ব্যায়াম কেন করবো? প্রতিদিন ব্যায়াম করার উপকারিতা

0
17

ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ – এই বিষয়টা আমাদের প্রায় সবারই টুকটাক জানা আছে। নিয়ম মেনে সঠিকভাবে ব্যায়াম করতে হয়। ভুল পদ্ধতিতে ব্যায়াম করলে শরীরে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়া এটি করতে হয় নিয়মিত। এই ধরলাম, আবার ছেড়ে দিলাম – এভাবে ব্যায়াম করাটা অনুচিত। প্রতিদিন হালকা ধরনের হলেও ব্যায়াম করা উচিত। সহজ এটি করার মাধ্যমে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করা উচিত আমাদের।

আমাদের শরীর হলো অনেকটা যন্ত্রের মত। এটিকে অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখলে অনেক সময় বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে। এর জন্য দেহকে চাঙ্গা এবং সচল রাখার জন্য ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

শারিরীক কসরত না করা শরীরের জন্য বিভিন্ন কারনে ক্ষতিকর। ব্যায়াম কেন শরীরের জন্য উপকারী, তার জন্য বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

এমনই বেশকিছু কারণ আপনাদের শেয়ার করতে চাই। আজকের বিষয় হলো – ব্যায়াম করার উপকারিতা নিয়ে।

তো চলুন, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ জেনে নেইঃ

শরীরের স্থূলভাব দূরীকরণে ব্যায়াম

আপনাদের আগেই বললাম যে, ব্যায়াম দেহকে চাঙ্গা করে। এই চাঙ্গা ভাবটা না থাকলে শরীর স্লো হয়ে যায়, শরীরের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।

শরীর ধীর হয়ে যাওয়ার কারণে হাঁটতে চলতে ইচ্ছে করেনা। ইচ্ছা থাকেনা কোনো কাজ করারও, যা একটি মারাত্মক সমস্যা। এটি হলো স্থূলতা।

একজন মানুষের প্রতি সপ্তাহে যেকোনো ধরনের কসরত ১৫০ মিনিট করা প্রয়োজন। যদি ভারি ব্যায়াম হয়, তাহলে ৭৫ মিনিটই যথেষ্ট। তাই নিজেকে স্থূলভাব থেকে বেরিয়ে নিজেকে সচল রাখার জন্য ব্যায়াম উপকারি।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

এই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই কোনো না কোনো রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ততার জন্য বহু অংশে তারা নিজেরাও দায়ী থাকে।

বিভিন্ন রোগ থেকে পরিত্রাণের জন্য দরকার নিয়মিত ব্যায়াম করা। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল থাকে। ফলে শরীর থেকে অনেকটাই রোগমুক্ত।

আমাদের দেশের অনেক মানুষই কেমন আছেন যারা শরীরে রোগ হলে ডাক্তারের পিছনে দৌড়ান এবং যত্রতত্র ঔষধ সেবন করেন। এটি মারাত্মক ভুল।

সকালে জগিং করুন; কিছু হালকা ধরনের অথবা ভারী ধরনের ব্যায়াম করুন। নিজের লাইফ স্টাইল ঠিক করুন।

তাহলে শরীর‌ থাকবে রোগমুক্ত, প্রফুল্ল এবং ডাক্তারের কাছে এত দৌড়ানোর প্রয়োজন থাকবে না ইনশা আল্লাহ্।

শরীরের নম্রতা বজায় থাকা

এমন অনেক সময় দেখা যায় যে, সামান্য কোনো কারণে হাত অথবা ঘাড় মচকে যায় অথবা বিভিন্ন রগে টান লাগে। এর ফলে ভারী সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের।

আমাদের বডি ফ্লেক্সিবল না থাকার কারণে এরকম হয়। বডি ফ্লেক্সিবিলিটি বলতে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের নমনীয়তাকে বোঝানো হয়েছে।

