–
অনেকেই বিভিন্ন দ্বিধায় ভোগেন যে কিভাবে আমল করলে, কিভাবে রুটিন করলে রমজান মাসের যথাযথ ব্যবহার করা যাবে। রমজান মাস কিভাবে কাটানো উচিত সে বিষয়ে যাদের জানার আগ্রহ রয়েছে এবারের বিশেষ প্রতিবেদনটি তাদের জন্যই সাজানো।
একটি কাপুড় যখন দীর্ঘ সময় ধরে পড়তে থাকলে সেটি ময়লা হয়ে যায়, তেমনই একজন মানুষ তার চলার পথে এমন জানা অজানা অনেক গুনাহ এর কাজ করে থাকে যার দরুন মানুষের দেহ মন পাপ দ্বারা আক্রান্তিত হয়ে নোংরা হয়ে যায়। রমজান সেই মাস যে মাসে আল্লাহ এর কাছ থেকে ক্ষমা প্রাপ্তির অন্যতম সেরা সময়। জানা অজানা বিভিন্ন গুনাহ মাফ করিয়ে দেয়ার উপযুক্ত সময়।
এই প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যাতে করে তোমরা মুত্তাকী বা সচেতন হতে পারো” [সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩] তবে প্রশ্ন হচ্ছে শুধু কি পানাহার থেকে বিরত থাকাতেই রোজা হয়ে যায়? নাকি যথাযথ ভাবে রোজা পালন করতে প্রয়োজন যথাযথ নিয়ম অনুসরণ। এবারের আর্টিকেলটিতে জানাবো এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কেই।
আচ্ছা, আপনার মনে কি কখনই প্রশ্ন জাগেনি যে, “রমজান মাস কিভাবে কাটানো উচিত?” উত্তর হ্যাঁ হলে আপনি যথাযথ স্থানে রয়েছেন। না জানাটা দোষের কিছু নয় তবে জানার সুযোগ থাকা সত্বেও না জেনে থাকাটা দোষের। তাই আসুন জেনে নিন পবিত্র মাহে রমজান মাস কিভাবে কাটানো উচিত সেই সম্পর্কে।
এবারের আর্টিকেলে একটি পূর্নাঙ্গ রুটিন সম্পর্কে জানাবো যেখাবে আপনি রোজা থাকাকালীন সময় অতিবাহিত করতে পারবেন। নাহ, এই আর্টিকেলটিতে রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানানো হবে না। আপনি যদি রমজান মাসের ফজিলত সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে উক্ত লিংকে ক্লিক করে জেনে নিন। কেননা, এই আর্টিকেল জুরে আলোচনা হতে যাচ্ছে আপনি রোজা অবস্থায় পুরো দিন কিভাবে অতিবাহিত করবেন সে সম্পর্কে। ঠিক অনেকটা “রোজার সময় আমলের রুটিন” এর মতন।
রমজান মাসে রোজা রাখার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম যে সময় নিয়ে আলোচনা করা উচিৎ তা হলো সেহরির সময়। মূলত রোজা রাখার জন্য ভোর রাতে উঠে সেহরি খাওয়াটা সুন্নাহ। কেউ যদি রাতে বা ডিনারে অতিরিক্ত খান যার কারনে সেহরির সময় খুদা না লাগে বা খাবারে অরুচি থাকে তবুও সেহেরিতে উঠে হাল্কা কিছু খাওয়া সুন্নাহ হিসেবে ধরা হয়। বলা হয়ে থাকে যদি কিছু না খাওয়া হয় তবুও যেনো খেজুরের খাওয়ার মাধ্যমে সেহেরি খাওয়া হয়। কেননা আমাদের নবী করিম (সঃ) বলেন, “তোমরা সেহেরি খাও, কারন এই খাবারে বরকত রয়েছে” তাই অল্প হলেও খাওয়া সুন্নত।
তারপরের বিষয়টি হলো সময়, অনেক সময় দেখা যায় ফজরের আযানের আগ পর্যন্ত খেতে থাকে। এই বিষয়টি পরিহার করা উচিৎ। কেননা, একজন মুমিনের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত সম্পন্ন সময় হচ্ছে ভোর রাত্রী। তাই সেহেরির সময় অতিবাহিত হওয়ার ৩০ মিনিট আগে খাওয়া দাওয়া শেষ করে নেয়াই উত্তম।
তাছাড়া এই সময়ে বিভিন্ন নফল ইবাদত (সর্বোত্তম তাহাজ্জুদ সালাত) পড়তে পারেন, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারেন। সাধারণত সারা বছর তেমন ভাবে সময় করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া হয় না, তবে যেহেতু সেহেরির সময় মধ্য রাতে জাগা হয় তাই সকলেই চেষ্টা করবো আগামী ৩০ দিন যথাযথ ভাবে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তে। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে উক্ত লিংকে ক্লিক করে বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন। পাশাপাশি জেনে নিতে পারেন এর ফজিলত ও বিভিন্ন দোয়া সম্পর্কে।
