুলো ঠিক ভাবে চলিত হয়। তাছাড়া রেগুলার কিছু সময় অথবা নিজের মত করে সময় বের করে খেলাধুলা করলে সতেজ ও রি-ফ্রেশিং মুডে থাকা যায়। যার ফলে যেকোনো কাজে ভালো ভাবে মন দেয়া যায় এবং সকল প্রকার সমস্যা সমাধানে ব্রেইন যথাযথ কার্যকর হয়ে উঠে। 

 

তাই নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য অবশ্যই রেগুলার অথবা নিজের সময় মত করে খেলাধুলা করার চেষ্টা করুন। তবে বয়স ও লিঙ্গ ভেদে খেলার ভিন্নতা অবশ্যই রাখা উচিৎ

দ্রুত ঘুম থেকে উঠুন

 

রাতে প্রযাপ্ত পরিমানের ঘুম যতটা প্রয়োজন তেমন প্রয়োজন সকালে দ্রুত গুম থেকে উঠা। এতে করে প্রথম যে সুবিধাটি পাওয়া যায় তা হলো সুন্দর সতেজ এবং দীর্ষ একটা সকাল। যার ফলে ডেইলি কাজ শুরু শেষ করার পরেও পর্যাপ্ত পরিমানের সময় হাতে থাকে। এই সময় গুলো আপনি যেকোনো একটা কাজে ব্যয় করতে পারবেন যা আপনার জন্য কল্যানকর হবে বলে আপনার মনে হয়।

 

দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে আপনার নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ যেমন ব্রাশ করা, ফ্রেশ হওয়া, সকালের নাস্তা করতে করতে আপনার স্কুল, কলেজ, অফিসের সময় হয়ে যায়, রোজ রোজ একই রকম তাড়াহুরোর মধ্যে থাকলে সেই জীবনে একটা অবসাদ চলে আসে।

 

এক্ষেত্রে দ্রুত ঘুম থেকে উঠে কিছু সময় মেডিটেশন অথবা ধর্মীয় ইবাদতের করার মাধ্যমে মনকে শান্তি দিন এবং ধিরে ধিরে আজকের আজকে সারাদিন কি কি করবেন সেসব সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করুন। 

নতুন উদ্যোগ নিন বা নতুন কিছু শুরু করুন

 

নতুন শব্দটা সব সময়ই আকর্ষনীয়। হোক সেটা যেই জিনিসই, নতুন কিছু সব সময় সবার কাছেই গ্রহনযোগ্য বস্তু। বিশেষ করে মানুষ যখন কোনো বিষয়ে একঘিয়ামিতা অনুভব করে তখন তার সব চেয়ে বেশি যা প্রয়োজন তা হচ্ছে “নতুন কিছু” 

 

এখন প্রশ্ন এই নতুন জিনিস কি হতে পারে? উত্তর – যা কিছু !! আপনি হয়তো কোনো জ করছেন ৮ টা ৫ টার ডেইলি রুটিন আপনার মধ্যে অবসাদ এনে দিয়েছে এই মুহুর্তে আপনি আপনার কাজের ধরন পরিবর্তনের মাধ্যমে। হতে পারে সেটা ব্যবসা উদ্দ্যোগ, হতে পারে খুব দূরে কোথাও কিছু দিন কাটিয়ে আসা, অথবা অন্য কিছু যা আপনার কাছে করা উচিৎ বলে মনে হয়।

 

জীবন একটাই, এই জীবনের মূল উদ্দেশ্য ইবাদত করা, এটা ঠিক রেখে বাকিটা নিজের মত করে সাজিয়ে নিন। নিজের ভালো লাগা জিনিসের উপর ফোকাস দিন, ইচ্ছাগুলোকে গুরুত্ব দিন, মাথায় ঘুরপাক করতে থাকা নিত্যনতুন আইডিয়া গুলোকে বাস্তব রুপ দিন। হ্যা হতে পারে সেটায় সফল হবে না, হতেই পারে সেই বিষয়ে বিনিয়োগ করা আপনার সময় বৃথা, তবুও পরবর্তী সময়ে এই আপসোস কাজ করে না যে, “ তখন যদি সাহজ করে সেই কাজটা শুরু করতাম, আজ হয়তো আমার অবস্থান পুর্বের ন্যায় আরেকটু ভালো হতো “ 

 

তাই সময় থাকতেই নিজের ইচ্ছা, আইডিয়া, মনের বাসনার উপর নজর দিন। সেগুলো নিয়ে ভাবুন, দেখুন সেখান থেকে নতুন কি বেরিয়ে আসে, হতেও পারে এর মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়ে যাবে কল্যানকর নতুন কিছু। 

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন

 

আচ্ছা আপনি কি আপনাকে কেউ সাহায্য করলে তার বিনিময়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন? অথবা কৃতজ্ঞ থাকেন? আপনি কি কাউকে সাহায্য করেন তার থেকে পুনরায় সাহায্য পাওয়ার আশায় নাকি নিস্বার্থ্য ভাবে? 

