Warning: ftp_pwd() expects parameter 1 to be resource, null given in /home/bestirxj/bangla-alo.com/wp-admin/includes/class-wp-filesystem-ftpext.php on line 230

Warning: ftp_pwd() expects parameter 1 to be resource, null given in /home/bestirxj/bangla-alo.com/wp-admin/includes/class-wp-filesystem-ftpext.php on line 230

Warning: ftp_mkdir() expects parameter 1 to be resource, null given in /home/bestirxj/bangla-alo.com/wp-admin/includes/class-wp-filesystem-ftpext.php on line 580

Warning: fopen(/tmp/index-IlvlJU.tmp): failed to open stream: Disk quota exceeded in /home/bestirxj/bangla-alo.com/wp-admin/includes/class-wp-filesystem-ftpext.php on line 190

Warning: unlink(/tmp/index-IlvlJU.tmp): No such file or directory in /home/bestirxj/bangla-alo.com/wp-admin/includes/class-wp-filesystem-ftpext.php on line 193
লাউ চাষ পদ্ধতি । হাজারি, হাইব্রিড, বারোমাসি লাউ চাষ করার সঠিক নিয়ম
Categories: কৃষি

লাউ চাষ পদ্ধতি । হাজারি, হাইব্রিড, বারোমাসি লাউ চাষ করার সঠিক নিয়ম

অনেকেই জানতে চায় লাউ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে, অনেকেই মনে করে এটার জন্য প্রয়োজন সুবিশাল স্থানের আবার অনেকের ধারনা এটা বেশ ঝামেলার কাজ। তবে প্রকৃত পক্ষে বিষয় গুলো কি তা জানতে চাইলে পড়তে হবে পুরো আর্টিকেলটি। কারন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানাবো লাউ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে এবং আলোচনা করবো বিভিন্ন জাতের লাউ সম্পর্কে। 

লাউ বলা হোক বা কদু, জিনিস কিন্তু একই যার ইংরেজি নাম  Bottle gourd – যা হচ্ছে এক ধরনের লতানো গাছ, যে গাছের ফল কাচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। হাল্কা সবুজ রঙের লাউ দেখতে বেশ সুন্দর ও ভেতরটা একদম সাদা। এবারের আর্টিকেলে আলোচনা করবো বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর অনেক স্থানে বহুল জনপ্রিয় সবজি লাউ চার্ষ পদ্ধতি সম্পর্কে। তবে প্রথমেই জেনে নেয়া যাক কেনো করবো লাউ চাষ, কারন কি? 

কেনো লাউ চাষ করবেন?

শীকালীন সবজী হিসেবে লাউয়ের খ্যাতি অনেক। আমাদের দেশের যেমন বিভিন্ন ধরনের লাউ হয়ে থাকে তেমনই বিভিন্ন উপায়ে এটা খাওয়া হয়ে থাকে। লাউয়ের আকৃতি সাধারণত লম্বা ও ভেতরে ফাপা হয়। লাউয়ের। কেবলই কি শীতকাল? লাউ পাওয়া যায় প্রায় সারাবছরই এবং এর গুনাগত মানের কারনে সকল প্রকার মানুষের কাছে লাউ গ্রহনযোগ্য। লাভজনক চাষাবাদের পরিকল্পনা থাকলে আপনার অবশ্যই লাউ চাষের দিকে ঝুকা উচিৎ। উক্ত আর্টিকেলে আমরা জানাবো কিভাবে লাভজনক উপায়ে লাভ চাষ করতে হয়। লাউ চাষ পদ্ধতি এর পাশাপাশি জানাবো লাউ চাষের সাথে জরিত সকল খুঁটিনাটি বিষয়ে। 

লাউ চাষের পুর্ব প্রস্তুতি

প্রথমেই জেনে নেয়া উচিৎ লাউ চাষ করার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহন করা প্রয়োজনীয়। প্রায় সকল ধরনের ফসলের চাষের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় স্মরনে রাখা উচিৎ এবং লাউ চাষের ক্ষেত্রে যেগুলো রয়েছে তা হলোঃ 

