Categories: জাতীয়

(MRP) এমআরপি থেকে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

আপনার পাসপোর্টটি MRP পদ্ধতিতে রয়েছে যেটা থেকে আপনি ই-পাসপোর্টে শিফট হতে চাচ্ছেন? এমআরপি থেকে ই পাসপোর্ট করার যাবতীয় নিয়মের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে সাজানো রয়েছে পুরো আর্টিকেলটি। 

MRP full form হলো machine readable passport। মূলত 2010 সালে যখন এমআরপি পাসপোর্ট চালু করা হয়েছিল তখন এটিতে একজন ব্যক্তি 10 টি আঙ্গুলের ছাপ সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছিল না। যার কারণে প্রতিনিয়ত দেখা যেত একজনের নামে একাধিক পাসপোর্ট করা হচ্ছে। এই ভোগান্তি রোধ করতে এবং একজন ব্যক্তির বিপরীতে একটিমাত্র পাসপোর্ট চালু রাখার প্রবণতা শুরু করতে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট চালু হয়। 

বর্তমান বাংলাদেশ সরকার এমআরপি পাসপোর্ট থেকে সরে এসে ই-পাসপোর্টে শিক্ষার জন্য উৎসাহিত করছে।  তবে এমআরপি পাসপোর্ট যে একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে এমনটা নয়,  এখনো অনেক মানুষ এমআরপি পাসপোর্ট তৈরি করছে তবে এ ক্ষেত্রে মূল সমস্যাটি থেকেই যায় পাশাপাশি এমআরপি পাসপোর্ট করাতে ই-পাসপোর্ট এর তুলনায় বেশি সময় লেগে থাকে। 

তাছাড়া বর্তমানে ই পাসপোর্ট করার পাশাপাশি পূর্বে যাদের এমআরপি পাসপোর্ট ছিল তারা এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট করতে পারবেন । এক্ষেত্রে করণীয় যাবতীয় কাজ কে কেন্দ্র করে এবারের আর্টিকেলটি সাজানো হয়েছে যেখানে জানানো হবে প্রত্যেকটি স্টেপ যা অনুসরণ করার মাধ্যমে এমআরপি থেকে পাসপোর্ট তৈরি করা যাবে। 

তবে প্রথমেই পাসপোর্ট গুলোর মূল্য সম্পর্কে জেনে নেই জেনে নেবো। ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে এবং এম আর পি পাসপোর্ট করতে কত টাকা প্রয়োজন হয় এক্ষেত্রে সময় এর ভিত্তিতে মূল্যের চেয়ে পার্থক্য সেটাও উপস্থাপন করব। 

এমআরপি পাসপোর্ট করতে কত টাকা প্রয়োজন?

আপনি যদি সাধারন ফিস অনুযায়ী যেটা কিনা 21 দিনের মধ্যে তৈরি করে দেয়া হবে সেটি করতে চান তবে 3450 টাকা প্রয়োজন হবে।  তাছাড়া রয়েছে জরুরিভিত্তিতে পাসপোর্ট করার সুবিধা যেখানে মাত্র 7 দিনের মধ্যে পাসপোর্ট রেডি করে দেওয়া হবে এবং এ ক্ষেত্রে খরচ হবে 6,900 টাকা।  সবশেষে যখন আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হবে সেটিকে হিসু করার জন্য প্রতিবছর 345 টাকা করে খরচ হবে। 

ই-পাসপোর্ট করতে কত টাকা প্রয়োজন?

