ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স । জীবন বীমা । বীমা পলিসি রিভিউ

এই আর্টিকেলে জানাবো ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড সম্পর্কে এবং তাদের বীমা পলিসির বিস্তারিত নিয়ে। অনেকেই রয়েছে যারা বিভিন্ন ক্যাটাগরির বীমা করার জন্য নির্ভরযোগ্য কোম্পানি খোজার আশায় সচল থাকা ইন্সুরেন্স কোম্পানি গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান। মূলত তাদের জন্যই বিভিন্ন ধরনের বীমা পলিসি সম্পন্ন ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির খুঁটিনাটি নিয়ে রিভিউ করা হবে। 

ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড

নামের সাথে লাইফ ইন্সুরেন্স থাকলেও উক্ত প্রতিষ্ঠানটি কেবল জীবন বীমাই নয় তার পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের বীমা করার সুযোগ রেখেছে। বিগত ৩৮ বছর ধরে সফলতার সাথে বীমা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে উক্ত প্রতিষ্ঠানটি। 

ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে প্রবর্তিত প্রথম বেসরকারি জীবন বীমা কোম্পানি। উক্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে বেসরকারি বীমাকারীদের যুগ শুরু হয়। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব এম. হায়দার চৌধুরীর নিখুঁত অধ্যবসায়, প্রচেষ্টা এবং তত্ত্বাবধানের ফলে ২৩শে এপ্রিল, ১৯৮৫ সালে কাজ শুরু করে। 

২০১২ সালে ৭০৩ কোটি প্রিমিয়াম আয় সহ ২৪১৯ কোটি টাকার বিশাল লাইফ ফান্ড সহ কোম্পানিটি একটি প্রভাবশালী বীমাকারী এবং তার আগের রেকর্ডগুলিকে ছাড়িয়ে একটি নতুন প্রবৃদ্ধির গতিপথে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে৷ কোম্পানির মূলমন্ত্র হল একটি পরিকল্পিত ভবিষ্যতের জন্য একটি গ্যারান্টি নিশ্চিত করা। 

কোম্পানির তিনটি দৃষ্টিভঙ্গি হল- উচ্চ/মধ্য আয়ের জনসংখ্যা এবং বিশেষ করে নিম্ন আয় এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর সঞ্চয়কে উৎসাহিত করা ও প্ররোচিত করা। দেশের নিরক্ষর/অর্ধশিক্ষিত/শিক্ষিত যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও প্রদান করা। 

এই কোম্পানিটি ঢাকার সেগুনবাগিচায় কয়েকশ বর্গফুট এলাকা জুড়ে একটি প্রধান কার্যালয় সহ ১১ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করে। কিন্তু বর্তমানে মোট জনবল রয়েছে ১,০০,০০০ এরও বেশি কর্মী মাঠ পর্যায়ে পৌঁছেছে যা সারা দেশে প্রায় ১২০০ টি জোনাল, আঞ্চলিক, শাখা এবং ব্লক অফিস কভার করে।

কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ‘এনএলআই টাওয়ার’-এ অবস্থিত ঢাকা মহানগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী পয়েন্টে কাওরানবাজারে নিজস্ব উচ্চ ভবন। কোম্পানিটি বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা সদরে প্লট ও জমি ক্রয় করেছে। এনএলআই ভেঞ্চার ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারস বাংলাদেশ লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোং লিমিটেডের স্পন্সর ডিরেক্টর হিসেবে সেট করা হয়েছে। তাছাড়া, এনএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড হল এনএলআই – এর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।

ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে কি কি বীমা করা যায়?

