নিজের যত্ন নেওয়ার চেয়ে উত্তম কাজ আরেকটি নেই জানুন নিজের যত্ন নেওয়ার উপায় এবং নিজেকে আরেকধাপ এগিয়ে নিয়ে যান। কারন আপনার পরিচয় আপনার নিজের মধ্যেই। আপনার অবদান পৃথিবীতে দেখানোর জন্য আপনার উচিৎ নিজেকে ভালো রাখা। কথায় আছে না, নিজে ভালো থাকলে দুনিয়ার সকল কিছুই ভালো আর নিজে খারাপ থাকলে দুনিয়ার সব খারাপ।
পার্সোনাল বা সেল্ফ কেয়ার বেশ জরুরি একটা ব্যাপার।সেল্ফ কেয়ার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আপনার দৈনন্দিন জীবনে একটা ছন্দ তৈরী হয়,অহেতুক মন ভারী লাগা,উদাসীনতা থেকে মুক্তি মিলে আর নিজের মধ্যে একটা আলাদা কনফিডেন্স গ্রো করে যার প্রভাবে মন থাকে ফুরফুরে। খুব সাধারণ কিছু ব্যাপার মেনে চললে নিজের মানসিক অবস্থা নিজের কন্ট্রোলেই রাখা সম্ভব। আসুন জেনে নেই সেই উপায় গুলো সম্পর্কে।
নিজের যত্ন নেওয়ার উপায় সমূহ
১) শারীরিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা: হেলদি একটা রুটিন মেইনটেইন করা জরুরি।পরিমিত ঘুম,হেলদি খাবার গ্রহণ,অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফেইন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বর্জন। আর দিনের একটা অংশে খুব পরিমিত শরীরচর্চা।
২) হাইজিন মেইনটেইন: আপনার রুমটা যদি খুব অগোছালো করে রাখেন,খেয়াল করবেন মনের মধ্যে একধরণের বিরক্তিবোধ কাজ করে।প্রয়োজনে জিনিস খুঁজে পাওয়া যায় না।
কিন্তু সুন্দর করে রুমটা গোছানো রাখেন,একটু ফ্রেশ ফুল রেখে দেন,হালকা একটু সুন্দর ঘ্রাণ ছিটিয়ে দেন,ব্যালকনিতে অনেক কাপড় ভর্তি না করে দুপুরের পরই ব্যালকনি খালি করে দেন,কিছু প্ল্যান্ট রাখুন ব্যালকনিতে না চাইতেও মনটা অনেকটা ফুরফুরে লাগবে। দিনের ছোট্ট একটা অংশ নিজের ঘর গোছানোতে ব্যয় করুন।
৩) রিলাক্সেশন: দিনে অল্প কিছু সময় ব্যয় করুন রিলাক্স করার জন্য। হাতে নিতে পারেন একটা বই,কিংবা সুন্দর একটা গান শুনুন। এক কাপ চা/কফি হাতে বিকেলের মিষ্টি রোদ পোহান। অন্ধকার নামলে রুমে ফেয়রি লাইট জ্বালিয়ে হালকা ইয়োগা কিংবা মেডিটেশন করুন। নিজের মধ্যে একটা এনার্জি বুস্ট আপ করবে।
৪) প্রোডাক্টিভ কোন একটা কাজ করুন দিনের একটা অংশ জুড়ে: ক্রিয়েটিভ যেকোন কাজ;হোক সেলাই করা,ক্রাফটস,রান্না,আর্ট,কোন ছোটখাটো হোম বিজনেস কিংবা পছন্দের কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা।
৫) ফোকাসড হওয়া: সামনের দিনগুলার জন্য একটা প্রি প্ল্যান রাখুন।ফোকাসহীন জীবন সবচেয়ে বিমর্ষ মন ক্যারি করে। একটা সময়ের পর কি করবেন,ভবিষ্যতে কি গোল এচিভ করতে চান সেটা ফিক্স করুন,সেটারব্জন্য প্রতিদিন একটু একটু করে কাজ করুন।
মানসিক শান্তি ও নিজের যত্ন
৬) নিজের জন্য একটু সময় স্পেন্ড করুন: এই সময়টাতে নিজেকে নিযে সময় দিন। ভাবুন নিজের ল্যাকিংস নিয়ে। সেগুলোকে কিভাবে বাদ দেয়া যায় তা চিন্তা করুন।প্রতিদিন একটি করে ভালো কাজ করুন,এবং সেটার জন্য নিজেকেই নিজে ধন্যবাদ দিন। একটা পথশিশু কিংবা প্রাণীকে একটু খাবার দিন,কারোর কোন একটা জিনিসে হেল্প করুন এবং নিজেকেই সেটার কৃতজ্ঞতা জানান।
৭) ইগনোর করতে শিখুন: এটা যে কতো বড় একটা গুণ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য! নেভেটিভ কথা,নেগেটিভ কাজগুলো পরিহার করুন। নেগেটিভ জাজমেন্টে পাত্তা দিবেন না একদম। দিনশেষে নিজের ব্রেইন আর হার্ট এই দুইটাকে গুরুত্ব দিন।
৮) বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হোন: বন্ধু টার্মটা এমন একটা স্পেস,যেখানে আমরা নিজেদের সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারি।যেখানে আমরা এক্সপেক্ট করি সাপোর্টের,জাজড না হওয়ার। একটা আনফোকাসড,আনসাপোর্টিভ বন্ধু যথেষ্ট আপনার কনফিডেন্স লেভেল ভেঙে দিতে। মনে রাখবেন মানুষ খুবই ইনফ্লুয়েন্সিভ,না চাইতেও আমরা অনেক ইনফ্লুয়েন্সড হয়ে যাই। তাই অবশ্যই যাচাই করেই বন্ধু নির্বাচন করুন।
৯) না বলতে শিখুন: এই গুণটার আমারও বড্ড অভাব। তবে প্রতিনিয়ত প্র্যাক্টিস করুন সহজে ‘না’ বলতে পারার। এক্ষেত্রে একটা বই রয়েছে যার নামই “না বলতে শিখুন” চাইলে বইটি পড়ে নিতে পারেন, এটা বেশ উপকৃত করবে আপনাকে।
১০) সুখকর ঘুম দিন: সারাদিনে আমাদের সাথে যাই হোক না কেনো, সেগুলোকে সামলে উঠার আরেকটি কার্যকর মাধ্যম হচ্ছে ঘুম। আমাদের ব্রেইন তখন সারাদিনের ধকল গুলো সামাল দিয়ে বিশ্রাম নেয়। আপনার শরীরের পাশাপাশি মানসিক শান্তি প্রদানে রাতে নিশ্চিন্তের ঘুমের বিকল্প নেই।
ইতিকথা
পরিশেষে, এই ছিলো নিজের যত্ন নেওয়ার উপায় যেখানে একতা বিষয় বলতেই হয় যে, আপনার মানসিক স্বাস্থ্য অন্যজন দ্বারা নষ্ট হওয়ার সুযোগ দিবেন না একদম। নিজের সুখ নিজের মাঝেই, আপনি সুখি থাকতে চাইলে কেউ আপনাকে দুঃখি করতে পারবে না। তেমনই আপনি যদি দুঃখি থাকতে চান সেক্ষেত্রে কেউই পারবে না আপনাকে সুখি করতে। লাইফের প্রতিটি ধাপে নিজেকে নিজের মত করে বাচতে শেখাতে রয়েছে বাংলা আলোর লাইফ স্টাইল সেকশন। দেখে নিন ও নিজের মত করে বাচুন, সকল নেগেটিভিটি দূরে ফেলে রাখুন।