মালোয়েশিয়া ভিসা | ধরন, খরচ, মেয়াদ, আবেদন নিয়ম | বাংলাদেশ থেকে মালোয়েশিয়া ভিসা

0
95

মালোয়েশিয়া যাওয়ার ইচ্ছা? বাংলাদেশ থেকে মালোয়েশিয়া ভিসা পেতে হলে কি করতে হবে, কত টাকা খরচ, কোথায় আবেদন করবেন, কি কি লাগবে সব বিষয়ে জানুন এই আর্টিকেল থেকে।

 

শত শত বাংলাদেশী নাগরিকরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন স্বপ্ন নিয়ে মালয়েশিয়াতে গমন করছেন। তাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্য নিয়ে কিংবা নিজের কর্মসংস্থান যোগানের আশায় মালয়েশিয়াতে যাচ্ছে। 

 

তাছাড়াও আরও রয়েছে ভ্রমণ করার জন্য অথবা মালয়েশিয়া তে অবস্থিত নামকরা সকল হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে মালয়েশিয়াতে যাচ্ছে অহরহ বাঙালি নাগরিকরা।

 

মালয়েশিয়া গমন এর আগে সবার প্রথম যে কথাটি মাথায় আসে তাহলে মালয়েশিয়ার ভিসা। যেহেতু ভ্রমণ এর প্রথম এবং প্রধান একটি অংশ হলো ভিসা। 

 

তাই ভিসার ধরন, খরচ, মেয়াদ, আবেদন নিয়ম এসকল বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরী। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা মালয়েশিয়ার ভিসা সংক্রান্ত সকল জরুরী তথ্য আপনাদের জানাবো। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

 

মালোয়েশিয়া ভিসার ধরন, সময়, মেয়াদ

 

ক. মালোয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসাঃ

 

এই ভিসা টি মালয়েশিয়া তে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বিখ্যাত। মালোয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসা এর মাধ্যমে বাংলাদেশ এর নাগরিক রা খুব সহজেই মালোয়েশিয়া ভ্রমণ করতে পারে। এই ভিসার প্রসেসিং হতে সময় লাগে মাত্র ৫ থেকে ৭ কার্য দিবস এর মতো। মাঝে মাঝে এর চেয়েও কম সময় লাগে। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি তিন মাস এর মতো সময় মালোয়েশিয়া তে সম্পুর্ন বৈধ ভাবে অবস্থান করতে পারবেন। 

 

খ. মালোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

মালোয়েশিয়া তে রয়েছে অনেক বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি। বাংলাদেশ এর অনেক স্টুডেন্ট রা ই মালোয়েশিয়া তে স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার জন্য যাচ্ছে। এই ভিসার প্রসেসিং হতে প্রায় ২০ দিন থেকে ৩০ দিন সময় লেগে থাকে। পড়ালেখা শেষ করা পর্যন্ত এর ভিসার মেয়াদ থাকবে। স্টুডেন্ট রা চাইলে পার্ট টাইম জব করতে পারবে।

 

গ. মালোয়েশিয়া এম্প্লয়মেন্ট ভিসাঃ

 

প্রতি বছর প্রায় হাজার হাজার মানুষ মালোয়েশিয়া যাচ্ছে এম্প্লয়মেন্ট ভিসার মাধ্যমে। বিভিন্ন কাজের সন্ধান মেলে এই দেশে। সকল কাগজ পত্র সঠিক থাকলে ভিসা হাতে পেতে সময় লাগতে পারে প্রায় ১ মাস এর মতো। মাঝে মাঝে সময় কম বা বেশি লাগতে পারে। মালোয়েশিয়া এম্প্লয়মেন্ট ভিসা টির মেয়াদ থাকে প্রায় ২ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত।

 

ঘ. মালোয়েশিয়া বিজনেস ভিসাঃ

 

