কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায় । বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক

0
20

কৃষি শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ঋণ প্রয়োজন? বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন এবং কৃষি কাজ করার জন্য সহজে ঋণ সুবিধা গ্রহণ করুন। রাষ্ট্রীয়ভাবে পরিচালিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দেশের সকল স্তরের কৃষকদের জন্য সহজ এবং স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। আপনিও যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন যার কৃষি কাজের ঋণ প্রয়োজন তবে এ আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন সেই সকল উপায় সম্পর্কে যা অনুসরণের মাধ্যমে আপনিও কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে পারেন। 

গ্রামবাংলা গণমানুষের ব্যাংক হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মূলত কৃষকদের নিয়ে কাজ করে থাকে।  কৃষকদের আর্থিক ভাবে সুবিধা প্রদান করা এবং ঋণের মাধ্যমে তাদের কৃষিকাজ সচল রাখতে সহায়তা করে। 

বাংলাদেশে এখনও কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত রয়েছে। যেখানে লক্ষ কোটি কৃষক প্রতিনিয়ত চাষাবাদের মাধ্যমে দেশের খাদ্য যোগান এর পাশাপাশি তাদের নিজেদের পরিবার  নিয়ে জীবন যাপন করছে।  তবে দুর্ভাগ্যবশত তারাই রয়েছে দারিদ্র সীমার মধ্যে আবদ্ধ। এমনও দেখা গেছে যে যথাযথ অর্থ যোগান করতে না পারার কারণে সময় মতো কৃষিকাজ বা চাষাবাদ করতে পারছে না অনেকেই।  

যার ফলে যেমন তাদের নিজেদের ক্ষতি হচ্ছে তার পাশাপাশি দেশের ক্ষতি হচ্ছে খাদ্য অভাবে। এই মহামারী সমস্যা দূর করতে  বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ভাবে পরিচালিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষকদের জন্য চালু রেখেছে বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় ঋণ। যা গ্রহণ করে প্রতিটি কৃষক নিজেদের চাহিদা পূরণ এবং কৃষি কাজে মনোনিবেশ করতে পারবে। 

একজন কৃষক কিভাবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে কৃষি কাজ করতে পারে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে এবারের প্রতিবেদনে।  কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার থেকে শুরু করে কৃষি ব্যাংকের প্রকারভেদ এবং কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার  উপায় ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস  সম্পর্কে সবটাই জানানো হবে এই আর্টিকেল এর মধ্যে। আপনি যদি কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে চান যার ফলে আর্থিক সুবিধার জন্য কৃষি ব্যাংক হতে ঋণ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তবে এই আর্টিকেলটি আপনাকে বেশ উপকৃত করতে যাচ্ছে। তবে প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সম্পর্কে কিছু তথ্য। 

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ঋণ

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানায় পরিচালিত বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ১৯৭৩ সালে ৩১ মার্চ, কৃষিভিত্তিক শিল্পের মতো প্রাকৃতিক নির্ভর ঝুঁকিপূর্ণ খাতে অর্থায়নের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয় কৃষি ব্যাংক। আমানত গ্রহণ ঋণ প্রদান ও বৈদেশিক বাণিজ্য সহ সকল ধরনের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে ব্যাংকটি।  বর্তমানে আধুনিকায়নের ছোঁয়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে গেছে যার ফলে ১০৩৮ অনলাইন শাখা রয়েছে কৃষি ব্যাংকের। [

দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রদান ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক তাদের কার্যক্রম করে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি ব্যাংকটি দেশের জনসাধারণের কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌছে দেয়ার মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা দরিদ্র বিমোচন এর জন্য কৃষি কাজ, এস এম ই এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পে সহজ ঋণ প্রদান করে যাচ্ছে। এপর্যায়ে জানাবো বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কোন কোন খাতে ঋণ প্রদান করে থাকে। 

কৃষি ব্যাংক ঋণ এর প্রকারভেদ

বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের কার্যক্রম হিসেবে মোট চারটি হাতে তারা ঋণ সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।  উল্লেখযোগ্য খাতসমূহ হলোঃ শস্য, মৎস্য, লাইভ স্টক, কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি।  এই পর্যায়ে নিম্মে প্রতিটি খাতসমূহের ঋণের শর্ত ও ঐসকল খাতের ঋণ গ্রহণ করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হয়েছে। 

