আমরা কমবেশি অনেকেই রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এর কথা শুনেছি। হয়তো অনেকেই অনেক কিছু ভাবতে পারেন। কিন্তু আসলে রিয়েল এস্টেট বিষয়টা কি?
যদি আমরা শব্দ দুটিকে আলাদা আলাদা বিবেচনা করি; তাহলে রিয়েল বলতে আসল বা দৃশ্যমান এবং এস্টেট বলতে ধন বা ভূসম্পত্তি কে বুঝায়। আর রিয়েল এস্টেট বলতে সাধারণত দৃশ্যমান স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদ কে বুঝায়।
যারা রিয়েল এস্টেটের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের কাজ সমাধান করার মাধ্যমে অর্থোপার্জন করেন, তাদের সে কাজটি কে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বলে।
আমাদের জানার বিষয় হলো, কিভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়? – এ সম্পর্কে। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন, এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাকঃ
যারা ব্যবসা সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না, তারা যেন একটা ক্লিয়ার ধারণা পান, সে লক্ষ্যেই আজকের এই আর্টিকেলটি। বিষয়টি ভালভাবে বুঝার জন্য প্রথমে আপনাকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সংজ্ঞাটা জেনে নিতে হবে।
দৃশ্যমান কোনো স্থাবর অথবা অস্থাবর ধন-সম্পদ অথবা ভূসম্পত্তি কে বিভিন্ন প্রক্রিয়াকরণ এর মাধ্যমে উন্নয়ন সাধন করে ব্যাবসায়িক লাভ অর্জনের প্রচেষ্টা চালানো কে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বলে।
উদাহরণস্বরূপ বলতে গেলে ডেভলপার কোম্পানী এদের কথা বলা যেতে পারে। একটি ডেভলপার কোম্পানী কোন মালিকের ভূ-সম্পত্তি কে উন্নয়ন সাধন অথবা বাড়ি নির্মাণ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করে থাকে। আর তাদের এ কাজটি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, নির্দিষ্ট মালিকানাধীন সকল বাস্তব সম্পদই রিয়েল এস্টেট। এ জাতীয় সম্পদ কেনা, বেচা, ভাড়া দেওয়ার পেশাকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বলে।
বিভিন্ন কারণে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে পারেন। তারমধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো এই ব্যবসা দুই, তিন পাচ গুণ বা তারও বেশি মুনাফা অর্জনের সুযোগ থাকে, যা খুব কম ব্যবসাতেই হয়ে থাকে।
এছাড়াও আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অনেকটা ঝামেলামুক্ত ভাবেই এ ব্যবসাটি করার মাধ্যমে কম পরিশ্রমে অধিক লাভবান হতে পারেন।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসা তে সাধারণত জমির দেখাশোনা, কাগজপত্র যাচাই বিল্ডিং কন্সট্রাকশন বা নির্মাণ কাজ পরিচালনা – এ জাতীয় কাজগুলো ব্যবসায়ীদের করতে হয়।
তবে যারা অভিজ্ঞ তাদের জন্য এ কাজটি নিঃসন্দেহে বড় অংকের লাভবান হওয়ার জন্য দারুন একটি প্ল্যাটফর্ম। তাই এসব সুবিধা বিবেচনা করে আপনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করতে পারেন।
এই ব্যবসা শুরু করতে গেলে প্রধানত ২টি জিনিস অবশ্যই প্রয়োজন। তা হলো – ১। অভিজ্ঞতা এবং ২। বড় অঙ্কের মূলধন। এছাড়াও আরও বেশ কিছু বিষয় থাকতে হয়। তবে অভিজ্ঞতা ও বড় অঙ্কের মূলধন না থাকলে এটি করে বড় প্রফিট অর্জন সম্ভব নয়।
অভিজ্ঞতা হলো এই সেক্টরে করার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ধরুন, আপনার কাছে যথেষ্ট মূলধন আছে বিনিয়োগ করার জনরয।
কিন্তু এই সেক্টর বিষয়ক কাজ সম্পর্কে যদি আপনার কোন ধারণাই না থাকে, তাহলে আপনি ধরে নিতে পারেন যে আপনি এ ব্যবসার জন্য একদমই উপযুক্ত নন।
