–
ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত হওয়ার কারণে অনেকেই শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট করতে চায়। তবে সকল কিছুর একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে নিয়ম জানলে খুব সহজেই উক্ত কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। তাই এবারের আর্টিকেলে কভার করছি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
বাংলাদেশ ইসলামী শরীয়া মোতাবেক পরিচালিত বেসরকারি খাতে বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ১৯৯১ সালে নিবন্ধিত হলেও ব্যাংকটির কার্যক্রম শুরু করে ২০০১ সালে। ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করে উক্ত মুনাফা আনুপাতিক হারে অর্থ আমানতকারীদের মধ্যে বন্টন করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক।
ইসলামিক শরীয়া মোতাবেক যারা ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় নিজেদের অর্থকে কুচ্ছিত রাখা হোক অথবা ব্যাংকিং অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করতে চায় তাদের জন্য বাংলাদেশের বেশ কিছু ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ব্যাংকিং ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি বাংলাদেশ ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ব্যাংকগুলোর সম্পর্কে যেখানে দেশে থাকা সম্পর্কে বেসিক তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
উক্ত তালিকার তৃতীয় অবস্থানে ছিল শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। অনেকেই আছে যারা ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে চায় যাওয়ার সুবাদে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংককে কেন্দ্র করে উক্ত ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে ইচ্ছুক। এই পর্যায়ে জানাবো শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, যাতে করে ব্যাংক একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে কোনো প্রকার অসুবিধা না হয়।
প্রথমেই জেনে নেব শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের কত ধরনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং গ্রাহকের প্রয়োজন তা কতটা পরিপূর্ণ করতে পারে। এরপর জানাবো উক্ত অ্যাকাউন্ট গুলো খুলতে গ্রাহকের কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে কোন পদ্ধতিতে একাউন্ট খুলতে পারবে এবং একাউন্ট সম্পর্কে সকল খুঁটিনাটি বিস্তারিত। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাইলে নিম্ম লিখিত ধাপ অনুসরণ করা টিউটরিয়াল আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়বেন।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কত ধরনের একাউন্ট খোলা যায়?
অন্যান্য ব্যাংকের মতো ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট, কারেন্ট একাউন্ট এবং স্টুডেন্ট একাউন্ট রয়েছে। তবে কারণবশত উক্ত একাউন্টগুলোর নাম ভিন্ন হয়ে থাকে নিম্নে তিনটি জনপ্রিয় একাউন্ট এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরছি।
আল মুদারাবা সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট
- বলতো সাহিব আল মাল এর সাথে মুদারিবের মধ্যের সংঘটিত চুক্তির মাধ্যমে যে অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করা হয় সেটিকেই আল মুদারাবা সেভিংস একাউন্ট বলা হয়ে থাকে।
- এক্ষেত্রে গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ মুদারিব বা কারবার পরিচালনাকারী ইসলামী শরীয়াহ সম্মত খাতে বিনিয়োগ করে থাকে এবং বিনিয়োগ থেকে যদি মুনাফা অর্জন হয় তবে তার ৬৫% আমানতকারীদের মধ্যে বন্টন করা হয়। তবে যদি উক্ত বিনিয়োগ হতে লোকসান হয় তবে সেটি সাহিব আল মাল বা আমানতকারী কে বহন করতে হয়।