শস্য ঋণ

বাংলাদেশের সকল কৃষকরা শস্য উৎপাদনে সরাসরি সম্পৃক্ত তাদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করার জন্য যে  সুবিধাটি খোলা রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি হচ্ছে  বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক শস্য ঋণ।  প্রায় সকল ধরনের ফসল ই এই ঋণ এর আওতাভুক্ত হবে।  এইযে কৃষক যেই ফসল উৎপাদন করুক না কেন শস্য ঋণ সুমিতা তাদের জন্য উন্মুক্ত। 

কৃষি ব্যাংক কর্তৃক  শস্য ঋণ  এর জন্য যে অর্থ প্রদান করা হবে তার সাইড ভাগ শস্যের জন্য নির্দিষ্ট। কৃষি ব্যাংক তাদের নিজস্ব নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ঋণ প্রদান করে থাকে।  এক্ষেত্রে শরীরের জন্য 9% সুদের হার প্রযোজ্য যা যেকোনো সময় পরিবর্তনশীল ব্যাংক চাইলে যেকোনো সময় নির্দেশ প্রদান পূর্বক সুদের হার পরিবর্তন করতে পারে।  

কেবলমাত্র কৃষকরাই এই ঋণ এর আওতাভুক্ত।তাছাড়া বার্ষিক ভিত্তিতে ফসল ঋণ মঞ্জুর করা হয়ে থাকে এবং অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে প্রত্যেক ঋণ গ্রহীতাকে ক্রেডিট পাসবুক দেওয়া হবে। জমির মালিক কিংবা শেয়ার চাষী অথবা প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরাও এই ঋণের জন্য যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। [

মৎস্য ঋণ

যে সকল চাষিরা মৎস্য চাষের সাথে জড়িত তাদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক মৎস্য ঋণ নামক একটি আলাদা ক্যাটাগরি তৈরি করে রেখেছে। যারা মৎস্য চাষ করে তাদের,

  • নতুন পুকুর খনন
  •  পুরাতন পুকুর পুনরায় খনন
  •  জলাভূমির উন্নয়ন
  •  মৎস্য হ্যাচারি স্থাপন
  •  নতুন প্রকল্প গ্রহণ

 ইত্যাদি কাজের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে। তাছাড়া নিম্নলিখিত sub-category তো চাষিরা পাবে।

চিংড়ি চাষ

বর্তমানে দেশে ও দেশের বাইরে চিংড়ি এর চাহিদা ব্যাপক মূলত সামুদ্রিক নোনা পানি ও মিঠা পানির চিংড়ি চাষ এর মাধ্যমে মৎস্য চাষের ব্যাপক লাভবান হচ্ছে আজকাল। এক্ষেত্রে প্রথাগত পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ যাকে আবার বাগদা অথবা বাঘ চিংড়ি নামে পরিচিত – এর জন্য ঋণ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।

এটা ছাড়াও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিংড়ি মাছ চাষ করা, আধা নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ এবং মিঠা পানিতে চিংড়ি চাষ করার ক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংক মৎস্য ঋণ প্রদান করে থাকে। যখন কোন মৎস্য চাষী আধুনিক প্রযুক্তির ভিত্তিতে চিংড়ি চাষ করতে চায় তখন ব্যাংকটি তাকে আর্থিকভাবে এবং পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করে থাকে।

লাইভ স্টক ঋণ

লাইভস্টক ঋণের আওতায় মূলত প্রাণিসম্পদ গুলোর আওতাভুক্ত করা হয়েছে ।যেসকল গৃহপালিত প্রাণী রয়েছে সেগুলোকে লালন-পালন করা এর মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক উক্ত কর্মসূচিটি করেছে।  এক্ষেত্রে  ষাড়, গাভী, ছাগল, গরু মোটাতাজাকরণ এবং এগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণীর জন্য ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে।

এক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতা কোন প্রকার জামানত ছাড়াই পাঁচটি বাছুরের জন্য সর্বমোট ২৫,০০০ টাকা ঋণ পাবে উল্লেখ্য যে প্রতিটি বাছুরের জন্য ৫,০০০ টাকা করে বরাদ্দ। উক্ত ঋণের অর্থ ঋণ গ্রহীতাকে এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। যার জন্য ব্যাংক কর্তৃক কর্মকর্তা গ্যারান্টেড হবে। দেশের দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষকে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া এবং দেশের আমিষের জাতীয় ঘাটতি পূরণ করাই হলো এই কর্মসূচি বা প্রকল্পের উদ্দেশ্য। [