  • লাউ চাষের উপর আপনার ধারনা
  • পূর্বে লাউ চাষ করেছে এমন কারো সাথে আলোচনা ও পরামর্শ গ্রহন
  • আপনার টার্গেটেড মার্কেট বা এলাকায় লাউয়ের চাহিদা সম্পর্কে জানা
  • আপনার এরিয়া কি লাউ চাষের জন্য উপযুক্ত কি-না তা যাচাই করা
  • কিভাবে লাউচাষকে লাভজনক করতে পারবেন সেই পরিকল্পনা

মোটামোটি এই সকল বিষয় যদি আপনার কাছে ক্লিয়ার হয়ে যায় এবং আপনার মনে হয় লাউ চাষ আপনার জন্য লাভজনক হয়ে উঠবে তাহলে আপনি নিম্মে উল্লেখ্যিত ধপ গুলো অনুসরণের মাধ্যমে লাউ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারনা পেয়ে যাবেন। 

সঠিক নিয়মে লাউ চাষ পদ্ধতি: ধাপে ধাপে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া

এবার জানাবো লাভ চাষ পদ্ধতি এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত সেসব পদ্ধতি যেগুলো অবশ্যই আপনার কাজের ও লাউ চাষ করার জন্য প্রয়োজন হবে। শুরু করা যাক লাউয়ের জাত নির্বাচনের মাধ্যমে। 

লাউয়ের জাত নির্বাচন

যদিও লাউ চাষের সর্বোত্তম সময় শীতকাল, তবুও যেহেতু সারাবছরই লাউ চাষ করা যায় সেই সুবাদে আপনি একেক সিজনে একেক জাতের লাউ চাষ করতে পারবেন। গ্রীষ্মকালে লাউ চাষ করার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে:

  • লাল তীর কোম্পানির ডায়না,
  • বারি লাও -৪
  • মেটাল সিড কোম্পানির “হাই গ্রিন, নাইস গ্রিন”,
  • এসি আই এর হাইব্রিড লাউ-ময়না,
  • রওনক, মার্শাল সুপার”,
  • সুপ্রিম সিড এর “গ্রিন ম্যাজিক”
  • ইস্পাহানীর “সুলতান, নবাব, সম্রাট, বাদশাহ”,
  • এ আর মালিক সীডের হাইব্রীড লাউ- মধুমতি-Modhumot “

তাছাড়া শীতকালে লাউ চাষ করার জন্য দেশী লাউ সহ প্রায় সকল জাতের লাউ চাষ করা যায় কারন লাউ মূলত শীতকালের সবজী হিসেবেই ধরা হয়। তবে আপনি যদি বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করার উদ্যোগ গ্রহন করে থাকেন তবে অবশ্যই হাইব্রিড জাতের লাউ চাষ এবং পাশাপাশি হাজারী জাতের লাউ চাষ করতে পারবেন। লাউয়ের জাত সম্পর্কে ধারনা তো পাওয়া গেলো, এবার জেনে নিন লাউ চাষের প্রাথমিক কাজ গুলো সম্পর্কে। 

চারা উৎপাদন, জমি তৈরি ও বীজ বপন

প্রায় সকল ধরনের মাটিতে লাউয়ের উৎপাদন হলেও দোআঁশ মাটিতে সবচেয়ে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া বেলে মাটিতে যদি লাউ চাষ করতে হয় তবে প্রচুর পরিমাণের জৈব সার ও পানি প্রয়োজন হবে। 

লাউয়ের চারা উৎপাদনের জন্য সর্বোত্তম পরিবেশ হচ্ছে আলো-বাতাসময়। এবং অবশ্যই একটু উচু জায়গা নির্বাচন করতে হবে। লাউয়ের চারার বেড স্বাভাবিকভাবে ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার উচুতে হলে ভালো হয়। 

সবচেয়ে ভালো হয় যদি পলিব্যাগের মধ্যে চারা উৎপাদন করা যায় এক্ষেত্রে ৮*১০ সেন্টিমিটারের পলিব্যাগ হতে হবে। পদ্ধতি হচ্ছে – সেখানে অর্ধেকের মত মাটি ও বাকিটায় গোবর মিশানোর পাশাপাশি ৩ ভাগের এক ভাগ কম্পেষ্ট সার দিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। 

মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণের জো থাকা জরুরি। যদি মাটিতে জো না থাকে তবে পানি দেয়ার মাধ্যমে জো সঠিক মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। 

