আসসালামুআ’লাইকুম। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন মহান আল্লাহ্ পাকের অশেষ রহমতে। মাগরিবের নামাজের পর আমল কি কি? মাগরিবের নামাজের পর আমল ও দোয়া সমূহ এর বিষয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল।
মহান আল্লাহ্ তা’আলা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করেছেন আমাদের উপর। প্রত্যেক ফরয নামাজের পরই বিভিন্ন দুআ, যিকর এবং আমল আছে। এর মধ্যে আবার কিছু আমল আছে যেগুলো বিশেষ ওয়াক্তের নামাজের সাথে খাস।
যেমনঃ মাগরিবের নামাজের পরের আমল। আবার ফজরের নামাজের পরেও আমল রয়েছে। অনেকগুলো আমল এমন রয়েছে; যা প্রত্যেক ফরয নামাজের পর করতে হয়। তাই মাগরিবের নামাজের পর সে আমলগুলো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তো চলুন, মাগরিবের নামাজের পর আমল বিষয়ে জেনে নেয়া যাকঃ
বাংলাতে আরবির বিশুদ্ধ উচ্চারণ সম্ভব নয়; তাই আপনাদেরকে বিশেষ অনুরোধ রইলো আরবি সঠিক উচ্চারণ শিখে আমল করার। কেননা, ভুল উচ্চারণের কারণে অনেকসময় অর্থ পাল্টে গিয়ে বিকৃতি ঘটে। তাই সতর্কতা জরুরি।
মাগরিবের নামাজের পর আমল গুলোর অধিকাংশই ৫ ওয়াক্ত ফরয নামাজের পর করতে হয়। আর যে আমল মাগরিবের নামাজের পর করতে হয়; তা চিহ্নিত করে দেয়া হবে ইনশা আল্লাহ্।
এক.
আস্তাগফিরুল্লহ্, (অর্থাৎ আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি) ৩ বার ।
দুই.
উচ্চারণ:- আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালা-মু অমিন্কাস সালা-মু তাবা-রকতা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকর-ম।
অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি শান্তি (সকল ত্রুটি থেকে পবিত্র) এবং তোমার নিকট থেকেই শান্তি। তুমি বরকতময় হে মহিমময়, মহানুভব! (মুসলিম ১/৪১৪)
তিন.
উচ্চারণ:- “ লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহ্, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুলহা’মদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই ইন ক্বদীর।
অর্থ:- আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন অংশী নেই, তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব, তাঁরই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।
চার.
উচ্চারণ:- আল্লা-হুম্মা লা মা-নি’আ লিমা আ’ত্বইতা, ওয়ালা মু’তিয়া লিমা মানা’তা ওয়ালা ইয়ানফা’উ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু।
অর্থ- হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা রোধ করার এবং যা রোধ কর তা দান করার সাধ্য কারো নেই। আর ধনবানের ধন তোমার আযাব থেকে মুক্তি পেতে কোন উপকারে আসবে না। (বুখারী, মুসলিম, সহীহ , মিশকাত ৯৬২ নং)
পাঁচ.
উচ্চারণ:- লা-হাওলা ওয়ালা ক্বুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ্।
অর্থ:- আল্লাহর প্রেরণা দান ছাড়া পাপ থেকে ফিরার এবং সৎকাজ করার শক্তি নেই।
ছয়.
উচ্চারণ:- লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা না’বুদু ইল্লা ইয়্যা-হু লাহুন্নি’মাতু ওয়ালাহুল ফায্বলু ওয়ালাহুস সানা-উল হাসান, লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলিস্বিনা লাহুদ্দ্বীনা অলাওকারিহাল কা-ফিরুন।
অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত কেউ সত্য উপাস্য নেই। তাঁর ছাড়া আমরা আর কারো ইবাদত করি না, তাঁরই যাবতীয় সম্পদ, তাঁরই যাবতীয় অনুগ্রহ, এবং তাঁরই যাবতীয় সুপ্রশংসা, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই। আমরা বিশুদ্ধ চিত্তে তাঁরই উপাসনা করি, যদিও কাফেরদল তা অপছন্দ করে। (মুসলিম, সহীহ , মিশকাত ৯৬৩ নং)
সাত.
سُبْحانَ الله সুবহা-নাল্লহ্। অর্থাৎ, আমি আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। ৩৩ বার। اَلْحَمْدُ لله আলহা’মদু লিল্লা-হ্। অর্থাৎ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর নিমিত্তে। ৩৩ বার اَلله أَكْبَر আল্ল-হু আকবার। অর্থাৎ আল্লাহ সবচেয়ে মহান ৩৪ বার। (মুসলিম, সহীহ ১৩৭৭নং)
তাসবীহ গণনায় বামহাত বা তাসবীহ মালা ব্যবহার না করে কেবল ডানহাত ব্যবহার করাই উত্তম। (সহীহুল জামে’ ৪৮৬৫নং)
আট.
সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব এবং সূরা নাস ১ বার করে পাঠ করা। (আবু দাঊদ২/৮৬, সহীহ তিরমিযী ১/৮, নাসাঈ ৩/৬৮)
নয়.
আয়াতুল কুরসী ১বার। শুধু মাগরিবের নামাজের পরই নয়; বরং প্রত্যেক নামাজের পর এই আয়াত পাঠ করতে হয়। হাদিসে এসেছে যে, প্রত্যেক নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করলে মৃত্যু ছাড়া জান্নাত যাওয়ার পথে পাঠকারীর জন্য আর কোন বাঁধা থাকে না। (সহীহ জামে’ ৫/৩৩৯, সি: সহীহাহ্ ৯৭২)
সূরা বাক্বারাহ এর ২৫৫ নং আয়াতকে আয়াতুল কুরসি বলে।
দশ.
উচ্চারণ:- লা ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুলহা’মদু য়্যুহ্য়ী ওয়া য়্যুমীতু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই ইন ক্বদীর।
অর্থ- আল্লাহ ছাড়া কেউ সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই, তিনি জীবিত করেন, তিনিই মরণ দান করেন এবং তিনি সর্বোপরি শক্তিমান।
এটি ফজর ও মাগরিবের নামাযে সালাম ফিরার পর দশবার পড়লে দশটি নেকী লাভ হবে, দশটি গুনাহ ঝরবে, দশটি মর্যাদা বাড়বে, চারটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব লাভ হবে এবং শয়তান থেকে নিরাপদে থাকবে। (সহীহ তারগীব ২৬২- ২৬৩ পৃ:)
এগারো.
উচ্চারণ:- আল্লা-হুম্মা ক্বিনী আযা-বাকা ইয়াওমা তাবআসু ইবা-দাক।
অর্থ:- হে আল্লাহ! যেদিন তুমি তোমার বান্দাদেরকে পুনরুত্থিত করবে সেদিনকার আযাব থেকে আমাকে রক্ষা করো। (মুসলিম)
প্রকাশ করা জরুরি যে, এই সকল দুআ, আমল ও যিক্রকে সূর করে পড়া বিদআত বলা হয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে তা পরিহার করতে হবে।
বারো.
উচ্চারণ:- লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুলহা’মদু য়্যুহ্য়ী ওয়া ইউমিতু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই ইন ক্বদীর।
অর্থ- আল্লাহ ছাড়া কেউ সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই, তিনি জীবিত করেন, তিনিই মরণ দান করেন এবং তিনি সর্বোপরি শক্তিমান।
এটি ফজর ও মাগরিবের নামাজে সালাম ফেরানোর পর দশবার পড়লে দশটি নেকী লাভ হবে, দশটি গুনাহ ঝরবে, দশটি মর্যাদা বাড়বে, চারটি গোলাম আযাদ করার সওয়াব লাভ হবে এবং শয়তান থেকে নিরাপদে থাকবে। (সহীহ তারগীব)
একজন খাঁটি মুমিন মুসলিমের জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি তার ঈমান-আক্বিদা সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ করা। এরপর বিভিন্ন এমন নেক আমলগুলোর প্রতি তাকে যত্নবান হতে হবে; যে আমলগুলো রসূল (সঃ) এর সুন্নাহ্ দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে।
শুধু যে মাগরিবের নামাজের পর আমল করবেন; এমন নয় – বরং জীবনে চলার পথে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রসূল (সঃ) এবং তার সাহাবিরা যেভাবে নেক আমল করতেন; আপনাকেও সেভাবেই অনুকরণ করে নেক আমল করতে হবে। কেননা, রসূল (সঃ) এবং তার সাহাবিরা আমাদের জন্য অনুসরণীয় মডেল।
তাই আমরা নেক আমল, বিভিন্ন দোয়া এবং যিকর এর সুন্নাহসম্মত নিয়মগুলো শিখে তা বাস্তব জীবসে আমল করবো। আল্লাহ্ পাক আমাদের ঈমান-আক্বিদায় বিশুদ্ধতা দান করে নেক আমল করা তাওফিক দান করুন। আমীন।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.