–
নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? কোনো ব্যবসা শুরু করতে কি প্রয়োজন তার সঠিক দিক নির্দেশনার খোজে আছেন? তবে আপনি একেবারে ঠিক স্থানে এসেছেন। কারন এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে উৎপাদন মূলক নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে।
ব্যবসা এমন একটি ক্যাটাগরি যা নিয়ে আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। প্রতিদিনই নতুন সব উদ্ভাবনী আইডিয়া মানুষের মাথায় আসছে ব্যবসা সংক্রান্ত। কেউ কেউ সেগুলোকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগিয়ে নিজেকে সফল ভাবে উপস্থাপন করতে পারছে। আবার কেউ অজান্তেই হারিয়ে যাচ্ছে দূর কোথাও।
এই সফলতার কারন কি আবার ব্যর্থতার কারনই বা কি? জানতে হবে সব কিছুই জানতে হবে, যা জানাবো এই আর্টিকেলের মধ্যে। থাকবে ফুল একটি প্যাজেক যেখানে ব্যবসা করার টিপসের পাশাপাশি জানাবো কিছু নতুন ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে যা তথাকথিত অন্যান্য ব্যবসা গুলো থেকে একটু ভিন্ন।
তাহলে শুরু করা যাক আজকের আলোচনার মূল বিষয় গুলো। তবে এক নজরে দেখে নেয়া যাক আর্টিকেলটিতে কোন কোন বিষয় সম্পর্কে জানতে যাচ্ছেন এতে করে পুরো আর্টিকেলের সাইটম্যাপ সম্পর্কে আপনার ধারনা হয়ে যাবে।
উৎপাদন মূলক নতুন ব্যবসার আইডিয়া
১) খেলনা তৈরি
২) পাট দিয়ে তৈরি জিনিসের ব্যবসা
৩) মোবাইল এক্সসোসোরিস তৈরি
৪) মাল্টিপ্লাগ তৈরি
৫) বিভিন্ন প্রকার লাইট তৈরি
৬) স্কচটেপ তৈরির ব্যবসা
৭) শোপিছ রপ্তানি
৮) প্রতিষ্ঠানের জন্য কল সেন্টার
৯) হোস্টিং ব্যবসা
১০) ব্যাটারি চলিত রিক্সা বা অটো তৈরি
তাহলে ইন্ট্রোডাকশন পর্ব থেকে মূল আলোচনায় ইন্ট্রি করা যাক। প্রথমেই নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে কিছু কথা।
নতুন ব্যবসা শুরু করার আগে যা করতে হবে
আসলে প্রথমবার শুরু করা সকল ব্যবসাই নতুন ব্যবসা বলে ধরা হয়। তাই এই কথা সবার জন্যই প্রযোজ্য হবে। যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই বিবেচনায় রাখা উচিৎ যা হচ্ছে:
- পর্যাপ্ত মূলধন
- সুগঠিত পরিকল্পনা
- মানসম্মত স্থান
- লোকবল
- প্রয়োজনীয় ম্যাটারিয়ালসের যথাযথ সাপ্লাই
- মার্কেট এনালাইসিস
- পণ্য বাছাই ও তৈরি
- সঠিক বিপনন ব্যবস্থা
- প্রোডাক্টের গবেষনা
উপরে যে বিষয় গুলোর কথা উল্লেখ্য করলাম সেগুলোর সব কয়টি প্রয়োজন একটি ব্যবসাতে। কোনো টা কমতি রেখে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব না। এখানে কিছু জিনিস আছে যা ব্যবসা শুরু করার আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখতে হয় যেমন “একটি সুন্দর পরিকল্পনা” উদ্যোগ যে গ্রহন করবে তার অবশ্যই নিজের কাজের উপর সম্পুর্ণ বিশ্বাস থাকতে হবে এবং একাগ্রতার সাথে প্রতিটি কার্য পরিচালনা করতে হবে। তবে ব্যবসা শুরুর আগে অবশ্যই মার্কেট এনালাইসিস করে আপনার টার্গেটেড ভোক্তা বা গ্রাহকের চাহিদা ও প্রয়োজন সম্পর্কে ধারনা নিয়ে যথাযথ পণ্য বা সেবার তৈরির পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলা উচিৎ। তাছাড়া আরো জেনে নিতে পারেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সফলতা অর্জনে যা করনীয় সে সম্পর্কে।
ভালো একটি ব্যবসা বাছাই করবেন যেভাবে