বীজের অংকুরোদগম

বীজ তৈরির ক্ষেত্রে: 

  • বীজকে ২ ঘন্টার মত সময় রৌদে রেখে ঠান্ডা করতে হবে
  • ২০ – ২৫ ঘন্টা পানিতে রেখে দিতে হবে
  • শেষের দিকে পানিতে ২ গ্রাম/ লিটার কার্বেন্ডাজিম দিলে ভালো হয়
  • অথবা শতকরা ১% পটাশিয়াম নাইট্রেট দ্রবনের মধ্যে দিয়ে রাখতে হবে
  • বীজ গুলোকে গরম কাপুড়ে দুই দিন পেচিয়ে রাখা
  • শেকর বের হলে পলিব্যাগের প্রসেসটি অনুসরণ করা
  • অতিরিক্ত পানি যাতে বেরিয়ে যেতে পারে তাই একটু ফুটো করে দেয়া

পলিব্যাগে রাখার ৩ দিন পর গাছ বের হয়। এর ১৫ – ১৭ দিন পর যখন গাছের চারা গুটিকয়েক পাতা বেরিয়ে আসে তখন সেটা রোপনের উপযুক্ত হয়ে উঠে। উল্লেখ্য যে, রোপনের আগ অব্দি গাছ গুলোকে আদ্র ও ছায়ার মধ্যে রাখতে হবে। 

বীজ তলায় চারার পরিচর্চা

চারার অংকুরোদগমনের পর সবচেয় জরুরি হলো চারার দেখভাল করা। শীতকালে চারার বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতি রাতে বেড ঢেকে দিতে হবে যাতে শিশির না পড়ে এবং পানি জমে থাকতে পারে এমন কোনো ব্যবস্থা রাখা যাবে না। যদি মাটিতে চটা বা মাটি বেধে গেলে তা সাবধানতার সাথে ভেঙ্গে দিতে হবে। 

মাদা তৈরি ও সার প্রয়োগ

এই পর্যায়ে মাটিতে মাদা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে মাটি একটু উচুতে হওয়া জরুরি এবং তাকে যথাযথ সার দেয়ার প্রায় ১০ দিন পর প্রতি মাদায় ৩-৪ টি বীজ বপন করা উচিৎ। একটি মাদা থেকে আরেকট মাদার দুরুত্ব স্বাভাবিক ভাবে ৬ থেকে ৭ হাত হতে হবে। তাছাড়া এর গভিরতা ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি হওয়া উচিৎ। 

মাদা তৈরির পর প্রতি মাদায় যে পরিমাণে সার দেয়া উচিৎ তা নিম্মরূপ: 

  • টি এস পি – ২০০ গ্রাম
  • জিপ সাম – ১০০ গ্রাম
  • এমওপি – ৫০ গ্রাম
  • জিংক – ২০ গ্রাম
  • বোরন – ১৫ ০ ২০ গ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম – ২০ গ্রাম
  • কার্বোফুরান ১৫ – ২০ গ্রাম
  • প্রচুর পরিমাণের গোবর

চারা রোপন, পরিচর্চা ও সেচ দেয়া

লাউয়ের চারা রোপনের আগেরদিন ভালোভাবে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর পর দিন বিকেলে চারা রোপন করতে হবে। প্রতিটি মাদায় ২ থেকে ৩ টি চারা বা ৩ – ৪ টি বীজ রাখা ভালো। লাউয়ের চারার পলিব্যাগের ভাজ বরাবর কেটে মাটির দলা সহ সরাসরি নিদিষ্ট স্থানে রেখে মাটি ভরাট করে দিতে হবে। এবং উক্ত কাজের পর অবশ্যই কিছুটা পানি প্রদান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে চারার শিকর যেনো কোনো ভাবেই ক্ষতি গ্রস্ত না হয়ে পরে, তাহলে গাছের বৃদ্ধিতে সময় নিবে। 

চারা রোপনের ১৫ দিনের মাথায়, ২ কেজি ইউরিয়া এবং দেড় কেজি পরিমাণের এমওপি স্যার একত্রে মিশিয়ে প্রতিটি মাদায় ২ থেকে ৩ মুট করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গোড়া থেকে ৬ ইঞ্চি দূরে দেয়া উত্তম। যখন গাছ থেকে লতা উঠা শুরু হবে তখন বাশের কঞ্চির মাধ্যমে মাচা তৈরি করে দিতে হবে। যেহেতু লাউ খুব ভারি হয় তাই খুব শক্ত করে মাচা তৈরির প্রয়োজন হবে। 

