কাপড় একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। অনেক আগে থেকেই এর চাহিদা আজ পর্যন্ত রয়েছে। ফলে কাপড়ের ব্যবসা লাভজনক ব্যবসা গুলোর একটিতে রূপান্তর লাভ করেছে।
বর্তমানে চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়াটা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক যুবকেই চাকরি না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায়, কাপড়ের ব্যবসা দ্বারা তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার বিরাট একটি সুযোগ রয়েছে।
যারা কাপড়ের ব্যবসা করার কথা ভাবছেন আজকের পোস্টটি তাদের জন্যই। আমাদের আজকের জানার বিষয় হল – বর্তমানে কাপড়ের ব্যবসা করার নিয়ম ও সুবিধা সম্পর্কে। তো চলুন সেগুলো বিস্তারিত জেনে নেই
সাধারনত কাপড়ের ব্যবসা সাধারণত বেশ কয়েক রকম ভাবে করা যায়। বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী কাপড়ের ব্যবসার ধরন নির্বাচন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনার মূলধন কেমন তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৩টি নিয়মে করা যেতে পারে কাপড়ের ব্যবসা । যথাঃ ১। রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসা ২। কাপড় সাপ্লাইয়ের ব্যবসা এবং ৩। অনলাইন কাপড়ের ব্যবসা।
বিভিন্ন উৎপাদক এর নিকট থেকে অথবা পাইকারি মার্কেট থেকে রেডিমেট কাপড় ক্রয় এর মাধ্যমে ব্যবসা করা যায়। যেমন ধরুন – ঢাকার বঙ্গ বাজারের কথা।
সেখানে পাইকারি মূল্যে রেডিমেট কাপড় কিনতে পাওয়া যায়। আপনি যদি দোকানের মাধ্যমে ব্যবসা করতে চান তাহলে ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হলেই রেডিমেড কাপড়ের ব্যবসা করতে পারে। তবে প্রতারকের খপ্পরে পড়া থেকে সাবধান থাকবেন।
রেডিমেড কাপড় সাধারণত বান্ডিল হিসেবে বিক্রি হয় পাইকারি বাজার গুলোতে। প্রতি বান্ডিলে ১০০টির মতো কাপড় থাকে।
মানুষের রুচি এবং চাহিদার সাথে তাল রেখে রিজনেবল দামে যেন পণ্য সাপ্লাই করতে পারেন সেরকম মানসম্মত কাপড় নিয়ে কাপড় ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
কাপড় উৎপাদনকারীর সাধারণত বিপুল পরিমাণে উৎপাদন করে থাকে। উৎপাদনকারীরা সাধারণত অধিক পরিমাণে মাল বিক্রি করে থাকে; অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে।
বিভিন্ন পাইকারদের কাছে সে সব পণ্যের চাহিদা রয়েছে। তারা মূলত এসব পণ্য তাদের ব্যবসার জন্য ক্রয় করে থাকে। উৎপাদক এবং পাইকারের মাঝে কাজ করে সাপ্লায়ার।
আপনি যদি উৎপাদকের কাছ থেকে কাপড় কিনে স্টপ করে সেগুলো পাইকারদের নিকট বিক্রি করতে পারেন, তাহলে ভালো পরিমাণে ব্যবসা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এ পদ্ধতিতে অনেকেই কাজ করে লাভবান হয়েছেন। আপনিও কাপড় সাপ্লাইয়ের কাজ করতে পারেন। তবে এ কাজে নামার পূর্বে বাজারে কোন সব কাপড়ের চাহিদা কেমন সেটা দেখে নেয়া জরুরি।
আজকাল অনেকেই অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করছেন। অনেকেই সাফল্য পেয়েছেন। এই নিয়মে কাপড় ব্যবসা করা তুলনামূলক সহজ। এতে দোকান ভাড়া নেয়ার ঝামেলা নেই।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কাপড়ের ব্যবসা অনলাইনে করা যায়। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম সহ প্রভৃতি সাইটগুলো ব্যবহার করা যায়।
