মাথা ব্যথা কমানোর উপায় (করণীয়, বর্জনীয়, ১০টি উপায় ও ব্যায়াম) 

0
2
মাথা ব্যথা কমানোর উপায় (করণীয়, বর্জনীয়, ১০টি উপায় ও ব্যায়াম) 

প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে? বুজতে পারছেন না কি করবেন? কেনোই বা হলো এই মাথা ব্যাথা আর কিভাবে মিলবে প্রশান্তি? তবে মাথা ব্যথার কারণ, মাথা ব্যথা কমানোর উপায় ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

আসলে মাথা ব্যথা হয়না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। এটা কোনো জটিল কোনো রোগ নয় সাধারণ একটা ব্যাপার। মাঝেমধ্যেই আমাদের এই মাথাব্যথার সমস্যা হয়ে থাকে, সেজন্য আমরা মাথা ব্যথার সমস্যা থেকে বাঁচতে অনেক ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকি, কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন ওসুধ না খেয়েও মাথা ব্যথা কমানো সম্ভব বিভিন্ন উপায়ের মাধ্যমে।

আপনি যদি মাথা ব্যথা কমানোর উপায় গুলো সঠিকভাবে মেনে চলেন তাহলে আপনার কিছুক্ষণের মধ্যেই মাথাব্যথা অনেকটাই কমে যাবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমরা এখনই জেনে নেই মাথা ব্যথা কমানোর উপায় গুলো। 

Table Of Contents
  1. মাথা ব্যথা কমানোর উপায়
  2. মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায়
  3. মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়
  4. ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয় 
  5. মাথা ব্যথা কমানোর ব্যায়াম
  6. মন্তব্য 

মাথা ব্যথা কমানোর উপায়

আজকের ব্যস্ত শহরে যানযাট, কাজ, চিন্তার ও অনেক মানুষের ভিড়ে মাথাব্যথা একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আপনি যদি প্রায়ই মাথা ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে এই মাথা ব্যথার কারণ কি সেটা জানা ও সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়ে। আপনাকে শুরুতেই বলে রাখি, মাথা ব্যথা আসলে কোন ধরনের রোগ নয়, মাথা ব্যথা একটি উপসর্গ মাত্র।

আপনার সাধারণ ঘুমের পরিবর্তন অথবা কম ঘুমানো, ঠিক সময়ে না খাওয়া, কম পানি খাওয়া, মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা ইত্যাদির কারণে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। তাই আপনার জন্য আজ আমি মাথা ব্যথার কারণ গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি মাথা ব্যথা কমানোর উপায়, ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয় এবং মাথা ব্যথা কমানোর ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। শুরু করা যাক মাথা ব্যাথার কারণ জানানোর মাধ্যমে। 

মাথা ব্যথার কারণ 

যেমনটা বলেছিলাম বিভিন্ন কারণে মাথা ব্যাথা হতে পারে। মাথা ব্যথার অনেকগুলি কারণ রয়েছে, যার মধ্যে কিছু অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি গুরুতর। বেশ কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে যে কিছু খাদ্য তালিকা এবং জীবনধারার কারণ মাথা ব্যথার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এগুলো হলো: 

  • ঘুমের অভাব
  • পুষ্টির অভাব
  • পানিশূন্যতা
  • ক্যাফিন প্রত্যাহার
  • অ্যালকোহল ব্যবহার
  • কম খাওয়া
  • ব্রেন টিউমার
  • মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ
  • কিছু খাবার যেমন চকোলেট বা কিছু ধরনের পনির
  • অত্যন্ত উচ্চ রক্তচাপ
  • দুশ্চিন্তা
  • মানসিক চাপ, ইত্যাদি।

এখন কারণ তো জানা হলো, এবার প্রশ্ন হচ্ছে মাথা ব্যাথা হলে তা কমানোর উপায় কি? সে বিষয়ে স্ট্যাডি করে নিম্ম লিখিত ১০ টি কার্যকরী উপায় সম্পর্কে জেনেছি যা এখানে উল্লেখ্য করা হলো। 