সেহরি খাওয়া শেষে নিদিষ্ট সময়ে ফজরের আযান হয়, আযানের পর দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে কিছুটা বিশ্রাম নেয়া সুন্নত, আমাদের নবী ফজরের সুন্নত নামাজের পর ও ফরজ নামাজের আগে কিছু ক্ষন বিশ্রাম নিতেন বলে জানা যায়।
এরপর যখন ফজরের নামাজ আদায় হয় যাবে তখন একই স্থানে বসে থেকে সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত সকাল সন্ধ্যা জিকির গুলো করা যেতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন দোয়া, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারবেন।
ইশরাকের নামাজ সম্পর্কে হয়তো অনেকেই অবগত নয়। এক কথায় যদি বলতে যাই তবে এটি এমন এক নামাজ যা সূর্য উঠার পর পড়া হয় এবং এই সালাত আদায়ের ফলে আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে পূর্নাঙ্গ উমরার সওয়াব দিয়ে থাকে। আমাদের মূলত দিনের শুরুতে এবং শেষে আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করা উচিৎ। তাই কোনো রোজাদারের উচিৎ নয় ইশরাকের নামাজ মিস করা। বলা হয়ে থাকে মধ্য রাতের তাহাজ্জুদ নামাজের পরে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ নফল ইবাদত থেকে থাকে তবে সেটি ইশরাকের নামাজ। অনেকেই ইশরাকের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে বিষয়ে সঠিক ভাবে অবগত নয়, তাদের জন্য থাকছে ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম সংক্রান্ত বিস্তারিত আর্টিকেল।
ইশরাকের নামাজের পর নির্দিষ্ট পরিমাণের ঘুম দিতে পারেন। এক্ষেত্রে ঘুমের সময় যেনো বেশি না হয়ে যায় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। একটা নির্ধারিত পরিমাণ ঘুমের পর উঠে কিছুটা কুরআন তিলাওয়াত করা কিংবা ইসলামিক কোনো বই পড়ার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করতে পারেন।
এরপর ব্যক্তিগত কাজ থাকলে সেটির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন কিংবা যার যার ব্যক্তিগত কাজ গুলো সেড়ে নিতে পারেন। অনেকেই আছে যারা অফিস করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে অফিসের সময় কিভাবে রোজার সময় সূচী সেট করবেন সেই বিষয়ে জানতে এখানে ক্লিক করুন। আর্টিকেলটি পড়ে আপনার নিজের মত করে টাইম সেট করার ধারণা পেয়ে যাবেন।
এই নামাজটি বা আমলটি সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের খেয়াল থাকে না। এটি এক ধরনের নফল ইবাদত। যাওয়ালের নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় সূর্য যখন ঢলে পড়ে বা যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয় তখন থেকে যোহরের ফরজ নামাজ আদায়ের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত। যাওয়াল নামাজের বিস্তারিত নিয়ম সম্পর্কে জানতে উক্ত লিংকে ক্লিক করুন। এবং বিলুপ্তের পথে চলে আসা এই নফল নামাজটি আদায় করতে পারেন পবিত্র রমজান মাসে।
এই পর্যায়ে রেগুলার নামাজের মতই যোহরের ওয়াক্তে নামাজ আদায় করবো। প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, চার রাকাত ফরজ এবং বাকি ৪ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবো। নামাজ শেষে বিভিন্ন দোয়া ও জিকির করা যেতে পারে।