বর্তমানে পাসপোর্ট তৈরি করা হয় দুই  ধরনের।  প্রথমটি হচ্ছে 48 পাতার  এবং আরেকটি হচ্ছে চৌষট্টি পাতার।  এক্ষেত্রে প্রতিদিন জন্য রয়েছে দুইটি মেয়াদী পাসপোর্ট সাধারণত সকল ধরনের ই-পাসপোর্ট 5 বছর মেয়াদী এবং 10 বছর মেয়াদী হয়ে থাকে।  প্রথমেই 48 পাতার 5 ও 10 বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে খরচ কত হয় সেগুলো জানাবো।

৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট

5 বছর মেয়াদী 48 পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক বা 15 কর্মদিবসের খরচ হয় 4,025 টাকা।  7 কর্মদিবসের মধ্যে করতে চাইলে খরচ হবে 6325 টাকা।  এবং অতি জরুরী ভিত্তিতে মাত্র 2 কর্মদিবসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট করাতে চাইলে খরচ হবে 8625 টাকা। 

10 বছর মেয়াদী 48 পাতার ই-পাসপোর্ট করাতে চাইলে স্বাভাবিক বা 15 কর্মদিবসের খরচ হবে ৫৭৫০  টাকা।  একই কাজ 7 কর্মদিবসের করতে চাইলে খরচ হবে  8050 টাকা।  সবশেষে অতি জরুরী ভিত্তিতে মাত্র দুই কর্মদিবসের মধ্যে 10 বছর মেয়াদী 48 পাতার পাসপোর্ট করতে চাইলে খরচ হবে ১০৩৫০ টাকা।

৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট

চৌষট্টি পাতার পাঁচ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করাকরি 15 দিন সময় নিয়ে খরচ হবে 6325 টাকা।  সাত দিনের মধ্যে করতে চাইলে খরচ হবে  8325 টাকা।  এবং অতি জরুরী ক্ষেত্রে মাত্র 2 দিনে করতে চাইলে খরচ হবে 12075 টাকা। 

 অন্যদিকে, দশ বছর মেয়াদী একই কাজ 15 দিনের মধ্যে করতে চাইলে খরচ হবে 8050 টাকা।  60 দিনের মধ্যে পাসপোর্ট কমপ্লিট করতে খরচ হবে 10350  টাকা এবং একই কাজ অতি জরুরী ভিত্তিতে মাত্র দুই দিনের মধ্যে করতে চাইলে খরচ হবে 13800  টাকা। 

এমআরপি থেকে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

যেমনটা বলেছিলাম বর্তমানে এম আর পি পাসপোর্ট এবং ই-পাসপোর্ট দুটি বাংলাদেশের চালু রয়েছে।  আপনি চাইলে যেকারো উপায় অবলম্বন করে পাসপোর্ট করে নিতে পারেন তবে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার এমআরপি পাসপোর্ট থেকে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে বেশি উৎসাহ প্রদান করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এমআরপি পাসপোর্ট করার পদ্ধতি ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।  

এবং দেখা যাবে ই-পাসপোর্ট এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।  সহজে তৈরি করা যায় বিধায় অনেকেই ই পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত হচ্ছে।  এমনকি যারা এতদিন এমআরপি পাসপোর্ট ব্যবহার করত তারা এমআরপি পাসপোর্ট থেকে ই-পাসপোর্টে শিফট হচ্ছে। 

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম নিয়ে যাবতীয় কার্যক্রম কভার করা হবে উক্ত আর্টিকেলে যেখানে বেশ কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। এক নজরে সেই ধাপগুলো কথা বলি: 

  • আপনার এলাকায় আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ই পাসপোর্ট চালু হয়েছে কিনা তা প্রথমেই  নিশ্চায়ন করে নিতে হবে।
  • অনলাইনে ই-পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে।
  • পাসপোর্টের ফি পরিশোধ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে অফিসে উপস্থিত থাকতে হবে এবং সেখান থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান করতে হবে।
  • পরিশেষে যখন পাসপোর্ট হয়ে যাবে তখন আঞ্চলিক অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।

এরপর বিষয়ে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ধাপ, একেক করে বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপন করা হবে। 

ধাপ ১: আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস

 আপনি যেই স্থান থেকে ই পাসপোর্ট করতে চাচ্ছেন উক্ত স্থানে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সিটি রয়েছে সেখানে ই-পাসপোর্ট এর জন্য কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে কিনা সেটি  নিশ্চয়ন করুন। যদিও পাসপোর্ট এর প্রাথমিক কার্যক্রম করা হবে অনলাইনে তবে পাসপোর্ট সম্পূর্ণ হয়ে গেলে সেটি সংগ্রহ করতে হবে অফিস থেকেই। 