এছাড়া ডোমেইন হোস্টিং কিনে একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানেও কাপড় ব্যবসা করা যায় আর এটা সবচেয়ে সেরা মাধ্যম।
শার্ট, পাঞ্জাবি, প্যান্ট অথবা অন্যান্য কাপড় নিয়ে অনেকেই অনলাইনে ব্যবসা করে যাচ্ছেন।
মানুষের চাহিদাসম্পন্ন পোশাক সংগ্রহ করে, কোনো কুরিয়ার সার্ভিসের মার্চেন্ট হয়ে আপনি সহজেই অনলাইনে কাপড় ব্যবসা করতে পারেন।
আরো পড়ুন : ১০ টি অনলাইনে ব্যবসা আইডিয়া
অনেক দিক দিয়ে কাপড় ব্যবসা একটি সুবিধাজনক ব্যবসা হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
আপনি যদি রেডিমেড কাপড়ের সাথে গজ বা থান কাপড়ও রাখেন, তাহলে বেশি লাভ পাবেন ইনশা আল্লাহ্।
যদি কাপড় ব্যবসা করার জন্য যদি মনস্থির করে থাকেন, তাহলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে। সেগুলো হলো –
ব্যবসা শুরু করার পূর্বে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। যদি ভুল পরিকল্পনা দ্বারা ব্যবসা শুরু করা হয় তাহলে ব্যর্থ হওয়া স্বাভাবিক।
কাপড়ের ব্যবসার ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। আপনার অর্থ খরচ করার মানসিকতা কেমন, কোন ধরনের কাপড়ের ব্যবসা ভালো বোঝেন, কাস্টমারদের কি টার্গেট করে ব্যবসা করতে চান, কোথায় করতে চান, কিভাবে করতে চান সবকিছুরই সম্মিলিত ছক তৈরি করাই হল পরিকল্পনা প্রণয়ন।
তাই কাপড়ের ব্যবসাতে নামার পূর্বে উপরোক্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন এবং ধীরেসুস্থে পরিকল্পনা প্রণয়ন করুন।
যেকোনো ব্যবসা শুরু করা পূর্বে মূলধন নির্ধারণ করতে হয় – এটা প্রায় সবাই আমরা জানি। তবে এটা সঠিকভাবে কিভাবে নির্ধারণ করতে হয়, এটা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না।
আপনি যদি দোকান নিয়ে ব্যবসা করতে চান, তাহলে প্রথমে দোকান ভাড়া এবং অ্যাডভানস এর টাকা হিসাব করুন। কত টাকার কাপড় স্টকে আনবেন সে হিসাব করুন।
এর পাশাপাশি কর্মচারীর বেতন, ইলেক্ট্রিসিটি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচগুলো হিসাব করুন। সবকিছু মিলিয়ে মোট মূলধন কত হয় সেটার ভিত্তিতে মূলধন নির্ধারণ করুন।
ধারণার ভিত্তিতে মূলধন নির্ধারন করা থেকে বিরত থাকুন। এমনিভাবে কাপড়ের বিক্রয়মূল্যও নির্ধারণ করতে হবে।
যদি কাপড়ের ব্যবসা দোকান এর মাধ্যমে করতে চান অথবা কোন গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠা করতে চান তাহলে সঠিক স্থান নির্বাচন হল আপনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সাধারণত, মার্কেট অথবা মার্কেট সংলগ্ন স্থানে মানুষের চলাচল বেশি থাকে। এই জাতীয় প্লেসে কাপড় ব্যবসা করার জন্য স্থান নির্বাচন করাটা বেশি উপযুক্ত।
এছাড়া যেখানে লোকালয় আছে সেখানে ঘন জনবসতি আছে – এমন স্থান কাপড় ব্যবসার জন্য উপযুক্ত। তাছাড়া মানুষের আর্থিক অবস্থা, তাদের রুচি প্রভৃতি বিষয়ে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে।
কাপড় ব্যবসার জন্য ডেকোরেশন ভালো থাকা জরুরি। মানুষ সাধারণত এমন কাপড়ের দোকানে ঢুকতে আগ্রহী থাকে যেটার ডেকোরেশন সুন্দর হয়।
আপনার দোকানের সামনে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা যেন থাকে।
