পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম । বাংলাদেশ থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট খুলুন বিকাশে 

0
40
বাংলাদেশ থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম

পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং বাংলাদেশ থেকে বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে কিভাবে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলা যায় এবং লেনদেন করা যায় সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে উক্ত আর্টিকেলটি। 

বাংলাদেশে যত গুলো ফ্রিল্যান্সার আছে তাদের সকলের কাছে খুব পরিচিত শব্দটি হচ্ছে পেওনিয়ার। যত গুলো ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম আছে মোটামোটি সব গুলোর কাছেই পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে Payoneer পরিচিত। বাংলাদেশ থেকে এক সময় ইন্টারন্যাশনাল ফ্রিল্যান্সিং সাইট সহ বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে পেমেন্ট গ্রহন করার ক্ষেত্রে বেশ ঝামেলা পোহাতে হতো। কিন্তু এখন আর তেমন কোনো ঝামেলার বিষয় নেই কারন এখন খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে Payoneer Account তৈরি করা যায় এবং তা ব্যবহার করে ইন্টারন্যাশনাল প্রতিটা সেক্টরে পেমেন্ট প্রদান ও গ্রহন করা যায়। 

উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে দেখাবো পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং পেওনিয়ার একাউন্ট করার ক্ষেত্রে যে সকল বিষয় জানা প্রয়োজন সেসব বিষয় গুলো সম্পর্কে। 

পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বাংলাদেশে যখন থেকে পেওনিয়ার চালু হয়েছে তখন থেকেই বিভিন্ন ব্যংক একাউন্ট এর মাধ্যমে পেওনিয়ার একাউন্ট ক্রিয়েট করা যায়। তবে এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে তারা এই সেক্টরে একেবারেই নতুন এবং এখন অব্দি ব্যাংক একাউন্ট নেই। তাদের জন্য মূলত এই আর্টিকেলটি বেশ হেল্পফুল হতে যাচ্ছে কারন এখানে জানাবো কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট ছাড়াই অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলা, ব্যবহার এবং টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। 

বাংলাদেশের পেক্ষাপটে সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় রয়েছে বিকাশ। জানবো বিকাশের মাধ্যমে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম। তবে তার আগে বিকাশ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই। 

বিকাশের পরিচিতি 

২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে বাংলাদেশে অন্যতম লিডিং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ব্রাংক ব্যাংকের বিকাশ প্লাটফর্মটি শুরু থেকে বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশে দ্রুত, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ি ভাবে টাকা লেনদেনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এখন কেউ চাইলেই ঘরে বসে যেকোনো সময় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে খুব সহজেই লেনদেন করতে পারে। 

সেবা প্রদানের ধারাবাহিকতায় বিকাশ এবার নিয়ে এসেছে এমন এক সার্ভিস যা প্রতিটা বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা ছিলো। হ্যা, বিকাশ অনলাইন প্লাটফর্ম হওয়া সত্যেও প্রথমবারের মত পেওনিয়ার থেকে বাংলাদেশে টাকা লেনদেনের ব্যাপারটাকে ইজি করে দিয়েছে। এখন খুব সহজেই কয়েক ক্লিকের মাধ্যমে পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনা যাবে যেকোনো সময়। 

আপনার যদি পূর্বের কোনো পেওনিয়ার একাউন্ট না খোলা থাকে তবে এবার জেনে নিতে পারবেন পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। 

বিকাশ থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বিকাশ থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলা একজন সহজ। যদিও আপনি পেওনিয়ারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও একাউন্ট খুলতে পারবেন তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংক একাউন্ট আলাদা ভাবে সিলেক্ট করতে হবে। যদি আপনার যেকোনো ব্যাংকের একাউন্ট থেকে থাকে তবে ওয়েবসাইট থেকেও করতে পারবেন। অন্যথায় নিম্মের দেয়া প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করুন। 

১) প্রথমেই চলে যান বিকাশের মোবাইল অ্যাপ এর ড্যাশবোডে। এখানে অপশন গুলোর মধ্যে থাকা Remittance নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে

২) এই পর্যায়ে দুইটি অপশন দেখানো হবে প্রথমটি নিউ একাউন্ট খোলা সংক্রান্ত এবং ২য় টা হচ্ছে ইতিমধ্যে থাকা পেওনিয়ার একাউন্ট যুক্ত করা নিয়ে। যেহেতু উক্ত আর্টিকেলটি পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে সে হিসেবে প্রথম অপশনে ক্লিক করুন।

৩) এবার আপনার পার্সোনাল ইনফরমেশন দেয়ার পালা। প্রথমেই জানাতে হবে আপনার একাউন্টি Individual নাকি Company, আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী টা সিলেক্ট করে দিতে হবে। যদি একক ভাবে ব্যবহার করেন তবে ইন্ডিভিজুয়াল সিলেক্ট করুন। 

৪) এবার সিরিয়াল মোতাবেক আপনার – নাম, ইমেইল এড্রেস, জন্ম তারিখ দিয়ে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন। 

৫) আপনার ঠিকানা, মোবাইল নাম্বারটি দিন। মোবাইল নাম্বার দেয়ার পরে সেখানে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে সেটি সাবমিট করুন এবং নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন। 

৬) এই পর্যায়ে আবার ইমেইল এড্রেস এবং দুইবার পাসওয়ার্ড সেট করুন। পাশাপাশি একটি সিলেক্টেড প্রশ্নের উত্তর দিন। আপনার কাছে থাকা জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বারটি সেখানে উল্লেখ্য করতে হবে। এবং সব শেষে একটি সংখ্যা ও অক্ষর সংক্রান্ত একটা ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট করুন। 

৭) এই পর্যায়ে একাউন্ট প্রিভিউ দেখাবে পাশাপাশি ব্যাংক একাউন্টে ডিফল্ট ভাবে বিকাশ নাম সেট করা থাকবে। যার মানে এই যে বিকাশকেই এখন ব্যাংক হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। একাউন্ট নাম্বার হিসেবে বিকাশের মোবাইল নাম্বারটি ব্যবহার করতে পারেন। এবং সবশেষে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। 

ব্যাস আপনার কাজ শেষ, আপনার একাউন্ট সংক্রান্ত কার্যক্রম শেষ। আপনার ইনফরমেশন যদি ঠিক ঠাক থাকে তবে আপনার একাউন্টটি তৈরি হয়ে যাবে ৩ কর্ম দিবসের মধ্যেই। এক্ষেত্রে সাবমিট করা মেইল এড্রেসে মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। 

পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার পর বিকাশের সাথে যুক্ত করার নিয়ম 

একাউন্ট রিভিউ এর পর আপনার একাউন্টটি এপ্রুভ হয়ে গেলে বিকাশের সাথে যুক্ত করার জন্য প্রস্তুত। এক্ষেতে আপনার দেয়া ইমেইল এবং পাসওয়ার্ডটি প্রয়োজন হবে। উক্ত কাজটি করতে পুনরায় বিকাশের ড্যাশবোডে গিয়ে রেমিটেন্স নামক অপশনে ক্লিক করুন। 

এবার প্রথমটি নয় বরং ২য় অপশনে ক্লিক করে একাউন্টে লগিন করুন ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিতে। একাউন্ট সংক্রান্ত যেকোনো বিষয় সংশোধন আপনি বিকাশ থেকে করতে পারবেন না। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই Payoneer এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লগিন করে করতে হবে। বিকাশের মাধ্যমে কেবল পেওনিয়ারে থাকা ব্যালেন্স বাংলাদেশি টাকাতে রুপান্তর করতে পারবেন। 

পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা আনার ক্ষেত্রে 

আপনি যদি পেওনিয়ার থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই লেনদেনের কিছু শর্ত মানতে হবে। আপনি সর্বনিম্ম ১০০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১,২৫,০০০ টাকা প্রতিদিন উত্তোলন করতে পারবেন। 

আপনি পেওনিয়ার থেকে অর্থ বিকাশে আনার ক্ষেত্রে প্রতিবার মোট উত্তোলনকৃত অর্থের ২% বিকাশের চার্জ হিসেবে কাটা হবে। এবং প্রতিবার অর্থ আনায়নের মাধ্যমে গ্রাহক বিকাশ রিওয়ার্ডস পাবেন। আরেকটা হাইলাইট করার বিষয় রয়েছে যা হচ্ছে পেওনিয়ার থেকে অর্থ আনার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ২.৫% প্রণোদনা দেয়া হতো তা দেয়া হবে না। 

বিকাশ থেকে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলা বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর 

১) একটি বিকাশ একাউন্টের সাথে কয়টি পেওনিয়র একাউন্ট যুক্ত করা যাবে?

