হোম লোন কিভাবে পাওয়া যাবে | ব্যাংক থেকে হোম লোম নেয়ার উপায় 

0
8

বাড়ি বানানো আমাদের একটি অন্যতম স্বপ্ন, যা বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করতেই থাকি। হোম লোন এর ব্যবস্থা আমাদের সেই চেষ্টার পরিমান অনেকটাই লাঘব করে দিয়েছে।

 

সাধারণত আমরা জানি বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে অর্থ সংকটে পড়লে হোম লোন নেয়া হয়ে থাকে। নতুন বাড়ি নির্মাণের কাজ হোক, ফ্ল্যাট ক্রয় কিংবা পুরনো বাড়ির সংস্কার – এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহের মাধ্যমে যে সকল আর্থিক ঋণ নেওয়া হয়ে থাকে তার পদ্ধতিটি ই হলো হোম লোন

 

এই পদ্ধতি টি সম্পন্ন করতে হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নোটিশ অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়। আপনি যদি লোন নেয়ার চিন্তা করে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেল টি কিন্তু শুধু মাত্র আপনার জন্য।

 

আজকের এই আর্টিকেল টি যদি আপনি সম্পুর্ন পরেন তাহলে তার মাধ্যমে আপনি হোম লোন সংক্রান্ত নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন, যার ফলে আপনার লোন নেওয়ার যাত্রা অনেক টাই সহজ হয়ে যাবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক হোম লোন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সমূহ….

 

হোম লোন ইসলামী ব্যাংক

 

ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই হোম লোন নিতে পারেন। এই লোনের মাধ্যমে আপনি আপনার সকল ধরনের বাড়ি তৈরী সংক্রান্ত সকল ধরনের কাজ গুলো সম্পন্ন করতে পারবেন। আপনার স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করতে ইসলামী ব্যাংক হোম লোন দিয়ে প্রতিনিয়ত আপনাকে সহযোগিতা করছে।

 

আর আমরা আপনাকে সহযোগিতা করবো  লোন ইসলামী ব্যাংক সংক্রান্ত সকল প্রকার প্র‍য়োজনীয় তথ্য জানিয়ে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক…

 

আবেদন করার নিয়মঃ

 

সার্ভিস টির নামঃ HPSM

 

পরিমানঃ দশ লক্ষ অর্থাৎ এক মিলিয়ন। 

 

১. বাড়ি নির্মান এর ক্ষেত্রে – ৬০ শতাংশ তবে দশ মিলিয়নের বেশি পরিমান হোম লোনের আবেদন করা যাবে না।

 

২. আগে থেকে তৈরি বাড়ি, পুনরায় সংস্কার এর ক্ষেত্রে –  ৫০ শতাংশ তবে এক্ষেত্রেও দশ মিলিয়নের বেশি পরিমান টাকার জন্য আবেদন গ্রহণ যোগ্য হবে না।

 

৩. নতুন ফ্ল্যাট কিংবা অ্যপার্টমেন্ট ক্রয়ের ক্ষেত্রে – ৫০ শতাংশ কিন্তু অবশ্যই ৭.৫ মিলিয়ন এর থেকে বেশি পরিমান হোম লোন নেয়া যাবে না। 

 

লোনের মেয়াদ কালঃ 

 

সর্বোচ্চ ১৫ বছর, নিন্মে, আপনি লোন নেবার আগে ব্যাংক কর্মকর্তা দের সাথে কথা বলে বিবেচনা করে  নিতে পারেন।

 

ইসলামী ব্যাংক লোনের জন্য যে সকল প্রার্থী গন আবেদন করতে পারবেনঃ

 

সর্বোচ্চ ৬৫ বছর বয়সী যে কেউ আবেদন করতে পারবেন। তবে অবশ্য প্রার্থী গনের এই লোন সংক্রান্ত বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হবে। যে কোনো ধরনের চাকুরী করে এমন, জমির স্থায়ী মালিক, পেশাজীবী ইত্যাদি প্রার্থী – রা খুব সহজেই  ইসলামী ব্যাংক – এ লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

 

হোম লোন এর রিটার্নের হারঃ

 

লোনের সময় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৫% রিটার্ন হার ধার্য করা হয়। আবার কিছু কিছু সময় ইসলামী ব্যাংক এর সম্মানিত কর্তৃপক্ষ বৃন্দ গন বিবেচনা করে রিটার্ন হার ধার্য করে থাকেন।

 

যেখান থেকে সহজে আবেদন করতে পারবেনঃ 

 

আপনি আপনার নিকটস্থ অথবা আশে পাশের যে কোন একটি ইসলামী ব্যাংক শাখায় গিয়ে, তাদের কর্মকর্তা দের সাথে আলাপ করে নিয়ে ফর্ম পূরন করে নিলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে। তাছাড়া ও যদি ইসলামী ব্যাংক এর কোনো শাখায় আপনার আগে থেকে করা কোনো সচল একাউন্ট থাকে সেখানেও খুব সহজে আবেদন করতে পারবেন। 

 

ইসলামী ব্যাংক এর হোম লোন গ্রহনের ক্ষেত্রে যে সকল সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যকঃ 

 

ইসলামী ব্যাংক থেকে হোম লোনের আবেদন থেকে শুরু করে লোন উঠানো পর্যন্ত সকল ধাপের কাজ গুলো বুঝে শুনে করবেন। বাইরের কোনো লোকের সাথে কন্টাক্ট করবেন না। অবশ্যই সরাসরি ইসলামী ব্যাংক এর কর্মকর্তা গন এর সাথে কথা বলবেন।