মাথা ব্যথা কমানোর ১০টি উপায়

আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি মাথা ব্যথার কারণ গুলো কি। কিন্তু কথা হল মাথাব্যথা কমানোর উপায় কি? আসলে মাথা ব্যথা কমানোর বেশ কিছু উপায় রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১০টি উপায় আপনার সাথে এখন আমি শেয়ার করবো। আপনি যদি মাথাব্যথা কমানোর ১০টি উপায় ঠিকঠাক মতো অবলম্বন করেন তাহলে অবশ্যই আপনার দ্রুত মাথা ব্যথা কমে যাবে ইনশাআল্লাহ।

পানি পান করা

ডিহাইড্রেট হয়ে গেলে অনেকেরই মাথা ব্যথা হয়। তাই ডিহাইড্রেশন জনিত মাথা ব্যথার প্রতিকার বা এড়ানোর সবচেয়ে সহজ এবং দ্রুততম উপায় গুলির মধ্যে একটি হলো বেশি করে পানি পান করা।

পর্যাপ্ত খাবার খান

জানি মাথা ব্যাথা থাকলে কোনো কিছু করতে কিংবা খেতেও ভালো লাগে না, তবে আপনি যদি কিছুক্ষণ কিছু না খেয়ে থাকেন তবে রক্তের শর্করার পরিমাণ কম থাকার কারণে আপনার মাথা ব্যাথা হতে পারে। তাই এখনো স্বাস্থ্যকর কিছু খাওয়া এবং পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া, সাধারণভাবে, মাথাব্যথাতেও সাহায্য করতে পারে। এক্ষেত্রে যে খাবার গুলো কার্যকর হবে সেগুলো হলো: 

  • কাজুবাদাম
  • কালো শিম
  • চিয়া এবং কুমড়া বীজ
  • পালং শাক

পরিমাণ মত ঘুম

পৃথিবীর সব সমস্যার সমাধান হলো ঘুম। ঘুমে আছেন মানে পৃথিবীর সমস্যার থেকে দুরে আছেন। যাইহোক, ঘুমের অভাব আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপায়ে ক্ষতিকারক হতে পারে এবং এমনকি কিছু লোকের মাথাব্যথাও হতে পারে। বেশ কিছু গবেষণা থেকে দেখা গেছে যে, খারাপ ঘুমের গুণমান এবং অনিদ্রা মাথা ব্যথার ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতার সাথে যুক্ত। তাই মাথা ব্যথা কমানোর জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।

ক্যাফিইনযুক্ত চা বা কফি পান করুন

আপনি যখন মাথা ব্যথা অনুভব করছেন তখন চা বা কফির মত ক্যাফিইনযুক্ত পানীয় গুলিতে চুমুক দিলে আরাম পারে থাকবেন। ক্যাফিইন মেজাজ ঠিক করে, এক্টিভ করে এবং রক্তনালীকে সংকুচিত করে, যার সবগুলোই মাথা ব্যথা কমাতে প্রভাব ফেলে।অতএব, যাদের ঘন ঘন মাথাব্যথা হয়, তাদের ক্যাফিইন গ্রহণের বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত।

যোগব্যায়াম দিয়ে আরাম করুন

যোগব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমানো, নমনীয়তা বৃদ্ধি, ব্যথা হ্রাস এবং আপনার সামগ্রিক জীবনের মান উন্নত করার একটি চমৎকার উপায়। যোগব্যায়াম করা এমনকি আপনার মাথা ব্যাথার তীব্রতা এবং ফ্রিকোয়েন্সি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