- এই ধরনের অ্যাকাউন্ট করার ক্ষেত্রে একাউন্টে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা জমা রাখতে হয় এবং এটি মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা। একজন ব্যক্তি একই উদ্দেশ্যে কেবলমাত্র একটি একাউন্ট খুলতে পারবেন।
- এরূপ একাউন্টে মুনাফা হার কত হবে তা নির্ধারণ করা হয় হেড অফিসের কর্মকর্তারা এবং এটি টাইম টু টাইম পরিবর্তনশীল অনেকটা বিনিয়োগের উপর নির্ভর করে এটা নির্ধারণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে যদি নির্ধারিত থেকেও অধিক পরিমাণ মুনাফা অর্জিত হয় তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজ থেকে উক্ত একাউন্ট হোল্ডার এর কাছে অতিরিক্ত মুনাফা অর্থ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করে এবং যদি একই হার থেকে মুনাফা কম হয়ে থাকে তবে উক্ত লোকসান ব্যাংক নিজে বহন করবে।
- যেহেতু এটি একটি সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট সেহেতু অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে কিছু কন্ডিশন অবশ্যই থাকছে। সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করা যাবে এক্ষেত্রে উত্তোলনের হার ম্যাক্স ২৫ শতাংশ। জার্মান এই যে আপনার একাউন্টে যদি ১ লক্ষ টাকা থেকে থাকে তবে সেখান থেকে সপ্তাহে ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
আল-ওয়াদী’আহ কারেন্ট একাউন্ট
- এই ধরনের একাউন্টে গ্রাহক বা অর্থের মালিক যাকে “সাহিব আল-মাল” বলে আখ্যায়িত করা হয়, তার সাথে ব্যাংকের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি হয় যেখানে গ্রাহক তার অর্থ জমা রাখবেন এবং উক্ত জমাকৃত অর্থের নিরাপদ হেফাজত করবে। চাহিবামাত্র ব্যাংক গ্রাহক কে আংশিক অথবা সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।
- ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক জমাকৃত অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবে তবে উক্ত বিনিয়োগ হতে যে মনে হওয়া উচিত হবে সেটা গ্রাহককে দেয়া হবে না। এমনকি উক্ত বিনিয়োগ হতে যদি লোকসান হয় তবুও সেটি গ্রাহক বহন করবে না।
- এটি মূলত ব্যবসায়ীদের জন্য পরিচালিত ব্যাংক একাউন্ট যেখানে দিনে অসংখ্যবার ট্রানজেকশন করতে হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। এই ধরনের একাউন্টে কেবলমাত্র অর্থ জমা ও অর্থ উত্তোলনের লেনদেন সংঘটিত হয়ে থাকে তাছাড়া সুদ বা ইন্টারেস্ট এর কোনো ব্যাপার এখানে নেই।
- আল-ওয়াদী’আহ কারেন্ট একাউন্ট এর ক্ষেত্রে মিনিমাম ব্যালেন্স রিকোয়ারমেন্ট হল ৫০০০ টাকা। যখন একাউন্ট খোলা হবে তখন উক্ত টাকা টি তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকের একাউন্টে জমা রাখতে হবে। এবং উত্তোলন জমা যাই হোক না কেন একাউন্ট ব্যালেন্স সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা থাকতে হবে।
স্কুল ব্যাংকিং বা স্টুডেন্ট একাউন্ট
- বলতো শিক্ষার্থীদের জন্য উক্ত একাউন্টে বরাদ্দকৃত যেখানে ৫ থেকে ১৭ বয়সেই সকল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা উত্তর একাউন্ট খুলতে পারবে।
- এটি হবে এক ধরনের সঞ্চয়ী হিসাব যেখানে সর্বনিম্ন 200 টাকা একাউন্টে জমা রাখতে হবে এবং একাউন্ট খোলার সময় 200 টাকা দিয়েই একাউন্ট খুলতে হবে।
- প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্ট হোল্ডার কে বিনামূল্যে এটিএম কার্ড প্রদান করা হবে
- উক্ত একাউন্টে মুনাফার হার ৬.৫ শতাংশ যা প্রাক্কলিত
- উক্ত একাউন্টে ক্ষেত্রে প্রতিদিনকার স্থিতির উপর নির্ভর করে মুনাফা ধার্য করা হবে
- বছরে দুইবার অর্জিত মুনাফা একাউন্টে জমা করা হবে
- সরকারি কোন চার্জ ব্যতীত লুকায়িত অপ্রকাশিত কোন প্রকার ধার্য করা হবে না
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন?
