কিভাবে ফটোগ্রাফি করে আয় করা যায় । অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় যেভাবে করবেন 

0
34
কিভাবে ফটোগ্রাফি করে আয় করা যায় । অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় যেভাবে করবেন 

ফটোগ্রাফি করে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাইলে আর্টিকেলটি আপনাকে খুব বেশি সাহায্য করবে কারন এখানে থাকবে কিভাবে ফটোগ্রাফি করে আয় করা যায় সেই তথ্য পাশাপাশি অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় যেভাবে করবেন সে সম্পর্কেও বিস্তারিত।

ফটোগ্রাফি শব্দটা আমাদের কাছে খুব বেশি পরিচত। কারো শখের বস্তুও বটে, মানুষ এখন প্রায় সময় ফটোগ্রাফি করে। প্রিয় কোনো স্থান বা সুন্দর কোনো মুহুর্ত চোখে পড়লেই সেটিকে আলোকচিত্রের মাধ্যমে স্মৃতি করে রাখতে চায়। যুগ যুগ ধরে এমনই চলে আসছে। মানুষের অনেক গুলো শখের মধ্যে এটি অন্যতম। 

তবে আপনি কি জানেন মানুষের শখের কাজ গুলোর মাধ্যমেও আয় করার ব্যবস্থা করা আছে? জী শখের ফটোগ্রাফিকে চাইলেই কেউ প্রোফেশনাল ভাবে নিয়ে এই কাজের মাধ্যমে আয় করতে পারে। ভাবছেন কিভাবে ঘটায় এসব ঘটনা? চিন্তা নেই, আজ এই ব্যাপারেই বলবো। জানাবো ফটোগ্রাফি করে আয় করার উপায়। 

ফটোগ্রাফি করে আয় করার উপায় 

যেমনটা বললাম, ফটোগ্রাফি করে আয় করার উপায় সম্পর্কে জানাবো আর্টিকেলটির মাধ্যমে তবে এর জন্য আপনাকে বেশ কিছু তথ্যের মধ্যে হারিয়ে যেতে হবে এবং পুরো মনযোগ দিতে হবে আর্টিকেলে কারন প্রতিটা কথাই গুরুরত্বপূর্ণ। 

ফটোগ্রাফি করে আয় করার যায় অনেক গুলো সেক্টরের মাধ্যমে। একটি আরেকটি থেকে অনেকটাই আলাদা তবে কমন যে বিষয়টা আছে তা হলো ছবি তোলা। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু জিনিস রাখতে হবে। 

ফটোগ্রাফ করতে কি কি প্রয়োজন? 

আপনি যদি প্রোফেশনাল নাও হয়ে থাকেন তবুও কিছু জিনিস এমন রয়েছে যা মাস্ট থাকা দরকার তার মধ্যে অন্যতম বস্তুটি হচ্ছে একটি ভালো মানের DSLR Camera আপনি যদি বর্তমান বাজারে পাওয়া যায় এমন সেরা কিছু DSLR ক্যামেরা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তবে জেনে নিন আর্টিকেলটি পড়ে। আচ্ছা যা বলছিলাম। ডিএসএলআর ক্যামেরা একান্ত প্রয়োজন ঠিক আছে তবে আপনার কাছে যদি না থেকে থাকে তবে অবশ্যই একটি উচ্চ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা ফোন অবশ্যই থাকা চাই। 

এর পরের বিষয় আসবে স্কিলের দক্ষতা। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ফটো ইডিটিং এর দক্ষতা। মনে রাখবেন তোলা ছবি যত ভালোই হোক না কেনো সেটায় যদি ইডিটিংয়ের ছোয়া না দেয়া হয় তবে সেটা সম্পূর্ণ মনে হয়। 

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যা আপনার অবশ্যই প্রয়োজন তা হচ্ছে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ। যার মাধ্যমে ছবি গুলো ইডিট করবেন। অনেকে বলে থাকে মোবাইলের মাধ্যমেও ছবি ইডিট করা যায়। আমি উক্ত বানীতে অমত প্রশন করছি না তবে প্রোফেশনাল ভাবটি সেই ছবিতে কখনই আসবে নাহ। আর যেহেতু আপনি ছবি গুলো বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য তৈরি করছেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই প্রোফেশনাল টার্চ থাকা জরুরি। 

ব্যাস, এই ম্যাটারিয়ালস গুলো থাকলেই আপনি ফটোগ্রাফির কাজ করার জন্য প্রস্তুত। এবার আসুন জেনে নেয়া যাক কোন সেই উপায় গুলো আছে যার মাধ্যমে আয় করা যায়। 

ফটোশুট সার্ভিস 

এমনকি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান চোখে পরেছে যেখানে ফটোশুটের ব্যাপার না ঘটেছে? আর এখন তো এর ডিমান্ড খুবই বেশি। আমাদের দেশে যে সকল ফটৈগ্রাফার আছে তাদের আয়ের ৮০% আসে বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে ফটোশুট করার মাধ্যমে। খুব অল্প সময়ে অধিক অর্থ আয়ের এর বেছে ভালো উপায় আর কয়টা আছে জানা নেই। 

