ক্রোয়েশিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম প্রজাতন্ত্রী ক্রোয়েশিয়া। এটির রাজধানী জাগরেব।
ক্রোয়েশিয়া দক্ষিণপূর্ব ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থিত। এর উত্তর পূর্ব সীমান্তে হাঙ্গেরি, পূর্বে সার্বিয়া, দক্ষিণ পূর্বে বসনিয়া, হার্জেগোভিনা ও মন্টিনিগ্রো।
★জনসংখ্যাঃ ৭১ লক্ষের কাছাকাছি
★আয়তনঃ ৫৬,৫৯৪ বর্গ কি.মি.
★মাথাপিছু আয়ঃ $15,355 (2007 estimate)
★মুদ্রাঃ kuna (HRK)
বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে পছন্দের তালিকায় সবার শীর্ষে আছে ক্রোয়েশিয়ার নাম। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো শেষ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা শুরু হবার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই জানতো না ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভূক্ত একটি দেশ আছে যেটার নাম ক্রোয়েশিয়া।
এখন পর্যন্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভূক্ত নন সেনজেন দেশগুলোর ভেতরে সবার শীর্ষে আছে ক্রোয়েশিয়া।ক্রোয়েশিয়া খুব অল্প সময়ে তাদের সবার শীর্ষে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি ক্রোয়েশিয়া সেনজেন হবার খুব বেশি সম্ভাবনা আছে। ক্রোয়েশিয়ার মূদ্রা চেঞ্জ করে সেটাকে ইউরোতে পরিনত করার কাজ তারা অলরেডি শুরু করে দিয়েছে। এদের সিংহভাগ আয় আসে টুরিস্ট সেক্টর থেকে। ক্রোয়েশিয়া অত্যন্ত সুন্দর একটি দেশ, আর সেই সুবাদে এখানে প্রচুর পরিমানে টুরিস্ট আসে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে। টুরিস্ট ছাড়াও এদের আয়ের বেশ বড় অংশ আসে কৃষি আর ব্যাবসায়ীক প্রতিস্টান থেকে।
বাংলা আলো নিউজ এর সকল খবর দেখতে ক্লিক করুন :
ক্রোয়েশিয়াতে শিক্ষার হার ৮৫% এর উপরে। এদের রাষ্টীয় ভাষা “ক্রোয়েশীয়”।
এদের রাষ্টিয় ভাষা ক্রোয়েশীয় হলেও নতুন প্রজন্ম ইংরেজিতে মোটামুটি পারদর্শী। তবে ইউরোপের সব দেশের মানুষই নিজের ভাষাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাই যেকোন দেশ থেকে এখানে কাজের ভিসায় বা পড়ালেখা ভিসায় এসে যতো তারাতাড়ি ভাষা শিখতে পারবে, সে ততো তারাতাড়ি এগিয়ে যেতে পারবে।
বাংলাদেশি বা একজন বিদেশি কর্মীর জন্য ক্রোয়েশিয়া কেমন হতে পারে?
বর্তমানে ক্রোয়েশিয়াতে সবগুলো ভিসা ক্যাটাগরি চালু আছে। আপনি যেকোন ভিসায় এসে চাইলে ভিসা পরিবর্তন করতে পারবেন।
যেমনঃ
টুরিস্ট থেকে ওয়ার্ক পারমিট বা স্টুডেন্ট থেকে ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি ইত্যাদি।
ক্রোয়েশিয়াতে জব পাওয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নন সেনজেন অন্যান্য দেশের চেয়ে সহজ, তাছাড়া এখানকার সর্বনিম্ন বেতন ৫৪৩ ইউরো সরকারিভাবে নির্ধারণ করা আছে। সো বুঝতেই পারছেন যেকোন কাজ করে অনায়াসে ৫০ হাজার টাকার উপরে ইনকাম করতে পারবেন। তাছাড়া এখানকার বেশিরভাগ কম্পানিই তাদের কর্মচারীদের থাকার জন্য রুম এবং হেলথ্ ইন্সুরেন্সও দিয়ে থাকে।
তাছাড়া আপনি চাইলে যেকোনো সময় আপনার কম্পানি চেঞ্জ করতে পারবেন, সেক্ষেত্রে কোন কম্পানি আপনার সাথে জোর করতে পারবে না।
ক্রোয়েশিয়াতে ১ বছর বৈধভাবে থাকার পরে চাইলে দেশ থেকে আপনার বউকে নিয়ে আসতে পারবেন কোন ঝামেলা ছাড়াই।
ক্রোয়েশিয়া প্রথম আসার পরে ১ বছরের কার্ড দিবে, তারপর ২ বছরের, তারপর আবার ২ বছরের। টোটাল ৫ বছর থাকার পর ক্রোয়েশিয়ার নাগরিকত্ব বা পাসপোর্ট পাবেন। পাসপোর্ট পাবার পরে ভিসা ছাড়া পৃথিবীর ১৩৯ টা দেশে যেতে পারবেন।
তাছাড়া যখন ক্রোয়েশিয়ার পাসপোর্ট হোল্ডার হবেন তখন চাইলে ইউরোপের যেকোন দেশে বিনা ঝামেলায় পরিবার সহ সারাজীবন থাকতে পারবেন।
যেভাবে ক্রোয়েশিয়া আসবেনঃ
স্টুডেন্ট ভিসাঃ
স্টুডেন্ট ভিসায় আসতে চাইলে আপনাকে মিনিমাম HSC পাশ হতে হবে। এখন পর্যন্ত সব ইউনিভার্সিটিতে IELTS লাগে না। ভালো মানের ইউনিভার্সিটিতে IELTS ছারা এডমিশন পাবেন না। তবে IELTS ছাড়াও ভিসা পাওয়া সম্ভব।
জব ভিসাঃ
জব ভিসায় আসতে চাইলে প্রথমে কোন কম্পানি থেকে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে ক্রোয়েশিয়ান এম্বাসিতে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। যেহেতু বর্তমানে ক্রোয়েশিয়ার ভিসা রেশিও বেশি, তাই ক্রোয়েশিয়া আসা সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে আমি মনে করি। কারন ক্রোয়েশিয়া সবার আগে সেনজেন হবে এটা নিশ্চিত।
টুরিস্ট ভিসাঃ স্টুডেন্ট বা জব ভিসার চেয়ে বেশি কঠিন টুরিস্ট ভিসা পাওয়া। কারন টুরিস্ট ভিসায় আবেদন করতে অনেক রিকোয়ারমেন্ট ফলো করতে হয়। তাছাড়া টুরিস্ট ভিসায় আবেদন করলে আপনাকে প্রমান করতে সক্ষম হতে হবে যে আপনি গিয়ে আবার দেশে ফেরত আসবেন। তাহলেই টুরিস্ট ভিসা পাওয়া সম্ভব। যদিও আমি নিজের থেকে সবাইকে রিকুয়েষ্ট করবো কাজের উদ্দেশ্যে টুরিস্ট ভিসা না নিয়ে আসার জন্য। কারন টুরিস্ট ভিসায় এসে দেশে ফেরত না গেলে পরবর্তীতে ভিসা রেশিও কমে যায়। নিজের দেশের সন্মান নস্ট হয়।