 

ভুল করেও বাইরের কোনো দালালের ক্ষপ্পরে পরবেন না, তাহলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকতে পারে। এই সকল বিষয় গুলো মাথায় রেখে হোম লোনের সকল কাজ সম্পন্ন করবেন।

 

হোম লোন সোনালী ব্যাংক

 

সোনালী ব্যাংক এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা আপনার বহুল কাঙ্ক্ষিত বাড়ি নির্মাণের জন্য লোন প্রদান করতে সর্বদা প্রস্তুত। বাড়ি তৈরীর জন্য সোনালী ব্যাংক কর্তৃক যে লোন প্রদান করা হয় তাকে ”সোনালী নীড় লোন” বলা হয়ে থাকে।

 

কয়েক টি বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক কর্তৃক সোনালী নীড় লোন প্রদান করা হয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক হোম লোন সোনালী ব্যাংক সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য – যা আপনার লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী হবে…

 

সোনালী নীড় লোন এর পরিমাণঃ

 

১. সেমি পাকা বাড়ি তৈরীর ক্ষেত্রে লোন এর পরিমাণ – ৫ লক্ষ টাকা (সর্বোচ্চ)

২. চার তালা পাকা বাড়ি তৈরীর ক্ষেত্রে লোন এর পরিমাণ – ১৫ লক্ষ টাকা (সর্বোচ্চ)

 

সোনালী নীড় লোন এর আবেদনের জন্য যে সকল গুরত্বপূর্ণ কাগজ পত্র প্র‍য়োজনঃ

 

১. জাতীয় পরিচয় পত্র – এর ফটোকপি।

২. পাসপোর্ট সাইজের ছবি। (প্রয়োজন অনুসারে ছবির সংখ্যা নির্ধারন হবে)

৩. স্থায়ী ঠিকানা জানা যাবে এমন কাগজ, যেমনঃ পাসপোর্ট, জন্ম সনদ, চেয়ারম্যান এর সনদ, কমিশনার এর সনদ ইত্যাদি। (এই সকল কাগজের মধ্যে যেকোনো একটি কাগজ হলেই হবে)

৪. প্রার্থীর সম্পুর্ন বায়োডাটা।

৫. সোনালী ব্যাংক এর যেই শাখা থেকে লোন নিবেন, সেই শাখায় থাকা অন্তত ছয় মাস সময়ের সন্তোষ জনক তথ্য এবং বিবরণী থাকতে হবে।

৬. আয়কর শাখার প্রত্যয়ন পত্র।

৭. সচল মোবাইল নাম্বার।

৮. ২য় সাকসেস ফুল বিবরণী লিস্ট।

 

যেখানে আবেদন করতে হবেঃ

 

সোনালী ব্যাংক এর যেই শাখায় আপনার আগে থেকেই করা ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে, সেখান থেকেই আপনার জন্য হোম লোন নেওয়া সুবিধা জনক। কারন এর ফলে সেই শাখা থেকে আপনি বিভিন্ন ধরনের প্র‍য়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নিতে পারবেন।

 

যে সকল প্রার্থী গণ হোম লোন এর জন্য আবেদন করতে পারবে অর্থাৎ প্রার্থীর যে সকল যোগ্যতা থাকা একান্ত প্রয়োজনঃ

 

১. লোনের গ্রাহক অথবা গ্রাহীতা প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।

 

২. যেই জমিতে বাড়ি বানানোর উদ্দেশ্য নিতে হোম লোন নেয়া হচ্ছে, প্রার্থীর অবশ্যই সেই জমির নিজস্ব মালিকানা থাকতে হবে।

 

৩. যেই বাড়ি তৈরীর জন্য লোন নেয়া হবে, সেই বাড়ির ভাড়া এবং যেই প্রার্থী হোম লোন নিচ্ছে তার মাসিক আয় এর পরিমান অবশ্যই লোনের কিস্তির পরিমানের ১.৫০ শতাংশ হতে হবে।

 

৪. কোনো প্রকার ডেভেলপার এর আন্ডারে লোন দেওয়া প্রযোজ্য হবে না।

 

৫. সোনালী ব্যাংক এর যেই শাখা থেকে হোম লোন নেওয়া হচ্ছে সেই শাখায় প্রার্থীর আগে থেকে করা সচল সর্বনিন্ম একটি একাউন্ট থাকতে হবে অথবা একাধিক একাউন্ট থাকতে পারে।

 

৬. যেই স্থানে বা এলাকায় বাড়ি নির্মান করার উদ্দেশ্য নিয়ে লোন নেওয়া হচ্ছে,  সেখানে অবশ্যই পাকা রাস্তার ব্যাবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ এর সচল ব্যবস্থা থাকতে হবে।

 

বাংলাদেশের সকল ব্যাংক গুলোর হোম লোন পদ্ধতি সমুহের দিকে তাকালেই আমরা বুঝতে পারি ইসলামী ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক খুবই ভালো সার্ভিস দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। আপনার আমার স্বপ্নের বাড়ি বাস্তবায়ন করার সুবর্ন সুযোগ করে দিচ্ছে হোম লোন ব্যাবস্থার মাধ্যমে। তাহলে আর দেরি না করে, চিন্তা মুক্ত হয়ে হোম লোন নিয়ে তৈরী করুন আপনার নিজের বাড়ি।

 

Visited 19 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here