মরিচ ছাড়া বাঙালি রান্নার কথা কল্পনাও করা যায় না । মরিচ যেন বাঙালির জীবনের বড় একটা অংশ। মরিচ চাষ কিভাবে করবেন তা জানুন এই আর্টিকেলে।
রান্না ছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় স্ন্যাক্স জাতীয় খাবারে ও মরিচের দরকার হয় ।মরিচের মধ্যে আছে ভিটামিন এ বি ও সি ,যার কারণে মরিচের মাধ্যমে আমরা এই ভিটামিন গুলো পেয়ে থাকে।
এছাড়াও লাভের ক্ষেত্র চিন্তা করলে, মরিচ চাষে বিঘা প্রতি ১৫-২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ৫০-৬০হাজার টাকা আয় সম্ভব।
মরিচ কে প্রায় সব ভাবেই ব্যবহার করা যায় কাঁচা মরিচ হিসেবেও এবং শুকনো হিসেবেও এর গুনাগুন অনেক।
এটি আমাদের দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি মসলা। মরিচ চাষে প্রচুর লাভ। যারা চাকরি পাচ্ছেন না বা ব্যবসা করতে ইচ্ছুক তারা নির্দ্বিধায় এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
৩৩ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষ করে ৪-৫লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে অবশ্যই আগে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে করাই ভালো। যেকোনো বয়সের মানুষ এই ব্যবসা শুরু করতে পারে।
নারী বা পুরুষ যে কেউ এ ব্যবসায় অংশ নিতে পারে ।এটি বেকারদের জন্য একটি আদর্শ কর্মসংস্থান হতে পারে।
মরিচ একটি ফসল হলেও আমাদের দেশে এটাকে মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দৈনন্দিন রান্নায় মরিচ ছাড়া রান্না ই যেন অসম্ভব।
এছাড়া আচার কিংবা অন্যান্য মুখরোচক খাবারের মরিচ ব্যবহৃত হয়। নিম্নে মরিচ চাষ পদ্ধতি তুলে ধরা হলোঃ
মরিচ কে সাধারণত দুই ভাবে ব্যবহার করা হয় :
১.ঝাল মরিচ
২. ঝালবিহীন মরিচ
ঝাল মরিচ এর মধ্যে রয়েছে আকাল,কামরাঙ্গা, মেজর, বোম্বাই, গোলমরিচ ইত্যাদি। সাদামরিচ, ক্যাপসিকাম এগুলো হলো ঝাল বিহীন মরিচ।
মরিচ চাষের ক্ষেত্রে প্রথমে পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত আলো-বাতাসময় উর্বর দোআঁশ মাটির প্রয়োজন।
এরপর প্রয়োজন চারা।চারা তৈরির ক্ষেত্রে জমি ভালোভাবে চাষ ও মই দিয়ে আগাছা বাছাই করতে হবে।
ভালো চারা উৎপাদনের জন্য ১ম বীজতলা থেকে ২য় বীজতলায় চারাকে স্থানান্তর করতে হবে। দুবার চারা রোপণ করলে চারা শক্তিশালী হয়।
চারা রোপণের পর, চারাকে অতিবৃষ্টি ও প্রখর রোদ হতে রক্ষা করার জন্য বাঁশের চাটাই বা পলিথিন দিয়ে ঘের করে ঢেকে দিতে হবে।
চারার বয়স ৩০-৩৫ দিন হলে জমিতে চারা লাগানোর জন্য উপযোগী হয়। তারপর ভিটা তৈরি করতে হবে।
জমির অবস্থা বুঝে ভিটা তৈরি করা দরকার । তারপর সঠিক মৌসুম অনুযায়ী চারা রোপণ করতে হবে।
মরিচের চারা রোপণের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব হতে হবে ৬০-৭০সে.মি.এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব হতে হবে ৩০-৪০সে.মি.
