ইসলাম

ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম এর ফজিলত কি?

আল্লাহ তালার সুন্দর সুন্দর গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে একটি হলো “জুল জালালি ওয়াল ইকরাম”। অনেকের মতে এটি ইসমে আজম বা বড় নাম। কেননা এটি রুবুবিয়্যাহ ও উলুহিয়্যার সমস্ত গুণাগুণকে শামিল করেছে। জালাল শব্দের অর্থ মর্যাদাবান এবং ইকরাম অর্থ সম্মানিত।আল্লাহর বড়ত্ব বা শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে যেসকল নামে ডাকা হয় সেগুলোকে বলে ইসমে আজম। এই দুই শব্দের মধ্যে ‘ইসম’ অর্থ হলো নাম আর ‘আজম’ অর্থ মহান বা শ্রেষ্ঠ। আল্লাহর এই নামটি কুরআনে  এসেছে দুইবার সূরা আর রাহমানের ২৭ নম্বর ও ৭৮ নম্বর আয়াতে। ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম এর অর্থ সমস্ত সৃষ্টি জগতের মালিক, যিনি সৃষ্টিকুল হতে ভয় পাওয়ার হকদার ও একমাত্র প্রশংসার যোগ্য, মহত্ব, বড়ত্ব,দয়া ও ইহসানের অধিকারী। আজকে আমরা জানবো ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম জিকিরের ফজিলত। 

ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম এর ফজিলত

‘জুল জালালি ওয়াল ইকরাম’ মহান আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর একটি। তবে আল্লাহকে ডাকার সময় এই নামের আগে যখন ‘ইয়া’ যুক্ত হবে তখন বলতে হবে ‘যাল জালালি ওয়াল ইকরাম’। এভাবে ‘ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ অর্থাৎ ‘হে মহা মর্যাদাবান ও মহা সম্মানিত’ বলে ডাকতে হবে।

এই নাম পাঠের ফজিলত সম্পর্কে প্রিয় নবীজি (সাঃ) একটি হাদিসে বলেছেন –  ‘তোমরা সবসময় ‘ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ পাঠ করাকে অপরিহার্য করে নাও (তিরমিজি : ৩৫২৫)। অর্থাৎ সদা সর্বদা এই নাম পাঠ করার প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ আদায়ের পরে বসা অবস্থায় বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া যাল জালালী ওয়াল ইকরাম।’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ, আপনি সালাম (শান্তি নিরাপত্তা প্রদানকারী), আপনার পক্ষ থেকেই সালাম (শান্তি ও নিরাপত্তা) আসে। আপনি বরকতময়, হে মহিমময় মহানুভব।’ (মুসলিম : ৫৯১-৫৯২) 

সুন্নাহ মতে প্রতিটি নামাজের পর ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম বলে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।একবার  আনাস (রাঃ) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে বসা ছিলেন। তখন ঐখানে এক ব্যক্তি এসে নামাজ আদায় করল এবং এই দোয়াটি পাঠ করল-‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু, লা-ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নান, বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ, ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।’ 

ঐ সময় রাসুল (সাঃ) বললেন, ‘তুমি আল্লাহর দরবারে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করেছ,যে নামে ডাকলে মহান আল্লাহ সাড়া দেন এবং কিছু চাইলে তা দান করেন।’ (সুনানে তিরমিজি : ৩৫৪৪, আবু দাউদ ১৪৯৫, নাসাঈ, ১৩০)। 

আবুল হাসান আশআরি (রহ.) ও ইমাম আবু জাফর তাবারি (রহ.) বলেন, আল্লাহ তাআলার প্রতিটি গুণবাচক নামই ইসমে আজমের অন্তর্ভুক্ত। যদি কোন ব্যক্তি এটি নিয়মিত পাঠ করে,তবে আল্লাহ তাআলা এর আমলকারীর দুনিয়া ও পরকালের সব কাজ-কর্ম সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে দেবেন।

সারকথা

মহান রাব্বুল আলামীন যেন মুসলিম উম্মাহকে তাঁর এ সুন্দর গুণবাচক নাম ‘জাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ এর ফজিলত জেনে নিয়মিত আমল করার তাওফিক দান করেন। আমিন ইয়া রব্বুল আলামীন। 

Bangla Alo

Recent Posts

অর্কিড ফুল চাষ পদ্ধতি, রোগবালাই দমন, ফলন ও ফুল সংগ্রহ

অর্কিড, খুব কঠিন একটা নামের সুন্দর একটা ফুল। আজকে আপনাদের সাথে চমৎকার একটি ফুল নিয়ে…

6 days ago

৫টি জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানের লিরিক্স

প্রতিটা দেশেরইই একক কিছু দেশাত্মবোধক গান থাকে তেমনি বাংলাদেশেও রয়েছে এমন অনেকগুলো দেশাত্মবোধক গান।  আমরা…

1 week ago

ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় জানুন

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো -…

1 week ago

বেগুন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন, নিজে চাষ শুরু করুন

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর ইচ্ছায় অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে বেগুন চাষ…

1 week ago

ওমরা ভিসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য ২০২৪

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো…

1 week ago

কনফেকশনারি ব্যবসার আইডিয়া || শুরু থেকে শেষ অব্দি

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর ইচ্ছায় সবাই ভালো আছেন। আমাদের দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ…

1 week ago