মোবাইল দিয়ে ফটো এডিট করার ভালো অ্যাপ | সেরা ৫ টি ফটো এডিটিং অ্যাপ ২০২২

0
87

মোবাইল দিয়ে ছবি এডিট করার ক্ষেত্রে সবার আগে যেই বিষয়টা ভাবায় তা হলো ভালো ফটো এডিটিং অ্যাপ কোনটি? জেনে নিন বেস্ট সাজেশন গুলো।

ছবি তুলতে আমরা সকলে বেশ পছন্দ করি। আজকাল এটা মানুষের শখ বলা চলে। তবে ছবি তোলার ক্ষেত্রে ফটো এডিট এর বিষয়টি চলে আসলে।

 

একটি ছবিকে ভালো লুক দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই ফটো এডিট করতে হবে। আর এর জন্য আপনার প্রয়োজন হবে ভালো ফটো এডিটিং অ্যাপ এর। ভালো ফটো এডিটিং অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি একটি ছবিতে নিয়ে আসতে পারেন প্রফেশনাল লুক।

 

যদিও আগে মোবাইল দিয়ে ফটো এডিট করার জন্য ভালো মনের ল্যাপটপ/কম্পিউটার। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল দিয়ে কিছু ফটো এডিটিং অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি আপনার ছবিকে সুন্দর করে এডিট করতে পারেন।

 

যাহোক অনেক কথা হয়ে গেলো, আজকের আর্টিকেলে আমরা মোবাইলের জন্য সেরা ৫ টি ফটো এডিটিং অ্যাপ এর সম্পর্কে জানবো, যেগুলো দিয়ে খুব চমৎকার করে আমরা আমাদের ছবিগুলো এডিট করে নিতে পারবো। চলুন তবে শুরু করা যাক। 

 

মোবাইল দিয়ে ফটো এডিট করার সেরা ৫ টি ফটো এডিটিং অ্যাপ

 

১. Adobe Lightroom 

 

অ্যান্ড্রয়েড ফটো এডিটিং অ্যাপ গুলোর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় একটি অ্যাপ হচ্ছে Adobe Lightroom, লাইটরুম অ্যাপের সাহায্যে আপনি আপনার যেকোনো ছবিকে মনের মতো করে এডিট করে নিতে পারেন।

 

একটি ছবিকে প্রফেশনাল লুক দিতে যেসব টুলস বা ফিচার এর প্রয়োজন পড়ে সেসব আপনি এই অ্যাপের মধ্যে পেয়ে যাবেন। বেশিরভাগ টুলস আপনি এখানে ফ্রীতে ব্যবহার করতে পারবেন। 

 

তবে প্রিমিয়াম কিছু টুলস রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনাকে সেগুলো টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে হবে।

 

যাহোক আমরা যেহেতু ফ্রীতে কাজ করবো, সেহেতু চলুন এই ফটো এডিটিং অ্যাপ এর ফিচারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

 

Lightroom অ্যাপের নানাবিধ ফিচারঃ

 

১। ফ্রীতে নানাবিধ কার্যকরী টুলস ব্যবহারের সুযোগ, যেগুলো একটি আকর্ষণীয় ছবি এডিট করতে আপনার প্রয়োজন হবে।

 

২। হরেক রকমের ফিল্টার পেয়ে যাবেন ফ্রীতে। কেবল এক ক্লিকে এসকল ফিল্টার দিয়ে ছবিতে নিয়ে আসতে পারবেন দারুণ রকমের লুক। ফিল্টার গুলো কাস্টোমাইজ করার সুযোগ পাবেন নিজের মত করে।

 

৩। যারা ফটো এডিট একটু গভীরে গিয়ে করতে চান তাদের জন্য সে সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ এখানে আপনি যেকোনো কালার টার্গেট করে সেটি পরিবর্তন করা সহ, ব্যাকগ্রাউন্ডে দারুন লুক নিয়ে আসতে পারেন। এক কথায় আপনি এখানে কালার নিয়ে বিভিন্নভাবে আপনার ছবিকে এডিট করতে পারবেন।

 

৪। বিভিন্ন প্রিসেট এর মাধ্যমে কেবল এক ক্লিকে ছবি এডিট করে ফেলতে পারবেন। 

 

