–
ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হলে উক্ত আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা, এখানে জানানো হয়েছে ইসলামী ব্যাংক ও ব্যাংকের একাউন্টের প্রকারভেদের পাশাপাশি উক্ত একাউন্ট খুলতে যা যা প্রয়োজন হবে সে সম্পর্কে।
ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে একাউন্ট খোলার জন্য অনেকেই নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে চায়। এবারের আর্টিকেলে জানানো হবে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। থাকবে ইসলামী ব্যাংকের সুবিধা – অসুবিধা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, এবং বিভিন্ন হিসাব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আর্টিকেলের শুরুতেই জানিয়ে দেয়া হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে ব্যাসিক কিছু তথ্য যা আপনার নির্ভরতা বাড়াতে এবং উক্ত ব্যাংকে একাউন্ট খুলবেন কি-না সেই সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।
১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মত ব্যাংকিং যাত্রা শুরু করে ইসলামী ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড দক্ষিণ এশিয়া প্রথম ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। দেশ ও দেশের বাইরে যথাক্রমে ৩৬.৯১% ও ৬৩.০৯% বিনিয়োগ করে রেখেছে। ব্যাংকের রয়েছে ৪৫০ টি শাখা যা স্থাপনের মাধ্যমে দেশে ২য় বৃহত্তম ব্যাংক হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে।
একদিকে যেমন সবচেয়ে বেশি মূলধন সম্পন্ন ব্যাংক অন্যদিকে বেসরকারি খাতে ১ম অবস্থানে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। তাছাড়া ব্যাংকটির রয়েছে স্পেসিফিক ভাবে ২৮৪ টি শাখা, ২২৫ টি উপশাখা, ১৮৫১ টি ATM বুথ, ৫৩১ টি CRM মেশিন ও ২৩৭৪ টি এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা।
তাই আপনি দেশের যে প্রান্তেই হয়ে থাকেন না কেনো, ইসলামী ব্যাংকের ব্যাংকিং সেবা আপনি পাবেন সব সময় সব স্থানে। এবার জেনে নেয়া যাক ইসলামী ব্যাংকে কি কি ধরনের হিসাব খোলা যায় সে সম্পর্কে।
গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সুবিধার্থে ইসলামী ব্যাংকে বিভিন্ন প্রকার হিসাব করার ব্যবস্থা রেখেছে। বর্তমানে ব্যাংকটিতে চার ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা রয়েছে সেগুলো হল:
চলতি বা কারেন্ট একাউন্ট: মূলত যারা ব্যবসায়ী বা যাদের প্রতিনিয়ত বা দিনে একাধিক বার ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে হয় তারা চলতি একাউন্ট খুলে থাকে। চলতি একাউন্টে কোনো প্রকার মুনাফা প্রদান করা হয় না। উক্ত একাউন্ট খুললে ব্যাংক একটি নিদিষ্ট পরিমাণের চার্জ ধার্য করে থাকে।
সঞ্চয়ী বা সেভিংস একাউন্ট: যাদের ইন্টেনশন টাকা জমিয়ে রাখার, প্রতি মাসে নিদিষ্ট কিছু পরিমাণের অর্থ নিদিষ্ট সময়ের জন্য রেখে কিছুটা মুনাফা অর্জন করার ইচ্ছা প্রশন করে তারা মূলত সেভিংস একাউন্ট খুলে থাকে। (উল্লেখ্য যে, ইসলামী ব্যাংক সুদ প্রদান করে না, তাদের মুনাফা প্রদানের ব্যবস্থা অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ভিন্ন)
ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট: যখন একটি নিদিষ্ট পরিমাণের অর্থ একটি নিদিষ্ট সময়ের জন্য রেখে দেয়া হয়, যেখান থেকে একটি মুনাফা পাওয়ার আশা রাখার পাশাপাশি অর্থের ব্যবস্থাপনা করা হয় সেটিকে ফিক্সড ডিপোজিট একাউন্ট বলে। এটাকে অনেকটা বিনিয়োগ করাও বলা যায়। কেননা, উক্ত ব্যাংক আপনার অর্থকে কোনো স্থানে বিনিয়োগ করে সেখান থেকে মুনাফা অর্জন/লোকসানের ভিত্তিতে আপনাকে রিটার্ন দিয়ে থাকবে।
স্টুডেন্ট একাউন্ট: উক্ত একাউন্টটি শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ, আপনি যদি ছাত্রজীবন কাটাতে থাকেন এবং ব্যাংকিং কার্যক্রম করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে ইসলামী ব্যাংকের স্টুডেন্ট একাউন্টটি আপনার জন্য আদর্শ।
যদিও বর্তমানে প্রায় সকল ব্যাংকে সেভিংস একাউন্ট এবং স্টুডেন্ট একাউন্ট এর ব্যবহারকারী বেশি। এবং এই পর্যায়ে জানানো হবে ইসলামী ব্যাংকে উপরে উল্লেখিত একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার করার জন্য দুটি সাধারন পদ্ধতি রয়েছে।আপনি চাইলে সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট করার মাধ্যমে উক্ত শাখায় কর্মরত ব্যাংকারের সাহায্যে একাউন্ট খুলতে পারবেন। অন্যদিকে অনলাইনে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারবেন। উভয় পদ্ধতি উক্ত আর্টিকেলে উপস্থাপন করা হবে। প্রথমে সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানানো হলো।
১) সর্বপ্রথম আপনার আবাসস্থলের নিকটবর্তী যে কোন ইসলামী ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হতে হবে সাথে রাখতে হবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ( অ্যাকাউন্ট খুলতে কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে)
২)ব্যাংকে উপস্থিত হওয়ার পর সেখানে কর্মরত ব্যাংকারদের কাছ থেকে অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং উক্ত ফরমের টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলো ভালোভাবে পড়ে স্পেসিফিক কিছু স্থানে নিজের স্বাক্ষর প্রদান করে নিয়ে আসা ডকুমেন্টের সাথে সাবমিট করতে হবে।
৩) এই পর্যায়ে আপনার ডকুমেন্টস এবং ফরমের বিষয়গুলো আপনাকে পুনরায় জানিয়ে একাউন্ট খোলার পরবর্তী কার্যক্রমে অগ্রসর হবে কর্মরত ব্যাংকার। চাহিদা মোতাবেক সময়তে পুরো প্রসেসটি সম্পন্ন করতে সহায়তা করবেন।
৪) আপনি যে একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন সে একাউন্ট খুলতে যে চার্জ নির্ধারণ করা হয়েছে তা প্রদান করতে হবে। উল্লেখ্য যে, অ্যাকাউন্ট খুলতে এক্সট্রা কোন চার্জ ধার্য করা হয় না, আপনি এই সময় যে অর্থ প্রদান করবেন সেটি আপনার অ্যাকাউন্টে ক্যাশ ইন করা হবে।
৫) সবশেষে আপনার অ্যাকাউন্টটি সঠিকভাবে খোলা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আপনাকে উক্ত একাউন্ট নাম্বার, চেক বই, ডেবিট কার্ড প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
যেমনটা বলেছিলাম ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম দুইটি রয়েছে প্রথমটি সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে সেখানে কর্মরত ব্যাংকারদের কাছ থেকে করিয়ে নেওয়া দ্বিতীয়টি ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপ এর সাহায্যে ব্যাংক একাউন্ট খোলা।
অনলাইনে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ইসলামী ব্যাংক নিজেদের মোবাইল অ্যাপ (যার নাম সেলফিন) অ্যাভেলেবেল রেখেছে প্লে স্টোরে। আপনি যেকোনো ডিভাইস থেকে প্লে স্টোরে গিয়ে সেখান থেকে অ্যাপটি ইন্সটল করে নিবেন।
অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য প্রথম অ্যাপটি ওপেন করে ড্যাশ বোর্ডে থাকা Open Account নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে। বলে রাখা ভালো মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আপনি কেবলমাত্র সঞ্চয়ী বা সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংকের অন্যান্য অ্যাকাউন্ট গুলো খুলতে আপনাকে সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হতে হবে। যাই হোক অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার যা প্রয়োজন হবে:
বিশেষ দ্রষ্টব্য: মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে খোলা একাউন্ট সত্যায়িত করার জন্য তিন মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টসগুলো সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে সাবমিট করে ভেরিফাই করে নিতে হবে। কেউ যদি তিন মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সাবমিট না করে তবে উক্ত অ্যাকাউন্টটি হোল্ড করে রাখা হবে। তাছাড়া অনলাইনে একাউন্ট করার ক্ষেত্রে কোন প্রকার চার্জ ধার্য করা হবে না এবং সরাসরি গিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সময় যে অর্থ একাউন্টে জমা রাখতে হতো সেটিও রাখা লাগবে না।
উপরে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী ইসলামী ব্যাংকে মোট চার ধরনের একাউন্ট খোলা যায়। তবে ডকুমেন্টস কত দিক থেকে বিবেচনা করলে উক্ত একাউন্টগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। নিম্নে প্রতিটি বিভাগে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো সম্পর্কে জানানো হলো।
উপরে ইতিমধ্যে একাধিকবার জানানো হয়েছে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হয়। সে ফর্মটি যখন সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে একাউন্ট খুলতে যাবেন তখন ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে প্রদান করবে পূরণ করার জন্য। তবে আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে উক্ত ফরমটি ডাউনলোড করে পূরণ করার পর সেটিকে প্রিন্ট করে ব্যাংকে নিয়ে উপস্থিত হতে পারবেন। এখানে ক্লিক করে ইসলামী ব্যাংকে সকল ধরনের একাউন্ট খোলার ফরম পেয়ে যাবেন।
আপনি ইতিমধ্যে জানেন ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেবা প্রদান করা যাচ্ছে বিশ্বস্ততার সাথে অনেক বছর ধরে। তাই সকলেই ভরসার সাথে ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলে নিজেদের অর্থ হেফাজতে রাখছে। পাশাপাশি ধর্মপ্রাণ মানুষেরা সুদ বিহীন ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য ইসলামী ব্যাংকের প্রতি ঝুকছে। আর্টিকেলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানানো হয়েছে যা অনুসরণের মাধ্যমে আপনিও ইসলামী ব্যাংকের ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
শরীর ভালো তো মন ভালো” ছোটবেলা থেকে আমরা এই কথায় অভ্যস্ত হলেও ঠিকঠাকভাবে মানতে নারাজ। মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক স্বাস্থ্য…
লাললালালালালালালালালালালালালালালালালালালালা যদি বারে বারে একই সুরে প্রেম তোমায় কাঁদায়তবে প্রেমিকা কোথায় আর প্রেমই বা কোথায়?যদি দিশেহারা ইশারাতে প্রেমই ডেকে যায়তবে…
ফুটবল বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে সবুজায়নের পদক্ষেপ নিয়েছে কাতার সরকার। বাংলাদেশি নার্সারি ব্যবসায়ীরাও অংশ নিচ্ছে সবুজায়ন প্রকল্পে। কাতারে ফুটবল…
এআইয়ের সাহায্যে সরু রাস্তার নির্দেশনাও দেখতে পারবেন চালকরা কোনো নির্দিষ্ট স্থানে কুয়াশা ও বন্যার পানি রয়েছে কি-না, তা গুগল ম্যাপসের…
রাগের কারণে আপনার কর্মজীবনেও প্রভাব পড়ে একটুতেই রেগে যান? রাগের মাথায় প্রিয়জনকে কটূ কথা বলে আফসোস করতে হয়? এবার একটু…
সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং দুদেশের জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে ১. ইসলামপন্থি কিংবা জঙ্গিরা নয় সম্প্রতি যে আন্দোলনের মুখে শেখ…
This website uses cookies.