আমরা অনেকেই রোগা এবং শুকনো। অনেকের হাড় পর্যন্ত দেখা যায়। এজন্য প্রয়োজন মোটা হওয়ার জন্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রচেষ্টা চালানো। কিভাবে স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার উপায় সাথে শরীর মোটা ও স্বাস্থ্যবান করার স্থায়ী উপায়ের বিষয়ে আজকের এই আর্টিকেল।
আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো মোটা হওয়ার জন্য মেডিসিন নেন। এটা বিশেষ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যাতিত খাওয়া অনুচিত। কেননা, এতে লাভের পরিবর্তে ক্ষতি হতে পারে। স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য অর্গানিক বা ভেজালমুক্ত বিশুদ্ধ খাবার গ্রহন করাটা গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের বাংলাদেশে ভেজাল খাবারে সয়লাব থাকলেও অনেক জায়গাতে অর্গানিক খাদ্য পাওয়া যায়। তুলনামূলক দাম বেশি হলেও স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য আপনার সেটাই গ্রহন করা উচিত। তাহলে কয়েক মাসেই স্বাস্থ্য বাড়বে এবং মোটা হবেন ইনশা আল্লাহ্। তো চলুন, স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার উপায় গুলো জেনে নিইঃ
মোটা হওয়ার জন্য আপনারা ২ ধরনের পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। সেগুলো হলোঃ অর্গানিক বা বিশুদ্ধ খাদ্যতালিকা অনুসরণ এবং প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ। তবে প্রথমেই আপনাদের বাজে অভ্যাস থাকলে সেগুলো অবশ্যই ছেড়ে দিতে হবে।
যদি আপনার অনেক রাত জাগার অভ্যাস থাকে; তাহলে ধীরে ধীরে সেটা সম্পূর্ণ ত্যাগ করতে হবে। সিগারেট বা যেকোন মাদকদ্রব্য সেবনের অভ্যাস থাকলে সম্পূর্ণ বর্জন করতে হবে। এছাড়া ঠিকমতো খাবার না খাওয়া, খুব বেশি খাওয়া, বাছবিচার ছাড়া খাওয়া, অত্যধিক খাটুনির কাজ করা, পানি কম পান করা – এসবও বর্জন করতে হবে।
মোটকথা হলো, স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য যেসব বিষয় প্রতিবন্ধক; তা পরিহার করে তারপর আপনাকে মোটা হওয়ার উপায় বা টিপস ফলো করতে হবে। নীচে উপায়গুলো দুটি পর্যায়ে ভাগ করে উল্লেখ করা হলোঃ
মোটা হওয়ার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি এবং ফ্যাট জাতীয় খাবার গ্রহন করতে হবে। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহন করতে হবে। যেসব খাদ্য নিয়মিত খাবেন –
এটি খুব পুষ্টিকর একটি খাদ্য। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এ ছাড়াও আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম। এ সবই শরীরের জন্য কাজে লাগে।
ছোলা গরুর মাংসের মতোই পুষ্টিকর। তাছাড়া এটা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্যও উপকারী। তাই স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিন ছোলা খাবেন। ছোলা রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন এবং সকালে সেদ্ধ করে খাবেন। এর ফলে মোটা হবেন ইনশা আল্লাহ্।
আপনার খাবারে তেল বেশি গ্রহন করুন। কেননা, বেশি তৈলাক্ত খাবার স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য সহায়ক। ভেজালমুক্ত এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বেশি করে খাবারে দিয়ে খাবেন। এছাড়া বিশুদ্ধ সরিষার তেলও ব্যবহার করতে পারেন।
আলুতে রয়েছে প্রচুর শর্করা। এছাড়াও এতে রয়েছে কমপ্লেক্স সুগার এবং কার্বোহাইড্রেট। প্রতিদিন আলু সেদ্ধ করে খাবেন। এছাড়া কম মশলা দিয়ে হালকা ধরণের তরকারি হিসেবেও খেতে পারেন।
অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে দুধে। গরুর খাঁটি দুধ সুস্বাস্থ্যবান হওয়ার জন্য সহায়ক। গরুর দুধে আছে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ যেমন ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, কোবাল্ট, কপার, জিংক, আয়োডিন ও সেলিনিয়াম। তাই প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস কুসুম গরম দুধ চিনিছাড়া পান করুন।
আমরা অনেকেই দুধ সম্পর্কে উদাসীন। এটি স্বাস্থ্য ভগ্ন হওয়ার একটি কারণ। যারা ছোটবেলা থেকেই খাঁটি গরুর দুধ প্রতিদিন পান করে আসছে; তাদের মধ্যে পাতলা হতে তেমন দেখা যায় না। তাই স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য খাঁটি গরুর দুধ প্রতিদিন ২/১ করে পান করা অভ্যাস করুন।
এটিতে রয়েছে ফ্যাট, ক্যালরি এবং প্রোটিন। দেশি মুরগীর ডিম প্রতিদিন ২/৩টি করে গ্রহন করুন। পুষ্টিবিদদের মতানুযায়ী প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২টা ডিম কুসুমসহ খাওয়াতে সমস্যা নেই। ২টির বেশি খেতে হলে সাদা অংশ খাবেন।
কাঁচা ডিম এড়িয়ে চলুন। ডিমের কুসুম খাওয়াতে কোন সমস্যা থাকলে শুধু সাদা অংশ খাবেন। ডিম পোচ করে বা হাফ বয়েল খাবেন। ভেজে কম খাবেন কেননা ডিম বেশি ভাজলে তাতে পুষ্টিমান কমে যায়।