আল মুদারাবা সেভিংস ডিপোজিট একাউন্ট
- স্বাভাবিক সেভিং একাউন্ট খোলার জন্য গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি/ জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি/ ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট যে কোন একটির কপি প্রদান করতে হবে আইডেন্টি ভেরিফিকেশনের জন্য। তাছাড়া দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে।
- এই পয়সায় নমিনি যাকে রাখা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এক কপি রঙিন ছবি প্রদান করতে হবে।
- গ্রাহকের যদি টিন সার্টিফিকেট থেকে থাকে তবে তা জমা দিতে হবে বা টিম নাম্বার প্রদান করতে হবে। এটা অনেকটা ইচ্ছুক, তবে সার্টিফিকেট থাকলে কর কর্তন 15% না হয়ে 10% হবে।
- ইতিমধ্যে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন একটি ব্যক্তির রেফারেন্স প্রয়োজন হবে এ ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয় পত্র, ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার প্রদান করতে হবে।
আল-ওয়াদী’আহ কারেন্ট একাউন্ট
- একাউন্ট থাকে জাতীয় পরিচয় পত্র/ ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট/ জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি – যেকোনো একটি ডকুমেন্ট দিলেই হবে।
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি।
- যাকে নমিনি হিসেবে রাখা হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি।
- যেহেতু কারেন্ট অ্যাকাউন্ট গুলো খোলা হয়ে থাকে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের জন্য কিন্তু আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স দেখাতে হবে।
- তাছাড়া আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একাধিক অংশীদার থেকে থাকে তবে তাদের তথ্য প্রদান করতে হবে।
- ইতিমধ্যে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট রয়েছে এমন একটি ব্যক্তির রেফারেন্স প্রয়োজন হবে এ ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয় পত্র, ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার প্রদান করতে হবে।
স্কুল ব্যাংকিং বা স্টুডেন্ট একাউন্ট
- শিক্ষার্থীর সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের 2 কপি ছবি
- জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি
- স্কুলের আইডি কার্ড এর ফটোকপি অথবা টিউশন ফি প্রদানের রশিদের কপি
- অভিভাবকের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা নাম্বার
- সন্তান প্রাপ্য বয়স্ক হওয়ার আগ অব্দি উক্ত একাউন্ত পরিচালন করবে অবিভাবক।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম
অন্যান্য ব্যাংকের ন্যায়, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে হবে। যদি আপনি সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয় একাউন্ট খুলতে চান তবে ব্যাংক কর্মকর্তারাও আপনাকে ফরম প্রদান করবে। এবং সেখানে উক্ত ফরম পূরন করে জমা দিতে হবে।
তবে আপনি যদি চান নিজ গৃহ থেকে ফরম পূরন করে ব্যাংকে নিয়ে যাবেন, অথবা ফরমটি কেমন তা দেখতে চান, তবে এখানে ক্লিক করে দেখে নিন। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট খোলার ফরম
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে যে কোন একাউন্ট খোলার নিয়ম মূলত প্রত্যেকটি ব্যাংকেই একই রকম। এক্ষেত্রে প্রথম করনীয় হলো, আপনার নিকটস্ত ব্যাংকের শাখায় পৌছে সেখানে কর্মরত লোকদের জানাতে হবে আপনি নতুন একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন, এই পর্যায়ে আপনাকে ফরম দিবে যে ফরমের বিষয়ে মাত্রই আলোকপাত করলাম। ফরমটি ভালো ভাবে পড়ে বিভিন্ন স্থানে সাইন করতে হবে।