একটি গবেষণায় দীর্ঘস্থায়ী মাইগ্রেনে আক্রান্ত ৬০ জনের উপর যোগ থেরাপির প্রভাব তদন্ত করা হয়েছে। শুধুমাত্র প্রচারিত যত্ন গ্রহণকারীদের তুলনায় থেরাপি এবং প্রচলিত যত্ন ভাই গ্রহণকারীদের মধ্যে মাথা ব্যাথার ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতা বেশি হ্রাস পেয়েছে।

২০২০ সালের একটি পর্যালোচনা যাতে ছয়টি গবেষণা অন্তর্ভুক্ত থাকে যে যোগব্যায়াম টেনশন-টাইপ মাথা ব্যথা রোগীদের মাথা ব্যথার ফ্রিকোয়েন্সি, সময়কাল এবং তীব্রতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

তীব্র গন্ধ এড়িয়ে চলুন

পারফিউম এবং পরিষ্কারের পণ্যগুলির মতো তীব্র গন্ধ কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। মাইগ্রেন বা টেনশন এর মাথাব্যথা অনুভব করেছেন এমন ৪০০ জনের উপর একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে তীব্র গন্ধ, বিশেষ করে পারফিউম, প্রায়ই মাথাব্যথা শুরু করে। গন্ধের প্রতি এই অতি সংবেদনশীলতাকে অসমোফোবিয়া বলা হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে এটি সাধারণ। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি গন্ধের প্রতি সংবেদনশীল হতে পারেন, পারফিউম এড়িয়ে চলুন। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

চিবিয়ে না খাওয়ার চেষ্টা করুন 

চুইংগাম শুধু আপনার চোয়াল নয় আপনার মাথায়ও আঘাত করতে পারে। আপনার আঙ্গুলের নখ, ঠোট, আপনার গালের ভেতরের অংশ বা কলমের মতো হাতের জিনিস চিবানোর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কুঁচকানো এবং আঠালো খাবার এড়িয়ে চলুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনি ছোট কামড় খেয়েছেন। আপনি যদি রাতে দাঁত পিষেন, আপনার দাঁতের ডাক্তারকে মাউথ গার্ড সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। এটি আপনার সকালের মাথা ব্যথা কমাতে পারে।

কম আলোতে থাকুন 

উজ্জল বা চকচকে আলো, এমনকি আপনার কম্পিউটার স্ক্রিন থেকেও মাইগ্রেনের মাথা ব্যথা হতে পারে। আপনি যদি তাদের প্রবণ হন তবে দিনের বেলা আপনার জানালা গুলোকে ব্ল্যাকআউট পর্দা দিয়ে ঢেকে দিন। বাইরে সানগ্লাস পরুন। আপনি আপনার কম্পিউটারে অ্যান্টি-গ্লেয়ার স্ক্রিন যোগ করতে পারেন এবং আপনার আলোর ফিক্সচারে ডেলাইট-স্পেকট্রাম ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব ব্যবহার করতে পারেন।

একটি কোল্ড প্যাক রাখার চেষ্টা করুন

মাইগ্রেন থাকলে কপালে কোল্ড প্যাক রাখুন। তোয়ালে মোড়ানো বরফের টুকরো, হিমায়িত শাকসবজির একটি ব্যাগ বা এমনকি ঠান্ডা ঝরনা ব্যথা কমাতে পারে। ১৫ মিনিটের জন্য আপনার মাথায় কম্প্রেস রাখুন, এবং তারপর ১৫ মিনিটের জন্য বিরতি নিন।

হিটিং প্যাড বা হট কম্প্রেস ব্যবহার করুন

আপনার যদি টেনশনের মাথাব্যথা থাকে তবে আপনার ঘাড়ে বা আপনার মাথার পেছনে একটি হিটিং প্যাড রাখুন।আপনার যদি সাইনাস মাথাব্যথা হয়, যে জায়গায় ব্যথা হয় সেখানে একটি গরম কাপড় ধরুন। একটি উষ্ণ ঝরনা এছাড়াও কৌশল করতে পারেন।

