গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় । Google Adsense । বাংলা আলো 

0
63
গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় 

গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার আগে অবশ্যই গুগল এডসেন্সের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে যা নিয়ে থাকছে এই আর্টিকেলটি। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন এবং গুগল এডসেন্সের সম্পর্কে ব্যাসিক ধারনা গ্রহন করার মাধ্যমে আয়ের চাকা চালু করার পদক্ষেপ নিন। 

অনলাইন থেকে আয় করার কথা উঠেছে অথচ গুগল এডসেন্সের নাম শুনেননি এমনটা কখনই হওয়ার নয়। কারন অনলাইন থেকে আয় করার যত উপায় আছে সেগুলোর মধ্য থেকে সিংহভাগই আসে গুগলের এড নেটওয়ার্ক প্লাটফর্ম গুগল এডসেন্স থেকে। 

কি এই এডসেন্স কিভাবে এটা কাজ করে এবং এখান থেকে আয় করার প্রসেস কি সেই সকল বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করবো উক্ত আর্টিকেলের মাধ্যমে। তবে প্রথমেই গুগল এডসেন্সের ব্যাসিক তথ্য গুলো জেনে নেই। 

গুগল এডসেন্স কি ? গুগল এডসেন্সের কাজ কি? 

শুরুটা হয়েছিলো ২০০৩ সালে গুগলের হাত ধরে অনলাইন ভিত্তিক বিজ্ঞাপন মিডিয়া হিসেবে। গুগল এডসেন্স এর মূল কাজ হলো বিভিন্ন কোম্পানি ও সংস্থার পণ্য, সেরা প্রচারণার মাধ্যমে। এটা এমন একটি প্লাটফর্ম যার মাধ্যমে দুইটা পক্ষ লাভবান হয়ে থাকে। প্রোভাইডার ও পাবলিশারের মধ্য স্থানে এর কার্যক্রম। 

একটু সহজ করে বলি, ধরুন আপনি একটা প্রতিষ্ঠানের মালিক, আপনার কোম্পানির পণ্য বা সেরা ভোক্তার নিকট তুলে ধরার স্বার্থ্যে বিজ্ঞাপন দিতে চাচ্ছেন। এবার সেই কাজের জন্য যোগাযোগ করলেন গুগলের সাথে। গুগল আপনাকে কিছু অর্থের বিনিয়মে উক্ত কাজ গুলো করে দিবে বলে জানালো। 

গুগল যেহেতু একটি অনলাইন বিজ্ঞাপন প্লাটফর্ম সে নিজে তো বিজ্ঞাপন গুলো সবার মাধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবে না। এক্ষেত্রে তার এমন লোকদের প্রয়োজন যারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পুরো ইন্টারনেট জগৎ জুরে। আর তারা হচ্ছে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। 

এই পর্যায়ে গুগল তাদের সাথে ডিল করে যে, তাদের ব্লগ, ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেলে কন্টেন্টের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন গুলো দেখানো হবে যার মূল্যে তাদের অর্থ প্রদান করা হবে। আর এভাবেই প্রতিটা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এডসেন্সের মাধ্যমে, মূলত এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে অনলাইনের থেকে আয় করে থাকে। 

গুগল এডসেন্স কিভাবে টাকা দেয় ? 

একটা কন্টেন্ট ক্রিয়েটর যখন তার আর্টিকেল, ভিডিও, ফটো বা যা কিছু কন্টেন্ট হিসেবে পরিচিত তা আপলোড করে তখন সেটি অনলাইনে ছরিয়ে যায়। বিভিন্ন স্থান থেকে ওই সকল বিষয়ে ইন্টারেস্টেড মানুষ একত্রিত হয়। এবং তখনই গুগলের এডসেন্স কাজ শুরু করে। 

মানে হচ্ছে প্রতিটি কন্টেন্টের আশপাশে বিভিন্ন উপায়ে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়ে থাকে। ইউটিউবে যখন কোনো ভিডিও দেখেন তখন প্রায়ই খেয়াল করেছেন ভিডিও এর শুরুতে বা মাঝে বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে, মাঝে মাঝে এটা স্কিপ করা যায় আবার মাঝে মাঝে যায় না। এগুলোই হচ্ছে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে প্রোভাইড করা বিজ্ঞাপন। 

এগুলো দেখানোর মাধ্যমেই গুগল এডসেন্স থেকে আয় করা যায়। এবার সাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠবে কত আয় করা যায় বা কিভাবে হিসেব নিকেশ করা হয়? এখানে মূলত Impresion, View. Click এর উপর নির্ভর করে আপনি কত টাকা আয় করতে পারবেন। 

তবে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্ট হচ্ছে লোকেশন, কেউ যদি US থেকে আপনার ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পড়ে বা ইউটিউবে ভিডিও দেখে এবং দেখানো বিজ্ঞাপনের উপর ক্লিক করে থাকে তবে যা মূল্য রেভিনিউ হিসেবে দেয়া হবে, একই কাজটি যদি বাংলাদেশ থেকে কেউ করলে একই মূল্য দেয়া হবে না। 

তাই নিদিষ্ট করে প্রতি ক্লিকে কত টাকা পাবেন তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। যখন গুগল এডসেন্স এপ্রুভ হয়ে যাবে তখন সেখানে থাকা ড্যাশবোর্ড থেকে বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারবেন। আচ্ছা যেহেতু গুগল এডসেস এপ্রুভের ব্যাপারটা কথায় কথায় এসেই পরলো তবে জেনে নিন কিভাবে দ্রুত ও সহজে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়া যায় সে সম্পর্কে।  

গুগল এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়ার উপায়

গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করানো খুবই সহজ। সহজ  বললাম কারন, এডভারটাইজ সংক্রান্ত আর যত গুলো এড নেটওয়ার্ক রয়েছে সেগুলো থেকে সবচেয়ে ভালো, বেশি রেভিনিউ দেয়, এবন সহজে এপ্রুভ করায় গুগল এডসেন্স। উক্ত কাজের জন্য তাদের কিছু নীতিমালা রয়েছে, যা অনুসরণ করে কাজ করলে সহজেই আপনার একাউন্টট এপ্রুভ হয়ে যাবে এবং গুগল এডসেন্স থেকে আয় করতে পারবেন। তবে সব শুরু করার আগে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে গুগল এডসেন্স নীতিমালা গুলো দেখেন নিবেন। 

এডসেন্স এপ্রুভের জন্য অবশ্যই আপনার সাইট বা ইউটিউব চ্যানেল তাদের নির্দেশনা মোতাবেক গড়ে তুলতে হবে। গুগল এডসেন্সে একাউন্ট করে সেখানে এপ্লাই করতে হবে। তারা আপনার সাইট বা চ্যানেল রিভিউ করবে এবং তাদের কাছে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগ্য মনে হলে সেটি এপ্রুভ করে দিবে। সম্পূর্ণ প্রসেসে তারা ৭ থেকে ১৪ দিন সময় নিয়ে থাকে। আচ্ছা, খুব ছোট করে উপায় তো বলে দিলাম এবার কিছু ডিটেইলসে আলোচনা করা যাক।

গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার জন্য কি কি প্রয়োজন হবে? 

প্রথমেই আপনাকে একটি ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করে ওয়ার্ডপ্রেস বা ব্লগারে ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি আপনার নিজের মত করে একটি নিশ বাছাই করে সেই নিশের আলোকে [আপনি যদি নিশ (Niche) কি সেই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তবে এখানে ক্লিক করুন] ওয়েবসাইটে আর্টিকেল পাবলিস্ট করতে হবে। এখানে একটি প্রশ্ন জাগে যে, “ কয়টি আর্টিকেল পাবলিস্ট করতে হবে এডসেন্স এপ্রুভ হওয়ার জন্য? “ আসলে এটার কোনো নির্ধারিত সংখ্যা গুগল কতৃক জানায় নি তবে যারা প্রোফেশনাল, তাদের কাছ থেকে জানা গেছে মোটামোটি ২০ থেকে ২৫ টি আর্টিকেল এবং প্রতি আর্টিকেল ১০০০ ওয়ার্ডের হলে গুগল সেই সাইটটি এপ্রুভ করে দেয়। যদিও অনেকেই এর থেকে অনেক কম আর্টিকেল দিয়েও এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়েছে। 

