কম্পিউটার গেম খেলার সুফল ও কুফল
কম্পিউটার গেম খেলার সুফল ও কুফল: কম্পিউটারে প্রতিনিয়ত গেম খেলা ও অন্যান্য বিনোদনের বিষয়টি বর্তমানে সারা পৃথিবীতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এখন মানুষ এতটাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে দাঁড়িয়েছে যে – এখন সবার ঘরে ঘরে কম্পিউটার, ল্যাপটপ android আর smartphone এর ছড়াছড়ি। একটা সময় ছিল যখন শিশুরা কান্নাকাটি করলে বিভিন্ন ধরনের খেলনা কিনে দেওয়া হতো, খেলাধুলার জন্য নিয়ে যাওয়া হতো মাঠে বা কোন পার্কে।
কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেই ছোট শিশুদের হাতে খেলনা হিসেবে দেওয়া হয়– মোবাইল ফোন অথবা ট্যাবলেট, আবার কিছু কিছু শিশুদেরকে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ পর্যন্তও দেওয়া হয়ে থাকে। আর খেলার জন্য এখন আর বাইরে যাবার প্রয়োজন পড়ে না, কেননা অনলাইনে ভিডিও গেম খেলেই এখন বাবা-মা তার সন্তানদের শান্ত করান। আর শিশুরাও এতে অনেক বেশি এট্রাকটিভ হয়ে যায় এবং এগুলো নিয়ে মেতে থাকলেই পছন্দ করে।
কিন্তু, আপনি কি জানেন কম্পিউটার গেম আমাদের জন্য কতটা সুফল আর কতটা কুফল বয়ে নিয়ে আসতে পারে! যদি না জেনে থাকেন তাহলে আসুন আজকের এই ছোট্ট আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই – কম্পিউটার গেম খেলার সুফল ও কুফল সম্পর্কে সমস্ত বৃত্তান্ত।
কম্পিউটার গেম খেলার সুফল মূলত ততক্ষণ পর্যন্ত ভোগ করা যায় যতক্ষণ পর্যন্ত কম্পিউটার গেমে আসক্তি না জন্মে। কিন্তু বর্তমানে ছোট থেকে শুরু করে বড় বা টিনেজার বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনলাইন গেম এর প্রতি আসক্ততাই অধিক বেশি জন্মেছে বলে লক্ষ্য করা যায়।
বিশেষ করে বর্তমানে ফ্রী ফায়ার পাবজির মত খেলা গুলোতে তরুণ তরুণীদের আকৃষ্টতা সবচেয়ে বেশি। তবে কম্পিউটার গেমের সত্যিই বেশ কিছু সুফল রয়েছে। সেগুলো হলো:
তাছাড়াও এটা আমরা সবাই জানি– গেম আমাদের মাইন্ড রিফ্রেশমেন্টে বেশ কাজে আসে। তাই কম্পিউটার গেম আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বা সুফল ভোগ করার পাশাপাশি মনকে ফুরফুরে রাখতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
কম্পিউটার গেমে যদি অতিরিক্ত আসক্তি জন্য যায় তাহলে সুফল ভোগের আর কোন সম্ভাবনা থাকে না মূলত সেটা আমাদের জন্য কুফল বা ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ পর্যায়ে আমরা কম্পিউটার গেম খেলার কুফল বা কম্পিউটার গেমের অপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকসমূহ তুলে ধরব। তাহলে আসুন জেনে নেই কম্পিউটার গেমে আসক্তির জন্য গেলে মূলত আমাদের কি কি ক্ষতি হতে পারে এবং এটা আমাদের জন্য কতটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
এক কথায় কম্পিউটার গেমস মূলত আমাদের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত উপকারী বিষয় হয়ে অবস্থান করে যতক্ষণ পর্যন্ত এটাতে আমাদের আসক্তি না জন্মে। এটা হয়তো নিশ্চয়ই আপনি জানবেন, কম্পিউটার গেম খেলার জন্য বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ডায়মন্ড বা কয়েন কিনতে হয়। বিশেষ করে ফ্রী ফায়ার পাবজি খেলার জন্য টাকা খরচের প্রয়োজন পড়ে।
আর বর্তমান সময়ে অনলাইন প্লাটফর্মে ভিডিও গেম গুলোর মধ্যে পাজি এবং ফ্রি ফায়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এই দুইটি গেম পুরো বিশ্বে পরিচিত। বিশেষ করে তরুণ তরুণীরা এই গেম খেলতে অধিক বেশি পছন্দ করে। যারা বর্তমানে বেকার। কিন্তু তবুও তারা এই গেম খেলে। যে গেমটি খেলার জন্য তাদেরকে পরিবারের কাছ থেকেই টাকা নিতে হয় পরিবারের টাকাতেই ফোন কিনতে হয়।
আর এটা ঠিক যে বর্তমানে ঘরে ঘরে মোবাইল রয়েছে। কিন্তু এমন অনেক অসচ্ছল পরিবার রয়েছে যাদের এন্ড্রয়েড ফোন বা কম্পিউটার কেনার মত টাকা নেই। তাই কিছু কিছু ছেলেমেয়েদের জন্য পরিবারের দন্ড কলহের সৃষ্টি হচ্ছে এই গেম খেলাকে কেন্দ্র করে। মূলত আপনি যদি আশেপাশে তাকান বা গেম খেলার জন্য কি কি পরিবর্তন ঘটেছে এই বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখেন তাহলেই আপনার সামনে সমস্ত টাই স্পষ্ট হয়ে দাঁড়াবে যে কম্পিউটার ভিডিও গেম আমাদের কি কি ক্ষতি করছে বা এটা আমাদের জন্য কি কি কুফল বলে নিয়ে আসছে। এবার আসুন কম্পিউটার আসক্তির ক্ষতিকর বিষয়বস্তু সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ভিডিও গেম হোক বা অন্য কোন কাজের ক্ষেত্রে আপনি যদি কম্পিউটারের প্রতী অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে যান তাহলেও আপনার বেশ কিছু ক্ষতি হতে পারে। তাই আলোচনার এ পর্যায়ে কম্পিউটার আসক্তির কুফল সমূহ তুলে ধরব।
দেখুন প্রত্যেকটা জিনিসের ভালো এবং মন্দ দুইটি দিক থেকে থাকে। আর এটা আমরা সবাই জানি ততক্ষণ পর্যন্ত ওই জিনিস আমাদের জন্য সুফল বয়ে নিয়ে আসে যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত না হয়। কেননা যখন কোন জিনিস আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয় তখন সেটা আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে।
ফলে আমরা সে জিনিসকে ব্যবহার করার পরিবর্তে মূলত ওই জিনিসটাই আমাদেরকে ব্যবহার করে আমাদের উপর তাদের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আর ঠিক তাই কম্পিউটারে আসক্তির জন্মালেও এটা বেশ কিছু ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেগুলো হলো:
কিন্তু কথা হচ্ছে, এটা যেহেতু আমাদের উপর এতটাই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাহলে আমরা কেন এটাকে ব্যবহার করছি? সত্যি বলতে যারা এই প্রশ্নটি করবেন তাদের চিন্তা ভাবনার কিছুটা কমতি রয়েছে। কেননা কম্পিউটার বর্তমান ডিজিটাল সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি। এটা একটা গণনাকারী যন্ত্র যেটা অনেক কিছু হিসাব নিকাশের কাজ করে পাশাপাশি অনলাইন প্লাটফর্মের যাবতীয় কাজকর্ম আমরা কম্পিউটারের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে পারি।
আর এটা আমরা ইতোমধ্যে বলেছি, এটা মূলত তখনই আমাদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে যখন সেটা আমাদের আসক্তিতে পরিণত হয় অভ্যাসে পরিণত হয়। আমরা তাদেরকে নয় বরং সে প্রযুক্তি আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে ঠিক সে সময়। তো পাঠক বন্ধুরা, এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ভিডিও গেম খেলার উপকারিতা, কম্পিউটার ভিডিও গেম খেলার অপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম। এখন আসন আলোচনা শেষ পর্যায়ে জেনে নেই ভিডিও গেম এর কিছু ইতিবাচক এবং কিছু নেতিবাচক প্রভাব সমূহ সম্পর্কে।
কম্পিউটার ভিডিও গেমের অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিক্ষামূলক দিক। কেননা ইতিমধ্যে একটা গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে – ছাত্র-ছাত্রীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহী কমতে ভিডিও গেম প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
কিন্তু ওই একই গবেষণায় আর একটি বিষয় জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে– এইজ অফ মিথলজি নামক একটি ভিডিও গেম খেলার পর কিছু কিছু ছাত্রছাত্রীর মিথোলজির প্রতি আকৃষ্টতা বেড়ে গিয়েছে। মূলত তারা পৌরাণিক বই পড়তে এবং পৌরাণিক বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে আলোচনা করতে অধিক বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছিল ওই গবেষণায়।
আর তাই যদি কেউ শিক্ষনীয় ভিডিও গেমগুলো খেলে থাকে যেগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ভোকাবুলারি শেখানো হয় বিভিন্ন গ্রামারটিকাল বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়, তাহলে ঐ সকল গেম অবশ্যই ইতিবাচক হয়ে দাঁড়াবে শিক্ষার্থীদের জন্য। এছাড়াও বিভিন্ন কৌশল ভিত্তিক গেম এর মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তার চর্চা করা যায়। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে।
তাছাড়াও বর্তমানে গ্রাফিক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে গেমগুলো তৈরি করা হয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন ঐতিহাসিক, শিল্পকলা বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন যুগের স্মৃতি চিহ্ন সম্পর্কে জানা যাচ্ছে দেখা যাচ্ছে, ফলে আমরা ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছি এবং খেলার ছলে দেখার কারণে ঐ সকল বিষয়বস্তুগুলোও মাথাতে ভালোভাবে গেঁথেও নিতে পারছি। তাই এই দিক বিবেচনায় ভিডিও গেম আমাদের জন্য ইতিবাচক।
এছাড়াও ভিডিও গেম খেলার জন্য আমাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ হয় যেটা শরীরের জন্য ভালো। পাশাপাশি গেম খেলার মাধ্যমে মন মেজাজ উভয়ে ভালো হয়ে যায় তাই এই দিক বিবেচনা করলেও ভিডিও গেম আমাদের জন্য সুফল বয়ে নিয়ে আসছে এবং এটা আমাদের জন্য সত্যিই ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে।
কিন্তু দীর্ঘদিন সহিংসা ভিডিও গেমস খেলার কারণে ছেলেমেয়েদের মধ্যে নৈতিকতা গঠনের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলেও নজরে আসছে। আর বর্তমানে ভিডিও গেমের প্রতি আসক্তি বলতেই ফ্রি ফায়ার আর পাবজিকে ধরা যায়। তাই সাধারণ বা আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য ও উপকারীযোগ্য গেমগুলোর জায়গা দখল করে নিয়েছে pubg, Farlight84 ও ফ্রী ফায়ার এর মত গেম।
আর এই গেম গুলো খেলার কারণে শিশুদের মধ্যে ইতিবাচক এর চাইতে নেতিবাচক দিকগুলোই অধিক বেশি ফুটে উঠছে। ফলে দেখা দিচ্ছে আর্থিক সংকট, পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়, এছাড়াও শিশুদেরও নানা রকম শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে। যা আমরা ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছি।
তবে বন্ধুরা, সত্যি বলতে শুধুমাত্র কম্পিউটার ভিডিও গেম নয়। গেম ছাড়াও মূলত অনলাইনের যেকোনো কাজ যে কোন বিষয় আমাদের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত নেতিবাচক বা সুফল বয়ে নিয়ে আসতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারব। তাই বলতে পারা যায়, কম্পিউটার গেম মূলত তাদের জন্য গ্রহণযোগ্য এবং সুবিধা জনক যারা এটাকে নিজেদের বুদ্ধি খাটিয়ে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। যাদের গেম খেলার পেছনে নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য রয়েছে।
আর ঐ সকল মানুষের কাছে এটা নেতিবাচক বা ক্ষতিকর যারা এটাকে শুধুমাত্র ব্যবহার করছে কোনরকম ভালোর কথা চিন্তা না করে। কেননা আপনি যদি গুগল অথবা ইউটিউবে রিসার্চ করেন তাহলে জানতে পারবেন ইতিমধ্যে শুধুমাত্র কম্পিউটার ভিডিও গেম খেলে এমন অনেক মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করছে। কেউ ইনকাম করছে ভিডিও গেম এর কনটেস্ট জিতার মাধ্যমে।
আবার কেউবা ইনকাম করছে গেম রিলেটেড ভিডিও তৈরি করে অথবা ব্লগিং করে। তাই আপনি যদি ভিডিও গেম এর মাধ্যমে টাকা উপার্জন করার কথা চিন্তা করেন তাহলে এ সম্পর্কিত আরো কিছু পোস্ট আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পড়তে পারেন।
আজ মূলত আমাদের আলোচনার এখানেই ইতি টানছি। তো অবশ্যই কম্পিউটার গেম খেলার সুফল ও কুফল সম্পর্কে জানার পর আপনাদের মতামত কমেন্ট করে জানাবেন। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন সঙ্গে থাকবেন বাংলা আলোর।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.