এছাড়াও আপনি খেজুর,বাদাম, বিভিন্ন ফাস্টফুড, মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পারেন। স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য গ্রহন করতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে। লাল অথবা কালো চালের ভাত এবং গমের রুটি খেতে পারেন। তবে ফাস্টফুড বেশি খাবেন না; এতে সমস্যা হতে পারে। তাই তা কম পরিমানে গ্রহন করতে হবে।
পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিয়মিত গ্রহনের পাশাপাশি আপনাকে প্রাকৃতিক উপায় ফলো করতে হবে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
আপনাকে অবশ্যই প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। আর স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের দেহে খাদ্য গ্রহন করার পর সেগুলোর হজম প্রক্রিয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির দরকার।
যদি পানি ঠিকমতো না পান করেন; তাহলে এতে শরীরের প্রচুর ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। কম পানি পানের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ হতে পারে; যার কারণে পরবর্তীতে পাইলসের মতো ভয়াবহ রোগও হতে পারে। আর রোগাক্রান্ত শরীর হলে তার জন্য স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার মিশন সফল নাও হতে পারে।
সুতরাং, প্রতিদিন ৯ থেকে ১২ গ্লাস পর্যন্ত পানি পান করুন। এর বেশি অতিরিক্ত পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন; কেননা বেশি পানি পান করলেও সমস্যা হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি পান করুন।
আমাদের শরীরের জন্য ঘুম খুব জরুরি একটি বিষয়। একজন সুস্থ্য ব্যক্তির প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে আর মোটা হওয়ার জন্যও এটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শরীর একটা যন্ত্রের মতো।
খাদ্য গ্রহন এবং কাজের পাশাপাশি এর বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। তাই রাত জাগা পরিহার করে আপনাকে ঘুমাতে হবে। রাত ১০টার পর জেগে থাকা যাবে না এবং স্মার্টফোন থাকলে তা ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঘুমানোর কমপক্ষে ২ঘন্টা পূর্বে এর ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
প্রথম পর্যায়ে খাদ্য তালিকা অনুসরণ করার পাশাপাশি ৮ ঘন্টার ঘুম হলে আপনি মোটা হওয়ার মিশনে সফল হবেন ইনশা আল্লাহ্। তাই নিজের ঘুম এর ব্যাপারে গুরুত্ব দিন।
মোটা হওয়ার জন্য যখন আপনি কাজে নামবেন; তখন আপনাকে দুশ্চিন্তা বর্জন করতে হবে। দুশ্চিন্তা বা টেনশন একটি ভয়াবহ সমস্যা। এর থেকে মুক্তি পেতে ক্বুরআন, সুন্নাহ্ এর জ্ঞানার্জন করুন এবং সালাফদের বই পড়ুন। নিজ জীবনে ইসলাম বাস্তবায়ন করুন। তাহলে দুশ্চিন্তা মুক্ত হাসিখুশি প্রশান্তিময় জীবনযাপনকরতে পারবে ইনশা আল্লাহ্।
যথাসময়ে সালাত আদায় করুন। জীবনের না পাওয়া বিষয় নিয়ে হা হুতাশ পরিত্যাগ করুন এবং আল্লাহর কাছে নিজের সৎ চাওয়াগুলো চেয়ে দুআ করুন।
যাদের স্বাস্থ্য খুব কম এবং হাড় জিরজিরে; তাদের জন্য জিম করা একটি ভাল টিপস। আপনি স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য জিম করুন। চায় আপনি কম স্বাস্থ্যহীন হন বা বেশি। জিমে গিয়ে ব্যায়াম করা সম্ভব না হলে একজন বিশেষজ্ঞ ট্রেইনারের পরামর্শে নিজ বাড়িতে জিম করুন।
নিজে নিজে ব্যায়াম করবেন না। কেননা, এতে ভুল হতে পারে এবং আপনার সমস্যা হতে পারে। জিম করার সময় অর্গানিক বা প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহন করুন। আলাদা প্রোটিন গ্রহন না করা উচিত। চেষ্টা করবেন অর্গানিক প্রোটিনযু্ক্ত খাবার খেতে। প্রতি সপ্তাহে ১দিন জিমে যাওয়া বা ব্যায়াম করা বন্ধ রাখুন। কয়েক মাসেই স্বাস্থ্য বাড়বে এবং স্থায়ীভাবে মোটা হবেন ইনশা আল্লাহ্।
আপনি ধৈর্য্য ধরে স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকুন। টানা কয়েক মাস ঠিকমতো। তবে সঠিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা করার পরও যদি আপনি মোটা না হন; তাহলে আপনাকে ডাক্তার দেখাতে হবে। কেননা, হতে পারে আপনার এলার্জি অথবা কোন রোগ আছে; যার কারণে স্বাস্থ্য ভেঙে আছে।
আপনাদের জন্য উপরে স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার জন্য যে উপায় গুলো উল্লেখ করেছি; তা সঠিকভাবে অনুসরণ করুন। শর্টকাটে মোটা হওয়ার জন্য আন্দাজে ভিটামিন মেডিসিন গ্রহন থেকে বিরত থাকুন।
তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে খেতে পারেন। তবে উপর্যুক্ত ২টি পর্যায়ে স্থায়ীভাবে মোটা হওয়ার উপায় অবলম্বন করলে এভাবেই মোটা হয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ্। তাছাড়া দেখে নিতে পারেন প্রাকৃতিক ভাবে মোটা ও শক্তিশালি হওয়ার উপায় সম্পর্কে
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.