কেমন কি বিয়ের অনুষ্ঠান? জন্মদিন, সুন্নাতে খাৎনা, ফেয়ার ওয়েল, র‍্যাক ডে, অফিস পার্টি থেকে শুরু করে ছোট বড় সব ধরনের প্রোগ্রামে ফটোশুটের প্রবণতা দিন দিন বেড়ে বলছে। এসকল কাজে অল্প সময়ে ভালো পরিমানের আয় করা যায়। 

এই কাজটি করার ক্ষেত্রে প্রথমেই আপনার পরিচিতি বিল্ডআপ করতে হবে। আপনি সোসাল মিডিয়া পেজ ক্রিয়েট করে সেখানে রেগুলার নিজের কাজ প্রোমোটের মাধ্যমে ট্রাফিক আকৃষ্ট করতে পারেন। একবার ঠিক ভাবে পরিচিতি লাভ করার পর ভালো কাজের প্রমান দিতে পারলে আপনার নাম এমনিতেই ছরিয়ে যাবে।  

ফটোগ্রাফ সংক্রান্ত ব্লগিং 

আপনি যদি হয়ে থাকেন একজন ফটোগ্রাফার এবং উক্ত সেক্টরে আপনি খুব অভিজ্ঞ তবে আপনার অভিজ্ঞতার বিষয় গুলো ব্লগে শেয়ার করার মাধ্যমে ব্লগিং করেও আয় করতে পারবেন। ব্লগ পড়া ও ব্লগ থেকে শেখার মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আপনার দুই ধরনের সুবিধা হবে। প্রথমত আপনার ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় করা হচ্ছে। আর আপনি যেহেতু খুঁটিনাটি বিষয় গুলোর যেহেতু টিউটরিয়াল দিচ্ছে এক্ষেত্রে ফটোগ্রাফির বিষয়ে আপনার অভিজ্ঞ হওয়াটার প্রচার হচ্ছে। এতে করে বড় বড় প্রোজেক্ট আপনার পাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। 

ফটো লাইসেন্স করে আয় 

ফ্লিকার নামক প্লাটফর্ম থেকে আপনার তোলা ছবি গুলোর লাইসেন্স করে রাখতে পারবেন। এটি এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে আপনি আপনার স্টক পিক গুলো সাবমিট করতে পারবেন। কেউ যদি আপনার ছবি ব্যবহারের ইচ্ছা প্রসন করে তবে আপনার কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহন করতে হবে। ফ্লিকারে ছবি আপলোড করার পর Request to License এ ক্লিক করলে আপনার আবেদন সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। আপনার তোলা ছবি যদি এমন হয় যা মানুষের পছন্দ হবে এবং বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করতে ইচ্ছ প্রসন করবে তবে খুব ভালো একটা রেভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন এখান থেকে। 

ফটোগ্রাফি কন্টেস্ট 

বিভিন্ন সময় সোসাল মিডিয়া এবং পোর্টালে এমনকি বাস্তবিক জীবনেও প্রায় সময় ফটোগ্রাফি কন্টেস্ট হয়ে থাকে। যদি আপনার দক্ষতার উপর আপনার ভরসা থাকে তবে আপনা তোলা ছবি গুলো সেসব কন্টেস্টে দিতে পারেন। সেখানে নানান ধরনের পুরষ্কারের ব্যবস্থা থাকে। 

এটি যে কেমন আপনার আশেপাশের কোনো কন্টেস্টে অংশগ্রহন করতে হবে বিষয়টা এমন না। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে রেগুলারই এসব কন্টেস্ট হয়ে থাকে যা গুগল সার্চের মাধ্যমে জানতে পারবেন। 

অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় 

এতো সময় ধরে জানিয়েছি ফটোগ্রাফি করে আয় করার উপায় সম্পর্কে। এবার আলোচনা করবো অনলাইনে নিজের তোলা ছবি কিভাবে বিক্রি করবেন সেই সম্পর্কে। অনলাইনে ছবি বিক্রি করার জন্য কমার্সিয়াল ছবি, নিশ, ধরন বাছাই সম্পর্কে জানাবো। প্রথমেই বলি কোন ধরনের ছবি গুলো তুলবেন অথবা বলা যায় কোন ধরনের ছবি গুলো অনলাইনে বিক্রি হয়ে থাকে। 

কোন ধরনের ছবি তুলবেন? 