 

কৃতজ্ঞতা শব্দটা সুন্দর কারন এই শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে থাকে সুন্দর কিছু মুহুর্ত, কিছু আন্তরিকতা, কিছু সুন্দর ঘটনা – যা মনকে বরাবরই শান্ত করে। কৃতজ্ঞতার মনভাব মানুষের ব্যক্তিক্তকে সমৃদ্ধ করে, মানুষকে ভালোবাসতে ও সৎ হতে শেখায়। 

 

এটি খুব ইতিবাচক একটা ধারনা, আপনি প্রতিদিন যাদের সংস্পর্শে থাকেন তাদের ধন্যবাদ জানান তাদের কাজের প্রতি, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন সে সব মানুষের প্রতি যারা প্রতিনিয়ত কষ্ট করে যাচ্ছে আপনার ভালো থাকার ব্যবস্থা করে দেবার জন্য। 

 

যাতে করে তাদেরও মনে হয় তারাও মানুষ, কোনো কাজ করা যন্ত নয়। কৃতজ্ঞ থাকুন আপনার মা-বাবা, শিক্ষক ও সেসব মানুষের উপর যাদের জন্য আপনি বর্তমান অবস্থানে আছেন আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন তার উপর যে আপনাকে সৃষ্টি করেছে এবং আপনার রিজিক দিয়ে বাচিয়ে রেখেছে। স্রষ্টা মহান, আমাদের উচিৎ তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা এবং তার ইবাদাত করা। একমাত্র তার মাধ্যমেই আপনার সব প্রয়োজন মিটানো সম্ভব। 

 

তাই, মানুষের উপর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন, নিজেকে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই উপায়টি সব সময় কার্যকর আর এর প্রভাবে আপনি যথেষ্ট শান্তি অনুভব করবেন সব সময়। 

 

নিজের উপর ইনভেস্ট করুন

 

মানুষ আদিম কাল থেকে এখন অব্দি উন্নত জাতিতে পরিনত হচ্ছে, পোশাক আশাক, চাল-চলন থেকে শুরু করে জেনারেশন ভিত্তিক মানুষ এখন অনেক আধুনিক। এমনকি এই ধারা চলতে থাকবে সব সময়। সময়ের সাথে চলতে গেলে আমাদের প্রতিনিয়ত আপডেট হতে হবে। আপডেট করতে হবে নিজেদের স্কিলকে। 

 

নিজের উপর ইনভেস্ট করা কি? এর মানে এই যে নিজেকে উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় স্টেপ গ্রহন করা। বর্তমানের প্রযুক্তিগত শিক্ষা সব স্থানেই প্রয়োজন। এখন যেমন চাকরি সমূহ শিক্ষাগত যোগ্যতা ভিত্তিক হচ্ছে অদূর ভবিষ্যৎতে মানুষের চাকরি হবে স্কিল কেন্দ্রিক। তখন জেনারেশনের ধারায় নিজেকে টিকিয়ে না চললে হারিয়ে যেতে হবে অকালেই। 

 

তাই অর্থ খরচ করুন নিজেকে উন্নত করার উদ্দেশ্য। বই কেনা, যেকোনো কোর্স করা, সেমিনারে এটেন্ড করা, ডকুমেন্টেশন মুভি দেখা সহ আরো অনেক পথ আছে যার মাধ্যমে নিজের মেধা বৃদ্ধি করতে পারেন। তবে নিজের উপর ইনভেস্টের মানে এই না যে অর্থ খরচ করতে হবে, নিজের উপর যথাযত সময় ও শারীরিক ও মানসিক সুস্থতারও খেয়াল রাখাটা প্রয়োজনীয়। 

 

ইতিকথা

 

তো এই ছিলো কিছু উপায় যা অবলম্বন করার মাধ্যমে নিজেকে পরিবর্তন করার মাধ্যমে নিজের উন্নতি করতে পারবেন। সব শেষে বলবো নিজেকে সময় দিন, নিজের যত্ন নিন, নিজেকে ভালোবাসুন। 

Visited 15 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here