ফজিলতপূর্ণ দারুণ একটি মাস হলো পবিত্র রমাজান। রমজান হলো নিজেকে গুনাহমুক্ত করে নিজের উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিশ্রম করার মাস। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো রমজান মাসের ফজিলত বিষয়ে। ফজিলত বর্ণনার পাশাপাশি এই মাসে করণীয় আমল এবং এ মাসের গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ্।
যদিও আমরা একে রমজান বলি। কিন্তু এটির উচ্চারণ একটু অন্যরকম (রমাযান)। আরবী অনেক কিছুই বাংলাতে উচ্চারণ করা সম্ভব নয়। তবে আমরা আরবী বুঝার চেষ্টা করবো এবং সঠিকটা আয়ত্ব করার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ্।
পবিত্র রমজান মাসে শয়তানদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। এটি সেই মাস; যেই মাসে নাযিল হয়ে মহাগ্রন্থ আল- ক্বুরআন। এই মাসেই রয়েছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত্রী আর সেটা হলো লাইলাতুল ক্বদরের রাত। আমরা সেগুলো বিস্তারিত জানবো ইনশা আল্লাহ্।
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। এটি হলো পূর্ণাঙ্গ দীন।
মহান আল্লাহ্ বলেন, “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে। তবে যে তীব্র ক্ষুধায় বাধ্য হবে, কোন পাপের প্রতি ঝুঁকে নয় (তাকে ক্ষমা করা হবে), নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” (সূরাঃ ৫ – মায়িদাহ আয়াতঃ ৩ এর অংশবিশেষ)
এই পূর্ণাঙ্গ দীনের ভিত্তি হলো আল-ক্বুরআন ও সহিহ হাদিস। রমজান মাসের ফজিলত অনেক রয়েছে; যা ক্বুরআন এবং বিশুদ্ধ বা সহিহ হাদিস এর দলিল দ্বারা সুসাব্যস্ত হয়েছে। তাহলে চলুন দলিল সহ সেগুলো জেনে নিইঃ
রমজান মাসের ফজিলত, আমল এবং গুরুত্ব
এই পবিত্র মাসে মুসলিমগন আনন্দিত থাকেন। আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামিন বলেন :—
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ (يونس: 58)
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। সূরা ইউনুস : ৫৮
যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুব আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন :—
أتاكم رمضان شهر مبارك
তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফযীলত বর্ণনা করে বলতেন :—
فرض الله عز وجل عليكم صيامه، تفتح فيه أبواب السماء، وتغلق فيه أبواب الجحيم، وتغل فيه مردة الشياطين، لله فيه ليلة خير من ألف شهر، من حرم خيرها فقد حرم. رواه النسائي
আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। (বর্ণনায় : নাসায়ি)
রমজান মাসে যে সকল ফজিলত, আমল এবং গুরুত্ব রয়েছে তা হলঃ
সিয়াম পালন
এ মাসের সাথে ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকনের সম্পর্ক রয়েছে ; আর তা হলো সিয়াম পালন।
হজ যেমন জিলহজ মাসের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কারণে সে মাসের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এমনি সিয়াম রমজান মাসে হওয়ার কারণে এ মাসের মর্যাদা এবং গুরুত্ব বেড়ে গেছে।
আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামিন বলেন :—
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ. سورة البقرة : 183
হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর-যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। (সূরা বাক্বারাহ : ১৮৩)
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : ইসলাম যে পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তার একটি হল সিয়াম পালন। এ সিয়াম জান্নাত লাভের একটি মাধ্যম ; যেমন হাদিসে এসেছে :—
من آمن بالله ورسوله، وأقام الصلاة، وآتى الزكاة، وصام رمضان، كان حقاً على الله أن يدخله الجنة … رواه البخاري
যে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনল, সালাত কায়েম করল, যাকাত আদায় করল, সিয়াম পালন করল রমজান মাসে, আল্লাহ্ তা’আলার কর্তব্য হল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো…। (সহিহ বুখারী)
রমজান হল আল-কোরআন নাযিলের মাস
আল্লাহ্ রব্বুল আ’লামিন বলেন –
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآَنُ هُدًى لِلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ : البقرة : 184