এটির চারা রোপণের পর ২-৩ দিন প্রচুর পানি দিতে হবে।
মরিচের চারা রোপন করার পর ঠিকঠাকভাবে পরিচর্যা করা দরকার। সঠিক নিয়মে পরিচর্যার ফলে অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব।
নিম্নে মরিচ চাষের পদ্ধতি অনুসরন করে খুব সহজেই মরিচ চাষে জ্ঞান লাভ সম্ভব। www.bangla-alo.com
অম্ল মাটি ছাড়া প্রায় সব জমিতে মরিচ চাষ করা সম্ভব। প্রচুর আলো বাতাস ময় দোআঁশ মাটি মরিচ চাষের জন্য উপযোগী।
মরিচ চাষের জমি এমনভাবে নির্বাচন করার দরকার যেখানে সেচ বা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
জমি নির্বাচনের পর বীজ বপন ও চারা রোপণ করা প্রয়োজন। বীজ বপনের উপযুক্ত সময় হল মার্চ থেকে এপ্রিল রবি মৌসুমের জন্য অক্টোবর থেকে নভেম্বর।
মরিচের চারা যখন ১০সেমি বা ৪ ইঞ্চি উঁচু হয় তখনই চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। মরিচ চারা রোপণের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৬০-৭০ সেমি এবং গাছের দূরত্ব ৩০-৪০সেমি রাখতে হবে।
মরিচ চারা সংগ্রহের পর মাটি হালকা করে গর্ত করে, চারা হালকা ঝেড়ে তারপর রোপণ করতে হবে।
জমি তৈরির সময় অবশ্যই সার প্রয়োগ করতে হবে। পানি সেচের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিয়মিত পানি দিতে হবে
চারাকে রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। সঠিক পরিচর্যায় ৩০-৪৫ দিনের মধ্যেই মরিচ সংগ্রহ সম্ভব।
বিশ্বের প্রায় বেশিরভাগ দেশেই মরিচ একটি জনপ্রিয় সবজি বা মসলা। বাসার ছাদ কিংবা বারান্দায় খুব সহজেই মরিচ চাষ করা সম্ভব।
টবে মরিচ চাষ করার বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলঃ
টবে মরিচ চাষের ক্ষেত্রে এমন একটি স্থান বেছে নিতে হবে যেখানে আলো-বাতাস আছে ।ঘরেই প্লাস্টিক কিংবা মাটির টবে মরিচ চাষের ক্ষেত্রে উত্তম।
এছাড়া পলিব্যাগ, প্লাস্টিকের পাত্র বা টিনের কৌটা ও মরিচ চাষ সম্ভব। মাঝারি আকারের একটি টবে চারটি চারা রোপণ করা যায়।
বীজ বপনের ক্ষেত্রে প্রথমে তবে দোআঁশ মাটি দিতে হবে ।তারপর মাটিতে শুকনো বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে।
তারপর টবে পানি দিতে হবে এবং মরিচের টব রোদে শুকোতে দিতে হবে।
কিছুদিনের মধ্যেই চারা দেখা যাবে। সেখান থেকে ভালো চারা রেখে খারাপ গুলো উপড়ে ফেলতে হবে।
তারপরে চারা গুলির সঠিক পরিচর্যা করতে হবে। তবে কিছু ছিদ্র রাখতে হবে যাতে করে ভিতরআলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে।
কীটনাশক থেকে বাঁচার জন্য সাবান-পানি দিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে। কিছুদিন পর মরিচ গাছে ফুল দেখা দিবে এবং ফুল দেখার কিছুদিনের মধ্যে মরিচ সংগ্রহ করা যাবে।
ঝাল মরিচ এর মধ্যে বোম্বাই মরিচ হলো অন্যতম। বোম্বাই মরিচ প্রচুর ঝাল হয়ে থাকে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে এক মাসের মধ্যেই বোম্বাই মরিচ সংগ্রহ করা সম্ভব।
যেকোনো বাজারেই বোম্বাই মরিচের বীজ কিনতে পাওয়া যায়। তবে যারা নতুন তারা ছাড়া কেনে করলেই বেশি ভালো হয়। যে কোন নার্সারিতে মরিচের চারা পাওয়া যায় খুব সহজেই।
বোম্বাই মরিচের ক্ষেত্রে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ উর্বর মাটি উপযোগী। বোম্বাই মরিচ চাষের জন্য উচু জায়গা হলে ভালো হয়।