এই পর্যায়ে জানাবো ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে বর্তমানে কোন কোন বীমা এভেইলেবল রয়েছে বা কোন ধরনের বীমা করা হয়। নিম্মে প্রতিটি ইন্সুরেন্সের বৈশিষ্ট্য সুবিধা সহ কোনটি কিসের জন্য তা উল্লেখ্য করা হচ্ছে। 

মেয়াদী বীমা

এটি এক ধরনের সঞ্চয়ী বীমা। উক্ত বীমাটি যে কোন নির্দিষ্ট মেয়াদে গ্রহণ করা যায়। মেয়াদ চলাকালীন সময়ে গ্রাহকের মৃত্যু হলে মূল বীমাকৃত অর্থ অর্জিত হাওয়াসহ প্রদান করা হয়। মেয়াদ ভিত্তিক বীমার বৈশিষ্ট্য এবং উক্ত বীমা পাওয়ার যোগ্যতা সমূহ নিম্নে উপস্থাপিত হলো। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • সর্বনিম্ন ১৮ এবং সর্বোচ্চ ৫৫ বছর পর্যন্ত উক্ত বীমা করা যাবে।
  • মেয়াদ ভিত্তিক বীমার পূর্তিকালীন বয়স ৭০ বছর।
  • বীমার মেয়াদ সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত থাকে।
  • সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ অলিখিত পরিমাণ অর্থের টাকার বীমা করা যায়।
  • ছয় মাসের অন্তরান্তর অথবা বার্ষিক ভাবে বীমার প্রিমিয়াম প্রদান করা যায়।
  • সহযোগী বীমা হিসাবে উক্ত বীমার সাথে অতিরিক্ত কিছু প্রিমিয়াম প্রদান সাপেক্ষে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে বীমার অংকের দ্বিগুণ সুবিধা এবং বীমা অংকের দ্বিগুণ সুবিধাসহ অঙ্গহানি হলে তার ক্ষতিপূরণ সুবিধা পাওয়া যাবে।

সুবিধা সমূহ

১) মেয়াদ ভিত্তিক বীমা চালু করা অবস্থায় গ্রাহক বেঁচে থাকলে মেয়াদ শেষে বিমা গ্রাহকের পুরো বিমান অংক অর্জিত মুনাফা প্রদান করা হবে।

২) বীমা চালু থাকা অবস্থায় যদি গ্রাহকের মৃত্যু ঘটে তবে তার নমিনি কে পুরো বিমান অর্থ অর্জিত বোনাসসহ প্রদান করা হবে।

৩) মেয়াদ ভিত্তিক বীমাটি সম্পূর্ণ আয়কর মুক্ত, যার ফলে অর্থ উচিত হলে কোন প্রকার কর প্রদান করতে হবে না। 

প্রত্যাশিত তিন কিস্তি মেয়াদী বীমা

প্রত্যাশিত ৩ কিস্তি মেয়াদী বীমা বীমাকৃত টাকা আংশিক হারে পুরো মেয়াদে তিনবার পাওয়া যায়। মেয়াদের মধ্যে প্রাপ্ত কিস্তির টাকা লাভজনক বিনিয়োগ কিংবা ছেলে মেয়ের বিবাহ, শিক্ষা ও অন্যান্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাহায্য করে থাকে। প্রত্যাশিত ৩ কিস্তি মেয়াদী বীমার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও উক্ত বীমা করার জন্য যে যোগ্যতা প্রয়োজন তা নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • উক্ত বীমা করার জন্য সর্বনিম্ন 18 বছর থেকে সর্বোচ্চ 55 বছর বয়স হতে হবে।
  • সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তি কালীন বয়স 70 বছর
  • উক্ত বীমাটি 1215 18 এবং 21 বছরের জন্য করা যাবে
  • যেখানে সর্বনিম্ন 30 হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ অবলেখন পরিমাণ অর্থ বীমা করা যাবে।
  • ছয় মাসের অন্তরান্তর অথবা বার্ষিক ভাবে বীমার প্রিমিয়াম প্রদান করা যায়।
  • সহযোগী বীমা হিসাবে উক্ত বীমার সাথে অতিরিক্ত কিছু প্রিমিয়াম প্রদান সাপেক্ষে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে বীমার অংকের দ্বিগুণ সুবিধা এবং বীমা অংকের দ্বিগুণ সুবিধাসহ অঙ্গহানি হলে তার ক্ষতিপূরণ সুবিধা পাওয়া যাবে।

সুবিধা সমূহ

১) মেয়াদের এক-তৃতীয়াংশ সময়ে অতিবাহিত হলে বীমা অংকের 25 ভাগ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

২) মেয়াদের দুই-তৃতীয়াংশ সময় অতিবাহিত হলে বীমা অংকের 25 ভাগ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

৩) সম্পূর্ণভাবে মেয়াদ সম্পন্ন হলে বীমা অংকের বাকি ৫০ ভাগের টাকা অর্জিত অবস্থায় বোনাসসহ প্রদান করা হবে।

৪) মেয়াদের মধ্যে একাধিক স্ত্রী পাওয়ার পরও গ্রাহকের মৃত্যু হলে সম্পূর্ণ টাকা অর্জিত হিসেবে গণ্য করা হবে এবং বোনাস সহ প্রদান করা হবে। 

৫) এই ধারাটি সম্পূর্ণ করমুক্ত যার ফলে আপনি যখন টাকা উত্তোলন করবেন তখন উক্ত টাকার কোন কর পরিশোধ করতে হবে না। 

শিশু নিরাপত্তা বীমা

শিশু নিরাপত্তা বীমা  পরিকল্পনার অধীনে শিশুর জন্য বহুমুখী নিরাপত্তা প্রদান করা হয় এই বীমা প্রকল্পের যুগ্মভাবে প্রিমিয়াম দাতা ও শিশুর জীবনের উপর দেয়া হয়।সাধারণত শিশুর পিতা এই প্রকল্পে প্রিমিয়াম দাতা বলে বিবেচিত হয়। পিতা জীবিত না থাকলে অথবা তিনি বীমা গ্রহণের অযোগ্য বলে বিবেচিত হলে শিশুর মাথা প্রিমিয়াম দাতা হতে পারেন। তবে কোনভাবে পিতা-মাতা ব্যতীত অন্য কেউ এই প্রকল্পে প্রিমিয়াম দাতা হতে পারবে না। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • শিশুর প্রিমিয়াম দাতা (বাবা) এর বয়স সর্বনিম্ন 21 থেকে সর্বোচ্চ 55 হতে হবে।
  • শিশুর সর্বনিম্ন বয়স ছয় মাস এবং সর্বোচ্চ 18 বছর হতে হবে।
  • প্রিমিয়াম তার সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তি কালীন বয়স 70 এর মধ্যে থাকতে হবে।
  • শিশুর সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তি কালীন বয়স তিরিশ বছর হতে হবে।
  • এক্ষেত্রে বীমার মেয়াদ সর্বনিম্ন 10 থেকে সর্বোচ্চ 29 বছর হয়ে থাকে।
  • বিমানের দিকে লক্ষ্য করলে সর্বনিম্ন 30 হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ গ্রাহকের ইচ্ছা অনুযায়ী  পরিমাণ এর অর্থ হতে পারে।
  • বীমা প্রিমিয়াম প্রতি 6 মাসে একবার অথবা বছরে একবার পরিশোধ করা যাবে।
  • উক্ত বীমার সাথে কোন ধরনের সহযোগী বীমা বা অতিরিক্ত বীমা নির্ধারণ করা যায় না।

সুবিধা সমূহ

১) প্রথমত মেয়াদ শেষে অর্জিত বোনাস সহ সম্পূর্ণ বীমার অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে।

২) মেয়াদপূর্তির পূর্বে প্রিমিয়াম তা তার মৃত্যু হলে মৃত্যুর দিন থেকে মেয়াদপূর্তির পর্যন্ত দেও প্রিমিয়াম মওকুফ করে দেওয়া হবে এবং শিশুকে প্রতি হাজার টাকা বীমার জন্য বার্ষিক 100 টাকা হারে প্রিমিয়াম দাতার মৃত্যু কাল থেকে শুরু করে মেয়াদপূর্তি পর্যন্ত অথবা মেয়াদপূর্তির পূর্বে শিশুর মৃত্যু হলে শিশুর মৃত্যুর দিন পর্যন্ত ১০০ টাকা হারে দেওয়া হবে। 

৩)মেয়াদ পূর্তির পূর্বে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ বর্ষের বা তার উপরে যেকোনো বর্ষের মধ্যে শিশুর মৃত্যু হলে যথাক্রমে বীমার অংক 20% 40% 60% 80% এবং 100% অর্জিত বোনাস প্রিমিয়াম দাতাকে দেওয়া হবে।

৪) শিশু নিরাপত্তা বীমার ক্ষেত্রে অর্জিত অর্থের ওপর কোনো আয় কর ধার্য করা হয় না। 

প্রত্যাশিত পাঁচ কিস্তি মেয়াদী বীমা

প্রত্যাশিত 5 কিস্তি মেয়াদী বীমা বীমাকৃত টাকা আংশিক হারে পুরো মেয়াদে পাঁচবারে পাওয়া যায়। মেয়াদের মধ্যে প্রাপ্ত কিস্তির টাকা লাভজনক বিনিয়োগ বা ছেলে মেয়ের বিবাহ শিক্ষা ও অন্যান্য পরিকল্পনায় কাজে লাগানো যায়। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • এই বিমানটি করার জন্য আপনার বয়স 20 থেকে 55  বছরের মধ্যে থাকতে হবে।
  • সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তি কালীন বয়স ৭০ বছর
  • বীমার মেয়াদ 10 15 20 25 এবং 30 বছর
  • বীমা অংক সর্বনিম্ন 30 হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ গ্রাহকের ইচ্ছা অনুযায়ী পরিমাণের উপর নির্ভর করে,
  • ছয় মাসের অন্তরান্তর অথবা বার্ষিক ভাবে বীমার প্রিমিয়াম প্রদান করা যায়।
  • সহযোগী বীমা হিসাবে উক্ত বীমার সাথে অতিরিক্ত কিছু প্রিমিয়াম প্রদান সাপেক্ষে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে বীমার অংকের দ্বিগুণ সুবিধা এবং বীমা অংকের দ্বিগুণ সুবিধাসহ অঙ্গহানি হলে তার ক্ষতিপূরণ সুবিধা পাওয়া যাবে।

সুবিধা সমূহ

১) গ্রাহক বেঁচে থাকলে মেয়াদের এক-পঞ্চমাংশ, দুই-পঞ্চমাংশ, তিন-পঞ্চমাংশ, চার-পঞ্চমাংশ শেষে যথাক্রমে বীমাকৃত অর্থের শতকরা 10, 15, 20 এবং 25 ভাগ এবং মেয়াদ শেষে বাকি 30 ভাগ অর্জিত বোনাস সহ দেওয়া হবে।

২) মেয়াদের মধ্যে একাধিক কিস্তি পাওয়ার পরেও বীমাকারীর মৃত্যু হলে বীমাকৃত সম্পূর্ণ টাকা অর্জিত বোনাস সহ দেওয়া হবে। 

৩) এই বীমা প্রিমিয়াম এর ক্ষেত্রেও আয় কর ধার্য করা হয় না। 

দ্বৈত সুরক্ষা বীমা

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

সুবিধা সমূহ

শিশু শিক্ষা নিরাপত্তা পরিকল্পনা

শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা সকল শিশুর অধিকার আজকের শিশু আগামী দিনের কর্ণধার। যার ফলে পিতা প্রিমিয়াম দাতা মৃত্যুতে শিশু শিক্ষা যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্য যে বীমা সচল রাখা হয়েছে বা যে বীমা পরিকল্পনা করা হয় সেদিকে শিশু শিক্ষা নিরাপত্তা পরিকল্পনা বীমা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আপনি যদি বীমা গ্রাহক হয়ে থাকেন এবং আপনি আপনার শিশুর শিক্ষা নিয়ে চিন্তিত থাকেন এবং আপনার অবর্তমানে আপনার শিশুর শিক্ষায় ব্যাঘাত না ঘটে এটা চাইলে উক্ত  বীমা আপনার জন্যই। চলুন দেখে নেওয়া যাক উক্ত ভীম আর কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং  সুবিধা পাচ্ছেন। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • প্রিমিয়াম দাতা বা শিশুর পিতা এর বয়স সর্বনিম্ন 21 থেকে সর্বোচ্চ 55 হতে হবে।
  • শিশুর সর্বনিম্ন বয়স ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ১৮ বছর পর্যন্ত হতে হবে।
  • প্রিমিয়াম দাতা সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তির হবে ৭৫ এবং শিশুর সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তি কালীন বয়স হবে ৩০ বছর।
  • বীমার মেয়াদ হবে ১০, ১৫ ও ২০ বছর অব্দি।
  • যেখানে সর্বনিম্ম বীমার পরিমাণ ৩০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ গ্রাহকের ইচ্ছা অনুযায়ী পরিমাণের অর্থ।
  • বছরে ১ বার কিংবা ৬ মাস পর পর একবার বীমা প্রিমিয়াম প্রদান করা যাবে।
  • উক্ত বীমার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অতিরিক্ত কিংবা সহকারী বীমা নেয়া যায় না।

সুবিধা সমূহ

১)প্রিমিয়াম দাদা বেঁচে থাকলে মেয়াদপূর্তিতে প্রতি হাজার টাকা বীমার অংকের জন্য 20 টাকা হারে নিশ্চিত লাভ’সহ বীমাকৃত অর্থ দেওয়া হয় কিংবা প্রতি হাজার টাকা বীমা অংকের জন্য মাসিক 20 টাকা হারে শিক্ষা ভাতা দেওয়া হয়। 

২) প্রিমিয়াম দাতার মৃত্যু হলে প্রিমিয়াম পরিশোধ হয়ে যায়। তখন শিশুকে মেয়াদের পর্যন্ত মাসিক শিক্ষা ভাতা বাবদ প্রতি হাজারে ১০ টাকা  হারে দেওয়া হয়। তাছাড়া ৫ বছর পর্যন্ত উচ্ছ শিক্ষা ভাতা বাবদ প্রতি হাজারে বীমা অংকের জন্য মাসিক ২০ হাজার টাকা দেয়া হবে। কিংবা মেয়াদ পূর্তিতে বীমা অংক দেয়া হবে। 

৩) আপনি যদি এক সন্তানের নামে বীমা করে থাকেন এবং তার মৃত্যু ঘটলে অন্য সন্তানের নামে বা নিজের নামে চালু রাখা যাবে।

৪) এই বীমাটির জন্য কোনো আয়কর চালু রাখা হবে না। 

পেনশন বীমা

সব পেশার মানুষকে একদিন যৌবনের উষ্ণ কর্মমুখর চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বার্ধ্যক্যের শীতল সমতলে দাঁড়াতে হবে। প্রবীনদের জন্য সেই মুহূর্তে সেবা, এবং সামাজিক নিশ্চয়তা ছাড়াও আর্থিক নিরাপত্তার সর্বাধিক প্রয়োজন। এই সংকট নিরসনে পরিবারের সদস্যদের উপর নির্ভর না করে জীবন বীমার উপর নির্ভর করা উচিত। মানুষের অবসর জীবনের দিনগুলো চিন্তামুক্ত ভাবনাহীন বিরুদ্ধে শান্তিময় সচ্ছল থাকে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি প্রবীনদের জন্য কাঙ্খিত ও পেনশন বীমা চালু করেছে।  যে কোন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ ও পলিসি নিতে পারেন। তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে শিক্ষিত চাকরীজীবি ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী যেমন ডাক্তার আইনজীবী মহিলাগণ এ পলিসি নিতে পারেন। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • এই বীমা করতে চাইলে আপনার বয়স ২০ থেকে ৫৫ বছর হতে হবে
  • পেনশন শুরুর সর্বনিম্ম বয়স ৫০ এবং সর্বোচ্চ বয়স ৬০ হতে হবে।
  • মাসিক কতটাকা পেনশন মাসিক ধার্চ করবেন সেটা অবলিখিত, যার মানে এই যে, এটা যেকোনো পরিমাণের হতে পারে।
  • উক্ত বীমার মেয়াদ থাকবে ৫ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত।
  • প্রিমিয়াম প্রদান করতে পারবেন ৬ মাসে একবার অথবা ১ বছরে একবার করে।
  • এটার সাথে কোনো ধরনের অতিরিক্ত কিংবা সহযোগী বীমা নেয়া যাবে না।

সুবিধা সমূহ

১) বীমার গ্রাহক যদি বেচে থাকে তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে নির্ধারিত হারে আজীবন পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে। 

২) মেয়েদের মধ্যে গ্রাহকের মৃত্যু হলে নমিনীকে বার্ষিক পেনশনের ৫ গুন প্রদান করা হবে। 

৩) বার্ষিক পেনশনের সর্বোচ্চ ৫০% সমর্পন করে এক কালীন সময়ে নগদ অর্থ পাওয়া যাবে এবং মোট পেনশন হতে সমর্পিত পেনশন বাদ দিয়ে বাকি অংশের অর্থ ত্রৈমাসিক কিস্তিতে অগ্রিম প্রদান করা হবে। 

৪) এটির ক্ষেত্রেও প্রিমিয়ামের জন্য কোনো আয়কর ধার্য করা হবে না। 

আজীবন বীমা

যারা কম প্রিমিয়ামে দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বীমা করতে চায় তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ বীমা পরিকল্পনা হতে পারে। আজীবন বীমা এর প্রিমিয়াম ৮৫ বছর বয়স পর্যন্ত অথবা মেয়াদপূর্তির পূর্বে মৃত্যু ঘটলে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত প্রদানযোগ্য। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • আপনার বয়স যদি বিষ থেকে 55 হয়ে থাকে তবে উক্ত বীমা তৈরি করতে পারেন।
  • আজীবন বীমার কোন মেয়াদ নেই  কেননা এটি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে তবে সর্বোচ্চ 85 বছর পর্যন্ত উক্ত  বীমার মেয়াদ ধরা হয়ে থাকে।
  • সর্বনিম্ন 30000 টাকা দিয়ে আজীবন বীমা শুরু করা যায় এবং 30 হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আপনার ইচ্ছা মোতাবেক অর্থের বীমা করিয়ে রাখতে পারবেন।
  • বীমার অর্থ বা প্রিমিয়াম প্রদানের পদ্ধতি বছরে 2 বার বা ছয় মাস পর পর অথবা বছরে একবার দিতে পারবেন।
  • সহযোগী বীমা হিসাবে উক্ত বীমার সাথে অতিরিক্ত কিছু প্রিমিয়াম প্রদান সাপেক্ষে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে বীমার অংকের দ্বিগুণ সুবিধা এবং বীমা অংকের দ্বিগুণ সুবিধাসহ অঙ্গহানি হলে তার ক্ষতিপূরণ সুবিধা পাওয়া যাবে।

সুবিধা সমূহ

১) এই বীমা প্রকল্পের মেয়াদ শেষে অর্জিত বোনাসসহ মূল বীমার অংক প্রদান করা হয়ে থাকে।

২)মেয়াদের মধ্যে বিমা গ্রাহকের মৃত্যুতে অর্জিত বোনাসসহ মূল বীমার অংক দাবিদারকে প্রদান করা হয়।

৩) আজীবন বীমাটি সম্পূর্ণ আয়কর মুক্ত রাখা হয়েছে।

এক কিস্তি বীমা

যারা বিনিয়োগ যোগ্য সঞ্চিত অর্থ দিয়ে মাসে – মাসে বা বছরে – বছরে বীমা জমা দিতে অসুবিধা বোধ করেন, অথবা যারা একেবারে একটি নিদিষ্ট পরিমাণের অর্থ প্রদানের মাধ্যমে বীমা করাতে ইচ্ছুক তাদের জন্য ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স এর পক্ষ থেকে এক কিস্তি বীমা সুবিধা চালু রেখেছে। এই প্রসেসে বীমা গ্রাহককে এক সাথে এক কালীন পুরো অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এবং একটি নিদিষ্ট সময় পড়ে বা বীমা শেষে অথবা অকাল মৃত্যুতে বীমার ২ গুন অর্থ পাবেন। 