আসলে কোনো ব্যবসাই খারাপ না যদি সেটা যথাযথ ভাবে পরিচালনা করা যায় তবে একজন মানুষ কিন্তু সব ধরনের কাজে অভিজ্ঞ নয়। একজন ডাক্টরকে দিয়ে দিয়ে যেমন ম্যাকানিকাল জিনিস তৈরি করাতে পারবেন না তেমনই এখন হস্তশিল্প তৈরিকারী লোককে দিয়ে অনলাইনে ব্যবসা পরিচালনা করানো যাবেনা।
তবে একটা কথা আছে মানুষ পারে না এমন কোনোই কাজ নেই, কিন্তু সেই পারাটার জন্য অবশ্যই উক্ত বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে হবে আর তখন ব্যাপারটা কিন্তু যেমনেরটা তেমনই রয়ে গেলো। তো, এই সব আলোচনা মূলত প্যাক্টিকাল উদাহরণ দিয়ে বিষয় গুলো বোঝানোর জন্য। আসল কথা হচ্ছে আপনার সেই বিষয় নিয়েই আগানো উচিৎ যেটাতে আপনার ভালো লাগা কাজ করে।
দেখা যাবে অনেক অনেক সময় ধরে কাজ করেও অনেক সময় কাজের মুনাফা বা সফলতার দিকটা দেখাই যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে যদি এমন কাজ সিলেক্ট করেন যা আপনার করতে তেমন ভালো লাগে না, কোথাও থেকে শুনেছেন এই কাজটি করলে অর্থ আসে বা এই ব্যবসাতে অনেক লাভ তাই ব্যবসাটি শুরু করেছিলেন – এক্ষেত্রে কিন্তু সহজেই আপনি হাল ছেড়ে দিবেন। আর এই কারনেই ১-২ বছরের মাথায় ৭৫% নতুন স্টার্টআপ ঝড়ে পড়ে।
তাই অবশ্যই সব সময় আপনার ভালো লাগার দিকটাকে পায়োরিটি দিতে হবে, পাশাপাশি আপনি যে সেক্টরে বেশি অভিজ্ঞ ওই সেক্টরেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লেগে পড়ুন। আর্টিকেলে আলোচনা করবো ভিন্ন ভিন্ন ধাচের ১০ টি নতুন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে যা থেকে আপনি বেশ ভালো একটা আইডিয়া পাবেন যে আপনার কোন ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরু করা উচিৎ।
১০ টি উৎপাদন মূলক নতুন ব্যবসার আইডিয়া
যথা সম্ভব চেষ্টা করবো যে ব্যবসা গুলো সম্পর্কে জানাতে যাচ্ছি সেগুলো যেনো ভালো ভাবে বুজতে পারেন এমন ভাবে উপস্থাপন করতে পাশাপাশি ব্যাসিক কিছু তথ্য দিয়ে রাখতে সেই ব্যবসা গুলো সম্পর্কে। একটি ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করার জন্য কয়েকটি বড় মাপের আর্টিকেল প্রয়োজন হবে সেখানে ১ টি আর্টিকেলে ১০ টি ব্যবসায়ের ধারনা দিতে যাচ্ছি। কথাটি বললাম কারন এখানে কোনো ব্যবসা সম্পর্কে ইন-ডিটেইলস আলোচনা করা যাবে না। ব্যাসিক ধারনা দেয়া যাবে কেবল। আপনার যদি কোনো ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইচ্ছা হয় তবে আমাদের ওয়েবসাইটের সার্চ বারে সেই ব্যবসায়ের নাম লিখে সার্চ করুন।
১) খেলনা তৈরি
আপনি কি জানেন পুরো পৃথিবীতে খুব বড় একটি মার্কেট কভার করে রেখেছে কেবল খেলনা! জী হ্যা, প্রতি বছর সারা বিশ্বে ট্রিনিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়ে থাকে। পুরো বিশ্ব বাদ রেখে বাংলাদেশের পেক্ষাপটে দেখা গেলেও প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার খেলনা আমদানি করে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয় চিন থেকে।
এতো বড় একটা চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে খেলনা আমদানি করে অথচ বাংলাদেশে এখন অব্দিও পর্যাপ্ত পরিমাণের খেলনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নেই। এখন বলতে পারেন এগুলো তো অনেক বেশি মূলধন ও টেকনিক্যাল কাজ কর্ম আমাদের কি সেই সক্ষমতা প্রথম দিতে আছে?
প্রশ্নটি মন্দ নয় তবে উত্তরটি সুন্দর, আপনি কেনো যাবেন প্রথমেই এতো টাকার ব্যবসা করতে? ছোট পরিসরে শুরু করুন মিনিমাম টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিয়ে। তাছাড়া এমন তো নয় যে প্রতিটা খেলনার জন্যই খুব বেশি টেকনিক্যাল সক্ষমতা ও অনেক বেশি মূলধন প্রয়োজন হবে।
সাহস সঞ্চয় করে যদি খেলনা বাণিজ্যে নিজেকে দাড় করাতে পারেন, দেশের চাহিদার উপর ভিত্তি করে বললে – হতাশ হবেন না। মনে রাখবেন, যথাযথ পরিকল্পনা ও মার্কেট এনালাইসিস।
২) পাট দিয়ে তৈরি জিনিসের ব্যবসা
বাংলাদেশ এক সময় পাট শিল্পের জন্য অনেক বেশি বিখ্যাত ছিলো পুরো বিশ্বের কাছে। আধুনিকতার ছোয়ায় আমরা প্রতিনিয়ত মেশিন নির্ভর হয়ে যাচ্ছি যা মোটেও খারাপ কোনো কথা নয় তবে আমাদের অবশ্যই ঐতিহ্যকে ধরে নিয়ে এগোতে হবে। এক্ষেত্রে লাভ বিহীন লস হবে না। কেননা এই সেক্টরে আমরা ইতিমধ্যে জনপ্রিয়।
বাংলাদেশের তৈরি বিভিন্ন পাট জাতীয় প্রোডাক্ট বিশ্ব বাজারে ছড়িয়ে আছে। পাটের তৈরি কার্পেট, স্কুল ব্যাগ, জায়নামাজ সহ আরো অনেক অনেক প্রোডাক্ট তৈরি করতে আমরা বেশ দক্ষ। আমাদের গ্রাম বাংলা থেকে শুরু করে শহর পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে।
আমাদের দেশে বিদেশ থেকেও কিন্তু এসব জিনিস আমদানি করা হয় যার অন্যতম কারন হচ্ছে আমাদের দেশে সেরকম ভাবে উন্নত মানের প্রোডাক্ট গুলো তৈরি করা হয় না। নতুন ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে পাটের তৈরি কার্পেট, স্কুল ব্যাগ, জায়নামাজ, সব অন্যান্য প্রোডাক্ট তৈরি করে ব্যবসা পরিচালনার আইডিয়াটি বেশ ভালো।
আপনার যদি উক্ত বিষয়ে আগ্রহ থাকে এমন উক্ত কাজের জন্য যা প্রয়োজন তা যোগান দিতে পারেন তবে অবশ্যই পাটের তৈরি জিনিসের ব্যবসা করার কথা আপনার ভাবা উচিৎ।
৩) মোবাইল এক্সসোসোরিস তৈরি
যুগ আধুনিক হচ্ছে, আধুনিক হচ্ছে মানুষ, দেশ সমাজ। আজকাল এমন একটি পরিবার দেখানো সম্ভব না যে পরিবারে অন্তত্য একটি স্মার্টফোন না আছে। কেবলই যে স্মার্টফোন সেটা কিন্তু নয়। স্মার্টফোনের সাথেও জরিয়ে আছে এটির বিভিন এক্সসোসরিস যেমন – (চার্জার, হেডফোন, কেসিং, কভার, প্রোটেক্টর) সহ আরো কত কিছু। বিশ্বাস করুন কেবল মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ব্যবসা গুলো এতো বৃহৎ যা সংখ্যায় প্রকাশ করা কষ্টসাধ্য।
কোটি কোটি টাকার ব্যবসা পরিচালনা হচ্ছে এই দেশে অথচ হাতে গনা কয়েকটা নিজস্ব কোম্পানি ছাড়া আর কোনো উৎপাদন মূলক প্রতিষ্ঠান দেশে নেই। আমদানি করতে হচ্ছে দেশের বাইরে থেকে। প্রশ্ন হচ্ছে কেনো? কারন আমরা পর্যাপ্ত সাহস পাই না, আর এটা মনে করি এগুলো তৈরি করার জন্য যে টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রয়োজন তা আমাদের দেশে নেই। ব্যাস, এখানেই বসে থাকা হয়।
কেউ খুজে বের করার চেষ্ঠা করে না যে, কোথায় আছে, কিভাবে বের করা যায়, কিভাবে তৈরি করা যায় এবং কিভাবে ব্যবসা দাড় করানো যায় ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন এই সেক্টরে। এই আর্টিকেলে যে কয়টি ব্যবসা সম্পর্কে বলতে যাচ্ছি সব গুলোই ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন এবং দেশে পর্যাপ্ততা নেই। তাই পুরো দমে কেউ যদি প্রবল ভাবে পরিকল্পনা মাফিক এগোতে পারে অল্পতেই তার ব্যবসাকে উপস্থাপন করা যাবে।
৪) মাল্টিপ্লাগ তৈরি
মাল্টিপ্লান এমন একটি বস্তু যা প্রতিটি বাসা বাড়ি অফিসে অবশ্যই রয়েছে। আর এটা এমন এক ইলেক্ট্রিক পণ্য যা যেকোনো সময় নষ্ট হতেই পারে যার কারনে এটাকে নিত্যপ্রয়োজনীত পণ্য বলাই যায়। কারন প্রতিটা দিনই এর ব্যবহার হবেই হবে।
তাই এই প্রোডাক্টের মার্কেট কতটা বৃহৎ তা উল্লেখ্য করে বলে দেয়ার কিছুই নেই। আপনি যদি কম খরচে ভালো মানের মাল্টিপ্লাগ তৈরি করতে পারেন এবং বিভিন্ন লোকাল মার্কেটে সাপ্লাই করতে পারেন খুব বড় সড় আয়ের মাধ্যম শুরু হবে উক্ত সেক্টর থেকে।
আপনি জেনে আরো অবাক হবেন যে, এই ছোট সিম্পল নিত্য প্রয়োজনীয় প্রোডাক্টিও আমাদের দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হচ্ছে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণের উৎপাদন নেই বলে। তাহলে বুজতেই পারছেন কতটা বড় অপরচুনিটি ও সম্ভাবনা রয়েছে এই সেক্টরে বাজিমাত করার।
৫) বিভিন্ন প্রকার লাইট তৈরি
মনে করুন সেই দিনের কথা যখন মানুষ অন্ধকার হওয়ার পরেই মোমবাতি, ল্যাম্প, কুপি জালিয়ে রাখতো ঘর আলোকিত করার জন্য। আজকের দিনে সেই দৃশ্য কি দেখা যায়? খুব বেশি লোডশেডিং যদি না হয়ে থাকে তবে দেখার কোনো সম্ভাবনাই নেই। আর লোডশেডিং হলেও বর্তমানে ঘরে বাইরে আলোকিত করার জন্য বাজারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চার্জার লাইট।
তাছাড়া গ্রাম বাংলায় এখনও অনেক বেশি আকারে টচ লাইট ব্যবহার করা হয় রাতে রাস্তা ঘাটে চলাচল করার জন্য। এখন ভাবুক কতটা জরুরি এই সব প্রোডাক্ট। কখনই কিভাবে না এই সব প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করার জন্য?
আপনি যদি উৎপাদন মূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে বিভিন্ন লাইট তৈরি করে ব্যবসা করতে চান সেটাও সম্ভব আবার দেশের বাইরে থেকে আমদানি করে দেশের বাজারে বিপণন করতে চান তাও সম্ভব। যদিও এই ধরনের লাইট গুলো চিন থেকে ব্যাপক মাত্রায় আমদানি করতে হয় আমাদের। তাই এখানে রয়েছে ব্যাপক business opportunity.
৬) স্কচটেপ ও সেলোটেপ তৈরির ব্যবসা
স্কচটেপ, নাম তো শুনেছেনই। নিত্য দিন বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার করা হয় এটি। বাংলাদেশের বাজারে এর চাহিদা নিছক কম নয়। তবে বাংলাদেশে কোনো প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি এটি উৎপাদন করে নাকি সেই বিষয়ে জানা নেই তবে এটা নিশ্চিত যে এই প্রোডাক্টের ৯০% দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয়।
অথচ খুব সহজেই লাখ খানিক মূলধনের মাধ্যমেই শুরু করা যেতে পারে স্কচটেপ ও সেলোটেপ তৈরির ব্যবস। এবং বাংলাদেশের বাজারে খুব অল্প মূল্যে ছড়িয়ে দিয়ে ব্যাপক পরিমানের আয় করা সম্ভব এই ব্যবসা থেকে। বলা বাহুল্য যে, এই প্রোডাক্টের চাহিদা কখনও কমার নয় তাই নিশ্চিত ভাবে প্রয়োজনীয় ম্যাটারিয়ালস ও মেশিনারি নিয়ে উক্ত ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে।
৭) শোপিছ রপ্তানি
সাধারণত দেখা যায় যেকোনো অনুষ্ঠানে গিফট হিসেবে শোপিছ প্রদানের বেশ প্রচলন রয়েছে। কাউকে উপহার দেয়া বা ঘরে সাজ সোজ্জার জন্য মানুষ শোপিছ আইটেম কিনে থাকে। এই আইটেমের ভ্যারিয়ান্টের কোনো শেষ নেই। প্রটিটা সুন্দর জিনিসের শোপিছ তৈরি করা যেতে পারে যা নিত্য নতুন সুন্দর সব প্লাস্টিক মডেল তৈরি করা হচ্ছে।
এটি এমন একটি সৌখিন প্রোডাক্ট যা ক্রেয়ার পছন্দ হয়ে গেলে বেশি মূল্য খরচ করেও কিনতে আগ্রহী হয়ে থাকে। তাই মানুষের ইমোশন বুঝে যথাযথ মার্কেট এনালাইসিস করে উপযুক্ত শোপিছ তৈরি করার ব্যবসা গড়ে তুললে দীর্ঘ কালীন ব্যবসা গড়ে তোলা সম্ভব এই সেক্টরে।
যদিও দেশে অনেকেই উক্ত ব্যবসা ইতিমধ্যে করছে এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয় এরুপ সৌখিন প্রোডাক্ট তাই আপনিও চাইলে একই পথে হাটতে পারেন অথবা নতুনত্ব ধরে রাখতে পারার সক্ষমতা থাকলে নিজেই তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন।
৮) প্রতিষ্ঠানের জন্য কল সেন্টার
একটা কল সেন্টারের কাজ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে তাদের গ্রাহকের সকল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকা। অনেক দেশিও বিদেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা কল সেন্টারের সার্ভিস গ্রহন করে থাকে। আপনি একটি কল সেন্টার গড়ে তুলে সেসব কোম্পানির সাথে ডিল করে তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে যেতে পারেন।
এক্ষেত্রে তারা নিদিষ্ট একটি পরিমাণের অর্থ আপনাকে প্রদান করবে। আপনি যত বেশি ও ভালো ডিল করতে পারবেন আপনার প্রতিষ্ঠান জন্য সেটা তত বেশি মঙ্গোলের। কল সেন্টারের কাজ কখনই সমাপ্তি ঘটানোর মত নয় কারন যতদিক প্রতিষ্ঠান থাকে ততদিনই তাদের কাস্টমার্সদের সার্ভিস প্রদান করতে হয়।
অনান্য দেশের ক্ষেত্রে এটা বেশ পুরাতন ব্যবসার মডেল হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন ব্যবসার আইডিয়া কারন বাংলাদেশে এখনও তেমন ভাবে এমন বেশি একটা কল সেন্টার নেই বল্লেই চলে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও কল সেন্টারের ব্যবসাটি বেশ জনপ্রিয়।
৯) হোস্টিং ব্যবসা