এবস্ট্রাক্ট : নিদিষ্ট কোনো বস্তুর যত কাছে গিয়ে ক্লোজ ছবি তোলা যায় সেই ছবিটিই হলো এবস্ট্রাক্ট ক্যাটাগরির ছবি। বর্তমানের সকল স্মার্টফোন গুলোতে মাইক্রো ক্যামেরা সেটাপ করা থাকে। এই সকল ক্যামেরা থেকে খুব কাছের ছবি তোলা যায় এখানেও ব্যাপারটা একই। উদাহরণ সরূপ বলা যায়, “গাছের পাতার শিরা উপশিরা দেখা যায় এমন ছবি“  

আর্ট – চিত্রাঙ্কন : বিভিন্ন নামকরা চিত্রাকারের আঁকা ছবি বিভিন্ন মিউজিয়ামে রাখা হয়। মানুষের এই ছবি গুলোর উপর বেশ ইন্টারেস্ট রয়েছে। আপনি মিউজিয়াম গুলো ঘুরে সেই সব চিত্রকারদের আঁকা আর্ট গুলোর ছবি তুলে সেগুলোকে বিক্রি করতে পারেন। 

ফ্যাশন : দিন দিন যুগ আধুনিক হচ্ছে তার পাশাপাশি আধুনিক হচ্ছে মানুষের টেস্ট, ফ্যাশন। ফ্যাশন ডিজাইনারদের ডিজাইন করা ফ্যাশনেবল মডেল, অভিনেতা – অভিনেত্রীদের ছবি তুলে সেগুলো বিভিন্ন মিডিয়া ও কোম্পানির বিজ্ঞাপনের খাতিরে ডিল করতে পারেন। 

কালচার ও লাইফস্টাইল : আপনার যদি দেশ বিদেশ ঘুড়াঘুড়ির ব্যবস্থা ও ইচ্ছা থেকে থাকে তবে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করার মাধ্যমে ওইসকল দেখের পরিবেশ সাংস্কৃতি, জীবন ব্যবস্থার ছবি তোলার মাধ্যমে সেগুলো কালেক্ট করতে পারেন। ইন্টারনেট জগট ও প্লাটফর্ম গুলোতে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। 

নেচার বা প্রকৃতি : প্রাকৃতির উপর মানুষের প্রেম সবচেয়ে বেশি। এটি বেশ জনপ্রিয় ও পপুলার নিশ ছবি তোলার জন্য। আপনার যদি এমন কোনো প্রাকৃতিক ছবি তোলার ইচ্ছা থাকে তবে সেগুলোও আপনি কমার্সিয়ালি বিক্রি করার জন্য তুলতে পারেন। 

অনলাইনে ছবি বিক্রি করার প্লাটফর্ম 

অনলাইনে ছবি বিক্রি করার জন্য অনেক গুলো প্লাটফর্ম রয়েছে যার মধ্যে সবচেয়ে ভালো কয়েকটির সম্পর্কে নিম্মে তথ্য তুলে ধরছি। 

সাটারস্টক – Shutterstock.Com

এটি খুব বেশি জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম। সকল ধরনের প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, ব্লগার এখান থেকে বিভিন্ন স্টক ইমেজ ডাউনলোড ও ক্রয় করে থাকে কমার্সিয়ালি ব্যবহার করার জন্য। প্রতি মাসে গড়ে ৫০ মিনিয়ন ভিজিটর আসে এই প্লাটফর্মে ছবির জন্য। বেশ অনেক বছর ধরে ছবি সংক্রান্ত ব্যবসা করে যাচ্ছে। 

প্লাটফর্মটি ছবির মালিককে প্রতি বিক্রির ক্ষেত্রে ২০-৩০ শতাংশ প্রদান করে থাকে। যত বেশি ডাউনলোড বা বিক্রি তত বেশি লাভ। এবং আপনি যদি এখানে ছবি আপলোড করতে চান প্রথমে আপনাকে এখানে একাউন্ট করতে হবে। একাউন্ট করতে তাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। 

ফটোলিয়া – Fotolia.Com 

অল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করা ওয়েবসাইটি শুরু হয় ২০১৯ সালে এবং এখন প্রতি মাসে সাইটের ভিজিটর গড়ে ৪৫ মিলিয়ম। আরেকটা ভালো ব্যাপার হচ্ছে এটা এডবি এর একটা ফটোগ্রাফি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট। যার কারনে ইতিমধ্যে বেশ জনপ্রিয় এবং খুব ভালো মানের ছবি পাওয়া যায়। আপনি এখানেও নিশ্চিন্তে নিজের ছবি আপলোড করতে পারেন একাউন্ট তৈরি করে। 

গেটি ইমেইজ – GettyImages.Com

সিরিয়াল মোতাবেক আসে এই সাইটটি। বেশ জনপ্রিয়, মাসে ৫০ মিনিয়ন ট্রাফিক আসে। প্রচুর পরিমানের কালেশন এবং একটা ভালো ব্যাপার হচ্ছে উক্ত সাইট এর ছবি গুলোর দাম খুব বেশি তাই ভালো ভাবে যদি নিজের প্রোফাইল সেট করে ছবি বিক্রি করতে পারেন তবে অনেক বেশি আয় করা যাবে এখান থেকে। 

পরিশেষে, এই ছিলো ফটোগ্রাফি করে আয় করার উপায় সংক্রান্ত পুরো আর্টিকেল এখানে আলোচনা করেছি ছোট থেকে ছোট বিষয় গুলোও যাতে করে কোনো ব্যাপার আপনার বুজে অসুবিধা না হয়। পডতে থাকুন, জানতে থাকুন, সঙ্গে থাকুন বাংলা আলোর সাথেই। 

Visited 1 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here