ধাপ ২: অনলাইনে ই-পাসপোর্ট আবেদন পদ্ধতি

যেহেতু ইতিমধ্যেই আপনার এমআরপি পাসপোর্ট রয়েছে এবং সেটিকে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট এর কনভার্ট করতে চাচ্ছেন সেক্ষেত্রেও উক্ত পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে অনলাইনে আবেদন করার জন্য.  তাছাড়া আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কার সাথে রাখলে আবেদনের সময় প্রদানকৃত তথ্য নির্ভুলভাবে  লিপিবদ্ধ করা যাবে।

ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরি

এক্ষেত্রে প্রথমেই বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট  অনলাইন আবেদন করার ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর ওয়েবসাইটটির ড্যাশবোর্ড থেকে নিম্নে প্রদর্শিত স্ক্রিনশটে মার্ক করা স্থানে ক্লিক করতে হবে। 

পিক ১ 

সরাসরি অনলাইন আবেদন অপশনটিতে ক্লিক করার পরে এবার আপনাকে জেলা এবং থানা বা উপজেলা সিলেক্ট করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য অগ্রসর হতে হবে। এই পর্যায়ে নিজস্ব ইমেইল এড্রেসটি প্রদান করতে হবে এবং একটি ক্যাপচা পূরণ করার পরবর্তীতে কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করতে হবে। 

এরপর যখন নতুন একটি পেজ ওপেন হবে, সেখানে দুইবার পাসওয়ার্ড প্রদান করতে হবে। যা থাকবে ছোট অক্ষর গোল সংখ্যা ও একটি বিশেষ চিহ্ন এর সমন্বয়ে গঠিত। উল্লেখ্য যে পাসওয়ার্ডটি মনে রাখা করতেছি গুরুত্বপূর্ণ কারণ পরবর্তী ধাপে এবং একাউন্টে লগইন করার জন্য আইডি এবং পাসওয়ার্ড একান্তই প্রয়োজনীয়। 

পিক ২ 

পাসওয়ার্ড দেওয়া শেষ হলে পার্সোনাল ইনফরমেশন একটি ফর্ম দেওয়া থাকবে সেটি পূরণ করতে হবে।  এখানে রয়েছে আপনার পুরো নাম,  ডাকনাম,  এবং বংশের নাম।  উক্ত তথ্যগুলো পূরণ করার পর একটি  11 ডিজিটের মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে হবে। 

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ  এমন অনেকেই রয়েছে  যাদের নাম  এক শব্দের। তাদের ক্ষেত্রে পুরো নামের স্থানে উক্ত নামটি এবং sure name  এর স্থানে নামটি লিপিবন্ধ করতে হবে, এক্ষেত্রে ডাকনামের স্থান খালি রাখা উচিৎ। 

এই পর্যায়ে আপনার প্রদানকৃত ইমেইল এড্রেসে দুইটা মেইল পাঠানো হবে একটি হবে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সংক্রান্ত ভিডিওটি হবে অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার অ্যাকসেপ্ট সংক্রান্ত।  প্রথমেই মেইলে দেয়া লিংকে ক্লিক করে একাউন্ট একটিভ করে নিতে হবে। কোন কারণে ইনবক্সে মেইল না পেলে অপশনে চেক করতে হবে। এই পর্যায়ে ওয়েব সাইটে একাউন্ট তৈরীর কাজ সমাপ্ত।  পরবর্তী কাজ হবে ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন শুরু করা। 

ই পাসপোর্ট এর জন্য  আবেদন

একাউন্টে লগইন করা হয়ে গেলে Apply for a new e-passport নামক একটি বড় বাটন দেখানো হবে যেটা এ ক্লিক করার পর একটি নতুন পেইজ এ নিয়ে যাওয়া হবে যেখানে নিম্নে উল্লেখিত তথ্যগুলো সঠিক ভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে।  