বর্তমান অনলাইন যুগে ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়ে গেছে খুবই নরমাল ব্যাপার। প্রতিটা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায় অব্দি ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে প্রতিদিন অহরহ। এবং এই সকল ওয়েবসাইট গুলো হোস্ট করা জন্য প্রয়োজন হচ্ছে অনলাইন দুনিয়ার জমিন যার উপর নাম হোস্টিং।
এইতো কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে হাতে গনা কয়েকটা হোস্টিং কোম্পানি ছিলো, আজকের দিনে সেই সংখ্যা অনেক দাঁড়িয়েছে। তবুও কিন্তু তা পর্যাপ্ত পরিমাণের নয়। বাংলাদেশ থেকে একটি বড় সংখ্যক ওয়েবসাইটের হোস্টিং করা রয়েছে দেশের বাইরের কোম্পানি গুলোতে। যার অন্যতম কারন হচ্ছে বাংলাদেশে হোস্টিং সার্ভিস যারা দিয়ে থাকে তা পর্যাপ্ত মনে হয় না তাদের কাছে।
আপনি যদি হোস্টিং ব্যবসা করতে চান, এবং ভালো মানের হোস্টিং প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে হোস্টিং ব্যবসা পরিচালন করতে চান তবে জেনে নিন কিভাবে হোস্টীং ব্যবসা করবেন সেই সম্পর্কে।
১০) ব্যাটারি চলিত রিক্সা বা অটো তৈরি
Last but not the least, বাংলাদেশে যেখানে রিক্সা একটি অন্যতম যান হিসেবে পরিচিত এবং তা এতোদিন যাবত পায়ে পেট্টল দিয়ে চালানো হতো, আজ চলছে ব্যাটারিতে। তার উপর বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে অটো নামে পরিচিত যান। যেটাও চলে ব্যাটারিতে। এই সব যানবাহনের ম্যাটারিয়াল সব কিছুই আমদানি করা হয় চায়না, সাউথ কোরিয়া ও জাপান থেকে। এবং বাংলাদেশে এগুলোর সংযুক্তকরনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় পুর্নাঙ্গ যান।
এগুলো এমন কঠিন কোনো ব্যাপার না যা বাংলাদেশে তৈরি করা সম্ভব হবে না। ছোট ছোট বিভিন্ন ধরনের কারখানা তৈরি করে এই সব ম্যাটারিয়াল গুলো তৈরি করে এগুলোর সংমিশ্রনে অল্প খরচেই বানিয়ে ফেলা সম্ভব এসব রিক্সা ও ইজি বাইক বা অটো গুলো। এখানে রয়েছে মূলত কোটি কোটি টাকার ব্যবসা Opportunity. তাছাড়া আপনি যদি এতো বড় পরিসরে প্রথমেই শুরু করতে না চান তবে সেসব দেশ থেকে বিভিন্ন পার্টস আমদানি করে এনেও বাংলাদেশে এসাম্বলিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন এই যানবাহন গুলো।
যা শিখতে পারলেন পুরো আর্টিকেল থেকে
পরিশেষে, এই ছিলো নতুন ব্যবসার আইডিয়া বিষয়ক একটি পুর্নাঙ্গ আর্টিকেল যেখানে অনেক গুলো বিষয় একত্রে আলোচনা করা হয়েছে। যেখানে ছিলো ব্যবসা শুরু আগে করনীয় কি কি, ব্যবসা কিভাবে করতে হবে এবং ১০ টি ভিন্ন ধাচের উৎপাদন মূলক নতুন ব্যবসায়ের আইডিয়া। বাংলা আলো ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত ব্যবসা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বহুল আইডিয়া, টিপস, ধারনা, কেস স্ট্যাডি শেয়ার করা হয়। আপনার কাছে যদি উক্ত বিষয় গুলো জানার আগ্রহ থাকে তবে অবশ্যই ওয়েবসাইটটি ফলো করবেন এবং ইমেইল দিয়ে ফ্রিতে সাবস্ক্রিপশন করে রাখবেন। এতে করে প্রতি দিনের নিত্য নতুন আইডিয়া গুলো সবার আগে জানতে ও পড়তে পারবেন মেইলের মাধ্যমে। ধন্যবাদ।