উদাহরণস্বরুপ, আপনাকে ডেভলপার কোস্পানী কর্তৃক পরিচালিত রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এর কথা বলছি। এই ব্যবসার জন্য আপনাকে জমিজমা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানতে হবে।
যেমনঃ কি বিষয়ে কাজ করতে হবে, কিভাবে জমিজমা যাচাই করতে হবে, সিএস পর্চা, আরএস পর্চা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর প্রভৃতি বিষয়ে জানা থাকতে হবে।
যারা সফল হয়েছেন রিযেল এস্টেট ব্যবসা করে; তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় জানতে হবে। উত্তম হয় যদি তাদের অধীনে চাকরি করা যায়। তাহলে কয়েক মাসেই পর্যাপ্ত পরিমাণে এ ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা পাবেন ইনশা আল্লাহ্।
চাকরির পাশাপাশি অন্যান্য বিশ্বস্ত মাধ্যম থেকেও খুটিনাটি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে হবে। যত বেশি অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান লাভ করতে পারবেন, তত বেশি সফলতার সুযোগ পাবেন ইনশা আল্লাহ্।
এর পরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মূলধন। ডেভলপার কোম্পানির হয়ে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য বড় অঙ্কের মূলধন দরকার। কম মূলধনে এ ব্যবসা করা যায় না।এজন্য আপনার যদি কমপক্ষে ৩০ লক্ষ টাকা বা তদূর্ধ্ব মূলধন থাকে, তাহলে আপনি এ ব্যবসাতে নামতে পারেন।
এছাড়াও ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়, ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স, জমির দলিলসহ প্রভৃতি বিষয় আপনাকে বুঝতে হবে।
মনে রাখবেন, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এই ব্যবসা করা বৈধ নয়। তাই এ বিষয়গুলো নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যবসায় শুরু করতে হবে আপনাকে।
যদি উপরোক্ত পয়েন্টগুলো সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করতে চাই, তাহলে বলবো যে, প্রথমে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করজর জন্য সিরিয়াস হোন এবং দৃঢ়ভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। এরপর অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ছুটে চলুন।
এক্ষেত্রে কোন বিল্ডার্স কোম্পানি তে চাকরি করা অথবা পর্যবেক্ষণ করা একটি ভাল উপায়। চাকরি করা সম্ভব না হলেও সরেজমিনে থেকে কাজ শিখে নিতে পারেন।
এর পরবর্তী ধাপে জায়গা জমি-জমা এবং দলিল বা বিভিন্ন ডকুমেন্টস রিলেটেড সূক্ষ্ম জ্ঞানার্জন করুন। তারপর আপনার মূরধন একত্র করে তা হাতের কাছে রাখুন, যাতে বিনিয়োগ করা সম্ভব হয়।
যদি ব্যক্তি মালিকানায় ব্যবসা করতে চান তাহলে তো একাই যথেষ্ট ব্যবসা শুরু করার জন্য। কিন্তু কয়েকজন মিলে যদি ব্যবসা শুরু করতে চান, তাহলে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর আগেই স্ট্যাম্পসহ চুক্তিপত্র করে নিবেন। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যবসার জন্য প্রথম প্রজেক্টটি তে তুলনামূলক একটু কম বিনিয়োগ করার চেষ্টা করবেন প্রথমেই এখুব বড় ইনভেস্ট করা থেকে বিরত থাকবেন।
সমস্ত মূলধন একবারে বিনিয়োগ করা যাবে না; বরং কিছু মূলধন যেন বিনিয়োগের পর হাতে থাকে, সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে।
উপরোক্ত ধাপগুলো ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করার মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এগুলো হলো প্রাথমিক ধারণা।
আরও বিস্তারিত জানতে গুগল ও ইউটিউব সার্চ করতে পারেন এবং রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সাথে জড়িত বিভিন্ন বই পড়তে পারেন, যাতে স্বচ্ছ ধারণা পান।
এই ব্যবসাটি পরিচালনার জন্য নিজের ব্যবসায়ীক লাভের ক্ষেত্রটি পূর্বে বুঝে নেয়া জরুরি। জমির দাম নির্ধারন, প্রোপার্টির দাম নির্ধারণ বা রিয়েল এস্টেট মূল্যায়ন – কোন বিষয়টি থেকে আপনি লাভবান হতে চান – তা বিবেচনার বিষয়।
উপরে আমরা রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এর মাত্র একটি ব্যবসায়ীক দিক নিয়ে জেনেছি। কিন্তু রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বিভিন্নভাবে হতে পারে। শুধুমাত্র কোন জমি বৈধ কি না তা যাচাই করে তার সামান্য কিছু উন্নয়ন সাধন করে ক্রেতার নিকট বিক্রয় করানোর মাধ্যমেও ব্যবসা করা যায়।
তাই যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে লাভ করতে চান, সে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সুষ্ঠুভাবে করার মাধ্যমে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। যদি কোন জমির শুধু ভূমি উন্নয়ন করাটাই আপনার মিশন থাকে, তাহলে ভূমি উন্নয়ন করার যাবতীয় কাজ পরিচালনা করাটাই হলো আপনার কর্ম পরিচালনার ক্ষেত্র।
বড় অঙ্কের লাভ করা যায় – আমরা অনেকেই রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বলতে এমনটাই বুঝে থাকি। কিন্তু আসল বিষয়টা এমন নয়।
তবে হ্যা, বড় অঙ্কের লাভবান হতে হলে এক্সপেরিয়েন্স জরুরি হলেও এমনও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এর ক্ষেত্র রয়েছে, যেটায় এক্সপেরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতা ছাড়াই এ ব্যবসায় সম্পৃক্ত হওয়া সম্ভব।
আপনার সুবিধার্থে সব মিলিয়ে কিছু রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বিষয়ক ক্ষেত্র নীচে উল্লেখ করছিঃ
১। সেলিং
২। আর্কিটেকচার
৩। ব্লগিং
৪। রিপেয়ারিং
৫। রিয়েল এস্টেট এজেন্সী
৬। স্টাইলিং
৭। অনলাইন মার্কেটিং
মোটকথা, রিয়েল এস্টেট ব্যবসা হলো একটি বৃহৎ ধারণার বিষয়, যেখানে প্রত্যেকটা কাজের ব্যাপারেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি।
কেননা, সামান্য কোন ভুলের কারণে প্রজেক্ট ক্ষতিগ্রস্ত হলে আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
কিন্তু সঠিক প্রক্রিয়ায় করতে পারলে বিশাল মুনাফা লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই আপনি যদি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা সম্পর্কে অভিজ্ঞ হন এবং বড় মূলধন বিনিয়োগের পাশাপাশি আর্থিক ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকেন, তাহলে এ ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
প্রতিটা দেশেরইই একক কিছু দেশাত্মবোধক গান থাকে তেমনি বাংলাদেশেও রয়েছে এমন অনেকগুলো দেশাত্মবোধক গান। আমরা…
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমাদের আজকের জানার বিষয় হলো -…
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আল্লাহর ইচ্ছায় অনেক ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সাথে বেগুন চাষ…
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আশা করি মহান আল্লাহর ইচ্ছায় ও অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালো…
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর ইচ্ছায় সবাই ভালো আছেন। আমাদের দৈনন্দিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ…
মানুষের মন যেহেতু আছে এটা ভালো কিংবা খারাপ থাকবে এটা খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়। একটা…