বিজনেস সংক্রান্ত কাজে অনেকেই যাচ্ছে মালোয়েশিয়া তে। তারা মালোয়েশিয়া বিজনেস ভিসার মাধ্যমেই গমন করছেন। এই ভিসা প্রসেসিং হতে সময় লাগে প্রায় ১০ কার্য দিবস পর্যন্ত এবং এই ভিসার মেয়াদ কাল হলো ১ মাস থেকে ৩ মাস পর্যন্ত।

 

ঙ. মালোয়েশিয়া মেডিকেল ভিসাঃ 

 

চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে অনেকেই মালয়েশিয়া গিয়ে থাকেন। এই ভিসা প্রসেসিং হতে খুব বেশি সময় লাগে না। ২ থেকে ৩ দিন এর মধ্যেই এই ভিসার সকল কাজ কমপ্লিট হয়ে যায়। মালোয়েশিয়া মেডিকেল ভিসার মাধ্যমে পেশেন্ট রা ৩০ দিন সেখানে অবস্থান করতে পারে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজের জন্য। 

Related : বাংলাদেশ থেকে ইতালি ভিসা পাওয়ার উপায় 

মালোয়েশিয়া ভিসা করতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন

 

ক. মালোয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. দেশী নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. যেই সদস্য স্পনসর করছে তার আকামার কপি।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

 

খ. মালোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এর অফার লেটার।

৪. আগের শ্রেণি গুলোর স্কুল এবং কলেজ এর সকল মেইন সার্টিফিকেট, তার সাথে আরও লাগবে সেই সকল পরীক্ষার মার্কশিট।

৫. IELTS স্কোর এর সার্টিফিকেট।

৬. মালয়েশিয়া তে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় এর এপ্লিকেশন ফর্ম। 

৭. নিজস্ব কিংবা পারিবারিক অভিভাবক এর ব্যাংক সলভেন্সির কাগজ পত্র। 

৮. স্টুডেন্ট ভিসার এপ্লিকেশন ফর্ম।

৯. শিক্ষার্থীদের সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো অবশ্যই ইন্টান্যাশনাল অরগানাইজেশান ফর মাইগ্রেশান থেকে সঠিক ভাবে ভেরিফিকাশন করে নিতে হবে।

১০. স্টুডেন্ট এর লিগেল আইডেন্টিটি ডকুমেন্টস। 

১১. রিকমেন্ডেশন লেটার অথবা মোটিভেশনাল লেটার।

১২. স্টুডেন্ট এর সিভি।

১৩. কোভিড- ১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোস এর ফর্ম।

১৪. আগের স্কুল কলেজ এর সকল সার্টিফিকেট এর মেইন কপি এবং ফটোকপি। অবশ্যই সকল সার্টিফিকেট গুলো শিক্ষাবোর্ড এবং অ্যাম্বাসি কর্তৃক সত্যায়িত করে নিতে হবে। 

১৫. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

 

গ. মালোয়েশিয়া এম্প্লয়মেন্ট ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. দেশী নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. যে  স্পনসর করছে তার আকামার কপি।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

৮. মেডিকেল ফিটনেস এর কাগজ পত্র। 

 

ঘ. মালোয়েশিয়া বিজনেস ভিসাঃ

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. দেশী নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. স্পনসর এর আকামার কপি।

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

৮. বিজনেস সংক্রান্ত কাগজ পত্র।

 

ঙ. মালোয়েশিয়া মেডিকেল ভিসাঃ 

 

১. লিগেল ডিজিটাল পাসপোর্ট।

২.  প্র‍য়োজন অনুযায়ী পাসপোর্ট সাইজ এর সদ্য তোলা রঙিন ছবি।

৩. দেশী নাগরিকত্ব সনদপত্র।

৪. কোভিড-১৯ এর  ভ্যাকসিন এর ডোসের ফর্ম।

৫. ডাক্তার এর রিপোর্ট। 

৬. জন্ম নিবন্ধন পত্র।

৭. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।

 

মালোয়েশিয়া ভিসা করতে কত টাকা লাগে

 

ক. মালোয়েশিয়া এন্ট্রি ভিসাঃ

এই ভিসা প্রসেসিং হতে খরচ হয় প্রায় INR ১৯৯৯/-

 

খ. মালোয়েশিয়া স্টুডেন্ট ভিসাঃ

বেশিরভাগ সময় স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ফ্রি তেই স্টুডেন্ট রা মালোয়েশিয়া তে অবস্থান করতে পারে।

 

গ. মালোয়েশিয়া এম্প্লয়মেন্ট ভিসাঃ

এই ভিসাতে খরচ হয় প্রতি বছর RM ২০০।

 

ঘ. মালোয়েশিয়া বিজনেস ভিসাঃ

এই ভিসা প্রসেসিং হতে খরচ হয় প্রায় Rs. ৫৭২০.

 

ঙ. মালোয়েশিয়া মেডিকেল ভিসাঃ 

এই ভিসা প্রসেসিং হতে খরচ হয় প্রায় Rs. ৫৭২০.

 

এই সকল ভিসার পেমেন্ট গুলো ক্ষেত্র বিশেষ পরিবর্তন হতে পারে।

 

মালোয়েশিয়া ভিসা কিভাবে করতে হয় বা নিয়ম

 

মালয়েশিয়া র ভিসা প্রসেসিং এর বেশ কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। তবে তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ হলো অনলাইন ভিসা আবেদন প্রসেস। তাই আমরা সে ব্যাপারটি সম্পর্কে ই বিস্তারিত আপনাদের জানাচ্ছি। এখন আপনাদের জানাবো কিভাবে স্টেপ বাই স্টেপ আপনার মালয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত…. 

 

১. আপনার জন্য নির্ধারিত হওয়া ভিসা বাছাইঃ

 

আমরা সবাই জানি প্রত্যেকটি দেশের গমন করতে হলে ভিসার প্রয়োজন হয় এবং তার পাশাপাশি এটাও জানি যে ভিসার বিভিন্ন ধরন হয়ে থাকে। তাই আপনার প্রথম কাজ হবে আপনার জন্য নির্ধারিত ভিসা টি সিলেক্ট করে নেওয়া অর্থাৎ যেই ভিসার মাধ্যমে আপনি মালয়েশিয়া গমন করতে চাচ্ছেন সেটি বেছে নিন।

 

তারপর সরাসরি ভিসা অফিস থেকে জেনে নেওয়া কিংবা তাদের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নেওয়া সকল নির্দেশনা অনুযায়ী কাগজ পত্র তৈরি করুন। এই সকল প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গুলো আপনাকে ভিসা আবেদনের সময় সাথে দিতে হবে। আপনি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন কোন ধরনের ভুল ডকুমেন্ট আপনার ভিসা আবেদন পত্রে না যায়।

 

কারণ যদি ভুলক্রমেও কোন ধরনের বেঠিক অথবা অপ্রয়োজনীয়’ ইনফর্মেশন যায় তাহলে আপনার ভিসা আবেদন বাতিল হবার সম্ভাবনা থাকবে। জেনে নিবেন আপনার ভিসা আবেদনের প্রসেসিং শেষ হতে কত সময় লাগতে পারে এবং প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন কিনা তা ছাড়াও আপনার ভিসা ফি বাবদ কত টাকা জমা দিতে হবে সেটাও জেনে নেবেন।

 

আরো কিছু ব্যাপার খেয়াল রাখা জরুরী যেমনঃ

আপনার নাগরিকত্ব, পরিদর্শন অভিবাসন, শিক্ষা অনুমতি, কাজের অনুমতি, ইত্যাদি বিষয়গুলো। এই সকল বিষয় সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রমাণ হিসেবে আপনাকে সম্মতি ফর্ম জমা দেওয়া লাগবে এবং সেখানে অবশ্যই আপনার, আপনার অভিভাবক এর স্বাক্ষর এবং এলাকার চেয়ারম্যান এর স্বাক্ষর থাকা লাগবে। কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকতে পারে। এছাড়াও আবেদন ফর্ম টির সাথে করোনা ভাইরাস এর ভ্যাকসিন নেয়া হলো কিনা তার সঠিক তথ্যাবলী জমা দিতে হবে। 

 

