এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমনের অনুমতি পত্র হলো ভিসা। সৌদি আরব ভিসা ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য যাবতীয় নিয়ম একত্রে..
প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন প্রকার এর কাজের উদ্দেশ্য নিয়ে সৌদি আরব এ গমন করছেন। সাধারণ ভাবে দেখতে গেলে সৌদি আরব এর ভিসা সেই সকল বাংলাদেশী নাগরিকরাই চায় যারা মোটামুটি সল্প খরচেই প্রবাসে কাজ করার মাধ্যমে নিজেদের জীবনকে সাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে চায় এবং নিজের পরিবারিক জীবনকেও একটি সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়।
অনেকে আবার লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে কিংবা হজ্জ্ব করার উদ্দেশ্য নিয়েও সৌদি আরব এ গমন করে থাকেন। আপনি যদি সৌদি আরব এ যাওয়ার প্লান করে থাকেন তাহলে অবশ্যই ভিসার প্রসেসিং এর শুরুতেই ভিসার ধরন, ভিসা তৈরীর খরচ, ভিসার মেয়াদ, আবেদন করার নিয়মাবলি ইত্যাদি আরও সকল খুটিনাটি বিষয় জেনে নেওয়া উচিত৷ তা না হলে আপনি নানান ধরনের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা এর স্বীকার হতে পারেন।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেল টি তাদের জন্যই যারা বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব যেতে চাচ্ছেন। তবে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় না পড়ে সহজভাবে সকল কাজ সম্পন্ন করতে চাচ্ছেন।
এই আর্টিকেল টি সম্পুর্ন পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন সৌদি আরব ভিসা সংক্রান্ত সকল প্রয়োজনীয় তথ্য সমূহ।
সৌদি আরব ভিসার ধরন, সময়, মেয়াদ
সৌদি আরব এ বিভিন্ন ধরনের ভিসার মাধ্যমে অনেক বাঙালী নাগরিক গমন করে থাকেন। সাধারণত একেক ভিসার ধরন একেক রকম। তার পাশাপাশি ভিসার সময় এবং মেয়াদ কাল এ ও থাকে পার্থক্য। চলুন জেনে নেই সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত-
১) ফ্যামিলী ভিজিট ভিসাঃ
সৌদি প্রবাসীরা এখন চাইলেই খুব সহজে তাদের পরিবারের সদস্য দের ফ্যামিলী ভিজিট ভিসার মাধ্যমে সৌদি আরবে ভ্রমণ করাতে পারেন। এই ভিসার মেয়াদকাল মূলত তিন মাস সময়ের হয়ে থাকে।
এই ভিসার মাধ্যমে পরিবার বর্গের সকল সদস্য বৃন্দরা সারা সৌদি আরবেই ভ্রমন করতে পারবেন কোনো বাধা নিষেধ ছড়াই। যদি যাত্রীর সকল ধরনের ডকুমেন্টস সঠিক হয় তাহলে ভিসা প্রসেস হতে পাঁচ থেকে ছয় কার্য দিবস পরিমান সময় লাগতে পারে।
২) স্টুডেন্ট ভিসাঃ
সৌদি আরবে উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রতি বছর অনেক শিক্ষার্থীরা গমন করছেন। অনেকে আবার স্কলারশিপ পেয়ে সৌদি তে যাচ্ছেন। তবে যারা স্টুডেন্ট ভিসায় স্কলারশিপ এর মাধ্যমে যাচ্ছে তারা বাইরে কোনো কাজ করতে পারবে না।
উচ্চ শিক্ষা শেষ করার পরই তাদের ভিসার মেয়াদ কাল অতিক্রম হবে অর্থাৎ তাদের ডিগ্রি নেওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে।
এই ভিসা প্রসেসিং করতে কিছুটা সময় লাগে কারণ পছন্দমত বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করার পর সেখান থেকে কনফার্মেশন আসলে তারপর ভিসা পরিপূর্ণ হয়।
৩) কাজের ভিসাঃ
প্রতি দিনই বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশ এর নাগরিকরা। সৌদি আরবের বিভিন্ন ধরনের কাজের ভিসা হয়ে থাকে যেমন বাসার কাজের ভিসা, ড্রাইভিং ভিসা, ব্যবসায়িক কাজের ভিস, কোম্পানির কাজের ভিসা ইত্যাদি আরো অনেক কিছু।
