সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম: তাসবিহের নামাজ নামে পরিচিত সালাতুল তাসবিহ অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ নামাজ। অতিরিক্ত তাসবীহ পাঠ করা হয় বলে এই নামাজের নাম সালাতুল তাসবীহ বা তাসবীহের নামাজ। সালাতুল তাসবিহ চার রাকাতের নামাজ। ৪ রাকাআত এর নিয়তে এই নামাজ আদায় করতে হয়। প্রতি রাকায়াতে ৭৫ বার করে সর্বমোট ৪ রাকায়াতে ৩০০ বার নিম্নোক্ত তাসবিহ পড়তে হয়।
তাসবিহ: ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’।
হাদীসে আছে এই নামাজ পড়লে আল্লাহ-পাক আপনার পুরাতন-নতুন,ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত, ছোট-বড়, গোপনে-প্রকাশ্যের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিবেন। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামায পড়লে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।
আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) উনার আপন চাচা আব্বাস (রাঃ) কে বলেছিলেন যে, চাচা আপনি সপ্তাহে ১ বার সালাতুত তাসবিহ পড়বেন, সেটি সম্ভব না হলে মাসে একবার পড়বেন, তাও না হলে বছরে একবার পড়বেন, এতেও যদি অক্ষম হয়ে থাকেন তবে জীবনে ১ বার পড়বেন।
মুসলমানরা যেন এ নামাজ পুরো জীবনে একবার হলেও পড়ে সে বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন।
আরবি নিয়তের বাংলা উচ্চারণ –
” নাওয়াইতু আন উচ্ছাল্লিয়া লিল্লাহিতা’লা আরবায়া রাকায়াতি সালাতিল সালাতুতাসবীহ সুন্নাতু রাসুলাল্লাহহিতা’লা মুতাওয়াজ্জিহান ইলাজ্জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”
১) প্রথমে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ত করতে হবে।
২) সানা পড়তে হবে। সানা এর পর উক্ত তাসবিহ ১৫ বার পাঠ করতে হবে।
৩) তাসবিহ পাঠ শেষে রুকু করতে হবে।রুকুর দোয়া শেষ করে ১০ বার তাসবিহ পড়বেন।
৪) এরপর রুকু থেকে উঠে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলার পর আবার ওই তাসবিহ ১০ বার পড়বে।
৫) এরপর আল্লাহু আকবার বলে প্রথম সিজদায় যাবে,সিজদার তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা ) তিনবার পাঠ করে উপরোক্ত দোয়া আবার ১০ বার পড়তে হবে।
৬) সিজদা থেকে উঠে দুই সিজদার মাঝখানে আবার ১০ বার পড়বে।
৭) তারপর তাকবীর বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবে। সিজদার তাসবীহ শেষ করে ঐ তাসবীহ বা দোয়াটি আবার ১০বার পড়ে দ্বিতীয় রাকায়েতের জন্য দাঁড়াবে।
তারপর একই ভাবে ২য় রাকাত পড়তে হবে, ( সুরা ফাতিহা পড়ার আগে তাসবিহ টি ১৫ বার পড়তে হবে ) দ্বিতীয় রাকাতে ও শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার আগে ১০ বার তাসবিহ পড়ে নিতে হবে। এবার তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে একইভাবে সুরা ও তাসবিহ পড়তে হবে। কোনোভাবেই আত্তাহিয়্যাতুর পর তাসবিহ পড়া যাবে না এবং কোনোভাবেই প্রতি রাকাতে ৭৫ বারের বেশি পড়া যাবে না।
মোট ৩০০ বার তাসবিহ পাঠ করা হলো সালাতুল তাসবিহ নামাজের মুল বিষয়। এই অতিরিক্ত তাসবিহর হিসেব রাখতে গিয়ে অনেকেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পরে।
কোনো এক স্থানে উক্ত তাসবিহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে পরবর্তী যে রুকনেই স্মরণ আসুক সেখানে তথাকার সংখ্যার সাথে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করে নিবে। আর এই নামাজে কোনো কারণে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সিজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে ওই তাসবিহ পাঠ করতে হবে না।
এ নামাজে তাসবিহ গণনার ক্ষেত্রে খুব মনোযোগী ও সতর্ক থাকতে হবে। তাসবিহর গণনা মুখে অথবা হাতের আঙুল দ্বারা সরাসরি করা যাবে না। এতে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
হাতের আঙ্গুল গুলোর কর গুনে গুনে হিসেব রাখার নিয়ম নেই বা এটা করা যাবে না। তবে তাহরিমা বাধা অবস্থায় তাসবিহ গণনা করতে চাইলে সেই অবস্থায় হাতের আঙ্গুল টিপে টিপে হিসাব রাখা যাবে।
ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আব্বাস ইবনে আব্দিল মুত্তালিবকে বলেছেন,হে চাচা! আঁমি কি আপনাকে দেব না? আঁমি কি আপনাকে প্রদান করব না? আমি কি আপনার নিকটে আসব না? আমি কি আপনার জন্য ১০টি সৎ গুনের বর্ণনা করব না যা করলে আল্লাহ তা’আলা আপনার আগের ও পিছনের,নতুন ও পুরাতন,ইচ্ছায় ও ভুলবশত কৃত,ছোট ও বড়, গোপন ও প্রকাশ্য সকল গুনাহ মাফ করে দেবেন?
আর সে দশটি সৎ গুন হলো: আপনি চার রাকাত নামাজ পড়বেন।প্রতি রাকাআতে সূরা ফাতিহা ও অন্য একটি সূরা পড়বেন।হে চাচা! যদি সম্ভব হয় এই নামাজ প্রতিদিন একবার পড়বেন। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে প্রতি শুক্রবার পড়বেন। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে প্রতি মাসে একবার, আর যদি তাও সম্ভব না হয় তবে প্রতিবছর একবার পড়বেন। আর এটাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে জীবনে একবার হলেও সালাতুত তাসবিহ আদায় করবেন।’ (আবু দাউদ : ১২৯৯; তিরমিজি: ৪৮৩; ইবনে মাজাহ : ১৪৫০)
সালাতুল তাসবিহ নামাজের নিয়ম ও সালাতুত তাসবিহ এমন এক ধরনের ফজিলতপূর্ণ নামাজ যা একজন মুসলিম জীবনে একবার হলেও যেনো পড়ে,এই তাগিদ করে গিয়েছেন প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ। এই নামাজ যে কোনো সূরা মিলিয়ে পড়া যায়। মাকরূহ সময় ব্যতীত দিনে রাতে যে কোনো সময় এই নামাজ পড়া যায়। এমনই আরো গুরত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিষয় গুলো জানতে ভিজিট করুন বাংলা আলো ওয়েবসাইটের ইসলাম নামক ক্যাটাগরিরটি।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.