সাধারণত, এটি করার সময় আমাদেরকে হাত-পা ফুটে আগের চেয়ে বেশি একটিভ অনুভূত হয়। মূলত, নমনীয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ এরকম হয়।

আরো পড়ুন : স্বাস্থ্য রক্ষায় আপনার করনীয় 

নিয়মিত কসরত করলে ঘাড় হাত-পা এগুলো মচকে যাওয়া থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এটি অন্যতম উপকারী দিক।

কাজের আগ্রহ বৃদ্ধি

যারা সাধারণত ব্যায়াম করেন না, তাদের অনেকেই অলসতা রোগে আক্রান্ত। সারাদিন শুয়ে বসে থাকলে, শরীরের চাঞ্চল্য ও গতি কমে যায়। ফলে, কাজের আগ্রহ কমে যায় ও দেহে অলসতা পায়।

এজন্য প্রতিদিন ভোরে কমপক্ষে ১৫ মিনিট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। এটি করলে শরীরের প্রতিটি কোষে দরকারি অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ হয়।

এর ফলে দেহে প্রফুল্লতা অনুভূত হয় এবং কাজে উদ্দীপনা পাওয়া যায়। কাজের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।

দেহের শক্তিবর্ধনে

মোটামুটি ভারি ধরনের ব্যায়াম করলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়। যেমনঃ পুশআপ করলে হাতের মাংশপেশি মজবুত হয় ও হাতে জোর বাড়ে।

এছাড়াও রয়েছে থাই এর বিশেষ ব্যায়াম। যার ফলে থাইয়ের মাংশপেশি শক্ত হয় ও সে জায়গায় শক্তি বাড়ে। এমনই আরও বিভিন্ন উপায় রয়েছে শরীরের বিভিন্নতা অনুসারে।

যারা নিয়মিত করেন, তাদের দেহে স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে শক্তি বেশি থাকে। তাই আপনিও নিয়মিত করুন। এটি শরীরের শক্তিবর্ধনের জন্য উপকারি।

ডায়েট কন্ট্রোলের জন্য উপকারী

অনেকেই অনেক মোটা এবং ওজন বেশি। তাই হাঁটাচলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে সমস্যা হয় তাদের। অল্প পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে ওঠেন অনেকেই।

এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকার জন্য ব্যায়াম উপকারি। নিয়মিত কিছু কসরত শৃঙ্খলার সাথে করলে মেদ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ব্যায়াম করলে সাধারণত আমাদের শরীর থেকে ক্যালরি বার্ন হয়। ফলে, যারা বেশি মোটা তাদের শরীরের ওজন কমে ও স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।

যারা ডায়েট কন্ট্রোল করার কথা ভাবছেন, তারা এক্সপার্টদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করতে পারেন।

রাতের আরামদায়ক ঘুম

নিয়মিত ব্যায়াম করলে রাতে ভাল ঘুম হয়। শরীর অলস রাখলে রাতে সহজে ঘুম আসেনা। এজন্য দেখা যায়, যারা সারাদিন কোনো কাজ করেন, তাদের এ সমস্যা কম হয়।

আর এটি হলো পরিশ্রমভিত্তিক একটি কাজ। এটি করলে অলসতা ভেঙে যায়,শরীর ক্লান্ত হয়। ফলে রাতে ভাল ঘুমের সম্ভাবনা থাকে।

তবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম করবেন না। কারণ, ঘুমের পূর্বে করলে শরীর চাঙ্গা হয়ে যেতে পারে। ফলে, উদ্দীপনার কারণে ঘুম ব্যাহত হতে পারে।

তাই চেষ্টা করবেন রাতে যদি একান্তই ব্যায়াম করতে হয়, তাহলে ঘুমের অন্তত ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগেই ব্যায়াম সেরে ফেলার।

অনেকেই একটা কথা বলে থাকেন যে, নিজের দেহকে অলস ফেলে রাখা ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং তার সাথে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার ও পানি পান করুন।

 

Visited 2 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here