গাছ যখন শাখা বের করা শুরু করবে তখন যেগুলো মাচার উপরে উঠার আগে যে সব শাখা গুলো বের হবে সেগুলোর মাথা কেটে দিতে হবে। এবং যখন মাচার উপরে পুনরায় কিছুটা উঠবে তখন আবার একই কাজ করতে হবে। কারন যখনই মাথা কেটে দেয়া হবে তখন নতুন করে আবার শাখা গজাবে এতে করে গাছের শাখা অনেক গুলো হবে এবং দ্রুত কড়া বের হবে। 

কড়া আসার পর নিয়মিত পরাগায়ন করা জরুরি। এতে করে প্রচুর পরিমাণের লাউয়ের ফলন লক্ষনীয় হবে। দুর্বল পাতা গুলো ছাটাই করা উচিৎ এবং যদি উক্ত মাচা সম্পুর্ণ ভরে যায় তবে আবার মাথা কেটে দিয়ে আরেকটি মাচায় বাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। 

লাউয়ের গাছের জন্য পানি খুব প্রয়োজন যার কারনে এর অভাব দেয়া দেয়া যাবে না, তাহলে লাউয়ের ফলন ব্যহত হবে। আবার পানির মধ্যে সকল কিছু সর্বদা ভিজিয়ে রাখাও যাবে না। সেচের নালায় পানি দিয়ে আটকে রাখা হলেই তা গাছ নিজে থেকে প্রয়োজন অনুসারে টেনে নিবে। শুকনো মৌসুমে ৪ থেকে ৫ দিন পরপর সেচ দেয়া জরুরি। 

লাউ গাছে সার প্রদান

সারের নামমোট পরিমাণ(হেক্টরপ্রতি) প্রতি গর্তে  জমি তৈরির সময়
পচা গোবর১০০০ কেজি ১০ কেজি   সমুদয় গোবর, টিএসপি, এমওপি, বোরন
ইউরিয়া ৫০০ কেজি ৫০০ গ্রাম   এবং ১/৫ অংশ ইউরিয়া পিট বা গর্ত
টিএসপি ৪০০ কেজি ৪০০ গ্রাম    তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। বাাকি এমওপি
এমওপি ৩০০ কেজি ৩০০ গ্রাম   ও ইউরিয়া ৪ কিস্তিতে বছরে উপরিপ্রয়োগ করতে হবে
বোরন ২ কেজি

পোকা মাকর ও আগাছা দমন

লাউ গাছের একটি ক্ষতিকারক ভাইরাস “বোটল গোর্ড মোজাইক” ছড়িয়ে থাকে আগাছার মাধ্যমে। যার ফলে গাছের ফলন বিফলে চলে যায়। এর থেকে বাচতে শুরু থেকে শেষ অব্দি আগাছা দমনের দিকে বেশ খেয়াল রাখা জরুরি। তাছাড়া গাছের গোড়ায় যদি আগাছা থেকে থাকে তবে সেগুলো গাছের খাদ্য ও রস শোষন করে নেয়। 

লাউ গাছের লাউয়ের মধ্যে মাছি পোকা তাদের বংশবিস্তারের জন্য ডিম পেরে থাকে। যা পরবর্তীতে কীড়া বের হয়ে ফলের ভেতরে যায় এবং তা খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। যদি কোনো ফলে পোকা আক্রান্ত হয়ে পরে ত গাছের আশেপাশে রাখা উচিৎ না, তা দ্রুত অপসারন করতে হবে। পোকা দমন করতে সে এক্স ফেরোমন ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া বিষটোপের মাধ্যমেও পোকা গুলো দমন করা সম্ভব। 

১০০ গ্রাম পাকা মিষ্টি কুমড়া কুচি কুচি করে কেটে তা থেঁতলিয়ে ০.২৫ গ্রাম মিপসিন ৭৫ পাউডার অথবা সেভিন ৮৫ পাউডার এবং ১০০ মিলি পানি মিশিয়ে ছোট একটি মাটির পাত্রে রেখে তিনটি খুঁটির সাহায্যে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে বিষটোপের পাত্রটি মাটি থেকে ০.৫ মিটার উঁচুতে থাকে। বিষটোপ তৈরির পর ৩-৪ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করে তা ফেলে দিয়ে আবার নতুন করে তৈরি বিষটোপ ব্যবহার করতে হয়। 