২.  মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য অনলাইন আবেদন টি শুরু করুনঃ

 

এখন শুরু করবেন মালয়েশিয়া ভিসার অনলাইন আবেদন। যেই ফর্ম টির সাহায্যে আপনি মালয়েশিয়া ভিসা প্রসেসিং শুরু করবেন সেটা সঠিক ভাবে সিলেক্ট করে নিবেন এবং তারপর ডাউনলোড করে নিন। এরপর ডাউনলোড করা মেইন ফর্মটি পূরণ করে তার কপি করে রাখুন নিজের কাছে। এখন সেই ভিসা আবেদন ফর্মটি নিয়ে ভিসা অফিসে দিয়ে জমা দিন।

 

এখন আপনার জন্য একটি বৈদ্যুতিন আবেদন পত্র রাখা হবে সেটা সঠিক ভাবে পূরণ করে নিন। সম্পূর্ন ফর্মটি একটি বারকোড এর সাথে যুক্ত করা শিট এর সাথে একটি মানউন্নত, সাদা এবং চকচকে ধরনের কাগজ এর সাথে কপি করে নিয়ে নিবেন। আপনি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার ২ ডি এর বারকোড টি একটি সাদা, উন্নত মানের কাগজে কপি করা হয়, এর কারন হলো হাতে লিখিত কোনো ফর্ম ভিসা অফিস থেকে একদমই গ্রহণ করবে  না।

 

আপনার পার্সোনাল ভিসা সম্পর্কিত সকল প্রকার গোপন তথ্য মেনে চলতে হবে এবং এর সাথেই একটি সম্মতি মূলক ফর্ম ফিল আপ করবেন। ভিসা আবেদন ফর্ম টির সাথে সকল প্রকার গোপনীয়তা বজায় রাখবেন পত্রটি যুক্ত করার সময়। আপনাকে অবশ্যই ভিসা এর ফর্ম সঠিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে  কারন এটি ব্যতীত আপনার ভিসা আবেদন টি গ্রহন যোগ্য হবে না এবং এটি ফিরিয়ে দিয়ে দেওয়া হবে।

 

৩.  সাক্ষাৎকার টি সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ করুনঃ 

 

যখনই আপনার ভিসা আবেদন এর প্রসেস সম্পন্ন হয়ে যাবে ঠিক তখনই ভিসা অফিসের জন্য আপনার সাক্ষাৎকার টি সঠিক ভাবে, সঠিক সময়ে লিপিবদ্ধ করে ফেলতে হবে। সাক্ষাৎকার টি কনফার্ম করার জন্য আবশ্যই আপনাকে সকল প্রকার বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে। তার মানে হলো আপনাকে সঠিক উপায়ে আপনার আঙ্গুল এর ছাপ দিয়ে দিতে হবে।

 

তার সাথে আপনার রঙিন ছবি দিতে হবে। আপনি চাইলে ছবিটি যে কোনো একটি ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার থেকেই তুলে নিতে পারেন। সকল তথ্য সঠিক ভাবে দেবার পর দেখবেন আপনার মালয়েশিয়া ভিসার জন্য করা অ্যাপয়েন্টমেন্ট টি  বুক হয়ে যাবে এক নিমিষেই। 

 

তারপর আপনার দেওয়া ইমেইল এড্রেস এ একটি কনফার্মেশন মেইল পাঠানো হবে ভিসা অফিস থেকে। আরেকটি বিষয় তা হলো, আপনি যখন আপনার পরিবারের অন্য সদস্য বৃন্দ দের জন্য ভিসা এপ্লিকেশন করবেন, তাহলে তাদের সকলের জন্যই আলাদা আলাদা অ্যাপয়েনমেন্টের দরকার পরবে।

 

৪. আপনার ভিসার জন্য প্রযোজ্য ফি প্রদান করুনঃ

 

মালয়েশিয়া ভিসা করতে আপনার যেই পরিমাণ ফি দিতে হবে সেটা সঠিক ভাবে সঠিক কাউন্টার এ প্রদান করুন। আবেদন শেষ হলেই সাথে  সাথে তা দিয়ে দিতে হবে এবং অবিশ্যই মানি রিসিট নিবেন।