বোনাস টিপস: দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকুনঃ অনেকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপের কারণে মাথাব্যথার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। তাই যদি আপনার প্রচুর পরিমাণে দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ থেকে থাকে তাহলে আজ থেকেই এগুলো থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। 

মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায়

আপনি হয়তো জানলে অবাক হবেন ওষুধ না খেয়েও মাথার যন্ত্রণা কমানো যায়। শুধু আপনাকে মেনে চলতে হবে ঘরোয়া কয়েকটি উপায়। আর তাতেই কমে যাবে অসহ্যকর এই মাথা যন্ত্রণা। আপনার শরীর প্রচন্ড আরাম পাবে। আমাদের বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময়ে মাথার যন্ত্রণা দেখা দেয়। অত্যাধিক রোদে থাকার কারণে হোক অথবা গ্যাসের কারণে। কিংবা অন্য় কোন কারনে। মাথার যন্ত্রণা করার সমস্যাটি খুবই স্বাভাবিক একটি সমস্যা।

আসলে এই সমস্যা দেখা দিলে অধিকাংশ মানুষই খুব তাড়াতাড়ি কমিয়ে ফেলতে ওষুধ সেবন করে থাকেন। তবে আপনি কি জানেন ওষুধ না খেয়েও মাথার যন্ত্রণা কমানো সম্ভব! শুধু আপনাকে মেনে চলতে হবে ঘরোয়া কিছু উপায়। আপনার সুবিধার্থে নিচে মাথা যন্ত্রণা কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো দেওয়া হলো: 

কপালে বরফের প্যাক ব্যবহার 

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কখনো মাথার যন্ত্রণা দেখা দেয় তাহলে কপালে বরফের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। কিছু সংখ্যক বরফের টুকরো একটি তোয়ালেতে মোড়ে নিন। কিংবা ফ্রিজে সবজি রাখার যে মুখ মোড়া ব্যাগ থাকে ঘরে, সেটাতেও বরফ ভরে নিতে পারেন। তারপর বরফ মোড়া ব্যাগ কিংবা তোয়ালে দিয়ে কপালে সেঁক দিন। কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধরে কপালে বরফের সেঁক দিন। তবে যদি আপনার বাড়িতে বরফ না থাকে, সেক্ষেত্রে ঠান্ডা জলে স্নান করে নিতে পারেন। তাতে করেও আপনার মাথার যন্ত্রণা কমে যাবে।

গরম জলের সেঁক

আপনার যদি সাইনাসের সমস্যা থেকে থাকে, তবে সেক্ষেত্রে আপনি গরম জলের সেঁক দিতে পারেন। আপনার ঘাড়ে এবং মাথার পিছনে গরম সেঁক দিন। একটা কাপড় গরম করে আপনার শরীরের উক্ত গুলোতে সেঁক দিতে পারেন। এটি আপনার মাথার যন্ত্রনা কমানোর জন্য দারুন ভাবে কাজ করবে।

চুল খুলে দিন 

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অনেক সময় মাথার চুল শক্ত করে বেঁধে রাখার ফলেও মাথার যন্ত্রণা হওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন অবস্থাতে আপনার মাথার চুল খুলে দিন অথবা আলগা করে দিন। এতে করে আস্তে আস্তে আপনার মাথার যন্ত্রণা কমে যাবে।

ঘরের আলো কমিয়ে দিন

অনেক সময় অত্যাধিক আলোর মধ্যে থাকার ফলে, দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার, স্মার্টফোনের স্ক্রিনের আলোর সামনে থাকার ফলেও আপনার মাথার যন্ত্রণার সমস্যা হতে পারে। তাই আপনি আপনার মাথার যন্ত্রণা কমাতে আপনার ঘরের আলো কমিয়ে দিন। অল্প আলো অথবা চোখের কষ্ট যেন না হয় এমন আলোর আপনি আপনার ঘরে জ্বালিয়ে রাখতে পারেন। কিছুটা সময় অল্প আলোর মধ্যে আপনার চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন।

