কৃষি

কবুতর পালন পদ্ধতি কবুতরের চিকিৎসা ও দাম

কবুতর পালন পদ্ধতি কবুতরের চিকিৎসা ও দাম

আপনি কি কবুতরের যত্নআত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান?

কবুতর পালন করার নিয়মাবলী সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক?

 

ক্রমবর্ধমান উর্ধগতির ফলে, মানুষের জীবনে চাহিদার নতুন নতুন ক্ষেত্রে তৈরী হয়েছে। তরুণরা এখন গতানুগতিক ধারার  চাকরির ধারার পেছনে না ছুটে, নিজের জন্য, নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য ভিন্নধর্মী পেশায় মনোনিবেশ করছে।

কর্মের ধারায় নতুন নতুন ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে। নিজের স্বপ্ন, স্বাধীনতা এবং ইচ্ছাশক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে আজ কালকার তরুণেরা। তাই কোন কর্মকে নির্বাচনের ক্ষেত্রে তারা বেশ ভেবে চিনতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। 

 

বর্তমানে তরুণেরা নিজেদের পড়াশোনা শেষ করে, নিজেদের আত্ননির্ভরশীল করার তাগিদে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে আধুনিক কৃষিকে। নিজের নাড়ির টান এবং পছন্দের ক্ষেত্রে হিসেবে আজ চারদিকে জয় জয়কার হল কৃষির।

মানুষ নানান ধরণের আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষিকাজ করে নিজের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করছে। কৃষিতে নিজের মেধা, মননকে কাজে লাগিয়ে নিজের, পরিবারের এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত করছে।

 

আমাদের সকলের প্রিয় বেশ জনপ্রিয় একটি প্রাণী হল কবুতর। কবুতরকে মানুষ শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই সকল মানুষের ঘরে কবুতর দেখা যায়। এক সময় কবুতর পালন করা মানুষের শখ হিসেবে বিবেচিত হত।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে অনেক মানুষ ব্যবসা এই শখকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছে। সেই সাথে  কবুতর প্রতিপালন করে নিজের এবং পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল করতে পারেন।

তাই আজ আমরা আলোচনা কবর কবুতর পালন নিয়ে। আশা করি আপনাদের জানা-অজানা অনেক প্রশ্নের উত্তর হবে আজকের পোস্টটি। বিস্তারিত জানতে সাথেই থাকুন।

  • কবুতর পালন

দুই পাখাবিশিষ্ট উড়তে সক্ষম এক ধরণের পাখি হল কবুতর। কবুতরকে অনেকেই কপোত, পায়রা, পারাবাত নামে অবিহিত করা হয়। বহুকাল আগে যখন মানুষের কাছে যখন তাদের প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ করার কোন ধরণের মাধ্যম ছিল না, তখন তারা কবুতরের মাধ্যমে বার্তা আদান-প্রদান করতেন। কবুতরকে মানুষ শান্তির প্রতীক হিসেবে, বিবেচনা করে বিধায়, এখনো যেকোনো ধরণের অনুষ্ঠানের শুরুতে শান্তির প্রতীক হিসেবে পায়রা কবুতর উড়ানো হয়ে থাকে। সাধারণ যে সকল কবুতর আমরা ঘরে প্রতিপালন করি, সেই সকল কবুতরের বৈজ্ঞানিক নাম হল (Columba livia domestica)। আর যে সকল কবুতর আমরা নানা ধরণের বন জঙ্গলে দেখে থাকি তাদের বৈজ্ঞানিক নাম হল (Columba livia)।

 

  • কবুতর পালন পদ্ধতি:

আপনি যদি কবুতর পালনের কথা ভেবে থাকেন এবং কবুতর পালনকে নিজের ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তাহলে আপনাকে প্রথমে এই কবুতরের পালন পদ্ধতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। কবুতর সম্পর্কে খুটিনাটি সকল কিছু সম্পর্কে জানতে হবে।

বাংলা আলো

কবুতর পালন সুবিধাঃ

কবুতর পালন করলে আপনি বেশ কিছু সুবিধা পেতে পারেন। নিচে কবুতর পালনের সুবিধার কথা আলোকপাত করা হলঃ