এছাড়াও রয়েছে পামকিন বিটল পোকা যা পুর্ণ বয়স্ক পোকা চারা গাছের পাতা ফুটো করে ফেলে। এবং পুরো পাকাকে খেয়ে ফেলে। এই পোকা থেকে বাচতে ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে।  চারা বের হওয়ার ২৫ দিন পর্যন্ত মশারি টাংগিয়ে রাখতে হবে। আক্রমনের হার বেশি হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। 

লাউয়ের ফলন ও ফসল তোলা

লাউ সর্বদা কচি থাকা অবস্থায় সংগ্রহ করা উচিৎ। পরাগায়ন শুরু হওয়ার ১৫ দিন পরপরেই লাউ খাওয়ার মত উপযুক্ত হয়ে যায়। তাছড়া খাওয়ার উপযুক্ত হওয়ার পরপরেই তা কেটে মাচা হাল্কা করে রাখতে হবে। তবে আপনি কি জানেন, লাউয়ের ফলন ভালো হওয়ার জন্য মৌমাছির প্রয়োজনীতা রয়েছে। বিভিন্ন কারনেই লাউয়ের ফুল পরাগায়ন হয়ে উঠে না। এক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে দুইটি করে মৌমাছির কলোনি তৈরি করে দেয়া হলে ভালো হয়। 

তবে কৃত্তিম পরাগায়নের মাধ্যমে ফলন আরো ভালো করা সম্ভব, প্রশ্ন সেটা করা হয় কিভাবে? এক্ষেত্রে নিয়ম হলো ফুল ফোটার পর পুরুষ ফুল ছিঁড়ে ফুলের পাপড়ি অপসারণ করা হয় এবং ফুলের পরাগধানী (যার মধ্যে পরাগরেণু থাকে) আস্তে করে স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে (যেটি গর্ভাশয়ের পেছনে পাপড়ির মাজখানে থাকে) ঘষে দেয়া হয়। একটি পুরুষ ফুল দিয়ে ২-৪টি স্ত্রী ফুলে পরাগায়ন করা যায়।

এই পদ্ধতি অনুসরণ করে লাউ উৎপাদন করলে শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব। এবং ফসল তোলার জন্য উপযুক্ত সময় পরাগায়নের ১৫ দিন পর। এই সময়ে দেখতে হবে ফলের গায়ে শুং রয়েছে কিনা এবং নখের চাপ দিলে তা ডেবে যাচ্ছে কি না। যদি হয় তাহলে তা সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত সময় হয়ে গিয়েছে। খেয়াল রাখতে হবে ফল কাটার সময় গাছের যেনো কোনো প্রকার ক্ষতি না হয়। 

ছাদে টবে লাউ চাষ পদ্ধতি

যারা শহরে থাকে তাদের অনেকেই চায় লাউ চাষ করতে কিন্তু অনেকের ধারনা এর জন্য প্রয়োজন হবে বিশাল স্থান। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা সত্যি নাহ। লাউ চাষ করার জন্য বেশি স্থান প্রয়োজন হয় না। যথাযথ নিয়ম অনুসরণের মাধ্যমের অল্প স্থানেই করা যায় লাউ চাষ। আপনি চাইলে আপনার বাসার ছাদে টব বানিয়েও লাউ চাষ করতে পারবেন। কিভাবে সেটা বলে দিচ্ছি: 

উক্ত কাজের প্রয়োজন হবে একটি হাফ ড্রাম বা এমন পরিমাণের কোনো বস্তু। এবার সেই ড্রামের নিচ থেকে কয়েকটি ছোট ছোট ছিদ্র করে দিতে হবে যাতে অতিরিক্ত পানি সব বেরিয়ে যেতে পারে। এবার সেই ড্রামে ৩ ভাগের দুই ভাগ মাটি, এক ভাগ গোবর এবং বাকি অংশে  ৫০ গ্রাম টিএসপি সার, ৫০ গ্রাম পটাশ, ২৫০ গ্রাম সরিষার খৈল মিশিয়ে নিতে হবে। এবং এভাবে ভিজিয়ে রাখতে হবে ১০ থেকে ১২ দিনের মতন। 

এবার সেই মাটি উপযুক্ত হয়ে গেলে সেখানে চাষ শুরু করতে পারবেন। বাকি যেই নিয়ম উপরে উল্লেখ্যিত রয়েছে সেটা অনুসরণ করলেই হবে। যেহেতু এখানে স্থান কম তাই শতকরা হারে সেই পরিমাণের চারা রোপন করবেন এবং পরিচর্চা করবেন। 

লাউয়ের উপকারিতা

এতক্ষণ ধরে জানালাম লাউ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে এবং এবার জানাবো বেশ কিছু উপকারিতা নিয়ে। একজন কৃষক হিসেবে আপনি যা চাষ করতে চাচ্ছেন সেই জিনিসের উপকারিতা কি সেই বিষয়ে জানা অবশ্যই প্রয়োজন। তাই জেনে নিন লাউয়ের উপকারিতা সম্পর্কে 

  • যেহেতু লাউতে প্রচুর পরিমাণের পানি থেকে থাকে তাই লাউয়ের মাধ্যমে মানব দেহের পানি শূন্যতা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ঘটে এবং দেহে পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে সহায়তা করে।
  • এটা গ্রহনের ফলে ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক থাকে, প্রসাব সংক্রান্ত সমস্যা দূর হয়, ও কিডনি ভালো থাকে।
  • অনেক ডাক্তার উচ্চ রক্তচাপ রোগীর জন্য লাউ খাওয়াকে সাজেস্ট করে।
  • দেহের তাপমাত্রা কন্ট্রোল করতে এই সবজি কাজ করে।
  • দাত ও হাড়কে মজবুক করে কারন এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস
  • যাদের ডায়বেটিস রয়েছে তাদের জন্য লাউ খুবই উপকারি সবজি কারন এতে ক্যালারির পরিমাণ কম থাকে।
  • যারা চুল সংক্রান্ত সমস্যা যেমন চুল পেকে যাওয়া বা গোড়া শক্ত না হওয়া, তাদের জন্য লাউ উপকারি।

তো দেখা গেলো লাউয়ের উপকারিতা কত গুলো। তাছাড়া বাজেটের মধ্যে অনেক খাবারের সাথে লাউ খুবই উত্তম সবজি হিসেবে চিহ্নিত। তাই চাহিদা যেহেতু খুব, লাউ চাষ অবশ্যই লাভজনক। 

আর্টিকেল থেকে যা শিখলাম

পরিশেষে এই ছিলো “লাউ চাষ পদ্ধতি” সংক্রান্ত বিস্তারিত প্রতিবেদনটি যেখানে আলোচনা করা হয়েছে কেনো লাভ চাষ করা উচিৎ, লাউয়ের উপকারিতা ও বিভিন্ন জাতের লাউ সম্পর্কে তথ্য এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ – লাউ চাষ পদ্ধতি যেখানে লাউ চাষ সংক্রান্ত সকল তথ্য বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়েছে। আপনি যদি এমনই বিভিন্ন ফসল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান তবে বাংলা আলো ওয়েবসাইটের কৃষি ক্যাটাগরি অনুসরণ করুন। কারন এখানে প্রতিনিয়ত কৃষিকাজ অ চাষাবাদ নিয়ে আপডেট দেয়া হয়ে থাকে। ধন্যবাদ। 

Bangla Alo

Recent Posts

মানসিক সুস্থতার সাথে খাবারের কোনো যোগসূত্র আছে কি?

শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…

2 months ago

Jodi Bare Bare Eki Sure Prem Tomay Kadai Lyrics | যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায় লিরিক্স

লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…

2 months ago

কাতার সাজছে বাংলাদেশি গাছে

ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…

2 months ago

কুয়াশা ও বন্যার পানির বিষয়ে সতর্ক করবে গুগল ম্যাপস

এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…

2 months ago

হঠাৎ রেগে যাচ্ছেন, কী ভাবে মেজাজ ঠান্ডা রাখবেন

রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…

2 months ago

বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের যে ১০টি বিষয় জানা প্রয়োজন

সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…

2 months ago

This website uses cookies.