রমাযান মাস, এতে নাজিল হয়েছে আল-কোরআন, যা মানুষের দিশারি এবং স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। (সূরা বাক্বারাহ: ১৮৫)
রমজান মাসে সপ্তম আকাশের লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জতে পবিত্র আল-ক্বুরআন একবারে নাজিল হয়েছে। সেখান হতে আবার রমজান মাসে অল্প অল্প করে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি নাযিল হতে শুরু করে। ক্বুরআন নাযিলের দুটি স্তরই রমজান মাসকে ধন্য করেছে।
শুধু আল-ক্বুরআনই নয় বরং ইবরাহিম আ.-এর সহিফা, তাওরাত, যাবূর, ইঞ্জিল সহ সকল ঐশী গ্রন্থ এ মাসে অবতীর্ণ হয়েছে বলে তাবারানী বর্ণিত একটি সহিহ্ হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। (সহিহ আল-জামে)
এ মাসে মানুষের হিদায়াত ও আলোকবর্তিকা যেমন নাযিল হয়েছে, তেমনি আল্লাহর রহমত হিসেবে এসেছে সিয়াম। তাই এ দুই নিআমতের শুকরিয়া আদায় করতে বেশি বেশি করে ক্বুরআন তিলাওয়াত করা উচিত।
প্রতি বছর রমজান মাসে জিবরিল (আঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে পূর্ণ ক্বুরআন শোনাতেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ও তাকে পূর্ণ ক্বুরআন শোনাতেন। আর জীবনের শেষ রমজানে আল্লাহর রাসূল দু বার পূর্ণ কোরআন তিলাওয়াত করেছেন। সহিহ্ মুসলিমের হাদিস দ্বারা এটা প্রমাণিত।
রমজান মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় ও জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়
এ মাসের শুরুতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানদের। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
إذا جاء رمضان فتحت أبواب الجنة، وأغلقت أبواب النار، وصفدت الشياطين. وفي لفظ : (وسلسلت الشياطين) رواه مسلم
যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানদের আবদ্ধ করা হয়। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে-শয়তানের শিকল পড়ানো হয়। (মুসলিম)
তাই শয়তান রমজানের পূর্বে যে সকল স্থানে অবাধে বিচরণ করত রমজান মাস আসার ফলে সে সকল স্থানে যেতে পারে না। শয়তানের তৎপরতা দুর্বল হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ব্যাপকভাবে মানুষ তওবা, ধর্মপরায়ণতা, ও সৎকর্মের দিকে অগ্রসর হয় ও পাপাচার থেকে দূরে থাকে। তারপরও কিছু মানুষ অসৎ ও অন্যায় কাজ-কর্মে তৎপর থাকে। কারণ, শয়তানের কু-প্রভাবে তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে পড়েছে।
এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল ক্বদর
আল্লাহ্ তা’আলা বলেন :—
لَيْلَةُ الْقَدْرِ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ ﴿3﴾ تَنَزَّلُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ فِيهَا بِإِذْنِ رَبِّهِمْ مِنْ كُلِّ أَمْرٍ ﴿4﴾ سَلَامٌ هِيَ حَتَّى مَطْلَعِ الْفَجْرِ ﴿5﴾ (القدر: 3-5)
লাইলাতুল কদ্বর সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সে রজনি উষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল-ক্বদর : ৩-৫)
উল্লেখ্য যে, লাইলাতুল ক্বদর রমজানের শেষ দশ রাতের একটি রাত। তাই এই ফযীলত অর্জনের জন্য শেষ ১০টি রাত আমল করতে হবে, বিশেষ করে বিজোড় রাতগুলো জেগে যথাসাধ্য নফল সালাত, সুন্নাহ্ দ্বারা প্রমাণিত বিভিন্ন দুআ, যিকির করতে হবে। আরও উল্লেখ্য যে, এ রাতের জন্য নির্ধারিত কোন ইবাদাত নেই। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী সুন্নাহ্ সম্মত ইবাদাত করতে পারে।
যথাসাধ্য দান করতে হবে এবং ক্বুরআন তিলাওয়াত করতে হবে। তাহলে ফযীলত অর্জন হবে ইনশা আল্লাহ্। রমজান মাসের ফজিলত লাভ করার জন্য আমাদেরকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সারা রমজানের পাশাপাশি বেশি করে লাইলাতুল ক্বদরের রাত তালাশ করে। তাহলে বিপুল পরিমাণ নেকি অর্জিত হবে এবং আমরা ফযীলত পাবো ইনশা আল্লাহ্।
রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস
হাদিসে এসেছে –
إن لله تبارك وتعالى عتقاء في كل يوم وليلة، (يعني في رمضان) وإن لكل مسلم في كل يوم وليلة دعوة مستجابة. صحيح الترغيب والترهيب.
