যতই স্মার্টফোন আসুক না কেনো বাটন ফোন এর চাহিদা কমার নয়। বর্তমানে অনেকেই সেকেন্ড ফোন হিসেবে বাটন ফোন ব্যবহার করে থাকে। তাই ৮০০ টাকার ভালো ফোন এর লিস্ট নিয়ে হাজির হলাম।
বাটন ফোন, ফিচার ফোন বা ২জি ফোন যাই বলা হোক না কেনো ছোট সাইজের বাটন যুক্ত ফোন গুলো দেখে আসছি সেই ছোট কাল থেকেই। এমন কোনো ব্যাক্তি খুজে পাওয়া কঠিন যে কিনা জীবনে কোনো না কোনো সময়ে কোনো বাটন ফোন ব্যবহার করেনি।
তবে হ্যা বর্তমানে ব্যবহার কমে গেলেও চাহিদা অনেক রয়েছে। উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে বেশ কিছু বাটন ফোনের সম্পর্কে বলবো যা ৮০০ টাকার মধ্যে। মূলত আমরা যারাই সেকেন্ড ফোন ইউজের জন্য মোবাইল খুজে থাকি তাদের মধ্যে ৮০০ টাকার ভালো ফোন কেনার প্রবণতা বেশি। যার পেক্ষিতে সাজানো উক্ত আর্টিকেলটি।
৮০০ টাকার ভালো ফোন : বাটন ফোন রিভিউ
এই তালিকায় যে ফোন গুলো রেখেছি সেগুলো বেশ কিছু কাইটেরিয়া অনুযায়ী সিলেক্ট করা হয়েছে। উক্ত ফোন গুলোর বাজেট ধরা হয়েছে ৮০০ টাকার মধ্যে। তবে সব ব্যাপার গুলো এক সাথে খাপ না খাওয়ার কারনে দামের ক্ষেত্রে কিছুটা উঠানামা করেছে যা স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ঠিক বলে মনে হয়েছে, যার কারনে সেই সকল ফোন গুলোও তালিকায় আনা হয়েছে। আশা করি উক্ত তালিকার মধ্য থেকে আপনার চাহিদা মোতাবেক ফোনটি বাছাই করতে সক্ষম হবেন। তবে শুরু করা যাক।
Walton Olivo L25
এটা আমাদের সকলেরই জানা যে ওয়ালটন আমাদের দেশীয় পণ্য। এমনকি তাদের ব্র্যান্ডিং প্রচারের সময়ও বলে থাকে ওয়াল্টন আমাদের পণ্য। যার কারনে হলেও কিছুটা টেনে থাকে এই ফোন গুলো। তবে কি কেবল আমাদের দেশীয় পণ্য বলেই কিনে ফেলবো? তা কিন্তু নয়, অবশ্যই থাকতে হবে সেই সকল ফিচার যা আমরা এক্সপেক্ট করে থাকি একটা বাটন ফোন থেকে।
৮০০ টাকার ভালো ফোন এর তালিকায় এই ফোনটি রাখার মূলত কারনই এর দাম এবং তারপর আসে ফোনটির লুক। খুব ছোট ও কিউট দেখতে ফোনটি যেকারো হাতে বেশ মানিয়ে যাবে। ধুসর কালো রঙের মাঝে লালের আঁচড় ফোনটিকে দিয়েছে Gorgeous লুক। শুধুই কি লুক? ফোনটিতে আছে ১৮০০ এম এইচ ব্যাটারি যা অনায়াসে ২ দিন টিকে যাবে।
ফোনটির ডিসপ্লে ১.৭ ইঞ্চি যার রেজুলেশন ১২৮*১৬০ যা বাটন ফোন হিসেবে যথেষ্ট। এমনকি এখানেই শেষ নয়, রয়েছে এতে সাউন্ড রেকর্ডার, ভিডিও রেকর্ডার (যদিও আছে VGA ক্যামেরা) এমনকি ফেসবুক এফএম এর ব্যবস্থাও।
Walton L21
এই পর্যায়ে যে ফোনটি রেখেছি সেটা উল্লেখিত দাম থেকে কিছুটা বেশি। তবে এই বেশিটাকে বেশি বলা যাবে না কারন ফোনটির দাম মাত্র ৮৫০ টাকা। ফোনটির স্পেশাল স্পেসিফিকেশনের মধ্যে রয়েছে ১৮০০ এম্পিয়ারের ব্যাটারি যা ব্যাকআপ দিবে দুর্দান্ত। ফোনটিতে এক্সটার্নাল ১৬ জিবি আব্দি ম্যামোরি সাপোর্ট করবে। জিপিআরএস ইন্টারনেটের সুবিধার পাশপাশি ফোনটি পাচ্ছেন ১.৭৭ ইঞ্চির টিএফটির ডিসপ্লেতে।
Walton L10
ওয়াল্টনের আরেকটি ফোন রেখেছি ৮০০ টাকার ভালো ফোন এর তালিকায়। আসলে ওয়ালটন আমাদের চাহিদা গুলো খুব ভালো ভাবে বুজে যার কারনে তাদের প্রায় সিমিলার বেশ কিছু ফোনই রয়েছে একই প্রাইজ রেঞ্জের মধ্যে। তবে উপরের দুইটি ফোনের থেকে এই ফোনটির দাম কিছুটা কম। মাত্র ৮১০ টাকার দিয়েই ওয়ালটনের এল ১০ ফোনটি নিতে পারবেন।