কৃষি ও সেচ যন্ত্রপাতি ঋণ

বিশ্ব প্রতিনিয়ত ও আধুনিক হচ্ছে তার পাশাপাশি আধুনিক হচ্ছে কৃষিকাজও। বর্তমানে কিসে কাজকে আরও সহজ করার জন্য রয়েছে বিভিন্ন প্রযুক্তি যার মাধ্যমে খুব সহজ এবং স্বল্প সময়ে কৃষি কার সংক্রান্ত কার্য সম্পাদন করা যায় তবে কৃষক গোষ্ঠী হত দরিদ্র সীমার মধ্যে থাকার কারণে অনেকেই রয়েছে যারা কৃষি ও সেচ সংক্রান্ত যন্ত্র পাতি গুলো ক্রয় করতে সক্ষম নয়। ঠিক এমন ক্যাটাগরিতে থাকা মানুষগুলোর কথা চিন্তা করেই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষি যন্ত্রপাতি ঋণ নামক একটি ক্যাটাগরি  তৈরি করেছে। [

প্রায় সব ধরনের সেচ সরঞ্জাম এই সেক্টরের অধীনে রয়েছে সেই কারণগুলো হলো: এলএলপি, এইচপিটি ডব্লিউ, এস টি ডব্লিউ, ডিটি ডাব্লিউ। এগুলো ছাড়াও যেসকল খাত এই ঋণ এর আওতাভুক্ত হবে সেগুলো হলো: 

  • পোল্ট্রি ফার্ম
  •  ডেইরি ফার্ম
  •  খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রকল্প
  •  রপ্তানিযোগ্য পণ্য এবং
  •  আমদানি বিকল্প 

এই পর্যায়ে জানানো হবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে কারণ আপনি যখনই কৃষি ব্যাংক থেকে যেকোন ক্যাটাগরির ঋণ গ্রহণ করতে যাবেন তখন অবশ্যই আপনাকে কৃষি ব্যাংকে একটি হিসাব খুলতে হবে তাহলে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট খোলা যায় সেই নিয়ম সম্পর্কে।  

কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম

প্রতিটা ব্যাংকের  মত কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি যেই ক্যাটাগরির একাউন্ট খুলতে চান সেই ক্যাটাগরির একাউন্ট ফরম সংগ্রহ করে সেটিকে পূরণ করতে হবে। অতঃপর পূরণকৃত ফরম এর সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো  একত্রে করে কৃষি ব্যাংকের যে কোন শাখায় গিয়ে উপস্থিত হয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানাতে হবে আপনি কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট করতে চাচ্ছেন। তারা আপনার ডকুমেন্টস গুলো ভেরিফাই করে আপনাকে খুব সহজেই তাৎক্ষণিক কৃষি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে দিবে।

ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম এর জন্য আপনাকে নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের যে কোন শাখায় উপস্থিত থাকতে হবে এবং সেখানে থাকা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। অথবা এখানে ক্লিক করে অনলাইনে ফরম টি সংগ্রহ করতে পারেন যা পরবর্তীতে প্রিন্ট করে ব্যাংকে নিয়ে যেতে হবে। অন্যদিকে কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যেসকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন সেগুলো নিম্নে উপস্থাপন করছে যাতে করে পূর্ব প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়। 

কৃষি ব্যাংকে একাউন্ট খোলার জন্য যেসকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন

১) যে ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন তার ব্যক্তির পরিচয় বা আইডেন্টিটি ভেরিফিকেশনের জন্য এক কপি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে।

২) সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি সাবমিট করতে হবে।

৩) একাউন্ট খোলার পর পরই উক্ত একাউন্টে ১,০০০ টাকা জমা রাখতে হবে যা একাউন্ট সচল রাখতে  প্রয়োজন হবে।

৪) একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে যেখানে লেনদেন সংক্রান্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়গুলো এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

৫) পরিশেষে উক্ত একাউন্টের জন্য যাকে নমিনি রাখা হবে সেই নমিনীর ১ কপি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং ২ কপি সদ্য  তোলা পাস্পোর্ট সাইজের রঙিন ছবি সাবমিট করতে হবে।

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার  উপায়

বাংলাদেশের কৃষকদের আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন  ক্যাটাগরিতে ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে। উপরে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে কোন কোন খাতে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। আপনার যে খাতে ঋণ প্রয়োজন সেটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানাবেন তারা আপনাকে একটি ফর্ম দিবে সে ফরম পূরণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো প্রদান করবেন। তারা আপনার ইনফরমেশন গুলো যাচাই করবে এবং আপনাকে ঋণ প্রদান করা যায় কিনা সেটি কয়েক কর্মদিবসের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য যে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে আপনি কত টাকা ঋণ পাবেন সেটি নির্ভর করবে আপনার কৃষি জমি বা অন্য যে খাতের জন্য ঋণ চাচ্ছেন সেটির উপরে। 