 

  • ব্যবসা করার ক্ষেত্রে কবুতর পালন অধিক লাভজনক।

 

  • গড়ে একজোড়া  কবুতর থেকে ২ টি বাচ্চা দিয়ে থাকে।

 

  • কবুতর লালন পালনে খরচ বেশ কম বিধায়। সকল বয়সের মানুষ যে কেউ লালন পালন করতে পারে কবুতর।

 

  • অল্প পুঁজিতে আপনি যদি অধিক লাভবান হতে চান তাহলে ব্যবসা করতে পারেন কবুতরের।

 

  • অন্যান্য প্রাণী থেকে কবুতর কম সংখ্যক রোগে আক্রান্ত হয় বিধায় সকলে পালন করতে পারেন এই কবুতর।

কবুতরের বাজার সম্ভাবনাঃ

মূলত কবুতর এর বাজার বেশ সম্ভাবনাময়। চলুন জেনে নেই কিভাবে আপনি কবুতরের মাধ্যমে লাভবান হতে পারবেন।

 

  • কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করলে বেশ লাভবান হওয়া যায়।

 

  • মাংশ শরীরে রক্ত বৃদ্ধি করে বিধায় আজকাল সকলে কবুতর কিনতে চায়।তাই আপনি কবুতর বিক্রি করে লাভবান হতে পারেন।

 

  • কবুতরের মাংশ খেলে শক্তি বৃদ্ধি পায় বলে আজকাল সকলে কবুতরের মাংশ খেতে চায়। তাই বয়সভেদে মানুষ খেয়ে থাকে এই মাংশ।

 

  • বাজারের বেশ চাহিদা সম্পন্ন এই কবুতর বিক্রি করে আপনি হতে পারেন সফল কবুতর ব্যবসায়ী।

 

কবুতর পালব করতে হলে আপনাকে জানতে হবে কবুতর সম্পর্কে। প্রায় বিশ্বব্যাপি কবুতরের ক্ষেত্রে ৩০০ জাতের কবুতর দেখা যায়। একেক কবুতর একেক গুনসম্পন্ন।

কেউ যেমন বাচ্চা বেশি দেয়, আবার কারোর তেমনি রোগবালাই কম হয়, আবার কারোর মাংস উৎপাদন বেশি। আপনি আপনার চাহিদার উপর নির্ভর করে কবুতর উৎপাদন করা শ্রেয়।

 

প্রতিপালন:

এক জোড়া কবুতর প্রায় ১৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। একটি উন্নত জাতের কবুতর ১২ জোড়া ডিম দিতে সক্ষম হয়ে থাকে। নারী পুরুষ কবুতর ধাপে ধাপে ডিম দিয়ে থাকে।

এই ডিম থেকে বাচ্চা কবুতরগুলো মাত্র ৪ মাসের পরিপূর্ন রূপে বিক্রির জন্য উপযুক্ত হয়ে থাকে। এছাড়া এই কবুতর গুলো জন্মের প্রায় ৫ থেকে ৭ মাসের মধ্যে নিজেরাই ডিম প্রদানে সক্ষম হয়ে থাকে। 

 

  • কবুতরের চিকিৎসা

 

কবুতরের বাসস্থান, সঠিক রোগ নির্ণয় না করা হলে, পরিমিত খাবার না দেওয়ার ফলে কবুতরের নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। চিকিৎসা করতে হলে, সবার আগে কবুতরের ভালো মতো রোগ নির্ণয় করতে হবে।কবুতরের রোগ নির্ণয় করার জন্য আপনাকে কবুতর গুলোকে ভালো মতো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সঠিকভাবে পর্যবেক্ষন করতে হলে, আপনি খুব সহজে কবুতরের রোগ নির্ণয় করতে পারবেন।

চলুন জেনে নেই কবুতরের রোগ সম্পর্কে-

 

সাধারণত কবুতর যে সমস্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তা হলঃ

  • সালমোনেলোসিস।
  • বসন্ত বা পক্স।
  • কলেরা।
  • বডি হেপাটাইটিস।
  • রানীক্ষেত।
  • ঠান্ডা বাহিত রোগ।
  • ক্যাংকার রোগ।
  • রক্ত আমাশয়।
  • এসপারজিলোসিস।

 

সালমোনেলোসিস

এটি কবুতরের কমন রোগ গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি।এই সহজ সহজে আক্রান্ত হয়ে থাকে কবুতরের। এই রোগে মৃত্যুর হার কম হলেও এর রোগের বিস্তার বাকি রোগ বালাই থেকে অনেকটা বেশি হয়ে থাকে।

এই রোগে আক্রান্ত হলে কবুতরকে কলিস্টিন সালফেট বা এমক্সিসিলিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক কবুতরকে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

 

বসন্ত বা পক্স

এটি কবুতরের একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এই রোগের ফলে কবুতরের ঝিমুনি হয়, জ্বর হয় আরও নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়। 

তাই এই রোগে কবুতর আক্রান্ত হলে পটাশিয়াম পার ম্যাংগানাইট দিয়ে জীবাণু স্থান পরিস্কার করে নিতে হবে। কবুতরকে এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে এমক্সিসিলিন পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে। 

 

কলেরা

মূলত ব্যাকটেরিয়া রোগে আক্রান্ত হলে কলেরা হয়ে থাকে। সঠিক সময়ে যদি চিকিৎসা না দেওয়া হয় তাহলে বেশিরভাগ কবুতর মারা যায়।

 

কবুতর যদি এই রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে খুব দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। মূলত এই রোগে আক্রান্ত হলে খুব দ্রত যেকোনো ধরণের ভ্যাটেরিনারি ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে হবে।

 

বডি হেপাটাইটিস

মূলত ভাইরাস জনিত রোগ হল বডি হেপাটাইটিস। হার্পেস নামক এক ধরণের ভাইরাসের আক্রমণে এই রোগ হয়ে থাকে।

এই রোগে খুব দ্রুত কবুতর আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই কবুতরের এই রোগ হলে অন্যান্য কবুতর থেকে তাকে সরিয়ে নিতে হবে।

 

রানীক্ষেত

এটি সকল ধরনের পশু পাখির ক্ষেত্রে অনেক সাধারণ একটি রোগ। কবুতরের ক্ষেত্রে এই ধরণের রোগ হয়ে থাকে।

মূলত এই রোগ হলে ভ্যাকসিন দিতে হবে। ভ্যাকসিন ছাড়া এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

 

ঠান্ডাবাহিত রোগ

প্রায়শই কবুতর নানা ধরণের ঠান্ডাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে কবুতরকে এন্ডিবায়োটিক দেওয়া হয়ে থাকে। এই রোগের ক্ষেত্রে ডক্সিসাইক্লেন,টারটেট নামক এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।

 

ক্যাংকার রোগ

মূলত বয়স্ক প্রজাতির কবুতরের এই রোগে আক্রান্ত হলে ক্যাংকর রোগ হয়। এই রোগ এ আক্রান্ত হলে আক্রান্ত কবুতর থেকে যাতে অন্যান্য কবুতর আক্রান্ত না হয়ে সেই জন্য দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হয়।

 

রক্ত আমাশয়

কবুতরের ক্ষেত্রে এই রোগ বেশ মারাত্মক হয়ে থাকে। তাই এই রোগ এ কবুতর আক্রান্ত হলে কবুতরকে ঘর পরিস্কার করে জীবনানাশক দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

 