৫। ব্রাইটনেস, সেচুরেশন, কনট্রাস্ট, হাইলাইট ইত্যাদি অনেক কাস্টোমাইজেশনের অপসন পাবেন, যেগুলো কাস্টোমাইজ করে ছবিতে নিয়ে আসতে পারবেন প্রিমিয়াম লুক।

 

এক কথায় এই অ্যাপের কোনো আলাদা ফিচার এর কথা বলার প্রয়োজন নেই। আমার মনে হয়না আর কোনো ফিচার এর প্রয়োজন। Lightroom অ্যাপটি আপনারা পেয়ে যাবেন Google Play Store এ।

 

২. Snapseed 

 

লাইটরুমের পর আমার সবথেকে পছন্দের একটি ফটো এডিটিং অ্যাপ হচ্ছে Snapseed, বলতে গেলে আমি নিজে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে আমার বেশিরভাগ ছবি এডিট করে থাকি।

 

এই অ্যাপের ওভারঅল সব ধরনের ফিচার বেশ কার্যকরী। যেকেউ খুব সহজে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে তাদের ছবিগুলো এডিট করে নিতে পারবেন। 

 

চলুন তাহলে Snapseed অ্যাপের মধ্যে আমরা কি কি ফিচার বা সুবিধা পাবো সেগুলোর বিষয়ে নিচে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

 

Snapseed অ্যাপের নানাবিধ ফিচারঃ

 

১। Snapseed অ্যাপের চমৎকার একটি ফিচার হচ্ছে “Look”, যেটি আপনার অ্যাপে প্রবেশ করা মাত্র দেখতে পারবেন।

 

এখানে আপনি বেশ কয়েকটি ফিল্টার দেখতে পারবেন যেগুলো ইনস্টাগ্রাম ফিল্টার এর মত। কেবল এক ক্লিকে আপনি আপনার ছবিতে দারুন লুক নিয়ে আসতে পারেন লুক ফিচার দিয়ে।

 

২। Tune Image অপশনে Brightness, Highlights, Saturation, Contrast, Warm ইত্যাদি অপশনের মাধ্যমে আপনার ছবিকে সুন্দর মতো কাস্টোমাইজ করতে পারবেন।

 

৩। Healing এর মাধ্যমে চমৎকারভাবে অবজেক্ট রিমুভ করার মতো সুবিধা পাবেন।

 

৪। Double Exposure এর সাহায্যে ব্যকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করতে পারবেন।

 

৫। এই অ্যাপে আরো অনেক ধরনের টুলস রয়েছে, যেগুলো একদম ফ্রীতে ব্যবহার করে দারুন ছবি এডিট করতে পারবেন।

 

৩. PicsArt : Photo & Video Editor

 

PicsArt অ্যাপের বিষয়ে নতুন করে বুঝিয়ে বলার কিছু নেই। প্রতিনিয়ত দারুন সব আপডেট এর মাধ্যমে   বেশ জনপ্রিয় বর্তমানে এই অ্যাপটি। এখানে আপনারা ছবির সাথে ভিডিও পর্যন্ত এডিট করার সুযোগ পাবেন । 

 

ছবিকে সুন্দর করে এডিট করার জন্য যত ফিচার দরকার সেসব ফিচার আপনারা এই ফটো এডিটিং অ্যাপ এর মধ্যে পেয়ে যাবেন। তাহলে চলুন এই অ্যাপের নানাবিধ ফিচার এর বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

 

PicsArt অ্যাপের নানাবিধ ফিচারঃ

 

১। আমরা সবাই এক ক্লিকে ছবিতে আকর্ষণীয় ফিল্টার ব্যবহার করতে চাই। এক্ষেত্রে এই অ্যাপটি আপনার জন্যে। এখানে আপনারা বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন ক্যাটাগরির ফিল্টার পেয়ে যাবেন, যেগুলো ফ্রীতে ব্যবহার করতে পারবেন আপনার ছবিতে।

 

২। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করে ছবি আকর্ষণীয় করে তুলতে আপনারা সকলে চাই। এই ফটো এডিটিং অ্যাপ এর মাধ্যমে আপনি সহজে আপনার ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করতে পারবেন।

 

৩। যারা ইউটিউবের ভিডিওর জন্য থাম্বনেইল বানাতে চাচ্ছেন মোবাইল দিয়ে, তারা PicsArt অ্যাপ দিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারবেন। PicsArt এর বিভিন্ন ফিচার দিয়ে আপনি মনের মত থাম্বনেইল বানিয়ে নিতে পারবেন।

 

৪। ছবিকে বিভিন্নভাবে কাস্টোমাইজ করতে পারবেন, অর্থাৎ Crop, Brightness, Saturation, ইত্যাদি দিয়ে।

 

৫। অনেক ধরনের ফন্ট পেয়ে যাবেন। আপনি চাইলে কাস্টম ফন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। 

 

৪. VSCO: Photo & Video Editor

 

বেশিরভাগ মানুষ লাইটরুম ব্যবহার করে থাকে কালার পরিবর্তন করে বা ব্যকগ্রাউন্ড কালার গ্রেডিং এর সাহায্যে ছবি এডিট করতে। 

 

যদি আপনি লাইটরুম এর বিকল্প হিসেবে কোনো অ্যাপ চান অথবা ছবি, ভিডিও দুটোই এডিট করার জন্য একটি অ্যাপ খুঁজে থাকেন তবে আপনার জন্য এই অ্যাপটি।

 

VSCO অ্যাপের নানাবিধ ফিচারঃ

 

১। ছবি, ভিডিও দুটিতে কালার এডিট এর সুবিধা। 

 

২। বিভিন্নভাবে ছবিকে কাস্টোমাইজ করার সুবিধা, যেমন; Brightness, Saturation, Highlights, Sharpness, Tint, White Balance, Color Filter আরো প্রভৃতি। সকল ধরনের ফিচার এখানে পেয়ে যাবেন।

 

৩। অসংখ্য ফিল্টার পেয়ে যাবেন এখানে আপনারা, যেগুলো কেবল এক ক্লিকে আপনার ছবিতে ব্যবহার করতে পারবেন। এসব ফিল্টার চাইলে নিজের মতো করে ব্যবহার করতে পারবেন।

 

৪। ছবির দুইপাশে বর্ডার ব্যবহার করার সুবিধা।

 

৫। মুখের জন্য বিউটি ফিল্টার বা স্কিন টোন ফিচার পাবেন।

 

৫. Pixlr – Free Photo Editor

 

ইন্টারনেটে অসংখ্য ফটো এডিটিং অ্যাপ রয়েছে যার তালিকা করলে সেটা ১০ টির মধ্যে Pixlr ছবি এডিট সফটওয়্যার এর নাম আপনি খুঁজে পাবেন।

 

চলুন এই অ্যাপটির বিভিন্ন ফিচার এর সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

 

Pixlr অ্যাপের নানাবিধ ফিচারঃ

 

১।ইমপোর্ট এবং  এক্সপোর্ট অপসন পাবেন।

 

২। হরেক রকমের ইফেক্টস এবং ফিল্টার পাবেন যেগুলো দিয়ে এক ক্লিকে ছবি সুন্দর করে তুলতে পারবেন।

 

৩। অবজেক্ট রিমুভ করার অপসন পাবেন। সহজে যেকোনো অবজেক্ট রিমুভ করতে পারবেন।

 

৪। অটো সিলেক্ট ফিচার এর সুবিধা পাবেন।

 

৫। বিভিন্ন টুলস এবং ফিচারের মাধ্যমে আকর্ষণীয় ভাবে ছবি এডিট করতে পারবেন। 

 

আমাদের শেষ কথা 

 

বন্ধুরা আজকে আমরা সেরা ৫ টি ফটো এডিটিং অ্যাপ এর সম্পর্কে জানলাম। এসকল অ্যাপ আপনারা Google Play Store থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। 

 

যদি প্রশ্ন করে এসব অ্যাপের মধ্যে কোন অ্যাপটি সবথেকে ভালো, তবে উত্তর হচ্ছে Snapseed এবং Lightroom। ব্যক্তিগতভাবে এই দুটি অ্যাপ আমার কাছে সেরা বলে মনে হয়। এই ছিল আজকের আর্টিকেলটা, কেমন লেগেছে জানাবেন অবশ্যই।

 

Visited 1 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here