=> একটি বিকাশ একাউন্টের সাথে কেবল একটি পেওনিয়ার একাউন্ট যুক্ত করা যাবে। অন্যদিকে একটি জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে একটি বিকাশ একাউন্ট খোলা যাবে। 

২) বিকাশ মোবাইল নাম্বার ও পেওনিয়রের একাউন্ট নাম্বার কি এক হতেই হবে? 

=> আলাদা আলাদা হলেও সমস্যা নেই। 

৩) আমার বিকাশ একাউন্টের সাথে অন্য কারো পেওনিয়ার একাউন্ট যুক্ত করা যাবে?

=> অবশ্যই না। কারন বিকাশ একাউন্টটি আপনার হলে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ও আপনার একই নামে থাকা পেওনিয়ার একাউন্ট যুক্ত করা যাবে বিকাশের সাথে। 

৪) পেওনিয়ার একাউন্ট যুক্ত করার সময় OTP code ভুল দিলে কি সমস্যা হতে পারে? 

=> পেওনিয়ার একাউন্টটি ব্লক করে দেয়া হতে পারে। 

৫) যেই টুকু চার্জ ধার্য করা হবে টাকা উত্তোলন সংক্রান্ত সেটা কাদের পক্ষ থেকে নির্ধারিত করা?

=> বর্তমানে পেওনিয়ার নির্ধারিত চার্জ ছাড়া অন্য কোনো চার্জ যুক্ত নেই। তবে ভবিষৎ এ যদি যুক্ত করা হয় তবে সেটি বিকাশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হবে। 

৬) ফান্ড উইথড্রো করার রিকোয়েস্ট করেছি, এখন চাচ্ছি না । এটা বাতিল করার উপায় কি? 

=> একবার প্রসেসিং শুরু হওয়া কার্যক্রম বাতিল হওয়ার সুযোগ নেই। 

৭) বিকাশ একাউন্ট থেকে কি যুক্ত থাকা পেওনিয়ার একাউন্ট রিমুভ করা যাবে?

=> হ্যা যেকোনো সময় উক্ত স্থানে বাতিল নামক অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে এই কাজটি করতে পারেন। \

৮) ওটিপি প্রদান না করে কি টাকা উত্তোলন করা সম্ভব? 

=> জী হ্যা এক্ষেত্রে পেওনিয়ার একাউন্ট্য সেটিংস থেকে ওটিপি বন্ধ করে দিতে হবে। তবে ওটিপি এর মাধ্যমে লেনদেন করা অধিক সুরক্ষিত।  

৯) ফান্ড উইথড্রো করার রিকোয়েস্ট সাবমিট করার সময়সীমা কত সময় অব্দি? 

=> রিকোয়েস্ট সাবমিট করার ১০ মিনিটের মধ্যে লেনদেন জমা করতে হবে। 

১০) পেওনিয়ার লেনদেনের সংখ্যা জানার উপায় কি? 

=> বিকাশ অ্যাপ এর মেনু থেকে স্টেট্মেন্ট নামক অপশনে ক্লিক করে লেনদেনের সারাংশ এর দিকে লেনদেনের সংখ্যা জানা যাবে। 

ইতিকথা

পরিশেষে, এই ছিলো পেওনিয়ার একাউন্ট খোলার নিয়ম বিষয়ক সম্পূর্ণ আর্টিকেল যেখানে দেখানো হয়েছে বাংলাদেশের বসে কিভাবে পেওনিয়ার একাউন্ট খোলা যাবে তাও আবার বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে। এবং বিকাশের সাথে পেওনিয়ারের এই যুক্তিতে গড়ে উঠা কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর সমূহ দেয়া হয়েছে যা ওভারল বিষয়টি বুজতে আপনাকে সাহায্য করবে। যেকোনো সমস্যার সমাধানের সর্বোত্তম পথ দেখাতে আছে বাংলার আলো প্রতিটি ঘরে ঘরে। 

Visited 9 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here