উপরে জানিয়েছি কোন কোন একাউন্ট খোলা যায়, এবং উক্ত একাউন্ট গুলো খোলার জন্য কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন রয়েছে। সেগুলো পূর্বে থেকেই সংগ্রহ করে ফরমের সাথে ব্যাংকারের কাছে হস্তানন্তর করতে হবে। তারা আপনার ডকুমেন্টস গুলো ভেরিফাই করে একাউন্ট খুলে দিবে। পাশাপাশি একাউন্টের সাথে যুক্ত সকল উপকরন গুলো হস্তান্তর করবে।
অনলাইনে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
আধুনিকায়নের ছোয়ায় অন্যান্য সকল ব্যাংকের মতই শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকও অনলাইনের মাধ্যেম একাউন্ট খোলার সুযোগ করে দিচ্ছে। যার ফলে বর্তমানে সল্প সময়ে এবং যেকোনো স্থান থেকে উক্ত ব্যাংকে একাউন্ট করা যাবে খুব সহজেই।
অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যা যা লাগবে
- একটি সচল মোবাইল নাম্বার
- জাতীয় পরিচয় পত্র এর নাম্বার
- নমিনি যাকে রাখা হবে তার NID নাম্বার
- নমিনির একটি সফটকপি ছবি
অনলাইনে একাউন্ট খোলার বিস্তারিত নিয়ম
প্রথমেই SIBL NET নামক অ্যাপ গুগল প্লে স্টোর থেকে ইন্সটল করে নিতে হবে. ইনস্টলেশনের পর যখন এটি ওপেন করবেন তখনই Dashboard থেকে “Digital A/C Opening” নামক অপশন এ ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসেস শুরু করতে হবে।
অনলাইনে আপনি কেবলমাত্র সেভিংস একাউন্ট খুলতে পারবেন আপনার যদি অন্যান্য একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয় তবে সরাসরি ব্যাংকে কি সেটাই করতে হবে।
এই প্রয়োজনে আপনাকে সেভিংস একাউন্ট এর বৈশিষ্ট্য, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের টার্মস এন্ড কন্ডিশন দেখানো হবে। পরবর্তীতে একাউন্ট খোলার মূল কার্যক্রমের আপনাকে রি-ডাইরেক করা হবে।
পিক ১
১) উপরে দেওয়া ছবিটি লক্ষ করুন এবং সেখানে থাকা প্রত্যেকটি অপশনে আপনাকে তথ্য লিপিবদ্ধ করতে হবে। প্রথমেই ব্র্যাঞ্চ সিলেক্ট করতে হবে। আপনি কোন ব্র্যাঞ্চের আওতায় একাউন্ট করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করে দিন।
২) এরপর মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করে নিন। একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিয়ে কোড ভেরিফিকেশন প্রসেস সম্পন্ন করে নিতে হবে।
৩) এই পর্যায়ে আপনার ক্যামেরা ওপেন হবে যেখান থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের ক্লিয়ার দুই পাশের ছবি তুলে সাবমিট করতে হবে।
৪) আপনার ইন্সটান্ট ছবি বা সেলফি তুলতে হবে যা ফেস ভেরিফিকেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
৫) এই পর্যায়ে এডিশনাল ইনফরমেশন বা অন্যান্য তথ্য চাওয়া হবে আপনার কাছ থেকে যা একেক করে সঠিক ভাবে লিপিবন্ধ করে পরের ধাপে চলে যান।
৬) এই ধাপে আপনার একাউন্টের জন্য একটি নমিনি সিলেক্ট করতে হবে। যার সফট কপি ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার লিপিবন্ধ করতে হবে।
৭) সার্ভিস নামক অপশনটিতে আপনাকে এক্সট্রা কোনো সার্ভিস গ্রহন করতে চাচ্ছেন কি-না। যেমনঃ ডেবিট কার্ড, চেক বই ইত্যাদি। সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে। আপনি যদি চান তবে ইয়েস দিয়ে দিবেন।
৮) সবশেষে আপনার নিজস্ব স্বাক্ষর প্রদানের করুন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় খাতায় স্বাক্ষর করে সেটার ছবি স্ক্যান করে আপলোড করে দেয়া।
অতঃপর এভাবেই অনলাইনে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এর সমাপ্ত ঘটবে।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করার নিয়ম
সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে
যেকোনো ব্যাংকের একাউন্ট ব্যালেন্স কত আছে তা জানার সহজ ও পুরতন উপায় হলো উক্ত ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হয়ে যেখানে থাকা ব্যাংকারের কাছে একাউন্ট নাম্বার প্রদান করে ব্যালেন্স সম্পর্কে জানতে চাওয়া। এক্ষেত্রে ব্যাংকের শাখাটি যদি আপনার নিকটতম অবস্থানে হয় তবে এই প্রসেস টি অনুসরণ করা যেতে পারে।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা চালু রেখেছে। তাই আপনি যদি ব্যালেন্স সম্পর্কে জানতে চান তবে ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সেটি করতে পারবেন। তবে এখানে একটি বিষয় অবশ্যই থাকছে, ইন্টারনেট ব্যাংকিং আপনি চাইলে যেকোন সময় চালু করতে পারবে না। এর জন্য আপনাকে ব্যাংকে উপস্থিত হতে হবে এবং ব্যাংকে গিয়ে সেখানে কর্মরত ব্যাংকারদের কাছে জানাতে হবে আপনি ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে চাচ্ছেন এবং উক্ত সেবার জন্য আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে যা ব্যাংকার নিজে থেকেই করে দিবে আপনার জন্য।
মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমে
আমি ইতিমধ্যে জেনেছি শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ রয়েছে যার মাধ্যমে অনলাইনে একাউন্ট খোলা যায় উক্ত অ্যাপটি ব্যবহার করার মাধ্যমেই ব্যাংকের একাউন্ট ব্যালান্স সম্পর্কে খুব সহজে জানতে পারা যাবে এক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে SJIBL NET অ্যাপ থেকে একাউন্ট করে নিতে হবে এবং প্রতিবার লগিং এরপরে ব্যালেন্স কোয়ারি নামক অপশন থেকে ব্যালান্স সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এস এম এস এর মাধ্যমে
বর্তমানে নির্দিষ্ট করে ডায়াল করে এসএমএস সেন্ড করার মাধ্যমে ব্যালেন্স জানার উপায় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক প্রোভাইড করছে না। হাফিজুল এসএমএসের মাধ্যমে ব্যালেন্স জানতে চান অথবা এসএমএস ব্যাংকিং সুবিধা পেতে চান তবে আপনাকে প্রথমেই শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের যে কোন শাখায় গিয়ে আপনার উক্ত সেবাটি চালু করে নিতে হবে।
এরপর যখনই আপনি যেকোন লেনদেন সংঘটিত করবেন তখন আপনার মোবাইলে একটি এসএমএস আসবে উক্ত লেনদেন সম্পর্কে এবং সেটির মাধ্যমেই আপনি সর্বশেষ ব্যালেন্স কত রয়েছে সেটি জানতে পারছেন।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার সুবিধা সমূহ
পরিশেষে কিছু কথা
অতঃপর এই ছিলো “শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম” সংক্রান্ত আর্টিকেল যেখানে বিভিন্ন বিষয় আলোকপাত করা হয়েছে। মূলত ইসলামী ব্যাংক হিসেবে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের বেশ সুনাম রয়েছে। আর যারা ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামী শরিয়াহ একদমই যথাযথ। বিশ্বস্তের সহকারে বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজের অর্থকে গুচ্ছিত রাখার জন্য শাহজালাল ব্যাংক ভরসাযোগ্য। তাই শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সংক্রান্ত সকল বিষয় ব্যাপকভাবে বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে উপস্থাপন করেছে যাতে করে উক্ত ব্যাংক এ একাউন্ট খোলার জন্য কোন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়। এমনই অন্যান্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট খোলা হোক অথবা ব্যাংকিং কার্যক্রমের যেকোনো বিষয় হোক সেই সম্পর্কে জানতে অনুসরণ করুন বাংলা আলো ওয়েব সাইটের ব্যাংক নামক ক্যাটাগরিটি।