এসপারজিলোসিস

এই রোগে আক্রান্ত হলে কবুতরকে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত কবুতর যাতে কোন ধরনের রোগ ছড়াতে না পারে,  সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

like Fishing visit now Fishing Blog

  • কবুতরের ঘর

আপনি কবুতর পালন করতে চাইলে কবুতরের জন্য আপনাকে একটি আদর্শ ঘর নির্বাচন করতে হবে। মূলত আলো বাতাস চলাচল করে ,সূর্যের আলো পরে, সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রয়েছে এমন একটি ঘর হল কবুতরের জন্য আদর্শ একটি ঘর। তবে ঘর নির্বাচনের আগে খেয়াল রাখবেন যাতে ঘরের ফ্লোরটি অবশ্যই  বালুযুক্ত মাটিতে হয়। আপনি যদি কবুতরের জন্য খামার নির্মাম করতে চান তাহলে আপনার ঘর থেকে প্রায় ৩০০ ফুট দূরে নির্বাচন করতে হবে। অবশ্যই ঘরটি দক্ষিণমুখী করে তৈরী করবেন যাতে ঘরে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো বাতাসের উপস্থিতি বজায় থাকে। 

 

আপনি বাঁশ কাঠ ,খড় দিয়ে তৈরী করে নিতে পারেন কবুতরের জন্য আদর্শ একটি ঘর। কবুতরের ঘরগুলো মূলত খোপ জাতীয় হয়ে থাকে। প্রতিটি খোপে ২ টি কবুতর থাকতে পারে। কবুতরের সংখ্যার উপর ভিত্তি করতে ৩ তালা পর্যতো ঘর হয়ে থাকে। ছোট আকার কবুতবরের  জন্য কবুতরের ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা আকার হতে হবে ৩০×৩০×২০ সেন্টিমিটার এবং বড় আকারের কবুতরের ঘরের দৈর্য্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা হতে হবে ৫০×৫৫×৩০ সেন্টিমিটার। 

 

  • কবুতরের খাবার

মূলত একটি কবুতরের কি পরিমান খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, তার জন্য কবুতরের দৈহিক ওজন, আকার, উচ্চতা ইত্যাদি নির্ধারণ করতে হবে। কবুতরকে সুস্থ ও স্বাস্থ্যবাদ রাখার জন্য নিয়মিত ও পরিমিত পরিমানে খাবার দিতে হবে। মূলত খড়কুটা, গম, ভুট্টার দানা, খেশারি, কলাই যব, মোটর, দোকানে বিক্রিকৃত কবুতরের খাদ্য দেওয়া   হয়ে থাকে।

 

উপসংহারঃ

যারা কবুতর প্রতিপালন নিয়ে ভাবছে, কবুতর নিয়ে ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন আশা করি,

আজকের পোস্টটি আপনাদের সঠিক নির্দেশনা প্রদানে সক্ষম হবেন।

 

Bangla-Alo

সম্পাদক & প্রকাশক : সোহেল রানা সর্বদায় সত্যের বাংলা আলো সব সময় আপনার মনের কথা প্রকাশের জন্য

Recent Posts

মন ভালো রাখার উপায় || মন সুস্থ রাখার ১০ টি টিপস

মানুষের মন যেহেতু আছে এটা ভালো কিংবা খারাপ থাকবে এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়।  একটা…

4 weeks ago

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মেডিকেল কলেজ

বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে সাথে, ভালো মানের মেডিকেল কলেজের তালিকা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।…

2 months ago

সেরা ১০ টি গল্পের বই || বাছাইকৃত লেখকের সেরা ১০ টি বই

গল্পের বই পছন্দ করেন? পড়ার জন্য সেরা গল্পের খোজে আছেন? সে সুবাদে অনলাইনে সার্চ করে…

2 months ago

ভিসা ও পাসপোর্ট কি? একটি ভিসা এবং পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্য সমূহ

যারা সঠিক তথ্যটি জানেনা তাদের অনেকের ধারণা - ভিসা এবং পাসপোর্ট মূলত একই কাজ করে…

2 months ago

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত (২০২৪)

আপনার কি Loan বা ঋণ প্রয়োজন? আচ্ছা আপনি কি একজন প্রবাসী কিংবা আপনার পরিবারের কেউ…

2 months ago

ইসলামে নিষিদ্ধ ব্যবসা || যে সকল ব্যবসা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম

একজন মুমিন ব্যক্তি হিসেবে আপনার অবশ্যই জেনে রাখা উচিত আপনি যে ব্যবসা পরিচালনা করছেন তাকে…

2 months ago