আল্লাহ্ রাব্বুল আ’লামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়। (সহিহ আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব)
তাই প্রত্যেক মুসলমান এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের কল্যাণের জন্য যেমন দোয়া-প্রার্থনা করবে, তেমনি সকল মুসলিমের কল্যাণ, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জ্ঞাপন করবে।
গুনাহ থেকে ক্ষমা লাভের মাস হল রমজান
যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপসমূহ ক্ষমা করানো থেকে বঞ্চিত হলো আল্লাহর রাসূল (সঃ) তাকে ধিক্কার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :—
.. رغم أنف رجل، دخل عليه رمضان، ثم انسلخ قبل أن يغفر له. .رواه الترمذي
ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করা হয়নি। (তিরমিযী)
এ মাস জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের মাস
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
গ্রন্থঃ সূনান আত তিরমিযী
অধ্যায়ঃ ৬/ রোযা (সাওম) (كتاب الصوم عن رسول الله ﷺ)
হাদিস নম্বরঃ ৬৮২
إذا كان أول ليلة من رمضان صفدت الشياطين ومردة الجن، وغلقت أبواب النار، فلم يفتح منها باب، وفتحت أبواب الجنة فلم يغلق منها باب، وينادي مناد كل ليلة : يا باغي الخير أقبل! ويا باغي الشر أقصر! ولله عتقاء من النار، وذلك في كل ليلة. رواه الترمذي
৬৮২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শাইতান ও দুষ্ট জিনদেরকে রামাযান মাসের প্রথম রাতেই শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয় এবং এর দরজাও তখন আর খোলা হয় না, খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের দরজাগুলো এবং এর একটি দরজাও তখন আর বন্ধ করা হয় না। (এ মাসে) একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেনঃ হে কল্যাণ অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে পাপাসক্ত! বিরত হও। আর বহু লোককে আল্লাহ্ তা’আলার পক্ষ হতে এ মাসে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে। — সহীহ ইবনু মা-জাহ (১৬৪২)
আবদুর রাহমান ইবনু আওফ, ইবনু মাসউদ ও সালমান (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে।
রমজানের সিয়াম পালনকারীদের জন্য বিশেষ দরজা
শুধুমাত্র রমজানের সিয়াম পালনাকারীরা জান্নাতের একটি বিশেষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে, যা অন্য কেউ পারবে না। রমজান মাসের ফজিলত এর মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফযীলত; যা শুধুমাত্র সওম পালনকারীদের জন্য নির্দিষ্ট।
এ মর্মে সহিহ বুখারীর হাদিস রয়েছে যা নীচে উল্লেখ করা হলোঃ
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৩০/ সাওম/রোযা (كتاب الصوم)
হাদিস নম্বরঃ ১৮৯৬
সাহল (রাঃ) হতে বর্ণিত – নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে। (৩২৫৭, মুসলিম ১৩/৩, হাঃ ১১৫২)
রমজান হলো ধৈর্য্য এবং সবরের মাস
সিয়াম পালন করে যে ধৈর্য্যের প্রমাণ দেয়া হয়; তা অন্য কোন ইবাদতে পাওয়া যায় না। যেমনঃ খাওয়াদাওয়া বর্জন করা, স্ত্রী সম্ভোগ পরিত্যাগ করা, অহেতুক কথা ও কাজ পরিহার করা, গালাগাল না করা।
আল্লাহ্ রব্বুল আ’লামিন বলেছেন :—
إِنَّمَا يُوَفَّى الصَّابِرُونَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ. الزمر: 10
ধৈর্য্যশীলদের তো বিনা হিসাবে পুরস্কার দেয়া হবে। (সূরা যুমার : ১০)
আমাদের জীবন চলমান। সময় চলে যাচ্ছে আর আমাদের হায়াতও কমে আসছে। গত রমজানে যারা জীবিত ছিল; তাদের অনেকেই এখন বেঁচে নেই। তাই আমাদের উচিত, নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে এ মাসে ইবাদাত বন্দেগি করা। আর আমাদের ইবাদাত বন্দেগি যেন সঠিকভাবে এবং বিশুদ্ধ হয়; সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
সেজন্য ক্বুরআন এবং সহিহ হাদিস ভিত্তিক ইলম বা জ্ঞানার্জন করা। সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ এই রমজান মাসের ফজিলত যেন আমরা হাসিল করতে পারি সে লক্ষ্যে আমাদের তাই যথেষ্ট প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মহান আল্লাহ্ আমাদের সব মুসলিমদের সে তাওফীক দান করুন, আমীন।