ছায়ামুক্ত ও বৃষ্টির পানি যেন জমে না থাকে এমন জমি মরিচ চাষের জন্য উপযোগী। বোম্বাই মরিচ চাষের জমি উঁচু করে প্লট বানিয়ে এই মরিচের চারা বুনতে হয়।
বোম্বাই মরিচের চারা ৩ফুট চওড়া করে ২ লাইনে বুনতে হয়। সঠিক পরিচর্যায় দেড় থেকে দুই মাস পর ফুল ধরা শুরু করে।ফুল আসার এক মাসের মধ্যে মরিচ সংগ্রহ করার উপযোগী হয়ে ওঠে।
মরিচের অনেকগুলো জাতের মধ্যে নাগা মরিচ ও একটি জাত । নাগা মরিচ প্রচুর ঝাল হয়ে থাকে। প্রায় সব ধরনের মরিচ চাষের প্রক্রিয়া একই ধরনের হয়ে থাকে ।
নাগা মরিচ চাষের জন্য বাতাস ময় স্থান এবং উর্বর দোআঁশ মাটির প্রয়োজন ।মনে রাখতে হবে অম্ল মাটিতে মরিচ চাষ করা সম্ভব নয়।
তারপর বীজ উৎপাদন করতে হবে বা সরাসরি চারা কিনলেও হবে। তারপর মাটিকে হালকা গর্ত করে সেখানে চারা রোপণ করতে হবে । মাটিতে অবশ্যই সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে।
গাছকে পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। চারা গুলিকে রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা করার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
চারা লাগানোর 2 থেকে 3 দিন সকাল-বিকাল গাছে পানি দিতে হবে। এভাবেই চাষ করলে খুব সহজে কম সময়ে অধিক মরিচ সংগ্রহ করা সম্ভব
যেকোনো কিছু চাষের ক্ষেত্রে ওই জিনিসের সময় ও আবহাওয়াটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মরিচ চাষের ক্ষেত্রেও একটা সময় বা মৌসুম রয়েছে।
তবে ঝাল মরিচ বছরের যে কোন সময় চাষ করা যায়। কিন্তু মিষ্টি মরিচ রবি মৌসুমে ভালো হয়।
বর্ষা মৌসুমের জন্য মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের এবং রবি মৌসুমের জন্য অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
চারাগাছ যখন ১০ সেমি অর্থাৎ 4 ইঞ্চি হয় তখন বুঝতে হবে জমিতে চারা বুননের জন্য এটা উপযোগী। তাই সঠিক সময়ে সঠিক পরিচর্যায় যে কেউ মরিচ চাষ করতে পারে।
হাইব্রিড মরিচ হলো মরিচের আরেকটি জাত। হাইব্রিড মরিচ এর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক। এটি একটি অধিক ফলনশীল ফসল।
এই মরিচ চাষের ক্ষেত্রে দোআঁশ মাটির প্রয়োজন । হাইব্রিড মরিচ চাষে মাটির কাংকিত মান এর পিএইচ ৫.৫-৬.৭সে.মি এবং তাপমাত্রা ২৫’-৩০’সে.থাকা জরুরি।
হাইব্রিড মরিচ এর ক্ষেত্রেও প্রথমে বীজ বপন করে তার চারা উৎপাদন করতে হবে। চারা উৎপাদনের পরের জমি তৈরি করতে হবে।
চাষের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারি ২০-২২ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ২২-২৪ ইঞ্চি বজায় রাখতে হবে।
চারার বয়স ২০-২৫ দিন হলেই একটি সবল চারা বুনন করতে হবে তবে অবশ্যই তার একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে ।হাইব্রিড মরিচের চারা রোপণের ১৫ দিন পর পর মাটি আলগা করে জুরজুরে করতে হবে। পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।
বীজ বপনের ৮০-৯০দিন পর ফসল সংগ্রহ করা সম্ভব। ১০-১৫ দিন পর পর প্রতি শতকে ৮-১০ কেজি মরিচ সংগ্রহ সম্ভব।
আমাদের দেশে মরিচ ছাড়া কোন রান্না কল্পনাই করা সম্ভব নয়। তাই মরিচ চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে প্রচুর লাভবান হওয়া সম্ভব।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.