পাসপোর্ট এর ধরন

আপনি যে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন সেটাই  সাধারণ পাসপোর্ট নাকি অফিশিয়াল  পাসপোর্ট,  সে বিষয়ে তথ্য পূরণ করতে হবে।  মূলত যারা সরকারি চাকরিজীবী তারাই কেবল অফিসিয়াল পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।  এক্ষেত্রে তার অবশ্যই এন ও সি অথবা জিও থাকতে হবে। 

ব্যক্তিগত ইনফর্মেশন

ব্যক্তিগত  তথ্য প্রদানের  প্রথমেই যদি আই অ্যাপ্লাই ফর মাই সেল্ফ অপশনে ক্লিক করে দেন তবে একাউন্টে প্রদান করা তথ্যের আলোকে উক্ত ফরম টি অটোমেটিকলি পূরণ হয়ে যাবে।  যদি তা না হয় তবে একেক করে সেখানে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য  গুলো প্রদান করুন। 

ঠিকানা 

এই পর্যায়ে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার যাবতীয় তথ্য প্রদান করতে হবে যেহেতু আপনি ইতিমধ্যে এমআরপি পাসপোর্ট ধারী সে অনুযায়ী আপনার এমআরপি পাসপোর্ট এ থাকা বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার যাবতীয় তথ্য এখানে একইভাবে লিপিবদ্ধ করবেন। 

আইডি ডকুমেন্টস

বলতো এমআরপি পাসপোর্ট থেকে ই-পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে উক্ত অপশনটি দেখানো হয় যেখানে পূর্বের এমআরপি পাসপোর্ট এর আইডি ডকুমেন্টগুলো প্রদান করতে হবে।  সেখানে দুইটি অপশন দেখানো হবে যার প্রথমটি হচ্ছে এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট  তৈরি করার জন্য।  এবং অন্যটি হচ্ছে ইতিমধ্যে থাকা ই-পাসপোর্ট রিইস্যু করার জন্য।

নিচে তিনটি অপশন দেখানো হবে যার প্রথম দিতে রি ইস্যু করার কারণ সাবমিট করতে হবে, পাসপোর্ট নাম্বার সাবমিট করতে হবে এবং উক্ত পাসপোর্ট এর ইসু ডেট এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার ডেট  লিপিবদ্ধ করতে হবে। 

পিতা-মাতার তথ্য

এখানে আপনার পিতা ও মাতার যাবতীয় তথ্য প্রদান করতে হবে বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয় পত্র না দিলেও সমস্যা হবেনা। তবে আপনার নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং পূর্বের এমআরপি পাসপোর্ট অনুযায়ী পিতা মাতার নাম লিখতে হবে। 

তাছাড়া এখানে গার্ডিয়ান ইনফরমেশন নামক আরো একটি অপশন দেখানো হবে যেটা প্রয়োজন হবে তাদের জন্য যারা ১৮ বছরের নিচে অথবা এতিম তাদের যে গার্ডিয়ান থাকবে তাদের তথ্য প্রদান করতে হবে। 

বৈবাহিক অবস্থা

আপনি যদি বিবাহিত হন তবে আপনার স্বামী অথবা স্ত্রী এর তথ্য প্রদান করতে হবে আর যদি অবিবাহিত হন তবে সিঙ্গেল অপশনটি রেখে দিতে হবে। এই দুইটি ছাড়াও ডিভোর্স এবং বিধবা অপশন রয়েছে মূলত আপনার বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী আপনি এখান থেকে যে কোন একটি অপশন সিলেক্ট করতে পারবেন। 

উল্লেখ্য যে স্বামী অথবা স্ত্রী এর জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দেয়ার প্রয়োজন নেই এটা অনেকটা ঐতিহ্য হিসেবে রাখা হয়েছে যদি চান নিতে পারেন, না দিলে কোন সমস্যা নেই। 

জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের ঠিকানা অথবা নাম্বার

যদি কোনো কারণবশত আপনার সাথে যোগাযোগ করার না যায় তাহলে এমন কারো সাথে যোগাযোগ করার অপশন তাদের প্রদান করতে হবে যার মাধ্যমে আপনাকে খুঁজে পাওয়া যাবে হতে পারে এটা আপনার বাবা-মা-ভাই-বোন স্বামী কিংবা স্ত্রী। 

ইমারজেন্সি কন্টাক্ট অপশন এর নিচে সেভ এন্ড কন্টিনিউ বাটন এর উপরে একটি লাল চিহ্ন রয়েছে যেটা তে ক্লিক করে রাখলে আপনার পাসপোর্ট এর বর্তমান অবস্থা কি সেটা এসএমএসের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ও জানিয়ে দেওয়া হবে। 

পাসপোর্ট এর ধরন

এই পর্যায়ে আপনার পাসপোর্ট এর ধরন সিলেক্ট করতে হবে এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি তুই ধরনের পাসপোর্ট হয়ে থাকে একটি 48 পৃষ্ঠার অন্যটি 64 পৃষ্ঠার হয়ে থাকে। তাছাড়া আপনার পাসপোর্টটি পাঁচ বছরের নাকি দশ বছরের সেটিও জানান দেওয়ার প্রয়োজন হবে। 

ডেলিভারি অপশন

এই অপশনে আপনি ই-পাসপোর্ট কিভাবে নিতে চান সেটি জানিয়ে দিতে হবে এটি কি রেগুলার ডেলিভারি সিস্টেম লাগাবে নাকি এক্সপ্রেস ডিলিভারি হবে সেই তথ্যটি প্রদান করতে হবে পাশাপাশি ডেলিভারি সম্ভাব্য ডেট গ্রহণ করতে চান কি না সে বিষয়েও তথ্য জানিয়ে দিতে হবে। 

পেমেন্ট অপশন 

সাধারণত দুইভাবে পেমেন্ট প্রদান করা যায়।  অনলাইন এবং অফলাইন আপনি কোন উপায় পাসপোর্টের ফি প্রদান করতে চাচ্ছেন সেই অপশনটি সিলেক্ট করতে হবে। 

ই-পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন সাবমিট

অনলাইনে ই-পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন এর সকল প্রসেস এখানেই সমাপ্ত এই পর্যায়ে আপনাকে পেমেন্ট সামারি পেইজ এবং অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন পেইজ টি ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করে রেখে দিতে হবে। 

ধাপ ৩: ই-পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করার নিয়ম

মোট দুইটি উপায় ই-পাসপোর্ট তৈরি করার ফি প্রদান করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সরাসরি ব্যাংকের মাধ্যমে চালান তৈরি করে উক্ত অর্থ পরিশোধ অথবা অনলাইনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ থাকছে।  আপনি যদি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে চান তাহলে আপনার এনআইডি কার্ড,  এবং পেমেন্ট সামারি পেজ প্রিন্ট করে বাংলাদেশের যেকোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি ব্যাংক থেকে চালানের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট ফি প্রদান করতে পারবেন।  এক্ষেত্রে অবশ্যই ব্যাংক হতে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ,  পেমেন্ট সামারি এবং এনআইডি কার্ড নিয়ে আসবেন। 

অন্যদিকে আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে উক্ত ফি প্রদান করতে চান তাহলে প্রথমেই এই ওয়েবসাইটে ক্লিক করে সেখানে থাকা অপশন গুলোর মধ্যে পাসপোর্ট ফি অপশন সিলেক্ট করলে একটি পপ-আপ ওপেন হবে, যেখানে প্রথম অপশন থাকবে পাসপোর্ট এর ধরন এবং দ্বিতীয় অপশনে থাকবে উক্ত পাসপোর্ট এর মেয়াদ।  ঠিকভাবে সে সকল তথ্য পূরণ করে ওকে বাটনে ক্লিক করতে হবে।