এ সকল ভিসা গুলোর প্রসেসিং করতে সাধারণত দশ থেকে ত্রিশ কর্ম দিবস পরিমান সমগ লেগে থাকে। সকল তথ্য সঠিক থাকলে এর মধ্যেই ভিসা প্রসেসিং সম্পূর্ণ হয়ে যায়।
৪) হজ ভিসাঃ
হজ ভিসা তে হাজী গন হজের সময়কালীন পিরিয়ড এর জন্য ভিসা প্রসেসিং করে থাকে। এই সময় কালে হাজীরা চাইলে সৌদি আরব এর দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরতে পারে।
সৌদি আরব ভিসা করতে যেসকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন
সাধারণত ভিন্ন ভিসা করতে আলাদা আলাদা ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। আর্টিকেল এর এই পর্যায়ে আপনাদের জানাবো ভিসা প্রসেসিং এর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সম্পর্কে –
১) ফ্যামিলী ভিজিট ভিসাঃ
ফ্যামিলী ভিজিট ভিসা সাধারণ ভাবে যাত্রীর আত্মীয় স্বজন কিংবা পরিবার এর মানুষ রাই করে দিয়ে থাকে। এই ভিসার জন্য যাত্রীর বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দরকার হয়। যেমনঃ
যাত্রী যদি মহিলা হোন তাহলে তার স্বামীর সৌদি আরব এর বর্তমান আকামা এর কপি, পাসপোর্ট এর কপি, বিয়ের লিগেল কাবিননামা ইত্যাদি।
২) স্টুডেন্ট ভিসাঃ
১. পাসপোর্ট ।
২. ছাত্রী দের আবেদন এর সময় অভিভাবক এর ইকামার লিগেল কপি।
৩. জন্মসূত্রে মুসলমান না হলে শিক্ষার্থীদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ এর সনদ।
৪. 6/4 সাইজ এর ছবি। পিছনে অবশ্যই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। ছবি গুলো টুপি ও চশমা বিহীন হবে ।
৫. সরকার থেকে স্বীকৃত দেওয়া মেডিকেল ফিটনেস এর সনদ পত্র।
৬. আগের স্কুল কলেজ এর সকল সার্টিফিকেট এর মেইন কপি এবং ফটোকপি। অবশ্যই সকল সার্টিফিকেট গুলো শিক্ষাবোর্ড এবং সৌদি অ্যাম্বাসি কর্তৃক সত্যায়িত করে নিতে হবে।
৭. জন্ম নিবন্ধন পত্র।
৮. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
৯. নাগরিকত্ব সনদপত্র।
৩) কাজের ভিসাঃ
১. পাসপোর্ট ।
২. নাগরিকত্ব সনদপত্র।
৩. জন্ম নিবন্ধন পত্র।
৪. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
৫. ছবি।
৬. স্পনসর এর আকামার কপি।
৪) হজ ভিসাঃ
জাতীয় পরিচয়পত্র। যাদের বয়স আঠারো এর কম তাদের বাবা অথবা মা এর অর্থাৎ অভিভাবকের পরিচয় পত্র লাগবে। পাসপোর্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, নাগরিকত্ব সনদপত্র ইত্যাদি।
সৌদি আরব ভিসা করতে কত টাকা লাগে
প্রত্যেকটি ভিসার ই আলাদা চার্জ রয়েছে অর্থাৎ ভিসা তৈরী করতে ভিন্ন পরিমাণ এর টাকা খরচ হয়। তাই এই ব্যাপারে আপনার আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো, তা না হলে প্রতারিত হতে পারেন।
১) ফ্যামিলী ভিজিট ভিসাঃ
তিন মাসের ফ্যামিলী ভিজিট ভিসা করতে আগে খরচ হতো প্রায় দুই হাজার রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় পয়তাল্লিশ হাজার টাকা।
তবে এখন এই খরচ কমে গিয়েছে, বর্তমানে দাড়িয়েঁঁছে প্রায় তিনশ রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ছয় হাজার সাতশ পঞ্চাশ টাকা।
২) স্টুডেন্ট ভিসাঃ
স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল এন্ট্রি দুই হাজার রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় ৪৫০০০ টাকা। এবং মাল্টিপল এন্ট্রি তিন হাজার রিয়েল হয়ে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী স্কলার শিপের ক্ষেত্রে কিছু সময় ভিন্নতা দেখা যায়।
৩) বিজনেস কমার্শিয়াল ভিসাঃ
কমার্শিয়াল বিজনেস এর ভিসার ক্ষেত্রে সাধারণত
সিঙ্গেল এন্ট্রি দুই হাজার রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় ৪৫০০০ টাকা। এবং মাল্টিপল এন্ট্রি তিন হাজার রিয়েল হয়ে থাকে।
৪) কাজের ভিসাঃ
কাজের ভিসা নিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক বাংলাদেশী নাগরিকরা সৌদি আরব গমন করছে। তাদের জন্য সিঙ্গেল এন্ট্রি দুই হাজার রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় ৪৫০০০ টাকা।
এবং মাল্টিপল এন্ট্রি তিন হাজার রিয়েল হয়ে থাকে। তবে কাজের ক্ষেত্র বিশেষ বিভিন্ন সময়ে এই প্রাইজ পরিবর্তন হয়ে থাকে।
৫) হজ ভিসাঃ
প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি নাগরিক এবং অন্যান্য দেশ থেকে বিভিন্ন নাগরিকেরা সৌদি আরবে হজ করতে যায়।
তাদের জন্য সিঙ্গেল এন্ট্রি দুই হাজার রিয়াল অর্থাৎ বাংলাদেশের মুদ্রায় ৪৫০০০ টাকা। এবং মাল্টিপল এন্ট্রি তিন হাজার রিয়েল হয়ে থাকে।
সৌদি আরব ভিসা করার নিয়ম
ভিসা তৈরীর নিয়ম গুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একই হয় তবে কিছু ভিন্ন ব্যাপারও রয়েছে। যেহেতু বেশ কিছু ভিন্ন ধরনের ভিসা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি তাও নিয়ম গুলো ও কিছুটা ভিন্ন হওয়া স্বাভাবিক।
এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগে ভিসার জন্য অনালাইনে খুব সহজেই আবেদন করা যাচ্ছে।
১. আপনার জন্য প্রযোজ্য সঠিক সৌদি ভিসার মাধ্যমে আবেদন করতে যোগ্য কিনা তা বাছাই করুনঃ
আপনার আবেদন পত্রের সঙ্গে যে সকল ডকুমেন্টস গুলি জমা দিবেন সেগুলো বাছাই করে নিয়ে নিন। তার পাশাপাশি অ্যাপ্লিকেশন টি কত সময় ধরে নিতে পারবে এবং ভিসার ফি বাবদ আপনাকে কত টাকা জমা দিতে হবে সে সকল বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন।
যে কোনো ভিসার জন্যই আবেদন করেন না কেনো অবশ্যই আপনাকে ভিসা বিভাগের সকল প্রযোজ্য নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
আপনার নাগরিকত্ব, পরিদর্শন অভিবাসন, শিক্ষা অনুমতি, কাজের অনুমতি ইত্যাদির জন্য স্বাক্ষরকৃত ভাবে জমা দেওয়া সম্মতি ফর্ম টি আপনার আবেদন সহ দিতে হবে। তার সাথে করোনার ভেক্সিন নিয়েছেন, সেই সংক্রান্ত পত্রটি ও জমা দিবেন।
২. এখন আপনার ভিসার জন্য আবেদন টি শুরু করুনঃ
ভিসার জন্য প্রযোজ্য আবেদন এর ফর্মটি সঠিক ভাবে ডাউনলোড করে নিতে হবে। এখন ডাউনলোড করা ফর্মটি পূরণ করে নিন তারপর মুদ্রণ করে নিন। তারপএ মুদ্রণ কৃত ফর্মটি ভিসার আবেদন কেন্দ্রে নিয়ে জমা দিতে হবে।
এখন বৈদ্যুতিন আবেদন পত্রটি সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে। পুরোটা ফর্ম এবং বারকোডের সাথে সংযুক্ত শিট গুলো একটি উন্নত মানের, সাদা এবং চকচকে ধরনের একটি কাগজের সাহায্যে কপি করে বের করে নিতে হবে।
অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে যেনো ২ ডি এর বারকোড টি একটি স্বচ্ছ, সাদা, উন্নত মানের কাগজে কপি হয়ে বের হয় কারন হাতে লিখিত কিংবা অনুন্নত ফর্ম ভিসা অফিস থেকে গ্রহণ যোগ্য হবে না।
আপনাকে ভিসা সম্পর্কিত সকল গোপনীয়তা নীতি এবং তার পাশাপাশি সম্মতি মূলক ফর্মটি পূরণ করে আসলে আবেদন ফর্ম টির সাথে সঠিক ভাবে যুক্ত করতে হবে।
তবে আপনি যদি আপনার ফর্মটি সঠিক ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার কাজটি না করতে পারেন অর্থাৎ ব্যর্থ হন তাহলে আপনার আবেদনটি গ্রহনযোগ্য হবে না এবং এটি আপনাকে পুনরায় ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।
৩. আপনার সাক্ষাৎকারটি সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ করুনঃ
আপনার ভিসা আবেদন এর কাজটি সম্পন্ন হয়ে গেলে এখন আপনার সাক্ষাৎকার সঠিক ভাবে, সঠিক সময়ে লিপিবদ্ধ করার পালা।
সাক্ষাৎকার কনফার্ম করতে আপনার বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে। অর্থাৎ সঠিক ভাবে আপনাকে আঙ্গুলের ছাপ দিতে হবে এবং তার পাশাপাশি ছবি দিতে হবে। এই ছবিটি যেকোনো ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে তোলাটাই ভালো।
ব্যাস এখন আপনার ভিসার জন্য করা অ্যাপয়েন্টমেন্ট টি বুক হয়ে গেলে একটি কনফার্মেশন মেইল পাবেন। যদি আপনি আপনার পরিবারের জন্য অর্থাৎ একাধিক সদস্য এর জন্য ভিসা চান তাহলে প্রত্যেকের জন্য আলাদা সাক্ষাৎকার লাগবে।
৪. আপনার ভিসার জন্য প্রযোজ্য ফি প্রদান করুনঃ
ভিসা বাবদ যে পরিমাণ টাকা আপনাকে জমা দিতে হবে তা আবেদন শেষ হবার পর পরই জমা দিতে পারবেন। ফি প্রদান করে আপনার রিসিট নিয়ে নিতে ভুলবেন না।
৫. আপনার জন্য নির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট টি তে যোগদান করুনঃ
আপনার সৌদি ভিসার জন্য করা আবেদন টি অনলাইন এ সম্পন্ন হয়ে গেলে সেই কপি ভিসা অফিসে জমা দিয়ে দিন। আর যদি অনলাইন আবেদন না করে থাকেন তাহলে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য সমূহ জমা দিন।
যদি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে তথ্য দেওয়া হয় কিংবা অন্য সাধারণ পদ্ধতিতে, তাহলে আপনাকে একটি রসিদ দেওয়া হবে সেটা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না।
কারন সেই রসিদে আপনার ভিসার ট্র্যাকিং নম্বর দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে আপনার ভিসা টি কতো পরিমানে অগ্রগতি হচ্ছে।
৬. আপনার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন টি ট্র্যাক করুনঃ
এখন আপনি একটি ইমেইল পাবেন এবং ইমেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন আপনার ভিসার কাজ ঠিক কতটুকু সম্পন্ন হলো এবং এখানে একটি লিংক থাকবে যার মাধ্যমে আপনি ট্র্যাক করতে পারবেন আপনার ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হচ্ছে কিনা কিংবা স্থগিত আছে কিনা।
এছাড়াও আপনি একটি সঠিক মোবাইল নাম্বার প্রেরণ করবেন যেখানে আপনার ভিসা সংক্রান্ত সকল আপডেট এর মেসেজ গুলো আসতে পারে।
এভাবেও আপনি আপনার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন টি ট্র্যাক করতে পারেন।
৭. সৌদি আরবের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিনঃ
এখন আপনার প্রধান কাজ হবে ভিসা আবেদন এর অফিস থেকে আপনার কাঙ্খিত সৌদি আরবের পাসপোর্ট টি গ্রহণ করা।
তার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সকল নথি চেক করে নেওয়া৷ আপনি চাইলে আপনার পাসপোর্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্র গুলো অতিরিক্ত চার্জের সাহায্যে কুরিয়ারে নিয়ে নিতে পারেন।
আপনার জন্য প্রস্তাবিত সৌদি তে প্রবেশ এর সঠিক তারিখ, প্রবেশ পথের বিশেষ সংখ্যা, প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সৌদি ভ্রমণ এর জন্য বৈধ কিনা এবং ভিসার সকল বিবরণ বিবেচনা করে পরীক্ষা করে নেওয়া আপনার একান্ত দায়িত্ব।
সৌদি আরব ভিসার আবেদন কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য
সৌদি আরবের ভিসা প্রসেস করতে হলে অবশ্যই আপনাকে আবেদন কেন্দ্রে যেতে হবে। ভিসা আবেদন কেন্দ্রে সঠিক সময়ে উপস্থিত থাকা জরুরি। আপনাকে আগে থেকে অ্যাপয়নমেন্ট ফিক্সট করে নিতে হবে।
অ্যাপয়নমেন্ট সময় শুরু হওয়ার ১৫ থেকে ২০ মিনিট আগেই ভিসা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকা ভালো। আপনার ভিসার জন্য আপনাকে অবশ্যই কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে, আপনার বদলে অন্য কারো উপস্থিতি গ্রহণ যোগ্য হবে না।
যদি আপনার পরিবারের সকলের ভিসা করতে চান তাহলে পরিবারের সকলকে ই উপস্থিত থাকতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে,
যেমনঃ যার ভিসা করা হচ্ছে সে যদি ১৪ বছর বয়সের কম বয়সী হয় তাহলে তাকে ভিসা কেন্দ্রে যেতে হবে না। তার পরিবারের যে কোনো সদস্য গিয়েও তার ভিসা সম্পন্ন করে আসতে পারবে।
ভিসা কেন্দ্রে যাওয়ার পর অবশ্যই আপনার ভিসার আবেদন এর একটি ফটোকপি, বারকোড অনুলিপি, পাসপোর্ট এর বায়ো পৃষ্ঠা,পাসপোর্ট ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সঠিকভাবে নিয়ে নিবেন।
সকল ডকুমেন্ট এর মূলকপি নিবেন এবং পাশাপাশি তাদের ফটোকপি ও করে রাখবেন আপনার, পরবর্তী সময়ের সুবিধার জন্য।
আপনার ভিসা প্রসেসিং করার সময় অবশ্যই যত্নশীল থাকবেন এবং ভিসা সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার জন্য অফিস এর কর্মকর্তা দের থেকে সাহায্য চাইবেন। বাইরের কারো কাছে সাহায্য চেয়ে প্রতারিত হবেন না।
সৌদি আরব ভিসা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা
১) সৌদি আরবের ট্যুরিস্ট ভিসা পেতে কেমন সময় লাগে?
ট্যুরিস্ট ভিসা ইস্যু করতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশ থেকে তিরিশ মিনিট সময় লেগে থাকে। তার পাশাপাশি দূতাবাস এবং কনস্যুলেট এর মাধ্যমে ভিসা ইস্যু করতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগতে পারে। সৌদি আরবে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ বিমান বন্দরে সমস্ত ভিসা পরিপূর্ণ ভাবে চেক করা হয়। এই ভিসা এক বছরের জন্য বৈধ হয়ে থাকে।
২) সৌদি আরবে কাজের ভিসার খরচ কত?
সৌদি আরবে ওয়ার্ক পারমিটের খরচ এটি ইকামার জন্য SAR 750, ওয়ার্ক পারমিটের জন্য SAR 6,000 এবং বীমার জন্য SAR 450 লেগে থাকে৷
আবার যদি কোম্পানির ৫০% এর বেশি প্রবাসী কর্মী থাকে, তাহলে ফি বেড়ে SAR 8,400 হবে, ওয়ার্ক পারমিট ফি বেড়ে SAR 7,200 হবে।
৩) সৌদি আরবে চাকরি পাওয়া কি সহজ?
যদিও কাজ খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে সহজ দেশ সৌদি আরব নয়, তবে এখানে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে যদি আপনি উচ্চ স্তরের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন থাকেন তাহলে কাজের অনেক জায়গা পাবেন।
আজকের আর্টিকেলে আমরা সৌদি আরব এর ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার পর অবশ্যই আপনি বিভিন্ন ধরনের অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। তারপরও আপনি যখন সৌদি আরব যাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হবেন তখন ভালোভাবে যাচাই বাছাই করে নিবেন।
আমরা চাই না আপনি কোনো ভাবে প্রতারণার শিকার হন। তার পাশাপাশি অবশ্যই আপনি সম্পূর্ণ বৈধ পন্থায় সৌদি আরব গমন করবেন। আমরা আশা করি আপনার যাত্রা শুভ হবে।