মুখে চুইংগাম চাবান

আপনি যদি অনেকক্ষণ ধরে মুখে চুইংগাম চাবান, তাহলেও আপনার মাথার যন্ত্রণা হতে পারে। তাছাড়া রাস্তার খাবার খাওয়ার ফলে, বেশি করে চিবোতে হয়, এমন খাবার খাওয়ার ফলেও মাথা যন্ত্রণার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন 

বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল না থাকার ফলেও মাথা যন্ত্রণার সমস্যা হতে পারে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সারাদিনে অন্তত ১০ গ্লাস থেকে ১২ গ্লাস জল পান প্রয়োজন। শরীরে যদি জলের ঘাটে দেখা দেয় সে ক্ষেত্রেও মাথা যন্ত্রণার সমস্যা হতে পারে।সেজন্য এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে জল পান করা প্রয়োজন।

কফি খেতে পারেন

আপনার মাথার যন্ত্রণা যখনই আস্তে আস্তে শুরু হবে তখনই আপনি কফি খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার মাথা যন্ত্রণার সমস্যা হওয়ার শুরুতেই কমে যেতে পারে। তবে আপনি যদি অত্যাধিক পরিমাণে কফি খান তাহলে আপনার আলাদা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার শরীরে জলের ঘাটতি হতে পারে।

কপাল এবং ঘাড়ে ম্যাসাজ করুন

আপনার যদি মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা করে, তাহলে আপনার কপাল এবং ঘাড়ে ম্যাসাজ করতে পারেন, এক্ষেত্রেও অনেক আরাম পাওয়া যায়। এবং মাথা যন্ত্রণার সমস্যা কমে।

লাল চায়ের সঙ্গে আধা মিশিয়েও খান 

আমরা প্রায় সবাই জানি আদা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আপনার মাথা যন্ত্রণা করলে লাল চায়ের সঙ্গে আধা মিশিয়েও খেতে পারেন। এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, আদার গন্ধ শুঁকলেও মাথার যন্ত্রণার সমস্যা কমে যায়।

ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয় 

সাধারণ চিকিৎসা হিসেবে ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয় হিসাবে রোগীকে প্যারাসিটামল, এন্টি-হিস্টামিন জাতীয় ঔষধ খেতে হবে। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার (যেমনঃ ডাবের পানি, ফলের শরবত, খাবার স্যালাইন ইত্যাদি) খেতে হবে। এর পাশাপাশি এই সময় বিভিন্ন ধরনের ফল, শাকসবজি সহ পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া পর্যন্ত। আশা করি ঠান্ডায় মাথা ব্যথা হলে করণীয় সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

মাথা ব্যথা কমানোর ব্যায়াম

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মাথা ব্যাথার সমস্যাটি নতুন কিছু নয়। অফিসে কাজের মাঝে অথবা বন্ধুদের সাথে দেদার আড্ডায়, মাইগ্রেনের এই সমস্যা যখন তখন হাজির হয়। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরার মত শারীরিক সমস্যাও দেখা দিয়ে থাকে। মাইগ্রেনের সমস্যা একবার শুরু হয়ে গেলে সেটা সহজে যেতে চাই না।

আর এই ব্যথাটি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেনের ওষুধ খেয়ে আসছে। তারপরও এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি, চাইলে মাইগ্রেনের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ভরসা রাখতে পারেন ব্যায়ামের উপরেও। এই পর্যায়ে এমন কিছু ব্যায়াম সম্পর্কেই জানাবো। 

বজ্রাসন

প্রস্তুতি:

  • প্রথমে একটি সমতল মেঝেতে বসুন।
  • আপনার পিঠ সোজা রাখুন এবং কাঁধগুলি শিথিল করুন।
  • আপনার হাঁটুগুলি একসাথে মুড়িয়ে নিন এবং পায়ের পাতাগুলি আপনার সামনে রাখুন।
  • আপনার পায়ের আঙ্গুলগুলি স্পর্শ করার চেষ্টা করুন।

ব্যায়াম:

  • ধীরে ধীরে আপনার শ্বাস নিন এবং আপনার মেরুদণ্ডের উপরের অংশটি সোজা করুন।
  • আপনার হাঁটুগুলি আপনার বুকের দিকে টেনে আনুন যতক্ষণ না আপনার পায়ের পাতাগুলি আপনার পেটের স্পর্শে আসে।
  • আপনার হাঁটুগুলি আপনার বুকের বিরুদ্ধে চাপ দিন।
  • আপনার শ্বাস ধরে রাখুন এবং 10-15 সেকেন্ডের জন্য এই অবস্থানে থাকুন।
  • ধীরে ধীরে আপনার শ্বাস ছেড়ে দিন এবং আপনার হাঁটুগুলি মেঝেতে ফিরিয়ে আনুন।
  • 3-5 বার পুনরাবৃত্তি করুন।

আপনি যদি নিয়ম করে রোজ এই আসন করেন তাহলে আপনার মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

উষ্ট্রাসন

উষ্ট্রাসন, যার অর্থ “উটের পোজ,” হল একটি পিঠ বাঁকানোর আসন যা আপনার শরীরের নমনীয়তা, ভারসাম্য এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

পূর্ব প্রস্তুতি:

  • একটি সমতল মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসুন।
  • পায়ের আঙ্গুল পেছনে রেখে, পায়ের পাতা মেঝেতে সমানভাবে রাখুন।
  • হাঁটু সামান্য আলাদা রাখুন।
  • মেরুদণ্ড সোজা রাখুন।
  • হাত দুটি কোলে রাখুন।

ব্যায়াম:

  1. শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে শরীরকে সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে নিন।
  2. হাত সামনের দিকে প্রসারিত করুন এবং মাথার উপরে স্পর্শ করার চেষ্টা করুন।
  3. কনুই সামান্য বাঁকিয়ে রাখুন।
  4. মেরুদণ্ড সোজা রাখার চেষ্টা করুন।
  5. ৫-১০ সেকেন্ড ধরে এই অবস্থানে থাকুন।
  6. শ্বাস ছাড়ুন এবং ধীরে ধীরে শরীরকে আবার সোজা করুন।

শশাঙ্গাসন

শশাঙ্গাসন ব্যায়াম করার জন্য, আপনাকে প্রথমে হাঁটু গেড়ে বসতে হবে। তারপর, আপনার হাত দুটো মাথার উপরে তুলে সোজা করে দাঁড়াতে হবে। আপনার পিঠ সোজা রাখুন এবং আপনার শরীরকে এগিয়ে ঝুঁকান। আপনার হাত দুটো আপনার পায়ের আঙ্গুল স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। কিছুক্ষণ এই অবস্থায় থাকুন, তারপর আবার সোজা হয়ে দাঁড়ান। ব্যাস এই ভাবে ব্যায়াম গুলো করতে থাকলে আপানার মাথা ব্যাথা কমে আসতে থাকবে। 

মন্তব্য 

আশা করছি মাথা ব্যথা কমানোর উপায় ( যেখানে করণীয়, বর্জনীয়, ১০টি উপায় ও ব্যায়াম সম্পর্কে জানানো হয়েছে) সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটি থেকে আপনার মাথা ব্যথা কমানো এবং মাথা যন্ত্রণা কমানোর অনেকগুলো উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। আশা করছি এই পোস্টটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এমনই গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ টিপস পেতে অনুসরণ করুন বাংলা আলো ওয়েবসাইটের স্বাস্থ টিপস ক্যাটাগরিটি। ধন্যবাদ। 

Visited 1 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here