২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া | অল্প পুঁজিতে ব্যবসা আইডিয়া 

0
10
২০-থেকে-৩০-হাজার-টাকায়-ব্যবসা-আইডিয়া.

যাদের কাছে ব্যবসা করার মতো কিছু অল্প পুঁজি আছে এবং ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করতে চান; তাদের জন্য কিছু ব্যবসা আইডিয়া নিয়েই আজকের এই আলোচনা।

 

বর্তমান সময়ে চাকরির প্রতি মানুষ গনহারে ছুটে চলায় চাকরি করার বিষয়গুলো কঠিন হয়ে গেছে। আবার অনেকেই ব্যবসা করার বিষয় এবং আইডিয়া সম্বন্ধে তেমন না জানায় মূলধন বা পুঁজি থাকা সত্ত্বেও ব্যবসা তে তেমন অগ্রসর হয় না। অনলাইন ব্যবসা হোক বা অফলাইন ব্যবসা, সঠিক উপায়ে করলে উভয়ই লাভজনক। 

 

আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকায় ব্যবসার আইডিয়া ও অল্প পুঁজিতে ব্যবসা আইডিয়া ২০২২ বিষয়ে। তো চলুন, কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেয়া যাকঃ

২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসার আইডিয়া

 

অল্প পুঁজি তে অনেক রকমের ব্যবসা করা সম্ভব। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করা যায় – তেমনই কয়েকটি লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া নীচে তুলে ধরা হলোঃ

মোবাইল সার্ভিসিং এর ব্যবসা

 

এখন মানুষের হাতে হাতে মোবাইল। এটি বর্তমানে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে পরিণত হয়েছে। যেহেতু এর ব্যবহার বেড়েছে, তাই এর সার্ভিসিং এর চাহিদাও বেড়েছে।

 

আপনি মোবাইল সার্ভিসিং বিষয়ে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করতে পারেন। মোবাইল সার্ভিসিং এর কাজ যদি না জেনে থাকেন, তাহলে একজন দক্ষ ট্রেইনার থেকে শিখে নিবেন। ৩ মাসের মধ্যে মোবাইল সার্ভিসিং শেখা সম্ভব।

ফলের ব্যবসা

 

ফলের পুষ্টিগুণ এর ব্যাপারে আমরা কমবেশি প্রায় সবাই জানি। এছাড়া স্বাদেও এটি দারুণ। প্রতিদিনই বিভিন্ন ফল প্রচুর বিক্রি হয়ে থাকে। চাহিদা বিবেচনায় এটি ভাল অবস্থানে আছে।

 

আপনি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করতে চাইলে বিভিন্ন ফলের ব্যবসা করতে পারেন। আপেল, কমলা, কলা, বেদানা, নাশপাতি, বিভিন্ন প্রজাতির আঙুর, খেজুর, মাল্টা সহ বিভিন্ন ফল নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন।

 

এজন্য আপনাকে যথাসম্ভব কম দামে পাইকারি বাজার থেকে অথবা বাগান মালিকদের কাছ থেকে ফল সংগ্রহ করতে হবে। যেমনঃ ঢাকার বাদামতলী হলো ফলে বিশাল পাইকারি বাজার; যেখানে কি না প্রতিদিন প্রচুর ফল আসে ও বিক্রি হয়।

 

ফল সাধারণত কার্টুন/বক্স হিসেবে বিক্রি হয়। প্রতি কার্টুন/বক্সে ১৬ থেকে ২০ কেজির মতো ফল থাকে। আপনি প্রাথমিক ভাবে ৫ থেকে ৭ রকমের ফল নিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

লবনের ব্যবসা

 

কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং সহজ ব্যবসা হলো লবনের ব্যবসা। খাবার রান্নার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই উপাদানটির চাহিদা রয়েছে সারা বাংলাদেশে। আপনি লবন সংগ্রহ করে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করতে পারেন।

 

আপনি মানসম্মত লবন উৎপাদনকারী কোম্পানির নিকট হতে খোলা লবন সংগ্রহ করে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। সে লবন বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন।

 

এছাড়া প্যাকেটজাত ভাল মানসম্মত লবন নিয়েও ব্যবসা করতে পারেন। বাংলাদেশের সেরা কিছু লবনের কোম্পানি হলো মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, রাজপুর সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, সোনারগাঁও সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সহ বিভিন্ন কোম্পানি; যারা দীর্ঘদিন ধরে লবনের জন্য বিখ্যাত।

 

আপনি এই কোম্পানি গুলো থেকে লবন কম দামে কিনে, সেগুলো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে বিক্রয়ের মাধ্যমে ব্যবসা করতে পারেন। এ ব্যবসা এর বড় সুবিধা হলো এটি অন্যান্য বিভিন্ন ব্যবসায়ের চেয়ে তুলনামূলক সহজ।

আলু-পেঁয়াজের ব্যবসা

 

যেসব ব্যবসা একচেটিয়া চলে তার মধ্যে আলু-পেঁয়াজের ব্যবসা একটি। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা এবং বাজার থেকে প্রচুর পরিমাণে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি হয়ে থাকে।

 

আপনি উৎপাদনকারীর নিকট থেকে অথবা পাইকারি বাজার হতে সস্তা দামে আলু-পেঁয়াজ কিনে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেমনঃ পুরনো ঢাকার শ্যামবাজার হলো আলু-পেঁয়াজের পাইকারি বাজার।

 

আপনি ছোট দোকানে আলু-পেঁয়াজ বিক্রয়ের মাধ্যমে ব্যবসা করার পাশাপাশি অনলাইনেও ব্যবসা করতে পারেন। অফলাইন অনলাইন – দুই জায়গাতে মিলিয়ে ব্যবসা করলে ভাল পরিমাণে লাভবান হতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্।