বৈশিষ্ট্য ও যোগ্যতা সমূহ

  • উক্ত বীমায় প্রবেশকারীকে ১৮ থেকে ৫৬ বছরের মধ্যে হতে হবে
  • সর্বোচ্চ মেয়াদ পূর্তিকালীন সময় থাকবে ৬২ বছর
  • সর্বনিম্ম বীমার অংক ১৫ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ইচ্ছা অনুযায়ী যা অবলিখন রয়েছে।
  • অন্যদিকে বীমার মেয়াদকাল যথাক্রমে ৬,৮,১০,১২,১৫ বছর হতে পারে।
  • এক্ষেত্রে বীমার প্রিমিয়াম এক কালীন সময়ের জন্যই করা হবে।
  • উক্ত বীমার সাথে অন্য কোনো সহযোগী বীমা গ্রহন করা যাবে না।

সুবিধা সমূহ

১) নিদিষ্ট মেয়াদ পূর্তিতে গ্রাহককে বীমা অংকের দ্বিগুন অর্থ প্রদান করা হবে।

২) বীমা গ্রাহকের মৃত্যুতে দাবীদারকে একই পরিমাণে অর্থ (মূল অর্থের ২ গুন) প্রদান করা হবে।

৩) এই পরিকল্পে পলিসি সমর্থন করা যাবে।

ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি যোগাযোগের মাধ্যম

হেড অফিস

N.L.I. Tower, 54, Kazi Nazrul Islam Avenue,

Karwan Bazar, Dhaka-1215, Bangladesh

Phone : PABX-58151271, 58151089, 58151490.

Fax: 88-02-8144237.

email: info@nlibd.com

Branch working hours: (10:00 am To 06:00 pm)  

এবং মতিঝিলে,

79, Motijheel Commercial area,

Dhaka-1000, Bangladesh

Phone : PABX-9560241.: 

Fax: 88-02-9560244.

email: 

Branch working hours :(10:00 am To 06:00 pm)  

অন্যান্য শাখা সমূহ:

তাছাড়া আপনি যদি আপনার লোকেশনের আশেপাশে বা স্পেসিফিক কোনো এড়িয়ার ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স এর অফিস খুজতে চান তবে এখানে ক্লিক করে সকল অফিসের তালিকা দেখতে পারবেন।

গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ৭৯ টি বীমা কোম্পানি রয়েছে যার মধ্যে ৩৩ টি হলো জীবন বীমা কোম্পানি। এবং এগুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতে ন্যাশনাল লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি অন্যতম যারা কি-না বিগত ৩৮ বছর ধরে সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। জীবন বীমা সহ আরো অনেক ধরনের বীমা রয়েছে যা মানুষের বিভিন্ন পদে পদে প্রয়োজন হয়। এমনই প্রতিটি ইন্সুরেন্স ও ইন্সুরেন্স কোম্পানি সম্পর্কে জানতে বাংলা আলো ওয়েবসাইটের ইন্সুরেন্স নামক ক্যাটাগরিটি অনুসরণ করুন। আমরা ধারাবাহিক ভাবে ইন্সুরেন্স সংক্রান্ত সকল বিষয়ে জানাচ্ছি, যেখানে ইন্সুরেন্স কোম্পানি এবং বিভিন্ন ধরনের বীমা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকবে।

Bangla Alo

Recent Posts

৫টি জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানের লিরিক্স

প্রতিটা দেশেরইই একক কিছু দেশাত্মবোধক গান থাকে তেমনি বাংলাদেশেও রয়েছে এমন অনেকগুলো দেশাত্মবোধক গান।  আমরা…

3 days ago

ইসলামিক পদ্ধতিতে ওজন কমানো এবং সুস্থ থাকার উপায় জানুন

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো -…

4 days ago

বেগুন চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন, নিজে চাষ শুরু করুন

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর ইচ্ছায় অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে বেগুন চাষ…

4 days ago

ওমরা ভিসা করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য ২০২৪

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো…

4 days ago

কনফেকশনারি ব্যবসার আইডিয়া || শুরু থেকে শেষ অব্দি

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর ইচ্ছায় সবাই ভালো আছেন। আমাদের দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ…

4 days ago

মন ভালো রাখার উপায় || মন সুস্থ রাখার ১০ টি টিপস

মানুষের মন যেহেতু আছে এটা ভালো কিংবা খারাপ থাকবে এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়।  একটা…

1 month ago