এই পর্যায়ে পেমেন্ট স্লিপ এর OID নাম্বার, এনআইডি অনুসারে নাম ফোন নাম্বার অবশ্যই প্রদান করতে হবে।  এরপর নিচে থাকা অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংকের কার্ড এর মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। পরিশোধ হয়ে গেলে টাকা জমা দেওয়ার ক্লিপ ডাউনলোড করে রাখবেন। 

ধাপ ৪: ই-পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস

জামাটা প্রথমেই বলেছিলাম পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে ছবি তোলা এবং  ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদানের প্রয়োজন হয়ে থাকে।  উক্ত কাজের জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট একটি সিডিউল প্রদান করা হবে।  নির্ধারিত দিনে পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছে সেখানে থাকা রিসিপশন থেকে একটি পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পূরণ করে নিতে হবে। পাসপোর্ট রি ইস্যু ফরম ব্যতীত আরো যে সকল ডকুমেন্টস সাথে করে নিয়ে যেতে হবে সেগুলো হলো: 

  • জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন এর মূলকপি ও ফটোকপি
  • পূর্বের এমআরপি পাসপোর্ট এর মূলকপি এবং ফটোকপি
  • ব্যাঙ্ক অথবা অন্য যে উপায়ে টাকা পরিশোধ করেছেন সেটি রশিদ
  • চাকরিজীবী হলে পেশাগত ডকুমেন্টস
  • আবেদনপত্র এবং পেমেন্ট শাড়ির প্রিন্ট কপি
  • যদি বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন ঘটে তবে তার ডকুমেন্টস

ধাপ ৫:  আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট সংগ্রহ

এমআরপি থেকে ই-পাসপোর্ট রিইস্যু বা নতুন করে পাসপোর্ট তৈরীর জন্য আবেদনের দিন বায়ো ইনরোলমেন্ট শেষে ডেলিভারি স্লিপ প্রদান করে প্রতিটি পাসপোর্ট অফিস।  ওই ডেলিভারি স্লিপ এর ওপরে বাম পাশের দিকে উল্লেখ করা থাকে সম্ভাব্য পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট। উল্লেখিত তারিখে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ডেলিভারি কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করতে হবে আপনার ই-পাসপোর্ট। 

পরিশেষে কিছু কথা

অতঃপর এই ছিলো “এমআরপি থেকে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম” সংক্রান্ত বিস্তারিত আর্টিকেল যেখানে আলোচনা করা হয়েছে এমআরপি পাসপোর্ট এবং ই-পাসপোর্ট সম্পর্কে। পাশাপাশি MRP থেকে ই পাসপোর্ট করার জন্য যে সকল কার্য অবশ্যই করনীয় সেগুলো ধাপে ধাপে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভিসা ও পাসপোর্ট সম্পর্কে আরো জানতে অনুসরণ করুন বাংলা আলো ওয়েবসাইটের ভিসা ক্যাটাগরিটি। 

Bangla Alo

Recent Posts

অর্কিড ফুল চাষ পদ্ধতি, রোগবালাই দমন, ফলন ও ফুল সংগ্রহ

অর্কিড, খুব কঠিন একটা নামের সুন্দর একটা ফুল। আজকে আপনাদের সাথে চমৎকার একটি ফুল নিয়ে…

2 weeks ago

৫টি জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানের লিরিক্স

প্রতিটা দেশেরইই একক কিছু দেশাত্মবোধক গান থাকে তেমনি বাংলাদেশেও রয়েছে এমন অনেকগুলো দেশাত্মবোধক গান।  আমরা…

2 weeks ago

ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় জানুন

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো -…

2 weeks ago

বেগুন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন, নিজে চাষ শুরু করুন

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর ইচ্ছায় অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে বেগুন চাষ…

2 weeks ago

ওমরা ভিসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য ২০২৪

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো…

2 weeks ago

কনফেকশনারি ব্যবসার আইডিয়া || শুরু থেকে শেষ অব্দি

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর ইচ্ছায় সবাই ভালো আছেন। আমাদের দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ…

2 weeks ago