যেখানে থাকছে ১.৭৭ ইঞ্চির টিএফটির ডিসপ্লে, ১৬ জিবি ম্যামোরি ব্যবহারের সুবিধা, ইন্টারনেট ব্রাউজিং ব্যবস্থা, আছে ক্যামেরা ও ৮০০ এম্বিয়ারের ব্যাটারি। হ্যা ফোনটিতে তুলনামূলত ব্যাটারি কম দেয়া আছে।
Symphony B12
এবার স্যাম্পনি কোম্পানির একটি ফোন নিয়ে কথা বলবো। স্যাম্পনি বি১২ ফোনটি প্রথমবারের মত লঞ্চ হয়েছে ২০১৪ সালে এবং এখন অব্দি এর চাহিদা ব্যাপক ছড়িয়ে আছে। জাভা সফটওয়ার বেজড ফোনটিতে ৮ জিবি অব্দি ইক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা দেয়া আছে। ফোনটিতে ৮০০ এমপিয়ারের ব্যাটারি দেয়া আছে যা মোটামোটি সময়ের ব্যাকআপ দিতে সক্ষম।
ফোনটিতে রেডিও থাকলেও নেই কোনো প্রকার ক্যামেরা। যেহেতু বাটন ফোনের ক্ষেত্রে ক্যামেরা কোনো কাজেই আসে না সেক্ষেত্রে ক্যামেরা থাকা না থাকা একই ব্যাপার। তাছাড়া নরমাল বাটন ফোনে যে যে বিষয় থাকা দরকার প্রায় সব গুলো ফিচার রয়েছে। ফোনটির দাম বর্তমান বাজারে ৮২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ৮০০ টাকার ভালো ফোন গুলোর মধ্যে অবশ্যই এটি একইটি।
Walton L7
উপরের সব গুলো ফোনই ৮০০ টাকা থেকে কিছুটা বেশি মূল্যের দেখানো হয়েছে যদিও সেই বেশিটা আহামরি বেশি না তবুও। তবে এবারের যে ফোনটির কথা বলবো সেটি ৮০০ টাকা থেকেও কম। মাত্র ৭৫০ টাকা এর মধ্যেই পাওয়া যাবে ওয়ালটনের এল৭ ফোনটি।
ফোনটির স্পেসিফিকেশন বলতে গেলে অবশ্যই ফোনটির ডিসপ্লে নিয়ে বলতে হয়। ১.৭৭ ইঞ্চির টিএফটির ডিসপ্লে রয়েছে এই বাজেটের ফোনে সাথে আছে ১৬ জিবি অব্দি মেমোরি ব্যবহারের সুবিধা। তবে আনএক্সপেক্টেড ব্যাপার এই যে ৭৫০ টাকার ফোনটি দিয়ে ব্যবহার করা যাবে ইন্টারনেট। যদিও ৪জি এর যুগে ২জি ফোন থেকে কেউ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে যাবে না তবুও আছে যে এটাই অনেক বড় ব্যাপার।
তবে ফোনটির ব্যাটারি উপরের ফোন গুলো থেকে কম। মাত্র ৭৫০ এম্বিয়ার এর ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে এতে। যদিও এর চেয়ে বেশি আশা করাও যায় না এই বাজেটের ফোন থেকে।
২০২২ সালে ফোন গুলো কেনা কি ঠিক হবে?
যদি আপনার প্রশ্ন এই হয় তবে উত্তর হবে অবশ্যই ঠিক হবে। দেখুন, নিত্যনতুন যে ফোন গুলো বাজারে আসছে সেগুলোর দাম বর্তমান মার্কেটপ্লেস অনুযায়ী অনেক বেশি। একেবারে কম বাজেটের মধ্যে, মানে ৮০০ টাকায় ভালো ফোন এগুলো ছাড়া নেই, থাকলেও এমন যা এই লিস্টের ফোনের সাথে কম্পেয়ার করলে ভালো না। তাই এই লিস্টে দেয়া ফোন গুলো ২০২২ এ এসেও কেনা যায়।
কাদের ও কেনো কেনা উচিৎ ৮০০ টাকার ভালো ফোন?
আমাদের পরিবারে অনেকেই আছে যারা আধুনিক যুগের সাথে মিশে গিয়ে আপডেট স্মার্টফোন ব্যবহার করতে স্বচ্ছন্দবোধ করে না। যেমন আমাদের নানা, নানী, দাদা, দাদী যারা কিনা এখন ও আগের যুগে বাস করছে তাদের জন্য এই ফোন গুলো কেনা ঠিক হবে।
তাছাড়াও যারা ব্যবসায়ী, বা এমন লোক যাদের দুইটা ফোন ব্যবহার করতেই হয় বিভিন্ন কারনে তারাও এই ফোন গুলো তাদের লিস্টে রাখতে পারে। কারন বাজেট অনুযায়ী এই ফোন গুলো যথেষ্ট ভালো অন্য গুলোর চেয়ে।
পরিশেষে, এই ছিলো সম্পুর্ণ আর্টিকেল “ ৮০০ টাকার ভালো ফোন “ বিষয়ক। যেখানে বেশ কিছু ফোন এর বিস্তারিত স্পেসিফিকেশন নিয়ে বলেছি এবং আরো বলেছি তাদের ও কেনো এই ধরনের ফোন গুলো কেনা উচিৎ। এছাড়াও অন্যান্য প্রাইজ রেঞ্জের ফোন এর রিভিউ দেখুন ওয়েবসাইট থেকে।