দোকানের ভিতর ক্যাশ কাউন্টার, মালামাল, ক্রেতাদের বসার জন্য চেয়ার – প্রভৃতি বিষয়গুলো যেন ঠিকঠাক থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র দোকানে রাখা থেকে বিরত থাকুন।
দোকানের ডেকোরেশন এমনভাবে করুন যেন মানুষ ভেতরে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন কোয়ালিটির কাপড় নিয়ে সুন্দর মত দোকানে ডিসপ্লে করবেন।
কেননা দোকানের ভালো ডিসপ্লে থাকলে কাস্টমার অনেক সময় দোকানে এসে পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী হয়।
আপনি আপনার ব্যবসার জন্য কার নিকট থেকে কাপড় কিনে স্টক করবেন, তা গুরুত্বসহকারে যাচাই বাছাই করতে হবে।
যারা ব্যবসার জন্য পাইকারি মূল্যে কাপড় সরবরাহ করে থাকে তাদেরকে হোলসেলার বলে।
আপনাকে ভালো মানের হোলসেলার বাছাই করতে হবে। বিশ্বস্ত মানুষ যেন হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কেননা অনেকেই থাকে প্রতারণা করে। এটা যে কারও ব্যবসার জন্যই ক্ষতিকর।
ব্যবসা শুরু করার পর বিজনেস রেজিস্ট্রেশন করে নেয়া ভালো। এটা অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। বিজনেস রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া দেশভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।
সাধারণত, ইনকাম ট্যাক্স রিসিট, জাতীয় পরিচয় পত্র, ফিলাপকৃত ফর্ম – প্রভৃতি ডকুমেন্টস জমা দিয়ে বিজনেস রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য গুগল অথবা ইউটিউব সার্চ করুন।
আর আপনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কোনরূপ সমস্যা মনে হলে বিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নিতে পারেন।
বর্তমান সময়ে ক্রেতারা কোনো ধরনের কাপড় কিনছে সেটা রিসার্চ করুন। মানুষের চাহিদা সাধারণত পরিবর্তন হয়। তাই এই বিষয়টা খেয়াল রাখুন।
কোন ধরনের পাঞ্জাবি বাজারে এসেছে, মানুষ কেমন রেসপন্স করছে, সেগুলোর দাম এবং চাহিদা কেমন – প্রভৃতি বিষয় গুলো মনিটরিং করুন। কাপড় ব্যবসাতে সফলতা অর্জনের জন্য এটা জরুরী।
প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন ডিজাইনের কাপড় বাজারে আসছে। সেখান থেকে সর্বাধিক বেশি চাহিদা সম্পন্ন কাপরটি আপনাকে ব্যবসার জন্য সিলেক্ট করতে হবে।
প্রতি ৬ মাস অন্তর আপনি এই বিষয়ে মনিটরিং করতে পারেন। মোটকথা, আপনাকে সময়ের সাথে চলতে হবে এবং আপডেট থাকতে হবে।
বর্তমানে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও মানুষ কেনাকাটা করছে। অনেকে শুধুমাত্র অনলাইন কে কেন্দ্র করে কাপড় ব্যবসা করে যাচ্ছে এবং সফল হয়েছে অনেকেই।
আপনি যদি দোকানের মাধ্যমে ব্যবসা করতে চান, তাহলে তার পাশাপাশি একটি কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ রাখুন এবং অনলাইন মার্কেটিং করুন।
ফেসবুকে পেজ এবং গ্রুপ খুলে আপনার পণ্যগুলো প্রচার করুন মানুষের নিকট। সুযোগ বুঝে ফেসবুক পেজ বুস্ট করবেন।
এর ফলে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইন থেকেও ভালো পরিমাণে আয় পাবেন ইনশা আল্লাহ্।
পরিশেষে বলা যায়, সার্বিক বিবেচনায় কাপড়ের ব্যবসা একটি লাভজনক ব্যবসা। সঠিক পদ্ধতিতে করতে পারলে এ ব্যবসার মাধ্যমে ভালো ক্যারিয়ার পাওয়া সম্ভব।
সততা, ধৈর্য্য এবং কঠোর পরিশ্রমের সাথে কাজ করতে পারলে এ সেক্টরে সফল হতে পারবেন ইনশা আল্লাহ্।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.