এসময় যদি কাজের উপর থাকা হয় তাহলে তো নিদিষ্ট কাজই করতে হবে। তবে যদি ফ্রী থাকা হয় বা বাসায় অবস্থান করা হয় তাহলে বাসা বাড়ির বিভিন্ন কাজে মা-বোন, স্ত্রীদের সাহায্য করা সুন্নত। আমাদের নবী কারিম (সঃ) ও উক্ত কাজটি করতেন।
তাছাড়া বাসায় ছোট বাচ্চারা থাকলে তাদের নিয়ে বসতে পারেন, তাদের বিভিন্ন হাদিস শিক্ষা বা অন্যান্য শিক্ষামূলক বিষয় শেখাতে ও জানাতে পারেন। এবং দুপুরে একটু বিশ্রাম নেয়া সুন্নত তাই কিছু সময়ের জন্য হাল্কা ঘুম দেয়া যেতে পারে তবে সেটা বেশি সময়ের জন্য নয়।
আসরের সময় থেকে শুরু করে মাগরিবের আগ অব্দি সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সকাল সন্ধ্যা দোয়া গুলো আল্লাহ কবুল করে বেশি। এই সময়টিতে আসরের ফরজ নামাজ শেষে কিছু সময় দুরুদ, তাসবিহ, দোয়া ও জিকিরের মাধ্যমে কাটানো যেতে পারে।
মাগরিবের আজান কিংবা ইফতারের সময় হলে কোনো প্রকার বিলম্ভ না করেই দ্রুত ইফতার করা সুন্নাহ। তাই আজান হওয়া মাত্রই খেজুরের মাধ্যমে ইফতার সেড়ে নিবো। তবে ইফতারের আগে কিছু বিশেষ আমল রয়েছে যেগুলো অবশ্যই পালন করা ভালো। ইফতারের দোয়া, আমন, ফজিলত সম্পর্কে জানতে উক্ত লিংকে ক্লিক করে বিস্তারিত আর্টিকেলটি পড়ে নিন।
ইফতার শেষে অথবা হাল্কা ইফতার করে মাগরিবের নামাজ শেষ করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে মাগরিবের স্বাভাবিক নামাজ যেমন, দুই রাকাত সুন্নাহ ও ৩ রাকাত ফরজ পরে নিতে হবে। এরপর সাভাবিক দোয়া, দুরুদ ও জিকিরের মাধ্যমে বাকি সময় টুকু কাটাতে পারেন।
৫ ওয়াক্তের শেষ ওয়াক্ত ইশার সালাত আদায়ের পর তারাবীহ এর সালাত আদায় করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে খতম তারাবীহ পড়লে ভালো আর সে সময় না হলে সুরা তারাবীহের মাধ্যমেও পড়া যেতে পারে। তারাবীহ নামাজের ক্ষেত্রে একেক হাদিসে একেক রাকাতের পরিমাণের কথা বলা রয়েছে। সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য হলো ৮,১২,২০ রাকাত পড়া। তবে আপনি যদি তারাবীহ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তবে উক্ত লিংকে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন।
জানা যায় যে, নবীজি ইশারের আগে কখনো ঘুমাতেন না, এবং ইশারের পরে জেগে থাকতেন না। তাই এটা খুবই উত্তম যে ইশারের পর ঘুমিয়ে যাওয়া। এতে করে মধ্যরাতে ঠিক ভাবে উঠে ইবাদত করা যায়।
এবং এভাবেই আপনি রমজান মাস রোজা রাখার মাধ্যমে উক্ত আমল গুলো করতে পারেন। একই রুটিন প্রতিদিন অনুসরণ করতে পারেন। আসলে রমজান মাস কিভাবে কাটানো উচিত সে বিষয়ে একেক জনের একেক রকম রুটিন তৈরি হয়ে যায়। তবে যেভাবেই রুটিনটিকে সাজান না কেনো, অবশ্যই আল্লাহ এর ইবাদতবন্দিগী হওয়ার সময় অবশ্যই যথাযথ রাখবেন।
অর্কিড, খুব কঠিন একটা নামের সুন্দর একটা ফুল। আজকে আপনাদের সাথে চমৎকার একটি ফুল নিয়ে…
প্রতিটা দেশেরইই একক কিছু দেশাত্মবোধক গান থাকে তেমনি বাংলাদেশেও রয়েছে এমন অনেকগুলো দেশাত্মবোধক গান। আমরা…
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো -…
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর ইচ্ছায় অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে বেগুন চাষ…
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো…
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর ইচ্ছায় সবাই ভালো আছেন। আমাদের দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ…