লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় ও চাষ করার পদ্ধতি

0
108

ছোট একটি ফল এই লেবুর গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না।লেবু আমাদের স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্রকারের সাধন করে থাকে। তাছাড়া অসংখ্য রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু লেবু।

 

সাধারণত এমন অনেক রোগ আছে যেসব রোগ গুলোর ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে লেবুর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। 

 

তেমনি লেবু ওজন কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওজন কমানোর জন্য খুবই  কার্যকরী একটি উপাদান হলো লেবু। 

 

আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব কিভাবে আপনারা লেবু দিয়ে ওজন কমাবেন এবং লেবু চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে।

 

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় 

 

গোটা দিন লেবু ডায়েটে রাখতে পারেন 

 

আপনার ওজন যদি খুবই বেশি হয়ে থাকে এবং আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে আপনি ডায়েটে লেবু রাখতে পারেন। 

 

সাধারণত লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা শরীরকে শক্তি যোগাতে সক্ষম হয় এবং বাড়তি চর্বি ঝরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে থাকে। 

 

আপনি চাইলে এক্ষেত্রে লেবুর রস তাজা ফল ও জলের সঙ্গে মিশিয়ে সারাদিন পান করতে পারেন। সন্ধ্যার পর লেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 

 

আপনি একটা কাজ করতে পারেন যখনই আপনি জল পান করবেন তার সাথে লেবুর রস মিশিয়ে জলের সাথে খেতে পারেন। এতে করে আপনি খুব সহজেই ওজন কমিয়ে ফেলতে সক্ষম হবেন। 

 

সকালে বাসি পেটে লেবু পানি পান করতে হবে 

 

আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের ছোট রোগ এবং নিজের ওজন নিয়ে চিন্তিত থেকে থাকেন তাহলে আপনি সকাল বেলা বাসি পেটে লেবুর সাথে মধু মিশিয়ে জলের সাথে খেতে পারেন। 

 

লেবু শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় যার ফলে সাধারণত চর্বি খুব সহজেই দূর হয়ে থাকে। 

 

আপনি চাইলে সকালবেলা গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে আপনার শরীর সম্পূর্ণ উপকারিতা টা পাবে এর।

 

আপনি যদি  এভাবে বেশ কয়েকদিন খেতে পারেন তাহলে নিজে নিজেই কিছুদিন পর এর পরিবর্তন দেখতে পারবেন এবং আপনার আর ওজন নিয়ে কোন ভয় থাকবে না।

 

ভেষজ লেবু চা করে খেতে পারেন 

 

সাধারণত যারা ওজন বাড়ার এই সমস্যায় ভুগছেন তারা জানেন যে ওজন কমানো টাও কিন্তু রীতিমত একটি বড় চ্যালেঞ্জ। 

 

সাধারণত বড় চ্যালেঞ্জ এই কারণেই এর মাধ্যমে একদিকে যেমন আপনাকে খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় এবং অন্যদিকে আপনাকে ওজন কমানোর জন্য কি কি খেতে হবে এটাও ভাবতে হয়।

 

তাই ওজন কমানোর জন্য আপনি তৈরি করতে পারেন ভেজস চা এবং খেতে পারেন নিয়মিত।

 

লেবু রেডিমেড বাজারে কিনতে পাওয়া যায় তাছাড়া আপনি চাইলে এটি বাড়িতেও বানিয়ে ফেলতে পারবেন খুব সহজেই।

 

আপনি যদি এই চা প্রতিদিন বাড়িতে দু’কাপ করে খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই কিছুদিন খাওয়ার ফলে আপনি এর পরিবর্তনটা নিজে থেকেই দেখতে পারবেন।

 

আপনি এই ভেজা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার ওজন খুব দ্রুত কমাতে পারবেন।

 

লেবু জুস করে খাওয়া

 

আপনি চাইলে সকালের পানীয় বা ভেজস লেবু চায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের জুস বানিয়ে লেবুর রস খুব সহজেই পান করতে পারেন। 

 

লেবুর জুস বানানোর জন্য চাই একটি পাতিলেবুর রস, এক কাপ বীজসহ তরমুজ, ২ চা চামচ পুদিনা পাতার রস এবং ছয় থেকে আট টা পুদিনা পাতা।

 

আপনাকে এবার এই সকল উপকরণ ব্লাডারের মাধ্যমে ফেলে একসাথে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। 

 

তারপর আপনার যষ্টি যখন তৈরি হয়ে যাবে জুসের মধ্যে সামান্য বরফ কুচি দিয়ে এটি পান করতে পারেন। 

 

সাধারণত এই পুষ্টিকর পানিওটি আপনার ওজন দ্রুত কমানোর জন্য কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে। 

 

তবে আপনি যদি এই পানীয়টি তৈরি করতে চান তাহলে আপনি গৃষ্ম কালে ছাড়া তৈরি করতে পারবেন না।

 

কেননা আপনি গৃষ্ম কালে ছাড়া অন্য কোন সময় তরমুজ পাবেননা তাই আপনি এই যষ্টি গৃষ্ম কালে তৈরি করে খেতে পারেন। 

 

তবে আপনি চাইলে এই ক্ষেত্রে শীতকালে তরমুজের পরিবর্তে কমলালেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। 

 

আপনি যদি এইভাবে জুস বানিয়ে কিছুদিন খেতে পারেন তাহলে খুব দ্রুতই আপনি আপনার বাড়তি ওজন কমাতে পারবেন।

 

আপনারা চাইলে এই ঘরোয়া টোটকা গুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে খুব দ্রুতই আপনাদের বাড়তি ওজন কমাতে পারবেন।

 

আর এর মাধ্যমে নিজেকে অন্যদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন খুব সহজেই। তাই আপনি লেবুর রস এইভাবে ব্যবহার করে আপনার ওজন খুব দ্রুতই কমাতে পারবেন।

 

লেবু চাষ করার পদ্ধতি 

 

বর্তমানে লেবু চাষের দিকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে কেননা বাঙালি এখন লেবুর কদর অনেক বুঝেছে। 

 

আপনারা যদি সঠিক নিয়ম মেনে লেবু চাষ করতে পারেন তাহলে খুব দ্রুতই এর মাধ্যমে সফলতা পাবেন।

 

আর এর জন্য কোন কোন মাটিতে কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করে লেবু চাষ করতে হবে সেটা আমি আপনাদেরকে আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব।

 

তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাক লেবু চাষ করার সঠিক পদ্ধতিঃ

 

মাটি

 

লেবু চাষের জন্য হালকা দোআঁশ মাটি খুবই ভালো। তাছাড়া আপনারা চাইলে নিষ্কাশন সম্পূর্ণ অম্লীয়  মাটিতেও লেবু চাষ করতে পারেন।

 

রোপণ পদ্ধতি

 

গুটি কলম ও কাটিং তৈরি করে বৈশাখ মাসের মাঝে থেকে আশ্বিন মাসের মাঝে এই সময়ের মধ্যে ২.৫*২.৫ মিটার দূরত্বে রোপণ মধ্যে রোপণ করতে হবে।

 

সারের নাম/সারের পরিমাণ

 

লেবু চাষের জন্য আপনাকে ইউরিয়া সার দিতে হবে ৪৫০-৫৫০গ্রাম,টিএসপি দিতে হবে ৩৭৫-৪২৫ গ্রাম,এমপি সার দিতে হবে ৩৭৫-৪২৫ গ্রাম এবং গোবর সার দিতে হবে ১৫ থেকে ২০ কেজির মতো।

 

সার প্রয়োগ যেভাবে করবেন

 

প্রথম প্রয়োগ করতে হবে আপনাকে ভাদ্রমাসের মাঝ থেকে কার্তিক মাসের মাঝের সময় পর্যন্ত।

 

তারপর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রয়োগ করতে হবে মাঘ-মধ্য ফাল্গুন মাসে এবং তৃতীয় মেয়াদে প্রয়োগ করতে হবে মধ্য-জ্যৈষ্ঠ থেকে মধ্য-আষাঢ় মাসে।

 

অঙ্গ ছাঁটাই প্রক্রিয়া

 

অঙ্গ ছাঁটাই প্রক্রিয়াটি লেবু চাষের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে থাকে। প্রতিবছর ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়ে লেবু গাছের অবাঞ্ছিত শাখা ছাঁটাই করা শুরু করতে হবে। 

 

পানি সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা

 

মৌসুম যদি খরা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এই সময়ে দুই থেকে তিনবার সেচ প্রয়োগ করা উচিত।

 

লেবু গাছ সাধারণত জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না তাই অবশ্যই বর্ষার সময় গাছের গোড়া দিয়ে নালা কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

 

অন্যান্য পরিচর্যা

 

লেবুর প্রজাপতি পোকা দমন করতে হবে কেননা এই ধরনের পীড়া লেবুর পাতা খেয়ে ফেলে। আর এর ফলে মূলত ফলন এবং গাছের বৃদ্ধি অনেকাংশে ব্যাহত হয়ে থাকে তাই এটার প্রতিরোধ আমাদেরকে আগেই করতে হবে।

 

প্রতিকার

 

ডিম ও ক্রীড়া যুক্ত পাতা সংগ্রহ করে মাটির নিচে পুঁতে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। । ২. ডাইমেক্রন ১০০ ইসি ১ মিলি অথবা সেভিন ৮৫ এসপি ১ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে মূলত ১০-১৫ দিন পর পর প্রয়োগ করতে হবে। 

 

তাহলে এই সমস্যাটা থেকে আপনারা খুব সহজেই আপনার লেবুবাগান কে মুক্তি দিতে পারবেন। 

 

লেবু চাষ শুরু করার আগে অবশ্যই আপনাকে লেবু চাষ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। 

 

তারপর এই কাজে লাগা উচিত।কেননা যেকোনো কাজ সঠিকভাবে জেনে বুঝে করাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। 

 

আমাদের শেষ কথা

 

আশা করি আমাদের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি যারা বিস্তারিত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন তারা অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন লেবু দিয়ে কিভাবে আপনারা ওজন কমাবেন এবং লেবু চাষ করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে।

 

তার পরেও যদি কারো কোন বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন এবং আমাদের এই পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। 

 

Visited 2 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here