আর্টিকেল পাবলিস্ট হয়ে গেলে ভালোভাবে ইসইও করে নিতে হবে ভিজিটরের জন্য। যদিও এডসেন্স এপ্রুভ হওয়ার জন্য ভিজিটরের কোনো কন্ডিশন লিপিবদ্ধ করা নেই। তবুও যদি সাইটে ভিজিটরই না আসে তবে গুগল এডসেন্স থেকে আয় হবে কিভাবে? 

এর পরের বিষয় হচ্ছে সাইটে গুরুত্বপূর্ণ পেজ গুলো যেমন : About US, Privacy Policy, Terms and Conditions, Disclaimer, Home ইত্যাদি পেজ গুলো থাকতে হবে। আপনি যদি গুগলে এডসেন্সের গুরুত্বপূর্ণ পেজ গুলো তৈরি করতে না জানেন তবে লিংকটি থেকে গিয়ে দেখে নিন। 

এবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ওয়েবসাইটের জন্য গুগল এডসেন্স এর একাউন্ট তৈরি করা এবং সেই একাউন্টে ওয়েবসাইটটি সাবমিট করার নিয়ম জানা যা পরের ধাপে আলোচনা করছি। 

বিঃ দ্রঃ আপনি যদি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নয় বরং ইউটিউব চ্যালেনে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করাতে চান তবে দেখে নিন ইউটিউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করার নিয়ম সম্পর্কে। 

গুগল এডসেন্স একাউন্ট তৈরি ও এপ্লাই করার নিয়ম 

প্রথমেই Google Adsense এর ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে থাকা সাইন ইন অপশনে ক্লিক করার পর জিমেইল আর পাসওয়ার্ড দিলেই একাউন্টটি ক্রিয়েট হয়ে যাবে। এই পর্যায়ে ড্যাশবোর্ডে Get Started নামক অপশনে ক্লিক করার পর আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন নেম দিতে বলবে। ঠিক ভাবে সাইটের ডোমেইন নেম, ইমেইল এড্রেস দিয়ে সাবমিট করুন। 

এবার একটি কোড দেয়া হবে যা কপি করে আপনার ওয়েবসাইটের <Head> কোড </Head> অংশে পেস্ট করতে হবে। উক্ত কাজটি করা শেষ হলে এডসেন্স এর ড্যাশবোডে ডান লিখাতে ক্লিক করবেন। 

যদি সব ঠিক ঠাক করতে পারেন তবে গ্রিন চিহ্ন দেখাবে এবং নতুন ড্যাশবোর্ডে লিখা থাকবে আপনার ওয়েবসাটটি তারা রিভিউ করবে যদি আপনার ওয়েবসাইট সব দিক থেকে পার্ফেক্ট হয় তবে ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে আপনার কাছে একটি কনফর্মেশন মেইল আসবে। যেখানে উল্লেখ্য থাকবে আপনার ওয়েবসাইটে গুগলে এডসেন্স এপ্রুভ হয়েছে। এবার সেখান থেকে আয় করতে পারবেন এডসেন্স এর এড বসিয়ে। 

ইতিকথা 

পরিশেষে এই ছিলো গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আর্টিকেল যেখানে Adsense জরিত সকল বিষয়ে সহজ ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যদিও আর্টিকেলে খুব ব্যাসিক ভাবে সব ব্যাপার গুলো বোঝানো হয়েছে এবং এডসেন্স একটি বৃহৎ প্রোগ্রাম তবুও ব্যাসিক ধারনা নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তীতে গুগল এডসেন্সের পুরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়, সমস্যার সমাধান জানতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ।

Visited 5 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here