 

৫. সাক্ষাৎকারে যোগদান করুনঃ

 

আপনার কাতার গমন এর জন্য করা ভিসার আবেদন কমপ্লিট হয়ে যাবার পর ভিসা অফিস সে সকল মেইন কপি এবং ফটোকপি জমা দিতে হবে। সাক্ষাৎকারে যোগদান করার আগে যদি আপনি মনে করেন আপনার  অনলাইন এ সম্পন্ন হয়ে গেলে সেই কপি ভিসা অফিসে জমা দিয়ে দিন।

 

আর যদি আপনি মনে করেন, অনলাইন আবেদন সম্পন্ন হয়নি, তাহলে সরাসরি ভিসা অফিসে একটি ফর্ম এর মাধ্যমে আপনার প্র‍য়োজনীয় সকল তথ্য সমূহ জমা দিয়ে দিন। যদি আপনি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে আপনার তথ্য জমা দেন অথবা অন্য যেকোনো সাধারণ পদ্ধতির মাধ্যমে, তাহলে সাথে সাথেই আপনাকে একটি কনফার্ম রসিদ দেওয়া হবে সেটা অবশ্যই সংগ্রহ করবেন।

 

তার কারন, সেই রসিদ এর মাধ্যমেই আপনার মালয়েশিয়া ভিসার জন্য ট্র্যাকিং নাম্বার দেওয়া হবে। যা দেখে পরবর্তী সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি বুঝবেন যে, আপনার মালয়েশিয়া ভিসা টির কি পরিমানে অগ্রগতি হয়েছে।

 

৬. ভিসার অ্যাপ্লিকেশন টি ট্র্যাক করুনঃ

 

আপনাকে যেই কনফার্মেশন মেইল পাঠানো হবে সেই ই-মেইলের মাধ্যমে আপনি ট্র্যাক করতে পারবেন আপনার মালয়েশিয়া ভিসা আবেদনের কাজ কতটুকু সম্পাদক হচ্ছে। ইমেইলে একটি লিঙ্ক দেওয়া থাকবে যে লিংকে ঢুকলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ভিসা আবেদনের কাজ কতটুকু সম্পন্ন হচ্ছে।

 

নাকি স্থগিত আছে, নাকি আপনাকে আবার কোন ধরনের কাজের ভিসা অফিসে যেতে হবে। আপনি চাইলে একটি সঠিক মোবাইল নাম্বার ও তাদের দিতে পারেন যার মাধ্যমে ভিসার সকল আপডেট সংক্রান্ত তথ্য গুলো মেসেজ হিসেবে আপনার মোবাইল এ আসতে পারে। এভাবেও আপনি চাইলে আপনার ভিসার অ্যাপ্লিকেশনটি ট্র্যাক করে নিতে পারেন।

 

৭. পাসপোর্ট টি সংগ্রহ করে নিনঃ

 

এখন আপনার আসল কাজ হবে ভিসা প্রসেসিং অফিস থেকে আপনার বহুল কাঙ্খিত পাসপোর্ট টি গ্রহণ করে নেওয়া। তার পাশাপাশি আপনার প্র‍য়োজনীয় সকল নথি চেক করে নিবেন, যাতে কোনো ভুল হলে সংশোধন করে নিতে পারেন তা না হয়ে আপনার সমস্যা হয়ে পারে৷

 

এছাড়া ও আপনি চাইলে আপনার পাসপোর্ট টি অতিরিক্ত চার্জের দিয়ে কুরিয়ার মাধ্যমে নিয়ে নিতে পারেন। আপনার জন্য প্রস্তাবিত এয়ারপোর্ট এ প্রবেশ এর সঠিক তারিখ, প্রবেশ পথের বিশেষ সংখ্যা, প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ভ্রমণ এর জন্য ১০০% বৈধ কিনা এবং এই ভিসার সকল বিবরণ বিবেচনা করে  পরীক্ষা করে নিতে হবে, এটি আপনার একান্ত দায়িত্ব। 

 

মালোয়েশিয়া ভিসার আবেদন কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য

 

বাংলাদেশ এ মালোয়েশিয়ার ভিসা প্রসেসিং এর কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য গুলো নিন্মরূপঃ

 

ঠিকানাঃ

হাউজ নং- ১৯, রোড নং- ৬, বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এনক্লেব, ঢাকা- ১২১২, বাংলাদেশ। 

 

মোবাইল / টেলিফোন নাম্বারঃ

  •  (ডিউটি অফিসার) +৮৮ ০১৮ ৪৭০৮ ২৫২৮, 
  • +৮৮ ০২ ৪১০৮ ১৮৯২,
  • +৮৮ ০১২ ৪১০৮ ১৮৯৫.

 

ফ্যাক্স নাম্বারঃ

+৮৮ ০২ ৪১০৮ ১৮৯৩

 

ইমেইল এড্রেসঃ

mwdhaka[at]kln[dot]gov[dot]my / dhaka@imi.gov.my (ভিসা সেকশন)

 

ওয়ার্কিং ডেঃ রবি বার – বৃহস্পতি বার।

ওয়ার্কিং আওয়ারঃ সকাল ৮. ৩০ থেকে  বিকেল ৪.৩০ পর্যন্ত। (দুপুরের ব্রেক: ১২. ৩০ থেকে ১. ৩০)

পাব্লিক হলিডেইসঃ শুক্র বার এবং শনি বার। 

 

মালোয়েশিয়া ভিসা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা

 

১. মালয়েশিয়ার ভিসা পেতে কতক্ষণ লাগে?

 

৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টা।

আপনি যদি সঠিক ভাবে আবেদন সম্পন্ন করেন, আপনার ভিসা ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যেই আপনার ভিসার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। আপনি ম্যানুয়ালি আবেদন করলে, প্রক্রিয়াকরণের সময় নির্ভর করে আপনার আবেদন পরিচালনাকারী অফিসের উপর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, মালয়েশিয়ার ভিসা সাত থেকে আট কার্য দিবসের মধ্যে প্রক্রিয়া করা হয়।

 

২. ভিসার মেয়াদ শেষ হলে বেশি থাকার জন্য আপনি কি জেলে যেতে পারেন?

 

ইউনাইটেড স্টেটস সরকার যদি বুঝতে পারে আপনি বেআইনিভাবে উপস্থিত আছেন তাহলে আপনি একটি “অন্তিম অপসারণের আদেশ” পেতে পারেন। এই আদেশ জারি হওয়ার ৯০ দিন এর মধ্যে আপনাকে দেশ ত্যাগ করতে হবে। এই আদেশ উপেক্ষা করা বা অমান্য করা জরিমানা এবং ৪ বছর পর্যন্ত জেল সহ আরও বড় পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

 

৩. মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়া কি সহজ? 

 

মালয়েশিয়ার eNTRI ভিসা পাওয়া একটি সহজ প্রক্রিয়া। eNTRI সহজেই অনলাইনে সম্পন্ন করা যেতে পারে, আবেদনকারীদের কিছু প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত বিবরণ এবং পাসপোর্ট তথ্য প্রদান করতে হবে। বেশিরভাগ eNTRI অ্যাপ্লিকেশন গুলি ৫ থেকে ১০ দিন এর মধ্যেই প্রক্রিয়া করা হয় এবং অনুমোদন করা হয়। ভিসাটি ইস্যু করার মুহূর্ত থেকে ৩ মাস সময় এর জন্য বৈধ।

 

আজকের আর্টিকেল এর সকল তথ্য অনুসরণ করার ফলে কিছুটা হলেও মালয়েশিয়া ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। আমরা আশা করি আপনার মালয়েশিয়া যাত্রা শুভ হবে। তবে আরেকটি একটি উপদেশ তা হলো, ভিসা প্রসেসিং এর সময় আরও ভালো ভাবে যাচাই – বাছাই করে নিবেন। তা না হলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

 

Visited 33 times, 1 visit(s) today

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here