কাঁচা সবজির ব্যবসা 

 

প্রতিদিনই যদি ভাল পরিমাণে লাভবান হতে চান তাহলে কাঁচা সবজির ব্যবসা করতে পারেন। কেননা, এটির দৈনন্দিন চাহিদা রয়েছে। আপনি ভ্যানগাড়ির মাধ্যমে অথবা ছোট কোন প্লেসে এই ব্যবসাটি করতে পারেন।

 

কাঁচা সবজি নিয়ে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা ভরপুরভাবে করা সম্ভব। কেননা, কাঁচা সবজি যেহেতু দীর্ঘসময় সংরক্ষণ করা যায় না তাই সেগুলো টাটকা সংগ্রহ করে বিক্রি করতে হয়।

 

তাই আপনি আপনার পুঁজি থেকে কাঁচা সবজির ব্যবসা করার জন্য অল্প টাকায় ছোট্ট একটি দোকান অথবা কোন ভাল জায়গা নিয়ে নিতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্। ব্যবসা করে লাভ হলে সে টাকা জমিয়ে আপনার ব্যবসার পরিধি বড় করে নিতে পারেন।

চা এর দোকান ব্যবসা

 

লাভজনক ব্যবসাগুলোর মধ্যে বর্তমানে চা এর ব্যবসা অন্যতম। এটি একটি রানিং ব্যবসা; কেননা, প্রায় সবসময়েই এই দোকানে কাস্টমার থাকে। এই ব্যবসা অল্প পুঁজি নিয়েও শুরু করা যায়।

 

সাধারণত, জনসমাগম বেশি এমন প্লেস; চা এর দোকান ব্যবসা করার জন্য উপযুক্ত। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করতে চাইলে আপনি এটি করতে পারেন।

 

চা এর পাশাপাশি কলা, ব্রেড – এগুলো সাধ্যানুযায়ী রাখতে পারেন। এর মাধ্যমে বাড়তি আয় পাবেন ইনশা আল্লাহ্। তবে অনেকেই চা এর দোকানে বিড়ি,সিগারেট এবং পান বিক্রয় করেন, যা একদম অনুচিত। এগুলোতে লাভের চেয়ে ক্ষতি অত্যন্ত বেশি।

ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল ব্যবসা

 

অনেক মানুষেরই একটি অন্যতম শখ হলো ভ্রমণ করা। বিভিন্ন সময়ে মানুষ তার পরিবার পরিজন নিয়ে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমন করতে যায়। কিন্তু এর জন্য তাদের বিভিন্ন কাজ করতে হয়; যা একটু কষ্টকর এবং সময়সাপেক্ষ।

 

তাদের ভ্রমণ বিষয়ক এই কাজগুলো করার দায়িত্ব পালন করে বিভিন্ন ট্যুর এবং ট্রাভেল রিলেটেড ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো। টিকেট কাটা, অফিস বুকিং এর মতো কাজগুলো তারা কাস্টমারদের জন্য করে দিয়ে একটা অর্থ লাভ করে, যেটা অন্যতম লাভজনক একটি ব্যবসা।

 

আপনি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা করতে চাইলে স্বল্প পরিসরে ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল ব্যবসা করতে পারেন। যদি আপনার একটি কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ থাকে এবং আপনি ওয়েবসাইট পরিচালনা বিষয়ক কাজ পারেন; তাহলে একটি ওয়েবসাইট খুলে এই ব্যবসা করতে পারেন।

কাস্টমাইজড ফার্নিচার ব্যবসা

 

ফার্নিচার এর ব্যবসা সাধারণত বড় বাজেটের ব্যবসা। তবে মজার কথা হলো ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা আইডিয়ার মধ্যে এটিও একটি। কিন্তু সেটি কিভাবে আসলে?

 

সবার সামর্থ্য থাকে না নতুন ফার্নিচার ক্রয়ের। আবার সবারই নতুন ফার্নিচার এর দরকারও হয় না; সেক্ষেত্রে চাহিদা থাকে পুরনো ফার্নিচার এর। অনেকেই পুরাতন ফার্নিচার বিক্রি করে দেয়।

 

মূলত, পুরাতন ফার্নিচার কম দামে কিনে, তারপর সেগুলোকে কাস্টমাইজ করে বা নতুনের মতো সার্ভিস করে লাভসহ বিক্রি করার মাধ্যমে আপনি কাস্টমাইজড ফার্নিচার এর ব্যবসা করতে পারেন।

 

অফলাইনে এগুলো বিক্রি করার পাশাপাশি ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এবং বিক্রয় ডটকম এর মতো সাইটেও এগুলো বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রির মাধ্যমে এ ব্যবসা করতে পারেন।

 

ইতিকথা 

 

ব্যবসা যেটাই করা হোক না কেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সে ব্যবসা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা নেয়া। কেননা, কোন প্রকার জ্ঞান এবং ধারনা ছাড়াই ব্যবসা তে নামলে সে ব্যবসা করে লস খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 

তাই আপনি আপনার পছন্দের ব্যবসা আইডিয়া বাছাই করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন এবং রিসার্চ করুন। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু করার পর সেটা যেন লাভজনক ব্যবসা তে পরিণত হয়; তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করুন। তাছাড়া আরো জানুন ১০ হাজার টাকায় করা যায় এমন ব্যবসা সম্পর্কে। 

 

ধৈর্য্য, বিশ্বস্ততা এবং কঠোর পরিশ্রমের সাথে ব্যবসা করতে থাকুন। তাহলে আপনার ব্যবসা ধীরে ধীরে বড় ব্যবসা তে পরিণত হবে ইনশা আল্লাহ্।

 

Visited 139 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here