আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এবং বিভাগে প্রায় ৫০টির মতো পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। সেগুলোর মধ্য থেকে বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কোনগুলো? – সে বিষয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল।
আমরা জেনারেলে যে লেখাপড়া করে থাকি, সেটি মূলত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এর সাথে আমাদের আরও দরকার কারিগরি শিক্ষার। যাতে আমরা কাজে দক্ষ হতে পারি এবং তার পাশাপাশি কর্মমুখী হতে পারি। এজন্য, চাহিদা রয়েছে এমন বিভিন্ন বিষয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কিল আপগ্রেড করতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গুলো কাজ করছে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি বাস্তব এবং কর্মমুখী শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আমাদের সেবা দিয়ে থাকে। এজন্য বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কোনগুলো তা আমাদের জন্য জেনে রাখাটা জরুরি। তো চলুন সেগুলো জেনে আমরা জেনে নেইঃ
বাংলাদেশের মধ্যে অনেক কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোর মধ্য থেকে সেরা ১০টি পলিটেকনিকের নাম, অবস্থান এবং প্রতিষ্ঠান এর ব্যাপারে তথ্য নীচে দেয়া হলোঃ
আমাদের বাংলাদেশের রাজধানী হলো ঢাকা শহর। ঢাকাস্স্থ তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট “ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট”। এই ইনস্টিটিউট টির প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত কাজ শুরু হয় ১৯৫৩ সালে এবং শেষ হয় ১৯৫৫ সালে।
তখন এর নাম ছিল “ইস্ট পাকিস্তান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট”। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এর নাম ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রাখা হয়। এটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় একটি ইনস্টিটিউট।
ঢাকা শহরের পর চট্টগ্রাম হলো বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা। এখানকার নাসিরাবাদ ,চট্টগ্রাম এ অবস্থিত হলো চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এটি ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব থেকে এটি দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ নিয়ে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর মধ্যে এটি অন্যতম সেরা।
কুমিল্লা জেলার কোটবাড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আর তা হলো কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এটিও ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের পুরনো পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গুলোর মধ্যে এটি রয়েছে। এই প্রিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় ৪,০০০ এর মতো। এটি সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর তালিকার একটি।
আলেকান্দা ,বরিশাল এ অবস্থিত হলো বাংলাদেশের পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আর তা হলো বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এটি আজ থেকে প্রায় ৬০ বছর আগে বরিশাল জেলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
এই ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড এর অধীনে চার বছর মেয়াদের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স পরিচালনা করে থাকে। এর শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ হাজারেরও বেশি। সবকিছু বিবেচনায় এটি বাংলাদেশের সেরা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর মধ্যে রয়েছে।
পাঁচ নম্বরে যার কথা বলতে চাচ্ছি সেটি হলো – সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। টেকনিক্যাল রোড, বরইকান্দি, সিলেটে এটি অবস্থিত। এটি খুব পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর একটি যেটি ইস্ট পাকিস্তান এর সময়ে স্থাপিত হয়েছিল।
১৯৫৫ সালে বিশাল আয়তন নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন ফোর্ড ফাউন্ডেশন ঢাকা, রংপুর, বগুড়া, পাবনা ও বরিশাল এই পাঁচটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাথে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি প্রতিষ্ঠা করে।
শুরুতে সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটির পাঠ্যক্রমানুসারে ৩ বছর মেয়াদি কোর্স করাতো। যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞান কোর্সে প্রকৌশলে স্নাতককারী কর্তৃক বিধান রেখে তৎকালীন কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক সার্টিফিকেট প্রদান করা হত। এটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর মধ্যে রয়েছে।
পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট টি গাংকোলা ,পাবনা তে অবস্থিত। এটির গোড়াপত্তন শুরু হয় ১৯২৪ সালে। তখন এটি একটি টেকনিক্যাল স্কুল ছিল। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হিসেবে পরিবর্তিত হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ১৯৭৮ সালে এটি পুরোদমে কার্যক্রম করতে থাকে।
১৯৬২ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপিত হতে থাকে আর তার মধ্যে পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটও রয়েছে। এটি বাংলাদেশের প্রাচীন ও সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর মধ্যে গণ্য। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার।
বগুড়া জেলার শেরপুর রোডে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট গুলোর একটি আর তা হলো – বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
প্রায় বিশ একর জমি নিয়ে এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট টি ১৯৬২ সালে বগুড়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই এটি সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর তালিকাতে রয়েছে।
১৮৮২ সালে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপিত হয়। এটি রংপুর শহরের জুম্মা পাড়ায় অবস্থিত। তিন হাজার এরও অধিক শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করে। প্রায় ৩৩ একর জমি নিয়ে এই বিশালাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়।
তবে এটি ১৮৮২ সালে একটি টেকনিক্যাল স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে তা রংপুর টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট হিসেবে পরিবর্তিত হয়। এরও ৬ বছর পর তাতে ইলেকট্রিক্যাল ও ম্যাকানিকাল টেকনোলজি অন্তর্ভুক্ত হয়ে এর নাম হয় রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট; যা বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর একটি।
এটি বাংলাদেশের প্রাচীন একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট; যেটির নির্মান কাজ ১৯৬০ সালে শুরু হয়েছিলো। সুইডিশ সরকারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তীতে এটির নাম বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রাখা হয়।
রাজনীতির প্রভাবমুক্ত বলে এটির বেশ সুনাম রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উটজেলার কাপ্তাই হ্রদের তীরে অবস্থিত। প্রায় দেড় হাজারের মতো শিক্ষার্থী এতে পড়াশোনা করে। এর আয়তন প্রায় ৩১ একরের কাছাকাছি।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সময়ে বাঙালি ছাত্রদের পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি গিয়ে পড়ালেখা করতে হতো; যা ছিল ঝামেলাপূর্ণ এবং ব্যায়বহুল। এ সমস্যা নিরসনের জন্য পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকারের আহ্বানে সুইডেনের প্রতিনিধি দল পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই হ্রদ তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেন ও এখানে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট করার জন্য রাজি হন।
এর কিছুদিন পরে ১৯৬০ সালে, “SENTAB” নামের একটি সুইডিশ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তাদের নির্মাণ কাজ শুরু করে এবং ১৯৬৫ সালে এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করে। সবকিছু মিলিয়ে এটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর একটি।
১৯৬৩ সালে সপুরা, রাজশাহীতে এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণের উদ্দেশ্যে রাজশাহীর সপুরাতে পনেরো একর জমির উপর ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস এ মোট সাতটি ভবন রয়েছে।
সুবিশাল এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। এখানে বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো – ইলেকট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগ, কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল (সিভিল) বিভাগ, তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগ সহ ইত্যাদি। সার্বিক বিবেচনায় এটি বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর একটি।
–
উপর্যুক্ত তথ্যাবলী থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের অনেকগুলো পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ষাটের দশকে স্থাপিত হয়েছে বা স্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এগুলো প্রাচীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য।
বর্তমান সময়ে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে বসে থাকাটা অনুচিত। কেননা, এর পাশাপাশি আপনার কোন বিষয়ে ভাল স্কিল ডেভলপমেন্ট এর প্রয়োজন রয়েছে। তাহলে সহজে আপনার কর্মসংস্থান হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ্।
তাই আপনার নিকটস্থ ভাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ আপনি যুক্ত হতে পারেন। আমরা বাংলাদেশের সেরা ১০টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর বিষয়ে উপরে জেনেছি। সেখান থেকে আপনার পছন্দমতো আপনি বাছাই করে নিতে পারেন আপনার ইনস্টিটিউট টি!
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.