কৃষি ব্যাংক হতে প্রদানকৃত ঋণের পরিমাণের উপর নির্ভর করে আপনার জমির দলিল অথবা শুধুমাত্র গ্যারান্টি রেখে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে থাকে।  ঋণের ক্ষেত্রে বর্তমানে ৯% সুদের হার ধার্য করা রয়েছে যদিও এটা পরিবর্তনশীল ব্যয় সুদের হার বাড়াতে বা কমাতে পারবে। যে কারণে আপনি যখনই ঋণ গ্রহণ করতে যাবেন তখন বর্তমান সময় কত শতাংশ হারে সুদ গ্রহণ করা হচ্ছে সেটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জেনে নিবেন।  এই পর্যায়ে জানাবো কৃষি ব্যাংক লোন নিতে যেসকল ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করতে হয়। 

কৃষি ব্যাংক হতে লোন নিতে যে ডকুমেন্টস প্রয়োজন

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সময় আপনার কাছ থেকে বেশ কিছু ডকুমেন্টস যাওয়া হবে,এবং সেগুলো আপনাকে প্রদান করতে হবে তাই যখনই কৃষি ব্যাংকের লোন নিতে যাবেন তখন পূর্বেই এইসকল ডকুমেন্টস গুলো গুছিয়ে রাখবেন। যে ডকুমেন্টগুলো চাওয়া হবে সেগুলো উল্লেখ করছি: 

  • ঋণ গ্রহীতার জাতীয় পরিচয় পত্র
  • ঋণগ্রহীতা যে কৃষক তার প্রমাণস্বরূপ কৃষি কার্ড
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি রঙিন ছবি
  • যে ব্যক্তি ঋণের জামিনদার হবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি এবং দুই কপি ছবি
  • সরকারি নির্দেশ মোতাবেক ডিপি নোট স্ট্যাম্প
  • লেটার অফ হাইপোথিকেশন
  • শস্য বন্ধকী দলিল
  • এবং জামিনদার প্রদত্ত লেটার অফ গ্যারান্টি।

এক্ষেত্রে জামিনদার হিসেবে স্থানীয় চেয়ারম্যান / মেম্বার / স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি কে নেয়া যেতে পারে অথবা সরকারি কিংবা বেসরকারি স্কুল / কলেজ / মাদ্রাসার শিক্ষককে জামিনদার হিসেবে নেওয়া যাবে। 

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া সংক্রান্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে কারা ঋণ গ্রহণ করতে পারবে?

 প্রাপ্তবয়স্ক এমন যেকোন বাংলাদেশের নাগরিক কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।

২) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অনলাইন মোবাইল অ্যাপ রয়েছে?

হ্যাঁ রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোন অ্যাপটি  পেতে এখানে ক্লিক করুন

৩) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এ কি কি ধরনের একাউন্ট খোলা যায়?

 সাধারণত সঞ্চয়ী, চলতি, এসএসডি, এবং সঞ্চয়ী হিসাব কৃষি ব্যাংক থেকে খোলা যাবে। 

৪) বাংলাদেশ ব্যাংক কি বাণিজ্যিক ঋণ প্রদান করে থাকে? 

অবশ্যই বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কৃষকদের ঋণ প্রদানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও ঋণ প্রদান করে থাকে এক্ষেত্রে সেসকল ঋণগুলোর নাম হলো: সিসি, প্রজেক্ট, এসএমই, ওয়ার্কিং, ক্যাপিটাল ইত্যাদি। 

পরিশেষে কিছু কথা

অতঃপর এই ছিল বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায় সংক্রান্ত পুরো আর্টিকেল যেখানে  বাংলাদেশ  কৃষি ব্যাংক সংক্রান্ত  বেসিক তথ্য প্রদানের পাশাপাশি উক্ত ব্যাংক একই ধরনের একাউন্ট খোলা যায় সেটি  জানানো হয়েছে পাশাপাশি উক্ত ব্যাংক থেকে কৃষকেরা কিভাবে ঋণ গ্রহণ করবে এবং কোন কোন খাতে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে সেই সকল বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আপনি যদি দেশের অন্যান্য ব্যাংক এবং ব্যাংকিং সম্পর্কে জানতে চান তবে বাংলা আলম ওয়েবসাইটের ব্যাংক নামক ক্যাটাগরিতে অনুসরণ করতে পারেন। ধন্যবাদ 

Visited 10 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here